গুগল এ্যাডসেন্স থেকে মাসে ৫ কোটি টাকা আয় করবেন যেভাবে । চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। গুগল এ্যাডসেন্স থেকে কিভাবে আয় করবেন? এ্যাডসেন্সের মাধ্যমে কিভাবে টাকা আয় করা যায়? এই প্রশ্নের উত্তর যদি আপনি জানতে চান এ্যাডসেন্স হলো গুগলের একটি এ্যাড নেটওয়ার্ক যেটি আপনার ব্লগে ইউজ করে ব্লগ থেকে হাজার। জনপ্রিয় একটি সাইট শুধুমাত্র গুগল এ্যাডসেন্স থেকে ৫ কোটির উপরে টাকা আয় করে।
গুগল এ্যাডসেন্স থেকে মাসে ৫ কোটি টাকা আয় করবেন যেভাবে
গুগল এ্যাডসেন্স থেকে আয় করার সহজ উপায়
গুগল এ্যাডসেন্স নিয়ে অনেকেই অনেক রকম প্রশ্ন করে থাকেন। বিশেষ করে ব্লগ অথবা ইউটিউব থেকে যারা আয় করতে চাচ্ছেন। তারা এ্যাডসেন্স নিয়ে অনেক কিছু জানতে চাই। আজকে আমি এই ছোটো আর্টিকেলে সব প্রশ্নের জবাব দিতে না পারলেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব। আমার জানা মতে এ্যাডসেন্স থেকে অনেকেই ভালো উপার্জন করে। আমাদের দেশে অথবা এই উপমহাদেশে এমন অনেক ইউটিউবার আছেন, যাদের মাসিক আয় কয়েক লক্ষ টাকা।
- আরো পড়ুন: গুগল অ্যাডসেন্স ও ফেসবুক থেকে সহজে যেভাবে আয় করবেন
- আরো পড়ুন: গুগল এ্যাডসেন্স কত প্রকার ও কি কি?শিখুন ঘরে বসে আয় করুন
- আরো পড়ুন: সেরা ৮ টি এ্যাড নেটওয়ার্ক
আমি আমার পরিচিত এক ব্লগার’কে প্রশ্ন করেছিলাম যে, মাসে তোমার আয় কত! সে হেসে বলেছিল, আরে বেশি না! কোনো রকম একটি মারুতি সুজুকি গাড়ি নেয়া যাবে। আমার মনে হয়, আমাদের দেশের যে কেউ বেকার থাকার চেয়েও মাসে ৫০/৬০ হাজার টাকা আয় করতে পারলেও হেসে খেলে জীবন তার সুন্দর যাবে। কিন্তু শুধু ব্লগ অথবা ইউটিউব চ্যানেল বানালে তো হবে না, এ্যাডসেন্স থেকে টাকা আয়ের জন্য এ্যাডসেন্সের কিছু নিয়ম রয়েছে। সকল নিয়ম যথাযথ ভাবে পূরণ করা হলেই কেবল এ্যাডসেন্স একাউন্ট করা যাবে। আসুন তাহলে কিছু জরুরী বিষয় জেনে নেয়া যাক।
এ্যাডসেন্স থেকে আয় করতে কি কি লাগবে?
গুগল এডসেন্স থেকে আয় করতে চাইলে, প্রথমত: আপনার একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ থাকতে হবে। অথবা একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে। আপনি যদি ওয়েব ডিজাইনের কাজ জানেন তাহলে তো ভালো কথা। আর যদি না জানেন তাহলে অন্য কাউকে দিয়ে একটি ওয়েবসাইট অথবা ব্লগ সাইট বানিয়ে নিতে পারেন। ওয়েবসাইট বানানোর পর একটি ডোমেইন হোস্টিং নিয়ে সেটাকে অনলাইন করতে হবে। অতঃপর ওয়েবসাইট স্পিড বাড়াতে হবে।
ওয়েবসাইটের উন্নত SEO করতে হবে। প্রচুর আর্টিকেল লিখতে হবে। অন্য ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট চুরি করে কপি পেষ্ট যাবে না। মানুষের কাজে আসে এমন আর্টিকেল শুদ্ধ করে লিখতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটে সেই ওয়েবসাইট সম্পর্কিত পৃষ্টা অর্থাৎ About পেজ এবং Privacy Policy পেজ থাকতে হবে। ওয়েবসাইটে অন্য কারো এ্যাড থাকলে সেটা সরিয়ে নিতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটে যখন কিছু ভিজিটর ভিজিট করবে তখন গুগল এ্যাডসেন্সের একটি একাউন্ট খোলার জন্য এপ্লাই করতে পারেন। আপনার একটি মেইল আইডি থাকলে সহজে এডসেন্স একাউন্ট খুলতে পারেন।
আর আপনি যদি ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে এ্যাডসেন্স থেকে আয় করতে চান, তাহলে আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে। প্রচুর শিক্ষনীয় অর্থাৎ মানুষের উপকার হয় এমন ভিডিও বানিয়ে সেখানে আপলোড করতে হবে। প্রচুর সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ থাকতে হবে। অতঃপর চ্যানেল’টাকে গুগল এ্যাডসেন্সের সঙ্গে সংযোগ করতে হবে। অনেকেই বলে, এ্যাডসেন্স পাওয়া খুবই কঠিন। আমি বলব- পৃথিবীতে সহজ বলে কিছুই নেই। চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এডসেন্স অবশ্যই পাবেন। একবার এ্যাডসেন্স পেলে সেটাকে রক্ষা করার জন্য তাদের নিয়ম নিতি গুলো মেনে চলতে হবে। এ্যাডসেন্স সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেতে এই সাইটে Google AdSense Help Community ভিজিট করতে পারেন।
- আরো পড়ুন: গুগল এ্যাডসেন্সে অংশগ্রহণ করার যোগ্যতামান
- আরো পড়ুন: গুগল এ্যাডসেন্স থেকে টাকা আয় ।সম্পূর্ণ এ্যাডসেন্স গাইড
- আরো পড়ুন: অ্যাডসেন্স থেকে টাকা তোলার উপায়
গুগল ওয়েবসাইট বা ব্লগের মালিকদেরকে মাসে কত টাকা দেয়?
কিছুদিন আগে আমাকে একজন প্রশ্ন করেছিল যে, গুগল আপনাকে মাসে কত টাকা দেয়। এরকম ধারণা অনেকেরই আছে যে কষ্ট করে গুগল এ্যাডসেন্স একাউন্ট পেয়ে গেলেই গুগল আমাকে মাসে মাসে টাকা দিবে। যাদের এরকম ধারণা আছে, তারা এবার কথাটা জানুন।
গুগল আপনাকে মাসে মাসে কোনো টাকা দিবে না, কারন গুগল আপনাকে চাকরি দেয়নি। আপনার ব্লগের মাধ্যমে যদি গুগলের কোনো আয় না হয়, গুগল কেন আপনাকে টাকা দিবে?
এ্যাডসেন্সের টাকার পরিমান নির্ভর করে ব্লগের ভিজিটর এর উপর। আপনার যদি প্রচুর ভিজিটর থাকে তাহলে আপনি ভালো আয় করতে পারবেন অন্যথায় পারবেন না। গুগল আপনার সাইটে বিজ্ঞাপন অর্থাৎ অন্য ওয়েবসাইট এর লিঙ্ক প্রদর্শন করাবে, এখন আপনার ব্লগের ভিজিটর যদি সেই লিঙ্কে ক্লিক করে বিজ্ঞাপন দাতার ওয়েবসাইটে যায় তাহলেই আপনি টাকা পাবেন।
কিভাবে টাকা হাতে পাব?
গুগল ব্লগারদেরকে ২ ভাবে টাকা দেয়। ১. Western Union এবং ২. ব্যাঙ্ক চেক এর মাধ্যমে। দুঃখ জনক হলেও সত্য যে, আমাদের দেশে Western Union এর মাধ্যমে টাকা দেয়া হয় না। ফলে আমাদের টাকা হাতে পেতে দেরি হয়। আপনার একাউন্টে $100 বা তার বেশি জমা হলে প্রত্যেক মাসের ২৩ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে একটি ব্যাঙ্ক চেক আপনার ঠিকানায় পোস্ট করা হবে।
চেক আসতে নরমালি পোস্ট-অফিসের মাধ্যমে আনলে ২০ থেকে ২৫ দিন সময় নেয়। এর আপনি যদি DHL কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আনেন তাহলে এক সপ্তাহের মধ্যেই পেয়ে যাবেন (এ ক্ষেত্রে ৩০ ডলার কেটে নেয়া হবে)। চেক হাতে পাওয়ার পর চেকটি যে কোন ব্যাঙ্কে জমা দিলেই আপনার একাউন্টে টাকা জমা হয়ে যাবে। টাকা জমা হতেও কিছুদিন সময় লাগে।
গুগলের এ্যাড ব্লগে বসালেই কি টাকা আসা শুরু হবে?
গুগলের এ্যাড ব্লগে বসালেই টাকা আসা শুরু হবে এটা আরেকটা ভুল ধারণা। অনেকেই মনে করেন ব্লগে এ্যাড বসালেই টাকা আসা শুরু হবে। আমি নিশ্চিত প্রত্যেক ব্লগারই এই কথা ভাবেন। কিন্তু এ্যাডসেন্স একাউন্ট পাবার পরে তারা আসল বিষয়টি বুঝতে পারেন। এটা ভাবা আসলে কোনো দোষের কিছু নয়। আমিও একসময় এটাই ভাবতাম, কিন্তু এখন বুঝি যে আসলে এ্যাডসেন্স থেকে আয় করা এত সহজ না। এ্যাডসেন্স থেকে আয় করতে হলে আপনার প্রয়োজন হবে প্রচুর ট্রাফিক।
অনেকেই বলেন যে আমার সাইটে দৈনিক ১০০০ থেকে ১২০০ ভিজিটর আসে। তাদেরকে বলছি আপনি কি কখনো আপনার সাইটের বাউন্স রেট দেখেছেন? শুধু ভিজিটর আসলেই হবে না, ভিজিটর কে সন্তুষ্টও করতে হবে। একজন ভিজিটর যখন আপনার সাইটে সন্তুষ্ট হওয়ার মত কিছু পাবে, নিশ্চয় তখন কিছু সময় আপনার সাইটে থাকবে।
এর যখন একজন ভিজিটর কিছুক্ষণ আপনার সাইটে থাকবে তখন আপনার সাইটে বিজ্ঞাপনের দিকে তার নজর দিবে এবং ক্লিক দিবে। অন্যথায় ভিজিটর এসে যদি আপনার সাইটে কিছু না পায়, তাহলে নিশ্চয় সে আপনার সাইটে থাকবেনা। সাইটে ভিজিটর না থাকলে বিজ্ঞাপনে ক্লিক পরার কোন সম্ভাবনা নেই। এর বিজ্ঞাপনে ক্লিক না পরলে টাকা আয়ের প্রশ্নই আসে না। এখন বলুন গুগলের এ্যাড ব্লগে বসালেই কি টাকা আসা শুরু হবে?
- আরো পড়ুন: কিভাবে ব্যাক এন্ড ডেভেলপার হবো
- আরো পড়ুন: ওয়েব ডিজাইনের জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো হবে?
- আরো পড়ুন: ওয়েব ডেভেলপার হবেন কেন?
কিভাবে বুঝব আমার সাইট এ্যাডসেন্স উপযোগী কিনা?
ব্লগিং স্কুলের ফেসবুক গ্রুপে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন যে, কিভাবে বুঝব আমার সাইট এ্যাডসেন্স উপযোগী কিনা? নিজের ব্লগটিকে এডমিন হিসেবে না দেখে ভিজিটর হিসেবে দেখুন। আমি নিশ্চিত আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। তারপরেও যদি বুঝতে না পারেন যে, আমার সাইটে কোনো সমস্যা আছে কিনা। তাহলে সোজা গিয়ে এ্যাডসেন্স এ এপ্লাই করুন।
আপনার সাইট ভালো হলে গুগল আপনাকে এডসেন্স দিয়ে দিবে অথবা কি সমস্যা আছে সেটা বলে দিবে। আমিও কিন্তু এভাবেই এ্যাডসেন্স পেয়েছিলাম। যাই হোক, ভালো মানের কন্টেন্ট লিখুন অবশ্যই এডসেন্স পাবেন। গুগল শুধুমাত্র কন্টেন্টই দেখে, ডিজাইনটা দেখে না। অনেকেই বলে যে, ভাই আমার সাইটের ডিজাইনটা দেখেন। আরে ভাই, ভিজিটর এসে কি বসে বসে আপনার ডিজাইন দেখবে? ডিজাইন এর পিছনে সময় নষ্ট না করে প্রচুর এবং ভালো কুয়ালিটির আর্টিকেল লিখুন।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন। এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।