আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: চীনা রকেটের ধ্বংসাবশেষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছুটে আসছে পৃথিবীর বুকে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এটা সাগরে বা জনশূন্য স্থানে পড়তে পারে। তবে এ নিয়ে বিপদজনক তথ্য দিয়েছে ইতালিয়ান মহাকাশ সংস্থা। এর ভিত্তিতে ইতালির ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে জরুরি সতর্কবার্তাও জারি করেছেন সরকার।
এ বিষয়ে গতকাল (শুক্রবার ৭ মে) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রের অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সংস্থার বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করে জাতীয় জননিরাপত্তা সংস্থা সিভিল প্রটেকশন ডিপার্টমেন্ট।
চীনা লং মার্চের ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীতে আঘাত হানার সম্ভাব্য সময়কাল ৯ মে রোববার ইতালির স্থানীয় সময় ভোর ২টা ২৪ মিনিট অর্থাৎ ৮মে শনিবার দিবাগত রাতে। তবে ধেয়ে আসা খণ্ডিত রকেটের সাথে বায়ুমণ্ডলের ঘর্ষণ এবং সূর্যের প্রভাব জনিত প্রাসঙ্গিক কারণে সম্ভাব্য অঘটন ৬ ঘণ্টা আগে পরেও হতে পারে।
ইতালির আংশিক মধ্যাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় সবকটি বিভাগে ‘এলার্ট’ জারি করে শনিবার-রোববার জনগণকে যার যার আবাসস্থলে বা অফিস ভবনে বদ্ধ জায়গায় থাকতে বলা হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ বিভাগগুলো হচ্ছে- উমব্রিয়া, লাৎসিও, আবরুৎসো, মোলিসে, কামপানিয়া, বাসিলিকাতা, পুলিয়া, কালাব্রিয়া, সিচিলিয়া ও সার্দেনিয়া। এসব বিভাগের জনগণকে যার যার অবস্থানে কাঁচের দরজা জানালা থেকেও নিরাপদ দূরত্বে থাকতে বলা হয়েছে।
শুক্রবারের জরুরি সভার টেকনিক্যাল টেবিলে যোগ দেন ইতালিয়ান মহাকাশ সংস্থা (স্পেস এজেন্সি) ছাড়াও মন্ত্রী পরিষদের সামরিক উপদেষ্টা পরিষদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ফায়ার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট, বিমান বাহিনী, সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি এবং জাতীয় পরিবেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন সব বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরা।
সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, রোববার পর্যন্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি রেখে।
সভার পর সিভিল প্রটেকশন ডিপার্টমেন্টের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চীনা রকেটের ধ্বংসাবশেষ বড় ভবনের উপর আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা কম। সে কারণে এ মুহূর্তে খোলা জায়গায় থাকা নিরাপদ নই।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ধ্বংসাবশেষ ঠিক কোথায় আছড়ে পড়বে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে যদি সেটি বিভিন্ন ভবনের উপর আঘাত হানে তাহলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি অনিবার্য।
ইতালিয়ান সিভিল প্রটেকশন ডিপার্টমেন্ট আরো জানিয়েছে, এমন বিপদজনক সময়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার যেকোনো ভবনের নিচতলা, আন্ডারগ্রাউন্ডে অথবা কংক্রিটের প্রশস্ত দেয়াল আছে এমন যেকোনো স্থান এবং ভবনের পিলারের আশপাশের এরিয়া নিরাপদ আশ্রয়স্থল হতে পারে।
রকেটের ধ্বংসাবশেষের ছোট ছোট অংশ ভূপৃষ্ঠে আছড়ে পড়ার সময় দিনের আলোতে খালি চোখে দেখতে পাবার সম্ভাবনা একেবারে কম। ধ্বংসাবশেষের বড় বড় অংশই টিকে থাকতে পারে ভূপৃষ্ঠে। রকেটের ধ্বংসাবশেষ আঘাত হানার পর যদি সেটা কারো চোখে পড়ে তাহলে সেটি স্পর্শ না করতে কঠোর হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। ধ্বংসাবশেষ থেকে কমপক্ষে ২০ মিটার দূরে থেকে প্রশাসনকে দ্রুত জানাতে বলা হয়েছে।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুণ।