ফিরোজ মাহমুদ :: পুরো রমযান মাসটা আমাদের জন্য আল্লাহ তা’আলার সেই বিশেষ রহমতের প্রকাশ যে, তিনি আমাদের জন্য কম সময়ে সংক্ষিপ্ত কাজের জন্য সেই সওয়াব আর প্রতিদান রেখেছেন যা কিনা অপরাপর উম্মতদের জন্য দীর্ঘসময়ে এবং অনেক বেশী কাজ করার বিনিময়ে দেয়া হতো।
নবী করীম (স.) এর কথা অনুযায়ী এর দৃষ্টান্ত হচ্ছে যে, উম্মতে মুসলিমরা আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত পরিশ্রম করলে ইহুদীদের ফজর থেকে জোহর পর্যন্ত পরিশ্রম ও ঈসায়ীদের জোহর থেকে মাগরিব পর্যন্তকার পরিশ্রমের প্রতিদানের চেয়েও অধিক প্রতিদান দেয়া হবে। (বুখারী)
শবে কদর আমাদের প্রভু আল্লাহর বিশেষ রহমতের সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত। সুতরাং আপনারা কোমর বেঁধে চেষ্টা করুন, তৈরি হয়ে যান। কমপক্ষে শেষ দশদিনের প্রতিটি বেজোড় রাতে আল্লাহর সামনে কিয়াম, নামায, তেলাওয়াত, যিকির, দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনার মধ্যে কাটিয়ে দিন, পুরো রাত সম্ভব না হলে মধ্য রাতের পর সাহরী পর্যন্ত দু’তিন ঘন্টা অতিবাহিত করুন, হাত বেঁধে দাঁড়িয়ে যান, সেজদায় কপাল মাটিতে লুটিয়ে দিন, কান্না-কাটি করুন, অনুনয়-বিনয় প্রকাশ করুন, নিজের গুনাহর জন্য প্রার্থনা ও তওবা করুন।
দোয়া কবুলের বিশেষ মুহুর্ত তো প্রতি রাতেই আসে। কিন্তু কদরের রাতে সেই বিশেষ মুহুর্তটির রং সম্পূর্ণ ভিন্ন থাকে। তার মর্যাদা প্রভাব সম্পূর্ন ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে সে মুহুর্ত না জানি কোনটি! একারনেই নবী করীম (স.) আয়েশা (রা.) কে একটি সংক্ষিপ্ত অথচ ব্যাপক অর্থবোধক ও তাৎপর্যপূর্ন দোয়া শিখিয়েছিলেন।
তিনি (স.) নিজেও এ রাতে অধিকহারে এ দোয়া করতেন, দোয়াটি হচ্ছে- “আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহীব্বুন আফওয়া ফা’ফু আন্নী।” (আহমদ,তিরমিযি)
অর্থাৎ হে আমার আল্লাহ ! তুমি মহান ক্ষমাশীল, ক্ষমা প্রার্থনা তোমার নিকট খুবই প্রিয়। অতএব, আমাকে ক্ষমা করে দাও। যদি সাহস ও মনের দৃঢ়তা থাকে তাহলে আপনি শেষ দশদিনে অবশ্যই ইতিকাফ করুন।
রুহ ও অন্তর, মন-মানসিকতা এবং চিন্তা ও কর্মকে আল্লাহর রঙ্গে রঙ্গিন করতে এবং তার প্রভুত্বের ছাঁচে ঢেলে সাজানোর ক্ষেত্রে পরশমনির ভূমিকা পালন করে এই ইতিকাফ, এর মাধ্যমে শবে কদরকে অনুসন্ধানের প্রচেষ্টাও সাধিত হয়।
চলবে…..
লেখক: মাদ্রাসা শিক্ষক ও গণমাধ্যম ব্যাক্তিত্ব
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুণ।