স্টাফ রিপোর্টার :: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত যে সকল রোগীরা সুস্থ হওয়ার পর অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিয়েছে তাদের দ্বিতীয় ডোজ না নিলেও সমস্যা নাই। কারণ তাদের শরীরে এক ডোজ ভ্যাকসিনেই যথেষ্ট পরিমাণে এন্টিবডি তৈরি হয়ে যায়। তাই এ সকল রোগীদের দ্বিতীয় ডোজ না নিলেও চলে।
আজ (রোববার ২৩ মে) উপাচার্য মহোদয় তার কার্যালয়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে তাদের অন্য কোনো কোম্পানির ভ্যাকসিন দেয়া যায় কিনা তা নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে।
দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রথম ডোজ নেওয়ার ৩ থেকে ৪ মাস পরেও দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন নেওয়া যায়। ইতোমধ্যে যারা প্রথম ডোজ নিয়েছে, আশা করছি, এসময়ের মধ্যেই তাদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দেয়া সম্ভব হবে।
তিনি আরো বলেন, ভারত ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রসহ যেসকল দেশে ভ্যাকসিন রয়েছে তা প্রাপ্তির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ইতোমধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছে। এছাড়াও ইতোমধ্যে চীনা কোম্পানি সিনোভেক উৎপাদিত ভ্যাকসিন পাওয়া গেছে। ফাইজার কোম্পানির ভ্যাকসিন, রাশিয়ার ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি পাওয়া যাবে। তাই ভ্যাকসিন নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।
এদিকে ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্বের সমস্যা ও সমাধানের চ্যালেঞ্জসমূহ চিহ্নিত করা, উত্তরণের উপায় সমূহ খুঁজে বের করাসহ সর্বাধুনিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার বিষয়ে দেশি বিদেশী বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে ভারচুয়ালি আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সেমিনারে অংশ নেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দূরীকরণে গবেষণা ও বিশ্বব্যাপী পারস্পরিক সহযোগিতামূলক কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। এক্ষেত্রে সর্বাধুনিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে নিঃসন্তান দম্পতিদের হাহাকার দূর করতে হবে।
উপাচার্য বলেন, বিশ্বের ১৬৮ মিলিয়ন দম্পতি ইনফার্টিলিটির সমস্যায় ভূগছেন। দেখা যায় প্রতি ১০ দম্পতির এক ভাগের বন্ধ্যাত্বের কোনো না কোনো সমস্যা রয়েছে। যা বৈবাহিক জীবন, পারিবারিক জীবন ও সামাজিক জীবনে নানা সমস্যা তৈরি করছে। তাই রোগীদের বন্ধ্যাত্বের সঠিক কারণ চিহ্নিত করার সাথে সাথে সর্বাধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে এই সমস্যা দূরীকরণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিএসএমএমইউ’র অবস এন্ড গাইনী বিভাগ, রিপ্রোডাকটিভ এন্ডোক্রাইনোলজি এন্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগ যাতে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দূরীকরণে বিরাট অবদান রাখতে পারে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সকল ধরণের সহায়তা প্রদান করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস এন্ড গাইনী বিভাগ আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, অবস গাইনী বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. তৃপ্তি রাণী দাস, যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হোমারটন ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. অনিল গুডি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এদিকে বিএসএমএমইউ’র জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রশান্ত মজুমদারের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন সেন্টারে রোববার ১৯৯ জন করোনার দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন। পিসিআর ল্যাবে এখন পর্যন্ত ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ২৯৬ জনের করোনা টেস্ট করা হয়েছে। ফিভার ক্লিনিকে ৯৬ হাজার ৪৪৮ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিয়েছে। কোভিড-১৯ ইউনিটে ৮ হাজার ৭৪৮ জন রোগী সেবা নিয়েছেন।