নান্দনিক সৌন্দর্য ফুল নীল-টেংরাকাঁটা

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: আমাদের দেশে লবণাক্ত জলের চলাচল আছে এমন খাল-বিল-নদী-নালার তীরে এই সকণ্টক সপুষ্পক উদ্ভিদটি চোখে পড়ে । মূলতঃ কুয়াকাটার সমুদ্রপোকুলে খালে নালায় নোনা পানির ধারে তার আবাসন। এই উদ্ভিদটি জন্ম ও মৃত্যু সমুদ্রপোকুলে খালে নালায় নোনা পানিতে৷ নাম তার নীল-টেংরাকাঁটা।

নীল-টেংরাকাঁটা একটি ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ। এই উদ্ভিদকে আমাদের দেশে বিভিন্ন নামে ডাকা হয় যেমন হরকচ, হরগোজা, হাড়কুচ, হাড়গোজা গুল্ম, হাড়গজা, হড়গোজা, হাড়কাঁটা, হড়কুঁচ কাঁটা ইত্যাদি।

কেবল ভারতীয় উপমহাদেশেই নয় এশিয়া মহাদেশের প্রায় প্রতিটি দেশে এবং অস্ট্রেলিয়া ও পাপুয়া নিউগিনিতেও এর দেখা মেলে। এর ইংরেজি নাম: সিয়া হলি বা অ্যাকানথাস এব্রাকটিয়াস।

নীল-টেংরাকাঁটা এক প্রজাতির ঝোপঝাড় জাতীয় উদ্ভিদ। বিশেষ করে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের চারপাশের বাগানগুলোতে এই উদ্ভিদ বেশী দেখতে পাওয়া যায়। এর জন্ম দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ম্যানগ্রোভের আন্ডার গ্রোথে বেশী জন্মায়। সাধারণ নামের মধ্যে রয়েছে সমুদ্রের হলি এবং হলি ম্যানগ্রোভ।

এটি খাড়া, ছড়িয়ে পড়া বা ঝাঁকুনির গাছের ঝাঁকড়া গাছ হিসাবে বেড়ে ওঠে। ১.৫ মিটার লম্বা হয়। সাধারনত অনেকগুলি ডালপালা থাকে। এর পাতাগুলি গাড়ো সবুজ, শক্ত এবং প্রতিটি গভীর গতির শেষে তীক্ষ্ণ মেরুদণ্ডযুক্ত অনেকটা হলির মতো দেখতে। ফুলগুলি নীল, বেগুনি বা সাদা এবং শাখাগুলির কাঁটা সাধারনত পাতার শেষ প্রান্তে থাকে। এই উদ্ভিদের ফলগুলো দেখতে একটি বর্গাকার আকৃতির ক্যাপসুলের মত।

যা পাকার পরে ফেটে উদ্ভিদ থেকে দুই মিটার অবধি বীজ ছড়িয়ে পরে। এর বীজ সাদা এবং সমতল হয়। এই প্রজাতিটি প্রথম মার্টিন ওয়াহল তাঁর ১৭৯১ সালে এর প্রতীক বোটানিকায় বর্ণনা করেছিলেন। ১৮০৬ সালে ক্রিশ্চিয়ান পারসুন এটিকে দিলিরিয়ায় স্থানান্তরিত করেন, তবে এটি গৃহীত হয়নি। ১৯৮৬ সালে এর দুটি উপ-প্রজাতিকে স্বীকৃতী প্রদান করা হয় যার নাম ইবারাকটিয়াস এবং ইবারবাটাস।

নীল-টেংরাকাঁটা ফুলের সৌন্দর্য নান্দনিক ৷ ফুলে প্রচুর মধু রয়েছে যে কারণে তার চারপাশে মৌমাছির আনাগোনা বেশী ৷ গাছের গায়ে প্রচুর কাঁটার কারণে সমদ্রপোকুল রক্ষায় পারদর্শি ৷ ঔষধি গুণাগুনঃ বিভিন্ন রোগ-ব্যাধির নিরাময়ে এই উদ্ভিদটির ব্যবহার রয়েছে। পাতার রস বাত ও নিউরালিয়ার যন্ত্রনা লাঘবে উপকারী ৷

গাছের কান্ড কাশি, হাঁপানি রোগ উপশম করে ৷ শিকড় সাপের বিষ লাঘবে উপকারী ৷ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট বৈশিষ্ট্যের জন্য খ্যাত নীল-টেংরাকাঁটার পাতা থাইল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়ায় থাই ভেষজ চা তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়।

 

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুণ।

এগুলো দেখুন

লকডাউনে যেসব জিনিস ঘরে রাখবেন

লকডাউনে যেসব জিনিস ঘরে রাখবেন

লকডাউনে যেসব জিনিস ঘরে রাখবেন দুর্বা ডেস্ক :: লকডাউনের সময় বাইরে বের হওয়া নিষেধ। তবে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *