গুগল এ্যাডসেন্স থেকে টাকা আয় ।সম্পূর্ণ এ্যাডসেন্স গাইড । চলুন এ বিষয়ে আমি আজকে আপনাদের বিস্তারিত জানাবো আশা করি আপনারা আলোচনার শেষ পর্যন্ত থাকবেন। গুগল এ্যাডসেন্স থেকে টাকা আয় : earn money with google AdSense । আপনি কি অনলাইন আয়ের প্রতি আগ্রহী ? ঘরে বসে আয় করতে চান? অনলাইনে আয় করার জনপ্রিয় মাধ্যমগুলোর মধ্যে গুগল এ্যাডসেন্স আছে প্রথম স্থানে।
গুগল এ্যাডসেন্স থেকে টাকা আয় ।সম্পূর্ণ এ্যাডসেন্স গাইড
এ্যাডসেন্স কি?
এ্যাডসেন্স হলো গুগলের একটি এড নেটওয়ার্ক যেটি আপনার ব্লগে ইউজ করে ব্লগ থেকে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করতে পারবেন। এটা সম্পূর্ণ সিকিউর এবং নিরাপদ একটি মাধ্যম। অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাজারো এ্যাড নেটওয়ার্কের মধ্যে গুগল এ্যাডসেন্স হচ্ছে সবার সেরা।
- আরো পড়ুন: কিভাবে ব্যাক এন্ড ডেভেলপার হবো
- আরো পড়ুন: ফুলস্ট্যাক ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি?
- আরো পড়ুন: AdSense থেকে ভালো উপার্জন হয় এমন ৩ ধরনের সাইট
বুঝতে পারছেন এটি গুগলের প্রোডাক্ট। অনেকেই বলে থাকে এ্যাডসেন্স হলো সোনার হরিণ কিন্তু বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশি ব্লগারদের জন্য এটি খুবই সহজ একটি মাধ্যম। কেননা বর্তমানে গুগল এডসেন্স বাংলা ভাষা সাপোর্ট করে। আপনি বাংলায় ব্লগিং করে সেখানে গুগল এ্যাডসেন্স এর এড ব্যবহার করে ঘরে বসে আয় করতে পারবেন। এমনকি বাংলাদেশে প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ ডলার আসছে এই গুগল এডসেন্স থেকে।
গুগল এডসেন্স এর নিয়ম
খুব সহজ একটি ব্যাপার। আপনার একটি ব্লগ থাকবে । সেখানে মাঝে মাঝে গুগল এ্যাডসেন্স এর একটি জাভাস্ক্রিপ্ট কোড বসাতে হবে। আপনি ব্লগের যে জায়গায় কোড স্থাপন করবেন, সেই জায়গায় গুগল কনটেন্ট এর সঙ্গে টপিক মিলিয়ে একটি অ্যাড শো করবে। যখন ভিজিটররা আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবে ইনফর্মেশন কালেকশন করার জন্য এবং বিভিন্ন পেজে ঘুরাঘুরি করবে।
বিভিন্ন পেজের মাঝখানে থাকা এড এর উপরে ক্লিক করবে । তখন আপনার ইকাম হতে থাকবে। আপনি সেখান থেকে ৬৮ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন পাবেন।
কেন গুগল এ্যাডসেন্স
এখন আসুন জেনে নেই গুগল এডসেন্স কেন? গুগল এ্যাডসেন্স হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় এড নেটওয়ার্ক এবং এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ । এটা সঠিক ভাবে পেমেন্ট করে এটা খুবই সহজ এবং নিরাপদ একটি মাধ্যম।
এমনকি অনেক ব্লগাররা বর্তমানে গুগল এ্যাডসেন্স এর সঙ্গে media.net এবং অন্যান্য নেটওয়ার্ক ইউজ করে থাকেন।
আমি আগেই বলেছি অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাজারো এড নেটওয়ার্কের মধ্যে গুগল এডসেন্স হল সেরা। এখন প্রশ্ন আসতে পারে এটা কি পরিমানে পে করে? এটা বিভিন্ন দেশের ভিজিটর উপর নির্ভর করে প্রতি ক্লিকে ০.০১ থেকে শুরু করে ৫০ ডলারের উপরে পে করে ।
অবিশ্বাস্য লাগলেও সত্য গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে অনেক ব্লগার প্রতি মাসে ৫-৬ কোটি টাকা আয় করে। জনপ্রিয় একটি সাইট mashable.com শুধুমাত্র গুগল এ্যাডসেন্স থেকে ৫ কোটির উপরে টাকা আয় করে প্রতিমাসে।
- আরো পড়ুন: ওয়েব ডেভেলপমেন্টের ভবিষ্যৎ চাহিদা ও ক্যারিয়ার
- আরো পড়ুন: ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করে মাসে লক্ষ টাকা আয় করুন
- আরো পড়ুন: নতুন গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের জন্য ১০টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস
এ্যাডসেন্স এর জন্য কি কি লাগবে?
এ্যাডসেন্স সম্পর্কে জানা জানলাম। এখন জানতে হবে একটি এ্যাডসেন্স একাউন্টের জন্য কি কি লাগবে । আপনি গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয় করতে চাইলে প্রথমত আপনার একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট লাগবে। ব্লগ বলতে বুঝাতে চাচ্ছি একটি ইনফরমেটিভ ওয়েবসাইট, যেটাতে আপনি ইনফর্মেশন কালেক্ট করে আপডেট করবেন এবং অডিয়েন্স রা আপনার ওয়েবসাইটে সেই ইনফরমেশনগুলো খুঁজতে আসবে।
যখন তথ্য খুঁজতে এসে এ্যাড এর উপর ক্লিক করবে তখনই আপনি টাকা পাবেন । সুতরাং এ্যাডসেন্স এর জন্য একটি ওয়েবসাইট গুরুত্বপূর্ণ । দ্বিতীয়ত; একটি ইমেইল এড্রেস । এই মুহূর্তে আর কোন কিছুর প্রয়োজন নেই ।
এ্যাডসেন্স এর জন্য ওয়েব সাইট তৈরি
যেভাবে ব্লগের জন্য এ্যাডসেন্স এর এপ্রোভাল পাবেন
কিভাবে গুগোল এ্যাডসেন্স এ এ্যাপ্রুভাল পাবেন? গুগল এ্যাডসেন্স ‘এ্যাপ্রুভাল পাওয়ার জন্য প্রথমত আমাদের একটি দৃষ্টিনন্দন এবং ইনফরমেটিভ একটি ওয়েবসাইট লাগবে। যেটা আগেই বলেছি আপনার ওয়েবসাইট যদি তথ্যবহুল না হয় তাহলে সেটা কেউই পছন্দ করবে না ।
আর যখনই আপনার একটা ওয়েবসাইট দৃষ্টিনন্দন বা ইনফরমেটিভ হবে তখন ভিজিটররা আপনার ওয়েবসাইটে তাদের তথ্য খুঁজতে আসবে। আর এরকম একটি ওয়েবসাইট গুগলের কাছেও অপছন্দনীয়। গুগল যখন আপনার ওয়েবসাইট পছন্দ করবে তখন এ্যাডসেন্স ব্যবহার করার জন্য অনুমতি দেবে।
দ্বিতীয়ত: আপনার ওয়েবসাইটের মধ্যে প্রয়োজনীয় কিছু পেজ ক্রিয়েট করতে হবে ।
যেমন “অ্যাবাউট পেজ” সেটাতে আপনার সম্পূর্ণ ইনফরমেশন থাকবে, “প্রাইভেসি পলিসি/ নীতিমালা” পেজ থাকবে। যেখানে আপনার ব্লগ কিভাবে ইউজ করতে হবে, ব্লগে কি নিষিদ্ধ , কি কি করা যাবে , কোন ডাউনলোড লিংক আছে কিনা , এই সমস্ত বিষয়াদি থাকবে।
তৃতীয়ত: একটি “কন্টাক্ট পেজ” থাকবে সহজে আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে, কন্টাক করতে পারবে। যে কোন ইনফরমেশন জন্য আপনাকে নক করতে পারবে।
অন্যথায় একটা ওয়েবসাইটে এই সমস্ত পেজগুলো না থাকলে পূর্ণতা আসে না । সুতরাং বুঝতেই পারছেন, যে ওয়েবসাইটটি ভিজিটররা পছন্দ না করবে, সেই ওয়েবসাইট গুগল পছন্দ করবে না। আর যখন গুগলের পছন্দ না হবে তখন স্বভাবতই গুগোল আপনার ওয়েবসাইটে এডসেন্স এর অনুমতি দিবে না ।
চতুর্থত: আপনার ওয়েবসাইটে কমপক্ষে ১০-২০ টা কনটেন্ট থাকতে হবে।
আপনার ওয়েবসাইটে নেভিগেশন দিবেন, দৃষ্টিনন্দন সাইডবার থাকবে সাদাসিদা ডিজাইন থাকবে কালার কম্বিনেশন খুব ভালো ভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
গুগল এ্যাডসেন্স থেকে টাকা আয় ।সম্পূর্ণ এ্যাডসেন্স গাইড
কিভাবে গুগল এ্যাডসেন্স একাউন্ট খুলব
কিভাবে গুগল এ্যাডসেন্স একাউন্ট খুলব ? বা গুগোল এ্যাডসেন্স কিভাবে আবেদন করবেন সেটি আমি একটি ভিডিও টিউটোরিয়াল এর মাধ্যমে প্রেক্টিক্যাল বর্ণনা করেছি। কিভাবে গুগল এ্যাডসেন্স আবেদন করবেন এই সম্পর্কে ভিডিও লিংক এখানে।
যেভাবে ব্লগে এড ব্যবহার করবেন
যখন গুগল এ্যাডসেন্স আপনাকে অ্যাড ব্যবহার করার জন্য অনুমতি দেবে, তখন এ্যাডসেন্সের ড্যাশবোর্ডে গিয়ে বিভিন্ন সাইজের বিভিন্ন ক্যাটাগরির অ্যাড ক্রিয়েট করতে পারবেন। আর যখনই বিভিন্ন সাইজ বা ক্যাটাগরির অ্যাড ক্রিয়েট করবেন । তখন তাৎক্ষণিকভাবে একটি জাভাস্ক্রিপ্ট কোড দেবে।
সেই কোডটি কপি করে আপনার ব্লগে সাইডবার অথবা পোষ্টের ভিতরে যেখানে যেখানে প্লেস করবেন ঠিক সেখানে সেখানে গুগোল সেই কনটেন্টের ক্যাটাগরি ম্যাচ করে অ্যাড শো করাবে। এটা খুবই সহজ একটি ব্যাপার এই বিষয়ে বিস্তারিত এই ভিডিও লিংকে দেখতে পারবেন।
যেভাবে Google Adsens থেকে টাকা আয় করবেন
ভালো কথা এতক্ষণ তো জানলাম কিভাবে একটি গুগল এ্যাডসেন্সের আবেদন করবেন, ও কিভাবে গুগল এ্যাডসেন্স থেকে আয় হয়, কিভাবে গুগল এ্যাডসেন্স আপনাদেরকে পেমেন্ট করবে সেই কথা। এখন জানব কিভাবে গুগল এ্যাডসেন্স থেকে টাকা আয় করা যায়।
স্বভাবতই যখন আপনার ওয়েবসাইট থাকবে তখন ভিজিটর আপনার ব্লগে/ওয়েবসাইটে আসবে আর যখন ভিজিটর তথ্য সংগ্রহ করতে আসবে তখন আপনার এডে অবশ্যই ক্লিক করবে। আর যখন বিজ্ঞাপনে ক্লিক পড়বে তখন কান্ট্রি ভেদে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা পেমেন্ট করবে।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে গুগল এডসেন্স আপনাকে কেন টাকা দেবে? রাইট গুগল এ্যাডসেন্স আপনাকে এই জন্যই টাকা দিবে আপনি যে এ্যাডটিতে ক্লিক করছেন সেই এডটি গুগলের নিজস্ব নয় সেটি যে কোন একটি এডভারটাইজার গুগল কে টাকা দিয়েছে প্রচার করার জন্য। তখন গুগল আপনার ওয়েবসাইটের তার পাবলিশারদের এড কে প্রচার করছে। আর এই জন্য পাবলিশারদের কাছ থেকে যত টাকা তারা কেটে নিবে তার থেকে ৩২ পার্সেন্ট গুগোল রেখে ৬৮ শতাংশ আমাদেরকে দেবে সুতরাং এখানে গুগলের লাভ আপনাকে কেন দেবে না।
যেভাবে আপনার এডসেন্স মনিটরিং করবেন
সবই বুঝতে পারলাম আমার একটি গুগল এ্যাডসেন্স একাউন্ট আছে। এখন আমি এই এ্যাডসেন্সটা কে কিভাবে মনিটরিং করব? কিভাবে পরিচর্যা করব? ভয়ের কোন কারণ নেই গুগল যখন এ্যাডসেন্স আপনাকে দিয়েছে সেটা আপনারই। আপনার জিনিস যত্ন করার দায়িত্বও আপনার।
আপনার এ্যাকাউন্টকে নিয়ন্ত্রন করার জন্য গুগল আপনাকে একটি ড্যাশবোর্ড দেবে জিমেইল এ্যাকাউন্ট এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগিন করে আপনি আপনার মত করে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। ইচ্ছা হলে কোন এড বন্ধ রাখতে পারবেন ইচ্ছা হলে এ্যাড করতে পারবেন।
এমনকি ইচ্ছা হলে আপনার গুগল এ্যাডসেন্স একাউন্টে যে কোন ওয়েবসাইট এড করতে পারবেন এমনকি নির্দিষ্ট কোন সাইটে এ্যাড বন্ধ রাখতে পারবেন, সেটা সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করবে।
যেভাবে আপনার প্রতিদিনের আয় দেখবেন
ইম্পরট্যান্ট একটি প্রশ্ন…..! আপনার প্রতিদিন কত পেজ ভিউ হচ্ছে, কত ইম্প্রেশন হচ্ছে, কত টাকা আয় হচ্ছে, সেটার জন্য গুগল এ্যাডসেন্সের ড্যাশবোর্ডে একটি উইজেট থাকবে। সেখানে আপনি ফিল্টারিং করে প্রতিদিন কত ইনকাম হচ্ছে , সপ্তাহে কত আয় হচ্ছে, প্রতি ২৮ দিন কত টাকা ইনকাম হচ্ছে, প্রতি ক্লিক এ কত টাকা পাচ্ছেন, মানে প্রতি ক্লিকে কত সিপিসি পাচ্ছেন সেটা দেখতে পারবেন।
এমনকি কোন এ্যাডে কতগুলো ক্লিক পড়ছে, কোন এ্যাড থেকে কত টাকা আসছে সেটাও আপনি দেখতে পারবেন। কোন অ্যাড এ ইনভেলিড ক্লিক হচ্ছে কি না সেটি আপনি বুঝতে পারবেন। যখন ই দেখবেন আপনার পরিমাণের চেয়ে বেশি ক্লিক পড়ছে তখন বুঝতে হবে কেউ ইচ্ছা করেই আপনার এড এ ক্লিক করছে তখন আপনি ক্ষণিকের জন্য সেই এ্যাডকে বন্ধ রাখতে পারেন। শুধুমাত্র নিরাপত্তার জন্য। এর জন্য এ্যাডসেন্সের একটি ফরম আছে সেই ফরমটি ফিলাপ করে আপনি ইনভেলিড ক্লিক প্রতিরোধ করতে পারবেন।
- আরো পড়ুন: ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি? কিভাবে ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট শিখব?
- আরো পড়ুন: ওয়েব ডেভেলপমেন্ট’র ভবিষ্যত এবং ফ্রিল্যান্সিং এ ক্যারিয়ার
- আরো পড়ুন: গুগল সার্চ কনসোল কি? কেন ব্যবহার করবেন?
এডসেন্স থেকে টাকা তোলার পদ্ধতি
ভালো কথা গুগল এ্যাডসেন্স থেকে আপনার একাউন্টে টাকা জমা হয়েছে এখন প্রশ্ন হলো আপনি কিভাবে সেটাকে আপনার নিজের একাউন্টে নিয়ে আসবেন।
যখন গুগলর এ্যাডসেন্স একাউন্টে কমপক্ষে ১০০ ডলার পূর্ণ হবে তখন গুগল আপনাকে পেমেন্ট করার জন্য আপনার ব্যাংক ডিটেলস এ্যাড করতে বলবে। তখন পেমেন্ট সেটিং এ গিয়ে আপনার ব্যাংকের ইনফরমেশন গুলো এ্যাড করে দিবেন। কিভাবে ব্যাংক একাউন্ট যোগ করবেন সেই সম্পর্কে আমার একটি ভিডিও টিউটোরিয়াল আছে আপনারা এখান থেকে দেখে নিতে পারেন ।
আমাদের বাংলাদেশের সাধারণত প্রতি মাসের আয় পরের মাসের ২১ তারিখে পাঠিয়ে থাকে এবং সে টাকা ৪-৫ দিনের মধ্যে ব্যাংক একাউন্টে সম্পূর্ণভাবে জমা হয়ে যায়। এর জন্য আপনাকে কোন টেনশন করতে হবে না।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।