বৈধ কাজে ‘বিসমিল্লাহ’ বলার উপকারিতা

জেনে নিন বৈধ কাজে ‘বিসমিল্লাহ’ বলার উপকারিতা সম্পর্কে। আসুন এ বিষয়ে কোরআনে কিবরা হয়েছে, সে সম্পর্কে আলোচনা করে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’। যার অর্থ হলো- পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে। সব বৈধ কাজের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলার ইসলামের অন্যতম এ রীতি আন্তরিকতার সাথে পালনে রয়েছে অনিবার্য তিনটি সুফল বা উপকারিতা।



বৈধ কাজে ‘বিসমিল্লাহ’ বলার উপকারিতা

যেকোনো বৈধ কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অন্যতম রীতি ও সুন্নাত। শুধু তা-ই নয়, সব বৈধ কাজের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতির অন্যতম পরিচায়কও বটে। বিসমিল্লাহ বলার সুফলগুলো হলো-

০ খারাপ কাজ থেকে মুক্তি

কাজের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলার মাধ্যমে মানুষ অনেক খারাপ কাজ করা থেকে নিষ্কৃতি পাবে। আল্লাহর নামে শুরু করার বিষয়টি মুখে বলার মাধ্যমে মানুষ ভালো কাজের দিকে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। আর মন্দ কাজ থেকে দূরে সরে যায়। ‘বিসমিল্লাহ’ বলার কারণে মানুষের মনে এ চিন্তার উদ্রেক হয়, আমি যে কাজটি করছি এটি ন্যয়সঙ্গত ও সঠিক কিনা?

আর যদি কোনো বিবেকবান ব্যক্তি অন্যায় কাজের শুরুতে এ নাম উচ্চারণ করে তবে মনে এ বিষয়টি বারবার উঁকি দিতে থাকে যে, অন্যায় কাজের শুরুতে এ নাম উচ্চারণের অধিকার তার আদৌ আছে কিনা? বিসমিল্লাহ’ বলার পর এ চিন্তার ফলেই মানুষ অন্যায় ও খারাপ কাজ থেকে ফিরে থাকে।

০ ভালো কাজে মনোযোগী হতে সক্ষম

সব বৈধ ও সৎকাজের শুরুতে আল্লাহর নাম নিয়ে আরম্ভ করার কারণে মানুষের মনোভাব এবং মানসিকতাও সঠিক কাজের দিকে মোড় নেয়। ফলে সবসময় সবচেয়ে নির্ভুল পয়েন্ট থেকে মানুষ তার কাজ শুরু করতে সচেষ্ট হয়।

০ আল্লাহর সাহায্য লাভ

‘বিসমিল্লাহ’ বলে কাজ শুরু করার সবচেয়ে বড় সুফল হলো: মহান আল্লাহ তাআলার সাহায্য লাভ করা। বান্দার জন্য এর চেয়ে বড় উপকারিতা বা সুফল আর কি হতে পারে? এ কথা চিরন্তন সত্য, যে কাজে মহান আল্লাহর সাহায্য থাকে সে কাজে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার ক্ষমতা জগতের কারও নেই। বিসমল্লিাহ বলে কাজ শুরু করার ফলে মহান আল্লাহ বান্দাকে দুনিয়ার সব অনিষ্টতা থেকে হেফাজত করেন। বিশেষ করে শয়তানের সব অনিষ্টতা, বিপর্যয় ও ধ্বংসকারিতা থেকেও হেফাজত করেন।

মনে রাখতে হবে

বান্দা যখন মহান আল্লাহর নামে তার কাজ শুরু করে তখন আল্লাহ তাআলা ওই বান্দার সব কাজের জামিন্দার হয়ে যান। কেননা কুরআনুল কারিমের একাধিক আয়াতে আল্লাহ তাআলা এ কথারই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাহলো-

– فَاذْكُرُونِي أَذْكُرْكُمْ وَاشْكُرُواْ لِي وَلاَ تَكْفُرُونِ

সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদের স্মরণ রাখবো এবং আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর; অকৃতজ্ঞ হয়ো না।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫২)

– وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ

‘আর তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। যারা আমার ইবাদতে অহংকার করে সত্বরই তারা লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সুরা মুমিন : আয়াত ৬০)



উল্লেখিত আয়াতে কারিমায়ও প্রমাণিত যে, আল্লাহ নামে কাজ শুরু করলে মহান আল্লাহ সে কাজে সাহায্য করবেন। বান্দা যখন মহান আল্লাহ দিকে ফেরে তখন আল্লাহও বান্দার দিকে ফেরেন। আর এটাই মহান আল্লারহ রীতি।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, সব বৈধ কাজ ‘বিসমিল্লাহ’ বলা তথা মহান আল্লাহর নামে শুরু করা। আর তাতে মিলবে সরাসরি মহান আল্লাহর সাহায্য ও বিজয়। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব বৈধ কাজে ‘বিসমিল্লাহ’ বলার মাধ্যমে উল্লেখিত অনিবার্য তিনটি সুফল বা উপকারিতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।

এগুলো দেখুন

সালাতুত তাসবিহ পড়ার নিয়ম

ফজরের জামাত চলা অবস্থায় সুন্নত পড়া যাবে?

জেনে নিন ফজরের জামাত চলা অবস্থায় সুন্নত পড়া যাবে? আসুন এ বিষয়ে কোরআনে কি বলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *