শিক্ষা প্রতিনিধি :: কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে দীর্ঘ ১৪ মাস বন্ধ দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপরও এই সময়ে শিক্ষাব্যয় বেড়েছে অন্তত ১২ গুন। ফলে সন্তানের শিক্ষা খরচে অভিভাবকদের গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ।
পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের যৌথ গবেষণা এমন চিত্রই তুলে ধরেছে। এমন পরিস্থিতিতে গবেষণায় শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির অর্থ বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছ।
গবেষণার মতে, শিক্ষার সুযোগ প্রাপ্তিতে সংকট তৈরি হয়েছে। স্কুলগামী ছেলে শিশুদের ৮ শতাংশ এবং মেয়ে শিশুদের ৩ শতাংশ কোনো না কোনো উপার্জন প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে পড়েছে।
অভিভাবকদের ওপর চাপ কমাতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের বৃত্তি কর্মসূচিকে শিক্ষা খরচ হিসেবে ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিকের একজন শিক্ষার্থীকে এক’শ টাকার পরিবর্তে পাঁচ’শ টাকা উপবৃত্তি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
গতকাল (সোমবার ১০ মে) এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রবন্ধ তথ্য তুলে ধরেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান এবং বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন।
কোভিড-১৯ এর কারণে দেশে দারিদ্র্যের রূপ কীভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে, তা জানতে পিপিআরসি ও বিআইজিডি যৌথভাবে দেশ জুড়ে তিন ধাপে টেলিফোন জরিপ করে। বিগত ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত এ জরিপ করা হয়।
এ গবেষণার তৃতীয় ধাপের দ্বিতীয় অংশ হলো- কোভিড ইমপ্যাক্ট অন এডুকেশন লাইফ অব চিলড্রেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, দূরবর্তী শিক্ষণের জন্য যে সুবিধা থাকা দরকার, তা আছে বা ব্যবহার করছে ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী। ফলে সরকারি ও বেসরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে লেখাপড়ার হার খুব কম। অবশ্য, যারা দরিদ্র নয় এবং শহরের বস্তিতে থাকে মাধ্যমিক পর্যায়ের সেসব শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এ হার একটু বেশি। একই সঙ্গে কোচিংয়ে বা প্রাইভেট টিউশনে যাওয়ার প্রবণতা মাধ্যমিক স্তরের ৬১ শতাংশ শিক্ষার্থীর। যারা দরিদ্র নয়, তাদের মাঝে এ হার বেশি (৭৪ শতাংশ)।
আবার শহরের বস্তি এলাকায় খরচ বেশি হওয়ায় কোচিংয়ে যুক্ত হওয়ার হার কম। পড়াশোনায় যুক্ত থাকার আরেকটি পদ্ধতি হলো- পিতামাতা বা ভাইবোনের সহায়তায় পড়া।
যদিও প্রাথমিক পর্যায়ের চেয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ে এই সহায়তা প্রাপ্তির হার কম। মাদ্রাসায় বদলি হওয়ার প্রবণতা বেড়ে আগের চেয়ে ৪ গুণ হয়েছে এবং মাধ্যমিকের চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য মাদ্রাসায় ভর্তি হওয়ার খরচ বেড়েছে ২ গুণ।
জরিপে দেখা যায়, শিক্ষণ ঘাটতির মুখে আছে প্রাথমিক স্তরের ১৯ শতাংশ এবং মাধ্যমিক স্তরের ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। শহরের শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষণ ঘাটতির ঝুঁকি বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে।
অতি দরিদ্র পরিবারের মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগামী ৩৩ শতাংশ পুরুষ শিক্ষার্থীর কোভিড-সৃষ্ট অর্থনৈতিক ধাক্কায় স্কুল ছেড়ে দেওয়ার আশঙ্কা আছে।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুণ।