তাকওয়া অর্জনের মাস মাহে রমযান (রোযার আদব সমূহ)

তাকওয়া অর্জনের মাস মাহে রমযান (রোযার আদব সমূহ) ।। তাকওয়া অর্জনের মাস মাহে রমযান (রোযার আদব সমূহ) সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবেন ফিরোজ মাহমুদ॥

যে সকল শ্রেষ্ঠ ইবাদত দ্বারা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়, তন্মেধ্যে রোযা হল অন্যতম, আল্লাহ তা বান্দার জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন এবং যাতে করে বান্দা তদ্দারা নিজের আত্মা ও মনকে সতেজ করতে পারে এবং প্রত্যেক কল্যানের উপর তাকে অভ্যস্ত করতে পারে। সুতরাং রোযা রাখা অবস্থায় রোযাদারকে এমন সব কর্ম থেকে দূরে থাকা উচিত, যা তার রোযাকে দূষিত করে ফেলে।

যাতে সে তার রোযা দ্বারা পুরোপুরি উপকৃত হতে পারে। তদ্দারা সেই তাকওয়া ও পরহেযগারী লাভ হয়, যার কথা তিনি কুরআনে বলেছেন,“হে ঈমানদারগন! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হল। যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মরতের উপর ফরয করা হল। যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের উপর ফরয করা হয়েছিল। যাতে তোমরা পরহেযগার হতে পার। (২/১৮৩)

কেবলমাত্র পানাহার থেকে বিরত থাকার নাম রোযা নয়। বরং রোযা পানাহার থেকে এবং অনুরূপ সকল সেই বস্তু থেকে বিরত থাকার নাম। যা আল্লাহ নিষেধ করেছেন, যদিও নিষিদ্ধ কর্ম সকল মাসেই নিষিদ্ধ। তবুও বিশেষ করে রমযান মাসে রোযা অবস্থায় তা বেশি করে নিষিদ্ধ।

রোযা, রোযাদারকে যদি পানাহার থেকে বিরত রাখে; যা জীবন ধারনের জন্য জরুরী এবং তাকে সকল যৌনাচার থেকে বিরত রাখে; যা তার দৈহিক ক্ষুদার প্রকৃতিগত বাসনা, তাহলে তার জন্য ওয়াজিব ও জরুরী এই যে, সে কোন প্রকারের পাপাচারনে লিপ্ত হবে না; তাতে সে পাপ যেমনই হোক।

সে কোন প্রকারের অসার ক্রিয়া-কলাপে লিপ্ত হবে না; তাতে তার ধরণ যেমনই হোক, সে তার রোযা অবস্থায় থাকার সময়টুকুতে ইবাদতের অনুকূল আচরনের চরিত্রবান থাকবে। কারণ ইবাদতে সে আল্লাহর সামনে হাজির থাকে। অতএব প্রত্যেক কথা বলার পূর্বে সে চিন্তা করবে। প্রত্যেক কর্ম করার পূর্বে সে ভেবে দেখবে যে, তার সে কথা ও কাজ তার রোযার অনুকূল কি না? সেই কথা বা কাজ আল্লাহকে সন্তুষ্ট করবে কি, যার সামনে ইবাদতের উদ্দেশ্যে সে উপস্থিত?

আর যদি রোযাদার তা না করতে পারে, তাহলে সে এমন রোযাদারদের দলে শামিল হয়ে যাবে, যাদের ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল (স:) বলেছেন, “কিছু রোযাদার আছে, যাদের রোযার ক্ষুদা ছাড়া অন্য কিছু লাভ হয় না এবং কিছু তাহাজ্জুদগুযার আছে। যাদের তাহাজ্জুদে রাত্রি জাগরণ ছাড়া অন্য কিছু লাভ হয় না।” আল্লাহ আমাদের এই সব রোযাদার ও তাহাজ্জুদ গুজার থেকে রক্ষা করুন-আমীন।

সাহল (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী (সা:) বলেনঃ জান্নাতে রায়্যান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন সাওম (রোযা) পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তাঁদের ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেওয়া হবে, সাওম পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে।

তাঁরা ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাঁদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাতে এ দরজা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ না করে।

বল বাহুল্য, রোযাদারের রোযা তার জন্য ঢালস্বরূপ হবে, যে রোযার মাধ্যমে সে ‘রাইয়ান’ নামক দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে, এ হল সেই রোযা, যে রোযা রেখে থাকে রোযাদারের হৃদয় এবং তার সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গে।

আল্লাহ আমাদের সেই রোযা রাখার তাওফিক দিন, আমীন।

আরো পড়ুন: ফজিলতে রমযান

আরো পড়ুন: ফজিলতে রমযান পর্ব:-২

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এখানে

এগুলো দেখুন

সালাতুত তাসবিহ পড়ার নিয়ম

ফজরের জামাত চলা অবস্থায় সুন্নত পড়া যাবে?

জেনে নিন ফজরের জামাত চলা অবস্থায় সুন্নত পড়া যাবে? আসুন এ বিষয়ে কোরআনে কি বলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *