কোম্পানীর নিয়ামাবলির আইনের দ্বিতীয় খণ্ড> কোম্পানী খোলতে চাচ্ছেন! কেমন হবে আপনার কোম্পানী, বীমা,নাকি, এনজিও,নাকি সমবায় সমিতি খোলতে চাচ্ছেন! হ্যা তাহলে আপনার জন্যই আমাদের আজকের এই আয়োজন।
বীমা কোম্পানী বা এনজিও যেকোন প্রতিষ্ঠান খোলতে চাইলে ধাপে ধাপে জেনে নিন কোন প্রতিষ্ঠানে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হবে আপনার। কোম্পানী ও সমিতির আইন এ সম্পর্কে প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে। আজকে আলোচনা করবো, কোম্পানি গঠন ও নিগমিতকরণ এর দ্বিতীয় খণ্ড নিয়ে।
কোম্পানীর নিয়ামাবলির আইন
নির্দিষ্ট সংখ্যার অধিক সংখ্যক ব্যক্তি-সমন্বয়ে অংশীদারী কারবার ইত্যাদি গঠন নিষিদ্ধ ৪৷
(১) এই আইনের অধীনে কোম্পানী হিসাবে নিবন্ধিকৃত না হইলে, অথবা অন্য কোন আইনের দ্বারা বা অধীনে গঠিত না হইলে, ব্যাংক-ব্যবসা পরিচালনার উদ্দেশ্যে দশের অধিক ব্যক্তি-সমন্বয়ে কোন কোম্পানী, সমিতি বা অংশীদারী কারবার (partnership) গঠন করা যাইবে না৷
(২) এই আইনের অধীনে কোম্পানী হিসাবে নিবন্ধিকৃত না হইলে, অথবা অন্য কোন আইনের দ্বারা বা অধীনে গঠিত না হইলে, বিশ জনের অধিক ব্যক্তি-সমন্বয়ে এমন কোন কোম্পানী, সমিতি বা অংশীদারী কারবার গঠন করা যাইবে না যাহার উদ্দেশ্য হইতেছে ব্যাংক-ব্যবসা ব্যতীত অন্য কোন ব্যবসা পরিচালনা করিয়া উক্ত কোম্পানী, সমিতি, কারবার বা উহার কোন সদস্যের জন্য মুনাফা অর্জন করা৷
- আরো পড়ুন: কোম্পানী ও সমিতির আইন
- আরো পড়ুন:ব্যক্তিগত মামলায় সরকারি কর্মচারীকে গ্রেফতারের বিধান
- আরো পড়ুন:ফৌজদারী মামলায় অব্যাহতি প্রাপ্তদের বেতন ভাতা পরিশোধ সংক্রান্ত
(৩) যৌথ-পারিবারিক ব্যবসা পরিচালনাকারী যৌথ-পরিবারের ক্ষেত্রে এই ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে না :
তবে শর্ত থাকে যে, দুই বা ততোধিক যৌথ-পরিবার মিলিয়া কোন অংশীদারী কারবার, সমিতি বা কোম্পানী গঠন করিলে উহাদের ক্ষেত্রে এই ধারার অন্যান্য উপ-ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে; এবং এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, উক্ত পরিবারসমূহের সদস্যগণের সংখ্যা গণনা করার সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক সদস্যগণকে বাদ দিতে হইবে৷
(৪) কোন কোম্পানী, সমিতি বা অংশীদারী কারবার এই ধারার বিধান লংঘন করিয়া ব্যবসা পরিচালনা করিলে, উহার প্রত্যেক সদস্য উক্ত ব্যবসা হইতে উদ্ভূত দায়-দেনার জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকিবেন৷
(৫) এই ধারার বিধান অমান্য করিয়া গঠিত কোন কোম্পানী, সমিতি বা অংশীদারী কারবারের প্রত্যেক সদস্য অনধিক পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷
সংঘস্মারক
নিগমিত কোম্পানীর গঠন পদ্ধতি
৫৷ পাবলিক কোম্পানী গঠনের ক্ষেত্রে সাত বা ততোধিক ব্যক্তি এবং প্রাইভেট কোম্পানী গঠনের ক্ষেত্রে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি, আইনানুগ যে কোন উদ্দেশ্যে, নিগমিত কোম্পানী গঠন করিতে পারিবে, এবং উহা করিতে চাহিলে, তাহারা তাহাদের নাম
- আরো পড়ুন:নিয়ন্ত্রণ বর্হিভূত দেনার দায়ে জেল আটকে পূর্ণ বেতন ভাতাদি প্রাপ্য
- আরো পড়ুন:সঞ্চয়পত্র কেনার আগে যে বিষয়গুলো অবশ্যই জানা প্রয়োজন
- আরো পড়ুন:সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ অনুসারে সাময়িক বরখাস্তের বিধান
সংঘস্মারকে স্বাক্ষর করিয়া (subscribe) এবং নিবন্ধিকরণ সংক্রান্ত এই আইনের বিধান মোতাবেক অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া সীমিতদায়সহ বা সীমিতদায় ব্যতিরেকে নিম্নরূপ যে কোন কোম্পানী গঠন করিতে পারিবেন, যথা :-
(ক) শেয়ার দ্বারা সীমিতদায় কোম্পানী, অর্থাৎ এমন কোম্পানী যাহার সংঘস্মারক দ্বারা কোম্পানীর সদস্যগণের দায় এর পরিমাণ তাহাদের নিজ মালিকানাধীন শেয়ারের অপরিশোধিত অংশ, যদি থাকে, পর্যন্ত সীমিত রাখা হয়; অথবা
(খ) গ্যারান্টি দ্বারা সীমিতদায় কোম্পানী, অর্থাৎ এমন কোম্পানী যাহার সদস্যগণের দায় এর পরিমাণ কোম্পানীর সংঘস্মারক দ্বারা এইরূপে সীমিত রাখা হয় যে, উক্ত কোম্পানী অবলুপ্তির ক্ষেত্রে তাহারা প্রত্যেকে উহার পরিসম্পদে (asset) একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত অর্থ প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকেন; অথবা
(গ) অসীমিতদায় কোম্পানী, অর্থাৎ এমন কোম্পানী যাহার সদস্যগণের দায় এর কোন নির্দিষ্ট সীমারেখা থাকে না৷
শেয়ার দ্বারা সীমিতদায় কোম্পানীর সংঘস্মারক
৬৷ শেয়ার দ্বারা সীমিতদায় কোম্পানীর ক্ষেত্রে
(ক) সংঘস্মারকে নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলি বিধৃত থাকিবে, যথা :-
(অ) কোম্পানীর নাম, যাহার শেষে “সীমিতদায়” বা “লিমিটেড” শব্দটি লিখিত থাকিবে;
(আ) নিবন্ধিকৃত কার্যালয়ের ঠিকানা;
(ই) কোম্পানীর উদ্দেশ্যসমূহ এবং বাণিজ্যিক (Trading) কোম্পানী ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে, যে সকল এলাকায় উহার উদ্দেশ্য ও কার্যাবলী পরিব্যাপ্ত থাকিবে উহার উল্লেখ;
(ঈ) সদস্যগণের দায় শেয়ার দ্বারা সীমিত, এই মর্মে একটি বিবৃতি; এবং
(উ) যে শেয়ার-মূলধন (share capital) লইয়া কোম্পানী নিবন্ধিকৃত হওয়ার প্রস্তাব করিতেছে, টাকার অংকে উহার পরিমাণ এবং সে অনুসারে নির্দিষ্ট সংখ্যক শেয়ারে উক্ত মূলধনের বিভাজন;
(খ) সংঘস্মারকে স্বাক্ষরকারী প্রত্যেক ব্যক্তির অন্যুন একটি শেয়ার থাকিবে; এবং
(গ) সংঘস্মারকে স্বাক্ষরকারী প্রত্যেক ব্যক্তি তাহার নামের বিপরীতে তৎকর্তৃক গৃহীত শেয়ার সংখ্যা উল্লেখ করিবেন৷
গ্যারান্টি দ্বারা সীমিতদায় কোম্পানীর সংঘস্মারক৭৷ গ্যারান্টি দ্বারা সীমিতদায় কোম্পানীর ক্ষেত্রে-
(ক) সংঘস্মারকে নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলি বিধৃত থাকিবে, যথা :-
(অ) কোম্পানীর নাম, যাহার শেষে “সীমিতদায়” বা “লিমিটেড” শব্দটি লিখিত থাকিবে;
(আ) নিবন্ধিকৃত কার্যালয়ের ঠিকানা;
(ই) কোম্পানীর উদ্দেশ্যসমূহ এবং বাণিজ্যিক কোম্পানী ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে, যে সকল এলাকায় কোম্পানীর উদ্দেশ্যে ও কার্যাবলী পরিব্যাপ্ত থাকিবে, উহার উল্লেখ;
(ঈ) সদস্যগণের দায় গ্যারান্টি দ্বারা সীমিত, এই মর্মে একটি বিবৃতি; এবং
(উ) কোম্পানীর সদস্য থাকাকালে অথবা সদস্যপদ পরিসমাপ্তির এক বছরের মধ্যে কোম্পানী অবলুপ্ত হইলে, সদস্যগণের প্রত্যেকে কোম্পানীর অবলুপ্তির পূর্বে বা ক্ষেত্রমত সদস্যপদ পরিসমাপ্তির পূর্বে কোম্পানীর উপর যে সকল ঋণ ও দায়-দেনা বর্তাইয়াছে উহা পরিশোধের জন্য কোম্পানীর অবলুপ্তির ব্যয় ও এতদ্সংক্রান্ত চার্জ পরিশোধের জন্য এবং প্রদায়কগণের নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক অধিকারের সমন্বয় সাধনের জন্য একটি নির্দিষ্ট অংকের অর্থ প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এই মর্মে একটি বিবৃতি; এবং
(খ) কোম্পানীর যদি কোন শেয়ার-মূলধন থাকে, তাহা হইলে-
(অ) উহা যে পরিমাণ শেয়ার-মূলধন লইয়া নিবন্ধিকৃত হওয়ার প্রস্তাব করিতেছে, টাকার অংকে উহার পরিমাণ এবং সে অনুসারে নির্দিষ্ট সংখ্যক শেয়ারে উক্ত মূলধনের বিভাজন উল্লেখ থাকিতে হইবে;
(আ) সংঘস্মারকে স্বাক্ষরকারী প্রত্যেক ব্যক্তি অন্যুন একটি শেয়ার গ্রহণ করিবেন; এবং
(ই) সংঘস্মারকে স্বাক্ষরকারী প্রত্যেক ব্যক্তি তাহার নামের বিপরীতে তৎকর্তৃক গৃহীত শেয়ারের সংখ্যা উল্লেখ করিবেন৷
অসীমিতদায় কোম্পানীর সংঘস্মারক৮৷ অসীমিতদায় কোম্পানীর ক্ষেত্রে-
(ক) উহার সংঘস্মারকে নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলি বিধৃত থাকিবে, যথা :-
(অ) কোম্পানীর নাম ;
(আ) কোম্পানীর নিবন্ধিকৃত কার্যালয়ের ঠিকানা ;
(ই) কোম্পানীর উদ্দেশ্যসমূহ এবং বাণিজ্যিক কোম্পানী ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে, যে সকল এলাকায় উহার উদ্দেশ্য ও কার্যাবলী পরিব্যাপ্ত থাকিবে উহার উল্লেখ; এবং
(খ) যদি কোম্পানীর শেয়ার-মূলধন থাকে, তাহা হইলে-
(অ) সংঘস্মারকে স্বাক্ষরকারী প্রত্যেক ব্যক্তি অন্যুন একটি শেয়ার গ্রহণ করিবেন; এবং
(আ) সংঘস্মারকে স্বাক্ষরকারী প্রত্যেক ব্যক্তি তাহার নামের বিপরীতে তৎকর্তৃক গৃহীত শেয়ারের সংখ্যা উল্লেখ করিবেন৷
সংঘস্মারক মুদ্রণ, স্বাক্ষরকরণ ইত্যাদি
৯৷ প্রত্যেক কোম্পানীর-
(ক) সংঘস্মারক মুদ্রিত হইতে হইবে;
(খ) সংঘস্মারকে বিধৃত বিষয়াবলী ধারাবাহিকভাবে সংখ্যানুক্রমিক অনুচ্ছেদে বিভক্ত থাকিবে; এবং
(গ) সংঘস্মারকে স্বাক্ষরকারী প্রত্যেক ব্যক্তি তাহার ঠিকানা এবং পরিচয়সহ অন্ততঃ দুইজন স্বাক্ষীর সম্মুখে স্বাক্ষর করিবেন এবং স্বাক্ষীগণ উক্ত স্বাক্ষর সত্যায়ন করিবেন৷
সংঘস্মারক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বাধা-নিষেধ১০৷ (১) এই আইনে স্পষ্ট বিধান করা হইয়াছে এইরূপ ক্ষেত্র ও পদ্ধতি ব্যতিরেকে এবং উক্ত বিধানে অনুমোদিত সীমার অতিরিক্ত কোন পরিবর্তন সংঘস্মারকে বিধৃত শর্তাবলীতে করা যাইবে না৷
(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, এই আইনের অন্য কোন নির্দিষ্ট বিধান অনুযায়ী যে সকল বিধি-বিধান কোম্পানীর সংঘস্মারকে উল্লেখ করিতে হইবে কেবলমাত্র সেইগুলি সংঘস্মারকে বিধৃত শর্তাবলী বলিয়া গণ্য হইবে৷
(৩) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ম্যানেজিং এজেন্ট বা ম্যানেজারের নিয়োগ সংক্রান্ত বিধানসহ সংঘস্মারকের অন্যান্য বিধান কোম্পানীর সংঘবিধির ন্যায় একই পদ্ধতিতে পরিবর্তন করা যাইবে; কিন্তু সংঘস্মারকের বিধানসমূহ অন্য কোনভাবে পরিবর্তনের জন্য যদি এই আইনে সুস্পষ্ট কোন বিধান থাকে, তবে সংঘস্মারকের বিধানগুলি সেই প্রকারেও পরিবর্তন করা যাইবে৷
(৪) এই আইনের কোন বিধানে সংঘবিধির কোন উল্লেখ থাকিলে, উক্ত বিধানে উপ-ধারা (৩) এ উল্লেখিত সংঘস্মারকের অন্যান্য বিধানসমূহও উল্লেখিত হইয়াছে মর্মে উক্ত বিধানের ব্যাখ্যা করিতে হইবে৷
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন। এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।