এন্ডোমেট্রিওসিস কে হারিয়ে দিন । আসুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে এন্ডোমেট্রিওসিসকে হারিয়ে দিবেন। একটি মেয়ের জীবনে প্রতি মাসে মাসিক ও সেই সময় তলপেটে মৃদু ব্যথা, অস্বস্তি লাগা স্বাভাবিক। কিন্তু তীব্র ব্যথা ও অসুস্থতা হলেও আমরা অনেক সময় বিষয়টিকে স্বাভাবিক বলে উড়িয়ে দিই। অথচ এই তীব্র ব্যথা একজন নারীর সহজ জীবনকে বাধাগ্রস্ত করে। যেসব কারণে এমন হয়, তার মধ্যে এন্ডোমেট্রিওসিস অন্যতম। প্রতি দশজনে একজন নারী এই সমস্যায় ভোগেন। বাংলাদেশেও প্রায় ১২ থেকে ১৫ লাখ নারী এতে ভোগেন।
- আরো পড়ুন: স্যানিটারি ন্যাপকিন নাকি মেন্সট্রুয়াল কাপ?
- আরো পড়ুন: প্রস্রাবে ইনফেকশন সারানোর ঘরোয়া ৫ উপায়
- আরো পড়ুন: জরায়ুতে সমস্যা কীভাবে বুঝবেন
এন্ডোমেট্রিওসিস হলে মাসিকের শুরু থেকে ব্যথা শুরু হয়, মাঝামাঝি সময় প্রবল হয়। এমনকি শেষ হয়ে গেলেও কিছু ব্যথা থেকে যায় কয়েক দিন। আবার পরবর্তী চক্রে এটি শুরু হয়। বেশির ভাগ নারী একে স্বাভাবিক ধরে নেন, তলপেটে সেঁক দেন বা ব্যথানাশক বড়ি ইত্যাদি খান। ফলে এন্ডোমেট্রিওসিস শনাক্ত হতে ৮ থেকে ১০ বছর পেরিয়ে যায়। এই দেরিই ক্ষতিকর। ফলে রোগটি আরো জটিল হয়, ব্যথা আরও তীব্র হয়। এরপর মাসিকের সময় ব্যথা ছাড়াও পায়খানা–প্রস্রাবের সময়, সহবাসের সময় ব্যথা হতে থাকে। বন্ধ্যত্ব হতে পারে। অনেকের মাসিক চলাকালীন তলপেটে রক্ত জমা হয়ে চকলেট সিস্ট হতে পারে। তাই এই সমস্যা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে যাদের পরিবারে মা, খালা, ফুফুদের এই সমস্যা ছিল।
এন্ডোমেট্রিওসিসকে হারিয়ে দিন
চিকিৎসা
● এমনটা মেয়েদের হয়ই – আজকাল এমন ভাবার সুযোগ নেই। কারণ, ইদানীং নানা রকমের ওষুধ ব্যবহৃত হচ্ছে। কখনো ওষুধ দিয়ে মাসিক কিছুদিন, যেমন ১ বছর বন্ধ রাখা হয়। এভাবে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ পর্দা বা এন্ডোমেট্রিয়ামকে আর বাড়তে দেয়া হয় না। এই চিকিৎসাপদ্ধতিতে স্বল্প মাত্রার জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি বা প্রজেস্টেরন–জাতীয় হরমোন ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া জিএনআরএইচ – জাতীয় ওষুধও ব্যবহার করা হয়।
● উচ্চমূল্য ও দীর্ঘদিন ব্যবহারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য অ্যাড ব্যাক থেরাপি দেওয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া ব্যথা নিরাময়ের জন্য ব্যথানাশক দেওয়া যায়। তবে যেকোনো ওষুধই স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া সেবন করা উচিত নয়।
● মেডিকেল চিকিৎসা ছাড়াও এর জন্য শল্যচিকিৎসা আছে। অভিজ্ঞ চিকিৎসকের হাতে ল্যাপরোস্কপির মাধ্যমে চকলেট সিস্ট বের করা বা যেখানে অস্বাভাবিক এন্ডোমেট্রিয়াল টিস্যু আছে, তা পুড়িয়ে ফেলা যায়। এ ছাড়া এই রোগের জন্য বন্ধ্যত্ব হয়ে থাকলে সেটির চিকিৎসার নানা পদ্ধতি আছে।
- আরো পড়ুন: জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল কি ওজন বাড়ায়?
- আরো পড়ুন: জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল মিস হলে করণীয় কী?
- আরো পড়ুন: জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে
মনে রাখুন
● এন্ডোমেট্রিওসিস একটি জটিল রোগ। এ রোগ পুষে রাখা উচিত নয়, আর শনাক্তকরণ বা চিকিৎসায় কালক্ষেপণ নয়।
● মাসিকের সময় তলপেটে তীব্র ব্যথা হলে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
● এ বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা তৈরিতে স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়াও অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকাকে এগিয়ে আসতে হবে। স্কুলের পাঠ্যসূচিতে স্বাভাবিক মাসিকের লক্ষণ ও অস্বাভাবিকতার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
● প্রতিটি স্কুলে মেয়েদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিশেষ ব্যবস্থা থাকা উচিত।
● রোগনির্ণয়ের জন্য রোগের ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষার সঙ্গে আলট্রাসাউন্ড, প্রয়োজনে এমআরআই করতে হতে পারে।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।