ওয়েব ডিজাইনের জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো হবে?

ওয়েব ডিজাইনের জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো হবে? আসুন জেনে নেই। প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বর্তমানে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে ইন্টারনেট। যেকোনো বিষয় আমরা এখন ঘরে বসে অনলাইনে পেতে বা জানতে পারি। যেকোনো কোম্পানি বা প্রচারণা বা ব্যবসার জন্য বর্তমানে সবচেয়ে উপযোগী মাধ্যম হলো ওয়েবসাইট৷ ওয়েবসাইট সাধারণত কোনো ওয়েব সার্ভার, যেখানে বিভিন্ন তথ্য সম্বলিত পৃষ্ঠা, ছবি, অডিও, ভিডিও এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করা হয়। এই সার্ভার বা পেজগুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে অ্যাক্সেস করা যায়।

ওয়েব ডিজাইনের জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো হবে?

ওয়েব পেজ বলতে মূলত একটি এইচটিএমএল (HTML) ডকুমেন্টকে বোঝায়, যা প্রধানত এইচটিটিপি (HTTP) প্রোটোকলের মাধ্যমে ওয়েব সার্ভার থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ওয়েব ব্রাউজারে স্থানান্তরিত হয়। এই সমস্ত উন্মুক্ত ওয়েবসাইটগুলোকে সমষ্টিগতভাবে www বা World Wide Web বলে অবিহিত করা হয়।

যে কেউই চাইলে ওয়েবসাইট খুলতে পারে, তবে এর জন্য কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হয়৷ প্রথমে ও



য়েবসাইটের জন্য একটি ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। অনেকেই বেশ সাশ্রয়ী প্যাকেজে ও প্লানে ওয়েব হোস্টিং প্রদান করে থাকেন, পছন্দ অনুযায়ী কিনে নিতে পারেন।

এবং সব শেষে ওয়েব পেজটি ডিজাইন করতে হবে। যতই দিন যাচ্ছে প্রযুক্তির ব্যবহার ততই বাড়ছে। তাই বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগের পাশাপাশি, ব্যবসার কাজের জন্যও ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিজেদের পণ্য ও সেবা একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সবার সামনে প্রকাশ করছে । ফলে তারা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তাদের ব্যবসা প্রসার সহ নানাবিধ সুবিধা পাচ্ছে।

ঘরে বসে অনলাইনে ক্রেতারা ওয়েবসাইট থেকে পছন্দের পণ্য অর্ডার করছে এবং হোম ডেলিভারি পাচ্ছে, করতে পারছে অনলাইন পেমেন্টও। ওয়েবসাইটকে আকর্ষণীয় করতে দরকার ওয়েব ডিজাইন করা। বর্তমান সময়ে ওয়েব ডিজাইন একটি লাভজনক পেশা, ধারণা থাকলে এবং কাজে দক্ষ হলে সহজেই যে কেউ ওয়েব ডিজাইন করতে পারেন। এর জন্য অনলাইন মার্কেট প্লেসে বেশ ভালো রেসপন্স আসে। সারা বিশ্বে প্রচুর সংখ্যক ওয়েব ডিজাইনার আছেন যারা প্রতিনিয়ত বিপুল অর্থ উপার্জন করছেন।

ওয়েব ডিজাইন কি?

আমরা ফেসবুক ডট কমে ঢুকলে নীল রঙের পেজটি দেখি, যার এক পাশে একাউন্ট ইনফরমেশন দিয়ে লগ ইন বা সাইন আপের অপশন আছে, এই পেজটি কিন্তু এমনি এমনি তৈরি হয়নি৷ এর জন্য আলাদা করে ডিজাইন করা হয়েছে, আছে কিছূ কোডের কারসাজি। সবকিছু মিলিয়ে কাজ করার পরই আমাদের সামনে হাজির হয় ফেসবুকের নীল পৃষ্ঠাটি। এই পুরো ব্যাপারটি আমাদের সামনে হাজির হয় ওয়েব ডিজাইনের মাধ্যমে। যদি আপনি ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে চান, তবে বেশ কিছু বেসিক জ্ঞান আপনার দরকার হবে। প্রথমে আপনাকে জানতে হবে কিভাবে এইচটিএমএল কোড করতে হয়। এরপর ওয়েবসাইটের পেজ আপনি যেভাবে উপস্থাপন করতে চান, সেভাবে আপনাকে ইফেক্ট ব্যবহার করে টেম্পলেট বানাতে হবে। এটা হতে পারে একটি বিশেষ লেআউট, টাইপোগ্রাফি, অথবা রং এবং ব্যাকগ্রাউন্ড। কিন্তু আপনি যদি শুধু ডিজাইনের দিকে মনযোগ দিতে চান এবং কোডিং করার ইচ্ছা না থাকে, সেই ক্ষেত্রে বিভিন্ন CMS (Content Management System) দিয়ে সহজ কিছু সাইট বানাতে পারেন। যেমন, একটা সিম্পল সাইট বানাতে কষ্ট করে কোডিং করার দরকার নাই। ওয়েব ডিজাইনের জন্য দরকার হচ্ছে একটি ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ। বাজারে অনেক ধরনের ও মডেলের ল্যাপটপ পাওয়া যায়। তবে এত রকমভেদের মধ্যে ঠিক কোনটি আপনার ওয়েব ডিজাইনের ক্ষেত্রে ভালো হবে? আসুন দেখে নিই।

ওয়েব ডিজাইনের জন্য কেমন ল্যাপটপ চাই?

সাধারণত ওয়েব ডিজাইনের জন্য মোটামুটি ল্যাপটপ হলেই হয়। যে সকল ল্যাপটপের ইন্টারনেট গতি ভালো সেগুলো দিয়ে কাজ করতে বেশি সুবিধা। মানে আপনি যেকোনো ল্যাপটপ দিয়েই ওয়েব ডিজাইন করতে পারবেন। ওয়েব ডিজাইনের জন্য আলাদা কনফিগারেশনের কোনো বিশেষ ল্যাপটপ প্রয়োজন নেই।

মনিটর

যেহেতু গ্রাফিক্যাল (graphical) কাজ-কারবার, বড় স্ক্রিন নেওয়াই ভাল হবে। ১৪” চলবে, চাইলে ১৫.৬” ও নিতে পারেন। তবে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার হল মনিটরের মান। অনেকে হয়ত খরচ বাঁচাতে একটা যেন-তেন স্ক্রিন চাচ্ছেন। কিন্তু মনে রাখবেন, স্ক্রিন যদি ভাল কোয়ালিটির না হয় তাহলে চোখে চাপ পড়তে পারে। এর ফলাফল দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি। চোখের জন্য আরামদায়ক, এমন প্রযুক্তির মনিটর এখন পাওয়া যায়। খোঁজ-খবর নিন।

প্রসেসর

যেহেতু পিসির গতি ভালো হলে কাজের গতিও বাড়ে, সেক্ষেত্রে বলা চলে যদি আপনার ল্যাপটপের প্রসেসর যদি ন্যূনতম কোর আই থ্রি হয়, তবে কাজের গতি তূলনামূলক ভালো হবে। প্রসেসর Core i5 বা i7 হলে তো বেশ ভালো। কারণ বেশিিরতবে বাজেট কম হলে একটি ডেস্কটপ বানিয়ে নিন। প্রসেসর আপডেটেড জেনারেশানের ডুয়্যাল কোর ও নিতে পারেন।

মেমোরি

এবার আসি ল্যাপটপের স্পেস নিয়ে। ওয়েব ডিজাইনের জন্য খুব বেশি পরিমানে স্পেস লাগে না, তবে হার্ড ডিস্ক এর বদলে এসএসডি নিতে পারেন। এসএসডি ব্যবহারে পিসির গতি অনেকাংশে বেড়ে যায়। আর যদি বাজেট শর্ট থাকে তাহলে ২৫০ জিবি হার্ডডিস্ক দিয়ে কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন। এতে অবশ্য পিসিতে খুব বেশি ফাইল রাখতে পারবেন না। শুধু ইন্টারনেটের উপর দিয়ে পিসি চালাতে হবে। আপনার বাজেট খুবই কম হলে একটা ডেস্কটপ নিয়ে নিতে পারেন। সেখানে একটা সেকেন্ড হ্যান্ড হার্ডডিস্ক লাগিয়ে নিবেন।

র‌্যাম

যদি ল্যাপটপ ব্যবহার করেন, ৮ জিবি র্যাম হলে ভাল। তবে আপনার যদি বাজেট কম থাকে তাহলে ৪ জিবি দিয়ে কাজ চালাতে পারবেন। অনেক ল্যাপটপে র্যাম কম দেওয়া থাকে। আপনার যদি ল্যাপটপটি পছন্দ হয় কিন্তু মনে হয় যে র্যা্মটা আরও একটু বেশি হলে ভাল হত সেই ক্ষেত্রে আপনি ল্যাপটপ কিনে একটা বাড়তি র্যাম লাগিয়ে নিতে পারেন। তবে তার আগে খোঁজ নিবেন যে ল্যাপটপে বাড়তি র্যাম লাগানোর কোন স্লট ফাঁকা আছে কিনা। আমি আমার ল্যাপটপে ৪ জিবির একটা র্যাম বাড়তি লাগিয়েছিলাম। পারফরমেন্সে ভালই পরিবর্তন আসে। একটি ব্যাপার না বললেই নয়। ডেস্কটপে তুলনামূলক কমে র্যামে ভাল স্পিড পাবেন।

ব্যাটারি

ব্যাটারি নিয়ে অনেক চিন্তা করেন। ভাবেন হয়ত যে ল্যাপটপ নিয়ে সব জায়গায় ঘুরে বেড়াবেন আর কাজ করবেন। কিন্তু আপনি যত ভাল ল্যাপটপই কেনেন না কেন, ল্যাপটপের ব্যাটারি মোবাইলের মত হয় না। সুতরাং বিদ্যুৎ কানেকশন ছাড়া আপনি টুকটাক কাজ করতে পারবেন শুধু। আর দিন দিন ব্যাটারির ক্ষমতা কমতে থাকবে। তাই আমার মতামত হল বাজেট কম থাকলে ব্যাটারিকে কম গুরুত্ব দেয়া। এখন আপনার এলাকায় যদি যদি ঘন ঘন বিদ্যুৎ যায়, তাহলে অবশ্য দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ছাড়া উপায় নাই।



মাদারবোর্ড

মাদারবোর্ড আপনার পছন্দ মতো।বাজারে বিভিন্ন দামের মাদারবোর্ড আছে। মনে রাখবেন মাদারবোর্ড কিন্তু নষ্ট হলে ঠিক করা কঠিন। তাই একবার নষ্ট হলে আবার কিনতে হবে। এই অবস্থায় আপনি একটি বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নিবেন। যদি আপনি ল্যাপটপ কিনতে চান, তাহলে মাদারবোর্ডের উপর আপনার হাত নাই। আপনি বরং একটা একটা ডেস্কটপ কিনতে পারেন। এই ব্যাপারে পরে কথা বলছি। কিন্তু মনে রাখবেন মাদারবোর্ডের সবচেয়ে বড় শত্রু বিদ্যুৎ। যদি ঘন ঘন বিদ্যুৎ যায়, তাহলে মাদারবোর্ড নষ্ট হয়ে যাবে। সেইদিক দিয়ে অবশ্য ল্যাপটপই ভাল। ব্র্যান্ডের কথা বলতে হলে, গিগাবাইট ভালো। আপনি সাড়ে চার হাজার টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন। তবে বাজারে আরও ভাল মানের মাদারবোর্ড আছে। চেষ্টা করবেন একটু বড় স্ক্রিনের ল্যাপটপ নিতে, এতে কাজ করতে সুবিধা হয়।

আচ্ছা, ল্যাপটপ ভালো না ডেস্কটপ?

আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন এতক্ষণে যে আমার পছন্দ ডেস্কটপ। কারণ অনেক সময় যে দামে ল্যাপটপ পাওয়া যায়, একই দামে তুলনামূলক ভালো কনফিগারেশনের ডেস্কটপ পাওয়া যায়। তাছাড়া ডেস্কটপের কর্মক্ষমতা বেশি, রাফ ইউজের ক্ষেত্রে ডেস্কটপ বেশ ভালো গেজেট৷ তবে ডেস্কটপ হোক ল্যাপটপ, তুলনামূলক ভালো কনফিগারেশন বা গতি না থাকলে কোনটাতেই কাজ করে শান্তি বা উপভোগ্য হবে না। তাই প্রথমে ওয়েব ডিজাইনের বেসিক শিখতে শিখতে নিজের বাজেট অনুযায়ী মাথায় ছক কষে নিন, কোন ল্যাপটপ বা ডেস্কটপটি আপনি নিতে চান।

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।

এগুলো দেখুন

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি – কোথায় করবেন এবং কিভাবে করে

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি – কোথায় করবেন এবং কিভাবে করে

জেনে নিন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি – কোথায় করবেন এবং কিভাবে করে । আসুন এ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *