জেনে নিন হাইপোগ্লাইসেমিয়া কেন হয়? আসুন এ বিষয়ে আজকে আলোচনা করে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। ডায়াবেটিস আক্রান্তদের কাছে হাইপো (হাইপোগ্লাসেমিয়া) একটি প্রচলিত শব্দ। বিশেষ করে টাইপ-১ বা ইনসুলিন-নির্ভরশীল রোগীদের ক্ষেত্রে। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে নিচে নেমে যাওয়াকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলে।
স্বাভাবিক মাত্রা হলো খালি পেটে ৬.১ মিলিমোল প্রতি লিটারে এবং খাবারের ২ ঘণ্টা পর ৭.৮ মিলিমোল প্রতি লিটারে থাকা উচিত। রক্তের শর্করা ঘন ঘন কমে গেলে বা বেশি হলে দেহ ও মনের ওপর বেশ চাপ সৃষ্টি হয়। খুব বেশি হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়।
- আরো পড়ুন: পাইলস সারাতে কী খাবেন, কী খাবেন না?
- আরো পড়ুন: পাইলস কেন হয় ও লক্ষণ
- আরো পড়ুন: পাইলস রোগ সম্পর্কে জানুন
হাইপোগ্লাইসেমিয়া কেন হয় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বারডেমের চিফ নিউট্রিশন অফিসার আখতারুন নাহার আলো।
কারণ
১. ইনসুলিন গ্রহণের মাত্রা বা ওষুধের মাত্রা বেশি এবং খাবার কম হলে, অর্থাৎ খাবার ও ওষুধের মধ্যে সমন্বয় না থাকলে।
২. সময় না মেনে দেরিতে খাবার খেলে।
৩. দীর্ঘক্ষণ কঠোর ব্যায়াম করলে।
৪. অসুস্থতার পর খাবার খেতে না পারলে বা খাবার কম খেলে।
৫. অত্যধিক মদ্যপান করলে।
লক্ষণ
অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগা, ঘাম হওয়া, মেজাজ রুক্ষ হওয়া, শরীর কাঁপতে থাকা, দুর্বল বোধ করা, মাথা ব্যথা হওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা, ঘুম ঘুম ভাব হওয়া, খুব বেশি হলে অনেক সময় রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসা
হাইপোগ্লাইসেমিয়ার প্রতিক্রিয়া সামান্য হলে তৎক্ষণাৎ তাকে চিনিযুক্ত তরল খাবার দিতে হবে। যেমন-ফলের রস, দুধ, শরবত ইত্যাদি। আর যদি মনে হয় হাইপো হতে পারে তাহলে বরাদ্দকৃত খাবারটি তখন খেয়ে ফেলতে হবে। যদি রোগী অজ্ঞান হয়ে যায় তাহলে শিরায় গ্লুকোজ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে অথবা যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিতে যেতে হবে।
- আরো পড়ুন: পায়ুপথের রোগ মানেই পাইলস নয়
- আরো পড়ুন: পায়ুপথে ফিস্টুলা কীভাবে বুঝবেন
- আরো পড়ুন: নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারণ ও করণীয়
প্রতিরোধ
১. সারা দিনে ৫ থেকে ৬ বার ৩ ঘণ্টা বিরতি দিয়ে খাবার খেতে হবে।
২. খাবার গ্রহণের সাথে ওষুধ অথবা ইনসুলিনের সমন্বয় থাকতে হবে।
৩. খাবারের অনেক আগে ইনসুলিন দেওয়া যাবে না। অথবা ইনসুলিন নিয়ে বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না।
৪. খাবারের মধ্যে থাকতে হবে জটিল শর্করা যেমন-লাল মোটা চাল, ভুসিযুক্ত আটার রুটি, তন্দুর রুটি, ভুট্টা, খেজুর ইত্যাদি।
৫. যে ধরনের ব্যায়াম করলে খাবারের চাহিদা বেড়ে যায়, সে ধরনের ব্যায়াম না করাই ভালো।
৬. যদি দেখা যায় বরাদ্দকৃত খাবার গ্রহণের পরও হাইপোগ্লাইসেমিয়া হচ্ছে, তাহলে পথ্যবিদের শরণাপন্ন হয়ে আবার খাবারের তালিকা ঠিক করে নিতে হবে।
৭. ‘আমি একজন ডায়াবেটিস রোগী’ এ ধরনের একটি কার্ড সঙ্গে রাখলে ভালো হয়। বাড়ির বাইরে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার জন্য অজ্ঞান হয়ে গেলে অনেক সময় স্ট্রোক বা হার্টঅ্যাটাক হয়েছে মনে করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এতে রোগীর প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটতে থাকে।
মনে রাখতে হবে-হাইপারগ্লাইসেমিয়ার চেয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়া অধিক বিপজ্জনক।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন। এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।