জেনে নিন প্রস্রাবে ইনফেকশন সারানোর ঘরোয়া ৫ উপায় সম্পর্কে। আসুন এ বিষয়ে আলোচনা করে আজকে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। ইউরিন ইনফেকশনের সমস্যায় ছোট-বড় সবাই কমবেশি ভোগেন। বিশেষ করে গরমে এ সমস্যা বেড়ে যায়। এর কারণ হলো পানিশূন্যতা।
গরমে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে পানি বের হয়ে যায়, তার উপরে যদি পর্যাপ্ত পানি পান করা না হয় তাহলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হওয়া স্বাভাবিক। আর এভাবেই বেড়ে যায় প্রস্রাবে সংক্রমণ কিংবা ইউরিন ইনফেকশনের সমস্যা।
মূত্রনালিতে সংক্রমণ বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই) আচমকাই হানা দেয়। এর সঠিক চিকিৎসা করা না হলে সংক্রমণ কিডনিতে ছড়িয়ে পড়ে। যার পরিণাম হতে পারে ভয়ংকর। অনেকে এ সমস্যায় আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই বাজারচলতি কিছু ওষুধ ব্যবহার করেন। যা একেবারেই উচিত নয়।
- আরো পড়ুন: জরায়ুতে সমস্যা কীভাবে বুঝবেন
- আরো পড়ুন: জরায়ুমুখে ক্যানসার থেকে রক্ষার উপায়
- আরো পড়ুন: যৌনস্বাস্থ্যের ব্যাপারে নারী কেন কম কথা বলেন?
নারীর তুলনায় প্রস্রাবে সংক্রমণের হার পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি ঘটে। এর কারণ হলো প্রস্রাবের সংক্রমণের কারণে জ্বর হলে তার সাথে সর্দি-কাশি বা গলা ব্যথা থাকে না। এর পাশাপাশি দেখা দেয় আরো লক্ষণ। যেমন-
১. প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া
২. ঘনঘন প্রস্রাবের বেগ
৩. প্রস্রাবের রং লালচে
৪. প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত
৫. দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব
৬. নারীদের গোপনাঙ্গে ব্যথা
৭. পুরুষদের মলদ্বারে ব্যথা ইত্যাদি।
অবস্থা যখন সংকটাপন্ন হয়-
১. পেট ও কোমরের মাঝামাঝিতে ব্যথা অনুভব করা
২. শীত লাগা
৩. জ্বর
৪. বমি বমি ভাব
৫. বমি ইত্যাদি।
এসব লক্ষণ দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে। ইউরিন টেস্ট ছাড়াও ইউরিন কালচার, আলট্রাসাউন্ড স্ক্যান কিংবা এক্স-রেও করতে হতে পারে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই ওষুধ খান। এর পাশাপাশি কয়েকটি ঘরোয়া প্রতিকারেও মিলতে পারে উপশম।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রস্রাবে ইনফেকশন সারানোর ঘরোয়া ৫ উপায় সম্পর্কে:-
১. ইউরিন ইনফেকশন হলে অবশ্যই পানি খাওয়ার বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। প্রস্রাবে হলুদ ভাব দেখা দিলে দেরি না করে দিনে অন্তত আড়াই লিটার পানি খেতে হবে। সাধারণত প্রতি ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা পর পর প্রস্রাব হওয়া উচিত।
এর চেয়ে প্রস্রাব বেশি দেরিতে হলে পানির পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে পারে। খুব বেশিক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখবেন না, এতে সংক্রমণ আরো ছড়িয়ে পড়তে পারে।
২. ইউটিআইয়ের রোগীরা অবশ্যই খাদ্যতালিকায় ভিটামিন সি রাখবেন। এতে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া কমবে। এছাড়া ভিটামিন সি ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
৩. ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি আনারস খেলে মিলবে আরো উপকারিতা। কারণ এই ফলে আছে ব্রোমেলাইন নামক একটি উপকারী উৎসেচক। গবেষণায় দেখা গেছে, ইউটিআইয়ে আক্রান্ত রোগীদের সাধারণত ব্রোমেলাইন সমৃদ্ধ অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। তাই ইউরিন ইনফেকশন হলে প্রতিদিন আনারসের রসও খাওয়া যেতে পারে। ক্র্যানবেরির রসও এই সমস্যা সমধানে বেশ উপকারী।
- আরো পড়ুন: জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল কি ওজন বাড়ায়?
- আরো পড়ুন: জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল মিস হলে করণীয় কী?
- আরো পড়ুন: জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে
৪. এ সময় প্রোবায়োটিক জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত। কারণ এই খাবার অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বাড়ায়। ফলে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয় ও সংক্রমণ কমায়। টকদই প্রোবায়োটিকের ভালো উৎস।
৫. গবেষণায় দেখা গেছে, বেকিং সোডা দ্রুত মূত্রনালির সংক্রমণ সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। এজন্য আধা চামচ বেকিং সোডা এক গ্লাস পানিতে ভালো করে মিশিয়ে দিনে এক বার খেলেই প্রস্রাবের জ্বালা বা ব্যথা কমে যেতে পারে। তবে বেশি মাত্রায় বেকিং সোডা শরীরের ক্ষতি করতে পারে।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।