হাইকোর্টের ক্ষোভ: ডাক্তার-পুলিশের পাল্টা বিবৃতি

স্টাফ রিপোর্টার :: চলমান লকডাউনে রাস্তার ‘মুভমেন্ট পাস’ নিয়ে চিকিৎসক, ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের বাগবিতণ্ডার ঘটনায় দুই পেশাজীবী সংগঠনের পাল্টাপাল্টি বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট।

আজ (মঙ্গলবার ২০ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।

আদালত বলেন, ঐ ঘটনায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দেওয়া সমীচীন হয়নি। তাদের এমন আচরণ অনাকাঙ্ক্ষিত। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে এমন আচরণ কাম্য নয়।

এর আগে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে চিকিৎসক, পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উত্তেজনাপূর্ণ বাদানুবাদ ও অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি প্রতিবাদ জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার মজুমদার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত এ প্রতিষ্ঠানের লোগো সংবলিত গাড়িতে বাড়ি ফিরছিলো। পুলিশ তার গাড়ি থামালে পরিচয় দেওয়ার পরও তার চিকিৎসক পরিচিতি ভুয়া বলে তাকে অসৌজন্যমূলকভাবে গাড়ি থেকে নামতে বলা হয়। ডা. সাঈদা তার নাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সংবলিত অ্যাপ্রোন পরা অবস্থায় ছিলো তিনি। তারপরও পুলিশ তার সঙ্গে অসৌজন্যমুলক আচরণ করেন।

এতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন, যার খণ্ডিত চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। এ ক্রান্তিলগ্নে দেশ সেবায় নিবেদিত চিকিৎসককে অপমান ও অপদস্থ করায় স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। যা দেশব্যাপী চিকিৎসাসেবা ব্যাহত করার শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় মেডিকেল কর্তৃপক্ষ একজন চিকিৎসককে হয়রানির প্রতিবাদ জানাচ্ছে ও চলমান কোভিড চিকিৎসার স্বার্থে স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

অন্যদিকে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চেকপোস্ট চলাকালে চিকিৎসককে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরিচয়পত্র দেখাতে বললে তিনি ন্যক্কারজনকভাবে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। তিনি শুধু ঐ পুলিশ সদস্যদের অপমান করেনি গোটা পুলিশ বাহিনীকে কটাক্ষ ও হেয়প্রতিপন্ন করেছে। শুধু তাই নয়, তিনি নিজ পেশার পরিচয় বাদ দিয়ে অপ্রাসঙ্গিক পরিচয় তুলে ধরে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে। জাতির সামনে পেশাজীবী সংগঠনগুলোকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করেন তিনি। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ সদস্যদের প্রতি চিকিৎসকের এহেন অপেশাদার ও অরুচিকর আচরণে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য মর্মাহত। বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এ ঘটনার তীব্র নিন্দাসহ প্রতিবাদ জানাচ্ছে ও একই সঙ্গে ঐ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চে অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ সোমবার বাকবিতণ্ডার ওই ঘটনা নজরে আনেন। তিনি আদালতকে বলেন, আমি জনস্বার্থে একজন চিকিৎসককে পুলিশি হয়রানির এ ঘটনা আপনাদের কাছে উপস্থাপন করছি। আদালত বলেন, পুলিশ-চিকিৎসক বাকবিতণ্ডা করেছেন। আজ আদালত এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এগুলো দেখুন

কোম্পানী ও সমিতির আইন

কোম্পানী ও সমিতির আইন

কোম্পানী ও সমিতির আইন> কোম্পানী খোলতে চাচ্ছেন! কেমন হবে আপনার কোম্পানী, বীমা,নাকি, এনজিও,নাকি সমবায় সমিতি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *