দীর্ঘ দিন বাঁচার উপায়
বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে সবাই তীক্ষ মস্তিষ্কের অধিকারী হতে চায়, এ জন্য তাকে মস্তিষ্ক ব্যবহার তথা দীর্ঘমেয়াদি সক্রিয় রাখতে হয়। তবে নতুন গবেষণা বলছে, মস্তিষ্কের সক্রিয়তা আয়ু কমিয়ে দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে চিন্তা অনেক বড় প্রভাব ফেলে। মেডিকেল জার্নাল নেচারে প্রকাশিত একটি গবেষণায় হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষকরা বলছেন, কম স্নায়বিক ক্রিয়াকলাপের শান্ত মস্তিষ্ক মানুষকে দীর্ঘায়ু দান করতে পারে।
৬০-১০০ এর বেশি বয়সে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের দান করা মস্তিষ্কের টিস্যু বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখেছেন, দীর্ঘায়ু হওয়া মানুষদের মধ্যে স্নায়বিক ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কিত জিনগুলো নিম্নস্তরের ছিল। রেস্ট নামের এমন একটি প্রোটিন আছে, যেটি স্নায়বিক ক্রিয়াকলাপ দমন করে এবং এটি স্নায়বিক ক্রিয়াকলাপ ও মৃত্যুর সাথে জড়িত।
আরো পড়ুন: পা কামড়ায় কেন? করণীয়
আরো পড়ুন: চোখে এলার্জি হয় কেন? সমস্যা ও সমাধান
আরো পড়ুর: চোখে ঝাপশা দেখার সমস্যা ও সমাধান
কৃমি ও স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, রেস্ট প্রোটিন বৃদ্ধির ফলে স্নায়বিক ক্রিয়াকলাপ কমে যায়।
নিউইয়র্কের নর্থওয়েল হেলথের স্নায়ু ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ গায়ত্রী দেবী বলেন, মস্তিষ্ক আমাদের দেহের সর্বাধিক শক্তি ক্ষুধার্ত অঙ্গ। আমাদের ওজনের প্রায় ৭০ ভাগের ১ ভাগ মস্তিষ্কের ওজন হলেও এটি আমাদের দেহের এক-তৃতীয়াংশ শক্তি গ্রহণ করে। আমাদের মস্তিষ্ক ও দেহের জন্য বিশ্রামই সেরা।
কিন্তু অগ্রসরমাণ ও ব্যস্ত এ পৃথিবীতে মস্তিষ্ককে শান্ত রাখাও বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে। গবেষকরা মস্তিষ্ককে শান্ত রাখারও কিছু উপায় বাতলে দিয়েছেন।
চিন্তামুক্ত থাকা
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো আপনি কতটা মস্তিষ্ককে শান্ত রাখতে পারছেন। তাই শরীর সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি। এখানে শুরুটা করা যেতে পারে আপনার চিন্তা নিয়ে। আপনার চিন্তা আপনি কোথায় রাখছেন, সে সম্পর্কে সচেতন হওয়া দুর্দান্ত একটি সূচনা হতে পারে। এক্ষেত্রে শরীরকে উন্মুক্ত করে দিন; যে কাজ করছেন, সেটিতে মনোযোগ দিন; যা হতে চলেছে তা হতে দিন এবং চিন্তামুক্ত থাকুন।
শোনা বন্ধ করা
আপনি যখন একদল মানুষের সঙ্গে আলোচনায় বসে আছেন, তখন সবার কথা শোনার পরিবর্তে নিজে কথা বলার জন্য অপেক্ষা করুন। চেষ্টা করে দেখুন শান্ত থাকার, এটা খুব সহজ একটি পদ্ধতি। আপনি আপনার চিন্তাভাবনাগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখবেন, আপনি ১ ঘণ্টায় হাজার মাইল অতিক্রম করছেন।
তালিকা তৈরি করুন
আমরা যে ধরনের জীবনযাপন করতে চাই, আর কি ধরনের জীবনযাপন করছি, এর একটি তালিকা তৈরি করুন। এটা সাধারণ একটা কাজ, তবে চিন্তাভাবনা বদলে দেয়া এবং শান্ত থাকার যথেষ্ট। আপনি কতটুকু সময় অফিসে ব্যয় করছেন এবং বাকি সময়গুলো কিভাবে ব্যয় হচ্ছে এর তালিকা করতে পারেন।
এটা আপনাকে একটা স্পষ্ট সীমানা করে দেবে এবং কাজ, পরিবার বা সমস্যা সমাধানের চেষ্টার থেকে আপনাকে বিরতি নিতে বলবে।
খাবার নিয়ে ভাবুন
আমরা কি খাবার খাচ্ছি, সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করি। তবে কিভাবে বা কোথায় খাচ্ছি, সেটা নিয়ে কমই চিন্তা করি। ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার খেয়ে পেট ভরানোর চেয়ে ক্যালরিবিহীন খাবারও ভালো, যদি সেটা উপভোগ করা যায়। এটা আপনার মস্তিষ্ককে শান্ত রাখবে।
হাসিখুশি থাকা
আমরা জীবনযাপন নিয়ে এতটাই ব্যস্ত হয়ে যাই যে, দম ফেলারও যেন ফুরসত থাকে না। নানামুখী চিন্তার মধ্যে আমরা ডুবে থাকি এবং মস্তিষ্ককে খুব বেশি সক্রিয় করে রাখি। এ থেকে বেরিয়ে আপনি প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করার চেষ্টা করুন, দেখবেন জীবন অনেক বদলে গেছে।
আরো পড়ুন: চোখে এলার্জি হয় কেন? সমস্যা ও সমাধান
আরো পড়ুন: গর্ভবতী মায়েরদের এই ৫টি বিপদ থেকে সাবধান
আরো পড়ুন: ব্রণের সমস্যা দূর করবে ড্রাগন ফল
প্রকৃতির সাথে থাকুন
নিজেকে শান্ত রাখার দুর্দান্ত একটি উপায় হলো গাছপালা, নদী, পাহাড় ও সমুদ্রের সাথে সময় কাটানো। সবকিছু ঝেড়ে ফেলে প্রকৃতির কাছে গেলে দেখবেন, আপনার মধ্যে অনন্য এক অনুভূতি তৈরি হচ্ছে। তাই যতটা সম্ভব প্রকৃতির আশপাশে থাকার চেষ্টা করুন।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন। এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।