সরকারের সাথে সমঝোতা করার চেষ্টা করছে হেফাজত

স্টাফ রিপোর্টার :: হেফাজত ইসলামের কয়েকজন নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার পর পরই সরকারের সাথে সমঝোতার চেষ্টা করছে দলটির নেতারা। ইতোমেধ্যে হেফাজত ইসলামের কয়েকজন নেতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাও করেছেন। সেসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কওমি মাদ্রাসা খুলে দেওয়া এবং ধরপাকড় বন্ধ করার জন্য অনুরোধ জানান হেফাজত ইসলামের নেতারা।

ধরপাকড়ের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ঢালাওভাবে ধরপাকড় হচ্ছে না, বরং সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই এই ধরপাকড় করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে এবং আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।’

কওমি মাদ্রাসা খুলে দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার।’ জানা গেছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে হেফাজতের নেতারা মূলত নিজেদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হিসাবে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে।

সংগঠনটির একজন কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না- সেটা তারা বোঝাতে চেয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে।

হেফাজতের ঐ নেতা আরো জানান, তারা মনে করছে, সরকার তাদেরকে প্রতিপক্ষ বা রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে দেখছে। সেজন্য তারা সরকারকে বোঝাতে চাইছেন যে, হেফাজতে ইসলাম সরকারের কোনো প্রতিপক্ষ নয়।

তিনি বলেন, সরকার যেন কঠোর অবস্থান থেকে সরে এসে হেফাজত নেতাদের গ্রেপ্তার অভিযান বন্ধ করে এবং গ্রেপ্তারকৃতরা যাতে আইনগত সব সহায়তা নিতে পারে- সে ব্যাপারে তারা সরকারের সাথে সমঝোতার চেষ্টা করছে।

অন্যদিকে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব নুরুল ইসলাম জেহাদী বলেন, একটা ভুল বোঝাবোঝি কারণে সরকারের সাথে তাদের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে আলোচনায় সেটাই মূল বিষয় ছিলো।

তিনি বলেন, ভুল বোঝাবুঝিতো আছে। এগুলোর নিরসন হলে অগ্রগতি সাধিত হবে ইনশাআল্লাহ। ভুল বোঝাবুঝির কারণেইতো দূরত্ব সৃষ্টি হয়। তার মানে এই নয় যে আমরা সরকারের ভেতরে ছিলাম। আমরা স্বতন্ত্রভাবেই হেফাজতের কাজ করছিলাম।

নুরুল ইসলাম জেহাদী আরও বলেন, ‘গত ২৬, ২৭ এবং ২৮ মার্চ অনাকাঙ্খিত বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। সেজন্য আমরা মনে করলাম, কিছু আলাপ আলোচনা করলে ভুল বোঝাবুঝির নিরসন হবে। এই ধারণা নিয়ে হঠাৎ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখাও করি। দুই পক্ষের কথার মাধ্যমে আশা করা যায় যে, ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে।’

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে মঙ্গলবার রাতে হেফাজত নেতারা নিজেরা বৈঠকে বসেন। সূত্র মতে, সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, একটি নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া সংক্রান্ত চিঠি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারা দেবেন। তবে সেই চিঠি প্রকাশের জন্য গণমাধ্যমকে দেয়া হবে, নাকি গোপনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেয়া হবে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

হেফাজতের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, হেফাজতের চট্টগ্রামের দুই নেতাকে এই চিঠির খসড়া তৈরি করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গত ২৬ ও ২৭ মার্চের ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ এবং এখানে হেফাজতের যদি কোনো ভূমিকা থাকে সেই ভূমিকার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়েছে। এই চিঠিতে কওমি মাদ্রাসা খুলে দেওয়া এবং আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার না করাসহ বেশকিছু অনুরোধ জানানো হবে প্রধানমন্ত্রীকে। তবে কবে এই চিঠিটি পাঠানো হবে, সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এগুলো দেখুন

কলকাতা-দিল্লির টর্চার সেলের সন্ধান দিল র‌্যাব

কলকাতা-দিল্লির টর্চার সেলের সন্ধান দিল র‌্যাব

কলকাতা-দিল্লির টর্চার সেলের সন্ধান দিল র‌্যাব স্টাফ রিপোর্টার :: ইউরোপ-অষ্ট্রেলিয়ার পাঠানোর কথা বলে দেশের বিভিন্ন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *