আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: ভারতে কুম্ভমেলার শেষ শাহী স্নানেও ২৫ হাজার পুণ্যার্থী এবং অন্তত ১ হাজার ৩৫০ জন সাধু-সন্তের জমায়েত হয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার ২৭ এপ্রিল) মেলা শেষ হওয়ার ৩ দিন আগে এই শেষ শাহী স্নান অনুষ্ঠিত হয়। আর তাতে অংশ নিতেই ঢল নামে মানুষের।
হরিদ্বারের হর কি পৌরি ঘাটের ব্রহ্মকুণ্ডে গঙ্গায় ডুব দেয় পুণ্যার্থীরা। মেলা কর্তৃপক্ষের দাবি, মোট পুণ্যার্থীর এক শতাংশ এদিন শাহী স্নানে অংশ নিয়েছে।
শাহী স্নানের কয়েক ঘণ্টা পর হরিদ্বার জেলা প্রশাসন সন্ধ্যা থেকে কোভিড-১৯ কারফিউ জারি করে। আগামী ৩ মে সকাল পর্যন্ত চলবে এই কারফিউ। কয়েকদিন আগে কোভিডের বাড়বাড়ন্তের জেরে তুমুল সমালোচনার ঝড় ওঠে এই কুম্ভমেলা নিয়ে। বিতর্কের জেরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাধু-সন্তদের উদ্দেশে বার্তা দেন, সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে এবার প্রতীকী কুম্ভমেলা উদযাপন করা হোক। সাধু-সন্তদের জুনা আখড়া তা মেনেও নেয়। কিন্তু মঙ্গলবারের চিত্র দেখে তেমনটা মনে হয়নি।
কুম্ভমেলার আইজি সঞ্জয় গুঞ্জাল জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর আবেদনের পর এবং মুখ্যমন্ত্রীর বারবার তদারকির পর সাধুদের আখড়াগুলো এদিন ভিড় কম রাখার চেষ্টা করেছিল। গত ৩ দিন ধরে আখড়াগুলোর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে জমায়েত নিয়ে। তারা শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখেছিলেন। এমনকি নাগা সন্ন্যাসীরাও মাস্ক পরেছিলেন।
কিছু পুলিশ কর্মকর্তাও শাহী স্নানে অংশ নেন। তাদের দাবি, এটা প্রতীকী ছিল। গত ১১ মার্চ প্রথম শাহী স্নানের সময় মেলায় ৩২ লাখ পুণ্যার্থীর ভিড় ছিল। গত ২৭ মার্চ দ্বিতীয় শাহী স্নানের সময়ও একই সংখ্যক ভিড় ছিল। তৃতীয় শাহী স্নানের সময় গত ১৪ এপ্রিল সেই ভিড় অর্ধেক হয়ে যায়।
এদিকে বেশি সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট, কম টিকাদান আর বড় জমায়েতের কারণে ভারতের করোনা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার নিয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গতকাল (মঙ্গলবার ২৭ এপ্রিল) সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, এসব কারণের সাথে ভারতের মানুষের অপ্রয়োজনে হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি পরিস্থিতিকে আরও বিপজ্জনক করে তুলেছে।
ভারতে এখন পর্যন্ত এক কোটি ৭৯ লাখ ৮৮ হাজার ৬৩৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২ লাখ এক হাজার ১৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। অক্সিজেন সরবরাহ আর শয্যা না থাকায় রোগী ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে দেশটির হাসপাতালগুলো। মরদেহের চাপ বাড়তে থাকায় ভারতের শ্মশানগুলোতে নির্মাণ করা হচ্ছে অতিরিক্ত চিতা।
কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ভারতকে জরুরি সরঞ্জাম ও ওষুধ সরবরাহ করছে ডব্লিউএইচও। ৪ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ এসব সামগ্রী ভারতে পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মুখপাত্র তারিক জাসারেভিক।
ডব্লিউএইচও মুখপাত্র জানান করোনায় আক্রান্ত ১৫ শতাংশেরও কম মানুষের হাসপাতালের সেবার দরকার পড়ে আর তার চেয়েও কম মানুষের দরকার হয় অক্সিজেনের। তিনি বলেন, বর্তমানে সমস্যার বড় একটি কারণ হলো বহু মানুষ অপ্রয়োজনে হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করছেন, যদিও বাড়িতেই খুব নিরাপদে তাদের সেবা দেওয়া সম্ভব।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুণ।