ফিরোজ মাহমুদ :: দেখতে দেখতে কেটে যাচ্ছে তাকওয়া অর্জনের এই পবিত্র মাসের পনেরটি দিন। কতটুকু অর্জিত হয়েছে তাকওয়া নামক এই মহামূল্যবান সম্পদ। আসুন একটু হিসেব কষে নেই অর্জিত তাকওয়াটুকুর, আমরা রোযা রাখলে সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত ক্ষুধা-পিপাসাসহ শরীরের অপরাপর বৈধ চাহিদাও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের আশায় পূরণ করা থেকে বিরত থাকি।
তার কাছ থেকে বিনিময় ও পুরষ্কার পাবার জন্য নিজেদের বৈধ চাহিদাগুলোকেও কুরবান করে দেই। রাত এলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার কালাম শ্রবন করি, এর পরেও আমাদের দুর্ভাগ্য যে, ভাষা না জানার কারনে এবং পরিশ্রম না করার কারনে আমাদের পাল্লায় কিছুই পড়ে না, কেননা আল্লাহ আমাদেরকে কি বললেন আর আমরা কি শুনলাম কিছুই বুঝা গেল না।
কিন্তু আল্লাহর উদ্দেশ্যে একেবারে স্পষ্ট, তিনি চান এ মাসের মধ্যে আমরা একবার পুরো হেদায়াত গ্রন্থ থেকে আলোকিত হই, যা তিনি কুরআন মাজিদের মাধ্যমে আমাদেরকে দান করেছেন। যার উপর আমল করা ও অন্যদেরকে আহ্বান করা আমাদের কর্তব্য। অর্থসহ কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে জ্ঞান ও ঈমানের পূর্ণতা লাভ হয় এবং রোযার মাধ্যমে আমলের শক্তি অর্জিত হয়।
রোযার মধ্যে আল্লাহর হুকুম হলে আমরা খাই, তার হুকুমে আমরা বিরত হয়ে যাই। অথচ খাওয়াও হারাম নয়, পান করাও হারাম নয়। কিন্তু রোযার মধ্যে আমরা এই মৌলিক প্রয়োজনগুলোকেও আল্লাহর আনুগত্যের কারনে আমাদের উপরে হারাম বানিয়ে নেই। যা অন্য সময় পূরণ করা শুধু বৈধই নয় বরং কর্তব্যও বটে।
রোযা একথা আরো সুদৃঢ় করে দেয় যে, মূল বিষয় হচ্ছে আল্লাহর আনুগত্য, কোনো বিষয়ের সঠিক হওয়া বা ভুল হওয়ার শেষ সনদ হচ্ছে আল্লাহর নির্দেশ। নেকী ও সওয়াব খাওয়া-দাওয়া বা উপবাস থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, জেগে থাকার মধ্যেও নয়, ঘুমিয়ে থাকার মধ্যেও নয়।
আরো পড়ুন: তাকওয়া অর্জনের মাস মাহে রমযান (অঙ্গ প্রতঙ্গের রোযা)
আরো পড়ুন: তাকওয়া অর্জনের মাস মাহে রমযান (হৃদয়ের রোযা)
শুধুমাত্র আল্লাহর আনুগত্য আর নির্দেশ মানার মধ্যেই রয়েছে নেকি ও সওয়াব। এ শক্তিসমূহ যখন এবং যতটুকু সৃষ্টি হয়, তখন এবং ঠিক তটুকুই আমরা ব্যাক্তিগতভাবে এবং সমষ্টিগতভাবে পুরো জাতি কুরআনের আমানতের বোঝা বহন করার যোগ্য হতে পারি। কেননা, বস্তগত, নিত্যপ্রয়োজনীয় ও উপভোগ্য সামগ্রীর চাহিদাকে পদদলিত করে নিজেদের জীবনোদ্দেশ্য এবং কুরআনের দায়িত্ব ও মিশনের পূর্ণতাকে অগ্রাধিকার দেয়ার যোগ্যতা সৃষ্টি হতে পারে। এ যোগ্যতারই অপর নাম তাকওয়া। আল্লাহ আমাদের পরিপূর্ণ তাকওয়া অর্জনের তাওফিক দিন-আমীন।
(চলবে)
লেখক:
মাদ্রাসা শিক্ষক ও গণমাধ্যম ব্যাক্তিত্ব
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুণ।