জেনে নিন বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিমানবন্দর সম্পর্কে। আসুন এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যায়। একবিংশ শতাব্দীতে এসে যাতায়াতের সুবিধার জন্য আকাশপথের জনপ্রিয়তা এখন সবচেয়ে বেশি। দূরদেশ তো বটেই এখন দেশের ভেতরেও যাতাযাতের জন্য এই পথ ব্যবহার করেন অনেকে। তবে নিরাপত্তার দিক থেকে দেখতে হলে একটু বেশি ঝুঁকি নিতেই হত।
- আরো পড়ুন: ঘুরে আসুন পুরান ঢাকার ৩ স্থানে
- আরো পড়ুন: দাঁত ক্ষয় ঠেকাতে যা করবেন
- আরো পড়ুন: রেসিপি: ক্ষীরের পুলি পিঠা
বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিমানবন্দর
বিমান উড্ডয়ন ও অবতরনের জন্য রানওয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে বিশ্বের এমন কিছু বিমানবন্দর আছে যেগুলোতে উড্ডয়ন এবং অবতরন করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনার স্বীকার হয় অনেক বিমান।
বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিপদজনক বিমানবন্দরের মধ্যে আছে নেপালের লুকলা বিমানবন্দর। বর্তনামে এটি তেনজিং-হিলারি এয়ারপোর্ট নামেই বেশি পরিচিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিস্ট্রি টিভি চ্যানেলের ২০১০ সালে এই বিমানবন্দরকে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিমানবন্দর হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৯৬৪ সালে নিউজিল্যান্ডের পর্বতারোহী স্যার এডমন্ড হিলারির তত্ত্বাবধানে এই বিমানবন্দর নির্মিত হয়েছিল। নির্মাণকাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ, ২০০৮ সালে স্যার এডমন্ড হিলারি এরং শেরপা তেনজিং নোরগে -এর নামানুসারে এই বিমানবন্দরের নতুন নাম রাখা হয় তেনজিং-হিলারী বিমানবন্দর।
আকাশপথে কাঠমান্ডু থেকে মাত্র ৪০ মিনিটের দূরত্ব এই বিমানবন্দরের। বিপদজনক হলেও বিমানবন্দরটি বেশ জনপ্রিয়। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে লুকলা থেকে অধিকাংশ পর্বতারোহীরা মাউন্ট এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে যায়। দিনের বেলা ভালো আবহাওয়াতে লুকলা থেকে কাঠমান্ডুতে প্রতিদিন বিমান চলাচল করে।
লুকলার আবহাওয়া একেক সময় একেক রকম। কখনও ঝুম বৃষ্টি, কখনও আবার রৌদ্রজ্জল আকাশ। এখানে ঝড়ো বাতাস, ঘন মেঘ এবং দৃষ্টিসীমা কমার কারণে প্রায়শই ফ্লাইট দেরি হয় বা বিমানবন্দর বন্ধ করা হয়। কাঁটাতার বেষ্টনী ঘেরা এই বিমানবন্দরে ২৪ ঘণ্টা নেপাল আর্মড পুলিশ বা নেপাল পুলিশ পাহারা দেয়।
লুকলা বিমান বন্দরের অবতরণ এবং আরোহণের জন্য বরাদ্দকৃত যে স্থানটি আছে তা আকারে অনেক ছোট। পিচের আস্তরের রানওয়ের এই বিমানবন্দরে শুধুমাত্র হেলিকপ্টার এবং অন্যান্য ছোট বিমান অবতরন করতে পারে। এর রানওয়ে ৫২৭ মি (১,৭২৯ ফু) × ৩০ মি (৯৮ ফু) এবং ১১.৭ শতাংশ ঢালু। লুকলা বিমানবন্দরের উচ্চতা ৯,৩৩৪ ফুট (২,৮৪৫ মি)।
এখানে ০৬ রানওয়ে শুধুমাত্র বিমান অবতরন এবং রানওয়ে ২৪ শুধুমাত্র বিমান উড্ডয়নের জন্য ব্যবহৃত হয়। স্বল্প রানওয়ে এবং ভূখণ্ডের কারণে এখানে বড় বিমান অবতরন সম্ভব নয়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮,০০০ ফুট বা ২,৪৩৮ মিটার উপরে অবস্থিত এই বিমানবন্দরে নেই কোনও উন্নত ট্রাফিক কন্ট্রোল সিস্টেম। যে কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে এখানে।
নির্মাণের ১০ বছর পর ১৯৭৩ সালের ১৫ অক্টোবর নেপাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান অবতরনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনজন ক্রু এবং তিনজন যাত্রী অক্ষত ছিলো। এরপর ৯ জুন ১৯৯১, নেপাল এয়ারলাইন্সের কাঠমান্ডু থেকে আগত একটি বিমান অবতরনের সময় খারাপ আবহাওয়ায় বিধ্বস্ত হয়। বিমানে থাকা ৩ জন ক্রু এবং ১৪ জন যাত্রী জখম হয়।
- আরো পড়ুন: ৩০ এরপর বাচ্চা নিলে আপনি যে সমস্যার মুখোমুখী হবেন
- আরো পড়ুন: সন্তান জন্ম দেবার পর যে ৭টি খাবার খেতে ভুলবেন না
- আরো পড়ুন: নারীদের প্রস্রাবে সংক্রমণ কেন হয়, করণীয় কি?
২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯২, রয়াল নেপালের একটি বিমান উড্ডয়নের সময় হোঁচট খায় এবং মেরামতের অযোগ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।তবে বারজন যাত্রী এবং ৩ জন ক্রুর সবাই বেঁচে যায়। ১২ অক্টোবর ২০১০, সীতা এয়ারের একটি বিমান অবতরনের সময় ব্রেক নষ্ট হয়ে রানওয়ের বাইরেরে দেয়ালে আটকে যায়।
সৌভাগ্যবশত সব যাত্রী এবং ক্রু আহত অবস্থায় বের হয়ে আসতে পেরেছিল। বিমানের সম্মুখভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩, এয়ার ডিনাস্টির একটি হেলিকপ্টার বেষ্টনীর কাঁটাতারে আটকে বিধ্বস্ত হয়। ৩ জন যাত্রী এবং ক্যাপ্টেন বেঁচে যায়। কয়েকদিন পর একজন যাত্রী মারা যান।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।