কোম্পানীর নাম যাচাই এবং পরিবর্তনের নিয়ম সম্পর্কে আজকের এই বিষয়বস্তু। চলুন ভালোভাবে জেনে নেই কোম্পানীর নাম বা নাম যাচাই-বাচাই এবং কোম্পানীর নাম পরিবর্তন করতে হলে প্রথমে আমাদের কি কি প্রয়োজন।
১১৷ (১) কোন কোম্পানী এমন নামে নিবন্ধিকৃত হইবে না, যে নামে একটি বিদ্যমান কোম্পানী ইতিপূর্বে নিবন্ধিকৃত হইয়া উক্ত নামেই বহাল আছে অথবা যে নামের সহিত প্রস্তাবিত নামের এমন সাদৃশ্য থাকে যে, উক্ত সাদৃশ্যের ফলে প্রতারণা করা সম্ভব;
তবে বিদ্যমান কোম্পানীটি অবলুপ্ত হওয়ার প্রক্রিয়াধীন থাকিলে এবং রেজিষ্ট্রার কর্তৃক নির্দেশিত পদ্ধতিতে উক্ত কোম্পানী লিখিত সম্মতিদান করিলে, বিদ্যমান কোম্পানীর নামে বা উহার সাদৃশ নামে প্রথমোক্ত কোম্পানীটি নিবন্ধিকৃত হইতে পারে৷
- আরো পড়ুন: কোম্পানী ও সমিতির আইন
- আরো পড়ুন: কোম্পানীর নিয়ামাবলির আইনের দ্বিতীয় খণ্ড
- আরো পড়ুন:নিয়ন্ত্রণ বর্হিভূত দেনার দায়ে জেল আটকে পূর্ণ বেতন ভাতাদি প্রাপ্য
(২) অসতর্কতার কারণেই হউক বা অন্য কোন কারণেই হউক, যদি কোন কোম্পানী উপ-ধারা (১) এ উল্লেখিত সম্মতি গ্রহণ না করিয়া পূর্বে নিবন্ধিকৃত বিদ্যমান কোন কোম্পানীর নামে নিবন্ধিকৃত হয় অথবা বিদ্যমান কোম্পানীর নামের সাদৃশ্য এমন কোন
নামে নিবন্ধিকৃত হয়, যে উক্ত সাদৃশ্যের ফলে প্রতারণা করা সম্ভব, তাহা হইলে প্রথমোক্ত কোম্পানী রেজিষ্ট্রারের নির্দেশ মোতাবেক, অনধিক একশত বিশ দিনের মধ্যে উহার নাম পরিবর্তন করিবে৷
(৩) যদি কোন কোম্পানী উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রদত্ত নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হয় তাহা হইলে উক্ত কোম্পানী অনুরূপ ব্যর্থতা অব্যাহত থাকাকালীন সময়ের প্রতিদিনের জন্য পাঁচশত টাকা করিয়া অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবে; এবং উহার প্রত্যেক কর্মকর্তা, যিনি নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হন তিনিও প্রতিদিনের জন্য একশত টাকা করিয়া অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷
(৪) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপনের দ্বারা, অনভিপ্রেত বলিয়া ঘোষণা করিয়াছে এমন কোন নামে, সরকারের লিখিত পূর্ব অনুমতি ব্যতিরেকে, কোন কোম্পানী নিবন্ধিকৃত করা যাইবে না:
তবে শর্ত থাকে যে, এই আইন প্রবর্তনের পূর্বে নিবন্ধিকৃত কোম্পানীর ক্ষেত্রে এই উপ-ধারার কোন কিছুই প্রযোজ্য হইবে না৷
(৫) জাতিসংঘ বা জাতিসংঘ কর্তৃক গঠিত ইহার কোন সহায়ক সংস্থা অথবা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নামে বা ঐসব নামের শব্দ সংতেগপ সম্বলিত কোন নামে, জাতিসংঘ বা উহার সহায়ক সংস্থার তেগত্রে, জাতিসংঘের সেক্রেটারী জেনারেল এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্ষেত্রে, উহার ডাইরেক্টর জেনারেলের লিখিত পূর্ব অনুমতি ব্যতীত, কোন কোম্পানী নিবন্ধিকৃত করা যাইবে না৷
(৬) যে কোন কোম্পানী উহার বিশেষ সিদ্ধান্তক্রমে (special resolution) এবং রেজিষ্ট্রারের লিখিত অনুমোদন সাপেতেগ উহার নাম পরিবর্তন করিতে পারিবে৷
(৭) কোন কোম্পানী উহার নাম পরিবর্তন করিলে রেজিষ্ট্রার তাহার নিবন্ধন-বহিতে কোম্পানীর পূর্ব নামের পরিবর্তে নূতন নাম লিপিবদ্ধ করিবেন, এবং পরিবর্তিত অবস্থার পরিপ্রেতিগতে উক্ত কোম্পানীর পরিবর্তিত নামে নিগমিতকরণের একটি প্রত্যয়নপত্র প্রদান করিবেন এবং তাহা প্রদানের পর, কোম্পানীর নাম পরিবর্তনের কাজ সমাপ্ত হইবে৷
(৮) নামের পরিবর্তন কোম্পানীর কোন অধিকার বা দায়-দায়িত্বে পরিবর্তন হইবে না অথবা উক্ত কোম্পানী কর্তৃক বা উহার বিরুদ্ধে সূচিত কোন আইনানুগ কার্যধারাকে ত্রুটিপূর্ণ প্রতিপন্ন করিবে না, এবং উক্ত কোম্পানীর পূর্ব নামে উহার বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ কার্যধারা অব্যাহত থাকিলে বা কোম্পানীর দ্বারা সূচিত হইয়া থাকিলে উহা কোম্পানীর নূতন নামে অব্যাহত থাকিবে৷
(৯) কোন কোম্পানী নির্ধারিত ফিস প্রদান করিয়া রেজিষ্ট্রারের নিকট এই মর্মে তথ্য সরবরাহের জন্য আবেদন করিতে পারিবে যে, উক্ত আবেদন পত্রে উল্লেখিত নামে কোন কোম্পানী নিবন্ধিকৃত হইয়াছে বা হইবে বলিয়া প্রস্তাব করা হইয়াছে কি না; এবং রেজিষ্ট্রার এইরূপ আবেদন প্রাপ্তির তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করিবেন৷
সীমিতদায় কোম্পানী সনাক্তকরণ (Indication of Limited Company)
3[১১ক। এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সীমিতদায় কোম্পানী নিম্নবর্ণিতভাবে সনাক্ত করিতে হইবে, যথা:-
(ক) সীমিতদায় পাবলিক কোম্পানীর ক্ষেত্রে উহার নামের শেষে “পাবলিক সীমিতদায় কোম্পানী” বা “PLC.” শব্দসমূহ লিখিতে হইবে;
(খ) সীমিতদায় প্রাইভেট কোম্পানীর ক্ষেত্রে উহার নামের শেষে “সীমিতদায়” বা “LTD.’’ শব্দ লিখিতে হইবে;
(গ) সীমিতদায় এক ব্যক্তি কোম্পানীর ক্ষেত্রে উহার নামের শেষে “এক ব্যক্তি কোম্পানী বা One Person Company বা OPC” শব্দসমূহ লিখিতে হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, ধারা ২৮ এর অধীন মুনাফা ব্যতীত ভিন্ন উদ্দেশ্য বিশিষ্ট সমিতি এবং ধারা ২৯ এর অধীন গ্যারান্টি দ্বারা সীমিতদায় কোম্পানীর ক্ষেত্রে এই ধারার কোনো কিছুই প্রযোজ্য হইবে না।]
সংঘস্মারক পরিবর্তন
১২৷ (১) এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, কোন কোম্পানী উহার বিশেষ সিদ্ধান্তক্রমে, নিম্নলিখিত সকল বা যে কোন কার্য সম্পাদনের প্রয়োজনে, কোম্পানীর উদ্দেশ্য সম্পর্কিত ইহার সংঘস্মারকের বিধানসমূহ পরিবর্তন করিতে পারে, যথা :-
(ক) মিতব্যয়িতা বা অধিকতর দক্ষতার সহিত উহার কার্যাবলী (business) পরিচালনা করা; অথবা
(খ) নূতন বা উন্নততর উপায়ে উহার উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা; অথবা
(গ) যে সকল এলাকায় উহার কার্যাবলী পরিব্যাপ্ত সেই সকল এলাকার সম্প্রসারণ বা পরিবর্তন করা; অথবা
(ঘ) বিদ্যমান পরিস্থিততে কোম্পানীর কার্যাবলীর সহিত সুবিধাজনকভাবে বা লাভজনকভাবে সংযুক্ত হইতে পারে এমন কোন কার্যাবলী পরিচালনা করা; অথবা
(ঙ) সংঘস্মারকে নির্দিষ্টকৃত যে কোন উদ্দেশ্য পরিত্যাগ করা বা উহাতে বাধা-নিষেধ আরোপ করা; অথবা
(চ) কোম্পানীর গৃহীত কোন উদ্যোগের (undertaking) সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ বিক্রয় বা নিষ্পত্তি করা; অথবা
(ছ) অন্য কোন কোম্পানী বা ব্যক্তি-সংঘের সহিত একত্রিত হওয়া৷
- আরো পড়ুন:জমির রেকর্ড বা খতিয়ানের ভুল সংশোধনের পদ্ধতি(Ato Zed)
- আরো পড়ুন:ব্যক্তিগত মামলায় সরকারি কর্মচারীকে গ্রেফতারের বিধান
- আরো পড়ুন:ফৌজদারী মামলায় অব্যাহতি প্রাপ্তদের বেতন ভাতা পরিশোধ সংক্রান্ত
(২) উক্ত পরিবর্তন সাধন সম্পর্কে আবেদন করিবার পর আদালত কর্তৃক তাহা অনুমোদিত না হওয়া পর্যন্ত এবং আদালত কর্তৃক যতটুকু গৃহীত হয় ততটুকুর অতিরিক্ত উহা কার্যকর হইবে না৷
(৩) উক্ত পরিবর্তন অনুমোদনের পূর্বে আদালতকে এই মর্মে সন্তুষ্ট হইতে হইবে যে,
(ক) কোম্পানীর প্রত্যেক ডিবেঞ্চারধারীকে এবং পরিবর্তনের ফলে আদালতের মতে যাহাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হইবে এইরূপ প্রত্যেক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে পর্যাপ্ত নোটিশ দেওয়া হইয়াছে; এবং
(খ) আদালতের বিবেচনায় উক্ত পরিবর্তন সম্পর্কে আপত্তি করার অধিকারী প্রত্যেক পাওনাদার তাহার আপত্তি, যদি থাকে, আদালত কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে উত্থাপনের সুযোগ পাইয়াছে অথবা উক্ত পাওনাদারের সম্মতি গ্রহণ করা হইয়াছে, অথবা তাহার পাওনা বা দাবী পরিশোধ করা হইয়াছে, অথবা আদালতের সন্তুষ্টি মোতাবেক উক্ত পাওনা বা দাবী পরিশোধের জন্য জামানত দেওয়া হইয়াছে :
তবে শর্ত থাকে যে, আদালত বিশেষ কোন কারণবশতঃ কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে এই উপ-ধারার অধীন প্রয়োজনীয় নোটিশ প্রদান করার ব্যাপারে কোম্পানীকে অব্যাহতি দিতে পারে৷
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন। এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।