পাথরকুচি পাতার অবিশ্বাস্য ১৫ টি ঔষধি গুণাগুণ জেনে নিন । । পাথরকুচি পাতার উপকারিতা: পাথরকুচি পাতার অবিশ্বাস্য ঔষধি গুণাগুণ জেনে নিন
চিকিৎসার ক্ষেত্রে যেসব ঔষধি গাছ প্রাচীন কাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে তার মধ্য পাথরকুচি এটি অন্যতম। এটি দেড় থেকে দুই ফুট উঁচু হয়।
পাতা মাংসল ও মসৃণ, আকৃতি অনেকটা ডিমের মতো। চারপাশে আছে ছোট ছোট গোল খাঁজ। এই খাঁজ থেকে নতুন চারার জন্ম হয়। অনেক সময় গাছের বয়স হলে ওই গাছের খাঁজ থেকে চারা গজায়।
পাথরকুচি পাতা মাটিতে ফেলে রাখলেই অনায়াসে চারা পাওয়া যায়। কাঁকর মাটিতে সহজেই জন্মে। তবে ভেজা, স্যাঁতসেঁতে জায়গায় দ্রুত বাড়ে। গ্রামীণ চিকিৎসার মধ্যে এটি অন্যতম উপকারী। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদেন মতে, পাথরকুচি পাতা কিডনি রোগসহ বিভিন্ন রোগের বিশেষ উপকারে আসে। তবে আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই পাথরকুচি পাতার অবিশ্বাস্য ঔষধি গুণাগুণ সম্পর্কে।
১. পেট ফাঁপা
অনেক সময় দেখা যায় পেটটা ফুলে গেছে, প্রসাব আটকে আছে, আধোবায়ু, সরছে না, সেই ক্ষেত্রে একটু চিনির সাথে এক বা দুই চা-চামচ পাথর কুচির পাতার রস গরম করে সিকি কাপ পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। এর দ্বারা মূত্র তরল হবে, আধো বায়ুরও নিঃসরণ হবে, ফাঁপাটাও কমে যাবে।
২. কিডনির পাথর অপসারণ
পাথরকুচি পাতা কিডনি এবং গলগণ্ডের পাথর অপসারণ করতে সাহায্য করে। দিনে দুবার ২ থেকে ৩টি পাতা চিবিয়ে অথবা রস করে খান। দ্রুত আপনি সুস্থ্য হয়ে উঠবেন ইনশাল্লাহ।
৩. মেহ
সর্দিজনিত কারণে শরীরের নানান স্থানে ফোঁড়া দেখা দেয়। যাকে মেহ বলা হয়। এ ক্ষেত্রে পাথরকুচির পাতার রস এক চামুচ করে সকাল-বিকাল একসপ্তাহ খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৪. রক্তপিত্ত
রক্তপিত্ত বা পিত্তজনিত ব্যথায় নিয়মিত পাথরকুচি পাতা সেবন করুন। দেখবেন আপনি দ্রুত ভালো হয়ে যাবেন ইনশাল্লাহ। খাবার নিয়ম হচ্ছে পিত্তজনিত ব্যথায় রক্তক্ষরণ হলে দু’বেলা এক চা-চামচ পাথর কুচির পাতার রস দুদিন খাওয়ালে রোগী দ্রুত সেরে যাবে।
৫. মৃগী
মৃগী রোগাক্রান্ত সময়ে পাথর কুচির পাতার রস ২-১০ ফোঁটা করে মুখে দিতে হবে। একটু পেটে গেলেই রোগের উপশম হবে।
৬. সর্দি
সর্দি পুরান হয়ে গেছে, সেই ক্ষেত্রে এটি বিশেষ উপকারী। পাথরকুচি পাতা রস করে সেটাকে একটু গরম করতে হবে এবং গরম অবস্থায় তার সাথে একটু সোহাগার খৈ মেশাতে হবে। তিন চা-চামচের সাথে ২৫০ মিলিগ্রাম যেন হয়। তা থেকে দুই চা চামচ নিয়ে সকালে ও বিকালে দুবার খেলে পুরান সর্দি সেরে যাবে এবং সর্বদা কাশি থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
৭. শিশুদের পেট ব্যথায়
শিশুর পেটব্যথা হলে, ৩০-৬০ ফোঁটা পাথর কুচির পাতার রস পেটে মালিশ করলে ব্যথার উপশম হয়। তবে পেট ব্যথা নিশ্চিত হতে হবে।
৮. ত্বকের যত্ন
পাথরকুচি পাতায় প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। সাথে সাথেই এর মধ্যে জ্বালাপোড়া কমানোর ক্ষমতা থাকে। যারা ত্বক সম্বন্ধে সচেতন, তারা পাথরকুচি পাতা বেটে ত্বকে লাগাতে পারেন। ব্রণ ও ফুস্কুড়ি জাতীয় সমস্যাও দূর হয়ে যাবে।
৯. কাটা বা থেতলে গেলে
বল খেলা, গাছ কাটা, মাটি কাটা, রান্না-বান্না সহ বিভিন্ন কাজ করার সময় কম বেশী সকলের শরীরে কেটে থাকেন।পাথরকুচির পাতা একটি ঔষধি গাছ। এই গাছের টাটকা পাতা পরিমাণ মত হালকা তাপে গরম করে কাটা বা থেতলে যাওয়া স্থানে সেক দিলে আরাম পাওয়া যায়।
১০. পাইলস
পাইলস্ ও অর্শ রোগ দেশের প্রায় অনেক মানুষেরই হয়ে থাকে। এর থেকে বাচার জন্য দেশী-বিদেশী ডাক্তার দেখিয়ে হয়রানি হচ্ছেন আপনি? অথচ, পাথরকুচি পাতার ঔষধি গুনাগুন সর্ম্পকে অনেকেরই অজানা। পাথরকুচি পাতার রসের সাথে গোল মরিচ মিশিয়ে পান করলে পাইলস্ ও অর্শ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
১১. জন্ডিস নিরাময়ে
জন্ডিস বা লিভার এই রোগ দেশের প্রতিটি মানুষের ভিতর আছে। কেউ বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন না, তিনি কখনো জন্ডিসে আক্তন্ত হননি। সবাই কম বেশী এই রোগ হয়েছে বা হচ্ছে। এরোগ নিয়ে অবহেলা করতে নেই। কারন এরোগে বহু মানুষ মারাযায় প্রতিবছর। লিভারের যেকোনো সমস্যা থেকে রক্ষা করতে তাজা পাথরকুচি পাতা ও এর জুস অনেক উপকারী।
১২. কলেরা, ডাইরিয়া বা রক্ত আমাশয়
কলেরা, ডাইরিয়া বা রক্ত আমাশা বহু বছর পূর্বে দেশের অধিকাংশ মানুষ মারা গেছেন ডাইরিয়াতে আক্রন্ত হয়ে। এই রোগ থেকে বাচতে তিন মিলিলিটার পাথরকুচি পাতার জুসের সাথে ৩ গ্রাম জিরা এবং ৬ গ্রাম ঘি মিশিয়ে কয়েক দিন খেলে এসব রোগ থেকে উপকার পাওয়া যায়।
১৩. শরীর জ্বালাপোড়া
বেশী পরিশ্রম করলে বা শরীর দূর্বল হলে সাধারন্ত শরীরে জ্বালাপোড়া দেখা দেয়। শরীরে জ্বালাপোড়া দেখা দিলে প্রতিনিদিন দু-চামচ পাথর কুচি পাতার রস, আধা কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে দুবেলা খেলে উপশম হয়।
১৪. পোকা কামড়
বিষাক্ত পোকায় কামড়ালে এই পাতার রস আগুনে সেঁকে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
১৫. উচ্চ রক্তচাপ
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং মুত্রথলির সমস্যার জন্য পাথরকুচি পাতা অনেক উপকারী। প্রতিদিন পাথরকুচি পাতার রস খান দেখবেন উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং মুত্রথলির সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। (
আরো পড়ুন:চোখ ভালো রাখার সহজ উপায়গুলো
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন।