ঘরোয়া ১০টি পদ্ধতিতে মিলবে থাইরয়েডের সমাধান দুর্বা ডেস্ক :: শরীরের প্রতিটি উপাদানেরই নির্দিষ্ট একটা মাত্রা থাকা চাই। মানুষের শরীরের জন্য থাইরয়েড হরমোনেরও একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় থাকা জরুরি। প্রয়োজনের কম বা বেশি হরমোন উৎপাদিত হলে শরীরের ওপর বিভিন্ন রকম বিরূপ প্রভাব দেখা দিতে থাকে।
কিছু খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন এবং জীবনযাত্রা ঠিক রাখার মাধ্যমে থাইরয়েড সমস্যার উপশম হতে পারে।
থাইরয়েডের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এবং নিজেকে সুস্থ রাখতে ঘরোয়া ১০টি পদ্ধতি-
১. প্রথমেই বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং জাঙ্ক ফুড (এক ধরনের কৃত্রিম খাবার যাতে চর্বি, লবণ, কার্বনেটসহ ক্ষতিকারক উপাদান বেশি থাকে) পরিহার করতে হবে। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর এবং নিয়মিত এগুলো খাওয়ার ফলে শরীরে অনেক খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।
২. অগোছালো জীবনযাপন পরিহার জীবনযাত্রা ঠিক করতে হবে। বর্তমানে এত এত শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে এটি। স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করা অত্যন্ত জরুরি। শরীরের অতিরিক্ত ক্যালোরি কমাতে ও শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্যায়ামের বিকল্প নেই।
৩. খাওয়ার সময় মনোযোগ দিয়ে ভালো করে চিবিয়ে খেলে তা থাইরয়েড এবং মনের মধ্যে সংযোগ গড়ে তোলে। তাই খাওয়ার সময় কখনও তাড়াহুড়ো না করে, সময় নিয়ে ভালো করে চিবিয়ে খেতে হবে। শরীরের বিপাক নিয়ন্ত্রণে থাইরয়েড গ্রন্থি বিশেষ ভূমিকা পালন করে, সে জন্য সময় নিয়ে খাবার চিবিয়ে খেলে তা বিপাক ক্রিয়া বাড়াতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
৪. গবেষকেরা বলেন, কিছু শাকসবজি আছে যেমন, বাঁধাকপি, ব্রকলি, ব্রাসেলস স্প্রাউট, ফুলকপি ইত্যাদি এগুলো কাঁচা অবস্থায় খাওয়া ঠিক নয়। এগুলো কাচা খেলে থাইরয়েড গ্রন্থির কাজ ব্যাহত হয়ে থাকে এবং থাইরয়েড গ্রন্থির ভারসাম্য নষ্ট হয়। একারনে এ সবজি গুলো কাঁচা অবস্থায় বা স্যালাদ হিসেবে না খেয়ে রান্না করে খেতে হবে।
৫. নারকেল তেল গরম না করে ব্যবহার করলে তা ওজন কমাতে এবং বিপাকীয় ক্রিয়া বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। নারকেল তেলে যে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে তা থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া শরীরের তাপমাত্রাও ঠিক রাখতেও এই তেল অনেক কার্যকরি।
৬. হরমোন উৎপাদনের ভারসাম্যতা বজায় রাখতে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার অনেক উপকারী। এতে বিপাক ক্রিয়ার উন্নতি হয়। এ ছাড়া এটি শরীরের ফ্যাট নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং শরীর থেকে বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ বের করে পুষ্টি শোষণে সহায়তা করে।
৭. আদায় বিভিন্ন রকম খনিজ যেমন- পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম থাকে। তাই এটি থাইরয়েডের সমস্যার জন্য অনেক কার্যকর। থাইরয়েডের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত আদা চা পান করা অনেক উপকারী।
৮. থাইরয়েডের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে ভিটামিন বি খুবই সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে ভিটামিন বি১২ হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই যেগুলো খাবারে এই ভিটামিন বেশি থাকে যেমন, ডিম, মাছ, মাংস, দুধ, বাদাম এগুলো প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তভুক্ত করতে হবে যাতে এগুলি শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন বি সরবরাহ করতে পারে।
৯. ভিটামিন ডি এর অভাবেও অনেক সময় থাইরয়েডের সমস্যা হয়ে থাকে। আর একমাত্র সূর্যের আলোতেই শরীর ভিটামিন ডি প্রস্তুত করতে পারে। তাই দিনে অন্তত পক্ষে ১৫ মিনিট সূর্যের আলোয় থাকতে হবে। এতে শরীরে ভিটামিন ডি প্রস্তুতসহ ভালোভাবে ক্যালসিয়ামের শোষণ হবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে। ভিটামিন ডি বেশি পরিমাণে থাকে এমন কিছু খাবার হচ্ছে- স্যালমন, ম্যাকারেল, দুগ্ধজাতীয় দ্রব্য, কমলালেবুর রস, ডিমের কুসুম ইত্যাদি। এর পরেও শরীরে ভিটামিন ডির মাত্রা অনেক কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন-ডি সাপ্লিমেন্ট নেয়া যেতে পারে।
আরো পড়ুন: আনন্দ স্কুলের টাকা হরিলুট, আভাসের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি!ফেঁসে যাচ্ছে কাজল
১০. আয়োডিন ও খনিজসমৃদ্ধ খাবার থাইরয়েডের জন্য অনেক বেশি উপকারী। তাই যে খাবারে এই উপাদানগুলো বেশি থাকে যেমন, দুধ, পনির, দই এই ধরনের দুগ্ধজাতীয় খাবার থাইরয়েডের জন্য অনেক বেশি উপকারী। আয়োডিন সাপ্লিমেন্টও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন।