দীর্ঘদিন সফলতার সাথে চাকরী করার কৌশল যা প্রয়োগ করলে আপনার জীবন বদলে যেতে পারে। সফলতার সাথে দীর্ঘদিন চাকরি করা একটা বিরাট চ্যালেঞ্জের বিষয়৷ দেখা যায়, দীর্ঘদিন চাকরির সাথে যুক্ত থাকা বেশির ভাগ মানুষ হতাশা প্রকাশ করেন, বিষণ্ণতায় ভোগেন৷ চাকরি দীর্ঘদিন করতে হবে, এটিই স্বাভাবিক ব্যাপার৷ অন্যদিকে দীর্ঘদিন একই কাজ করতে করতে একঘেয়েমি আর ক্লান্তি বোধ হতে পারে৷ সেটাও স্বাভাবিক ব্যাপার৷
এই স্বাভাবিক ব্যাপারগুলোকে নিয়েই চলতে হবে চাকরি জীবনে৷ ধাপে ধাপে উন্নতিও করতে হবে৷ দীর্ঘ দিন ভালোভাবে চাকরি করতে হলে কিছু নিয়ম মেনে চলতে পারেন৷ এই নিয়মগুলো সবার জন্য সমানভাবে কাজ করবে সে রকম ভাবার কোনো কারণ নেই৷
দীর্ঘদিন সফলতার সাথে চাকরী করার কৌশল
ইতিবাচক থাকুন
চাকরি যে সব সময় মনের মতো হবে এমনটা নয়৷ সে জন্য বেশির ভাগ চাকরিজীবীর একধরনের মানসিক অস্বস্তি থাকে৷ এছাড়া প্রতিদিনের রুটিন ওয়ার্কও একঘেয়ে হয়ে যেতে পারে৷ একঘেয়ে কাজ দীর্ঘদিন করতে কারোই ভালো লাগার কথা নয়৷ এসব বিষয় থেকে মুক্ত থাকতে ইতিবাচক থাকতে হবে৷ সবকিছুতে ইতিবাচক থাকুন৷ যে কাজটি করছেন সেখান থেকে আনন্দ খুঁজে নিতে শিখুন৷ যে পদ্ধতিটিতে নিজের আরাম খুঁজে পাবেন, সেটি প্রতিদিন ব্যবহার করুন৷ নির্দিষ্ট সময় পরপর নতুন পদ্ধতি খুঁজে নিন৷
- আরো পড়ুন: গোলমরিচের বিষেশ গুণ
- আরো পড়ুন: গর্ভবতী মায়েদের বাড়তি পুষ্টি সহ ১৬টি রোগের ঔষধ জিরা পানি
- আরো পড়ুন: তারুণ্যের চাই সুষম খাদ্যাভ্যাস
প্রতিদিন শিখুন
আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে একটি বিষয় স্পষ্ট যে চাকরিজীবীরা নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করেন না, সেটা প্রযুক্তিগত কিছু হোক বা কাজ করার নতুন থিওরি হোক৷ এই মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসুন৷ নিজের কাজকে সহজ করার জন্য প্রতিদিন কিছু একটা শেখার চেষ্টা করুন৷ এ জন্য আপনি কাজের ফাঁকে নিজের কাজ বিষয়ে কিছু পড়ার চেষ্টা করুন৷
গুগলে খুঁজলেই পড়ার জন্য আপনি কিছু না কিছু পেয়ে যাবেন৷ সেগুলো পড়তে থাকুন৷ টেকনিক্যাল জ্ঞান বাড়ানোর জন্য বর্তমানের প্রযুক্তি বিষয়ে খোঁজখবর রাখুন৷ খুঁজে দেখুন আপনার কাজের ধরন অনুসারে কোনো প্রযুক্তি আপনাকে সহায়তা করতে পারে৷ সেগুলো শিখে নিন দ্রুত৷ যত শিখবেন ততই বৈচিত্র্যপূর্ণভাবে আপনি আপনার কাজ করতে পারবেন৷
নিজের ভালো চর্চাগুলি বজায় রাখুন
প্রত্যেক মানুষ তাঁর মতো করে সৃষ্টিশীল৷ চাকরি শুরু করার আগে আপনি সৃষ্টিশীল যা করতেন, চাকরির ফাঁকে ফাঁকে সেগুলোর চর্চা অব্যাহত রাখুন৷ হতে পারে আপনি গিটার, বাঁশি বা এই রকম বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারেন, তাহলে অবসরে সেগুলো বাজান৷ গান করতে পারলে অবসরে গান করুন, লেখালেখি করতে পারলে তার চর্চা করুন৷ অবসর সময় খুঁজে বের করুন৷
পরিবার-পরিজনকে সময় দিন
আপনি যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন, তাহলে নিজের পরিবারকে সময় দিন৷ ব্যাচেলর হলে আপনার বন্ধুবান্ধবের সাথে নিয়ম করে মিশুন, আড্ডা দিন, বাইরে ঘুরুন৷ বাবা-মা থাকলে তাঁদের সাথে দেখা করুন৷ আর যদি তাঁদের থেকে দূরে থাকেন, তাহলে অবশ্যই নিয়ম করে তাঁদের সাথে কথা বলুন৷ দেখবেন মানসিকভাবে বেশ ফুরফুরে লাগছে আপনাকে৷ চাকরির একঘেয়েমি থেকে বাঁচতে এই কাজগুলো আপনার ব্রিদিং স্পেস হিসেবে কাজ করবে৷
অফিস এবং ব্যক্তিগত জীবন এক করবেন না
অফিস জীবন এবং ব্যক্তিগত জীবনকে এক করবেন না কখনোই৷ মনে রাখবেন, অফিসে আপনি কাজ করতে যান৷ সেখানে আপনার সবকিছুই অফিস এবং কাজকে কেন্দ্র করেই ঘটতে থাকে৷ কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে আপনার যা কিছু, সেটা একান্তই আপনার৷ এখানে আপনি যা করেন, সেটা মাস শেষে বেতন পাওয়ার জন্য নয়, ভালোবেসে করেন৷ কাজেই অফিসের কাজকর্মকে যত দূর সম্ভব অফিসে রেখে বাড়ি ফিরুন৷ এতে আপনার মানসিক শান্তি অটুট থাকবে৷
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে সচেতন থাকুন
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়া এখন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে৷ কিন্তু খেয়াল করেছেন কি এই সোশ্যাল মিডিয়া আপনার কর্ম ঘণ্টার একটা বড় অংশ নষ্ট করে? আর এখান থেকে যে তথ্যগুলো আপনি পান, তার কতটুকুই বা আপনার কাজে লাগে? তাই এটি ব্যবহারে সচেতন থাকুন৷
সবচেয়ে ভালো হয় অফিসে কাজ করার সময় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার না করা৷ এখানে প্রচুর তথ্য পাবেন যেগুলো আপনাকে মানসিকভাবে ভালো থাকতে দেবে না৷ আর মানসিকভাবে আপনি ফিট না থাকলে মন দিয়ে কাজও করতে পারবেন না৷ অফিসে শুধু যোগাযোগ বা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করুন৷
- আরো পড়ুন: ওয়েব ডিজাইনের বাংলা বই ডাউনলোড করুন (a to z) ভিডিওসহ
- আরো পড়ুন: ই-কমার্স এবং উদ্যোক্তা
- আরো পড়ুন: (SEO) এসইও থেকে কিভাবে আয় করবেন! বিস্তারিত জেনে নিন
ছুটি ফেলে রাখবেন না
অফিসের প্রয়োজনে আপনাকে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় কাজ করতে হতে পারে৷ এটি যেমন সত্য, তেমনি নিজের নির্ধারিত ছুটিগুলো সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চেষ্টা করুন৷ বোনাস কিংবা ওভারটাইমের ফাঁদে নিজের ছুটি নষ্ট করবেন না৷ নিজের পাওনা ছুটি কিভাবে ব্যবহার করবেন, তা নিয়ে নতুন করে ভাবুন৷ নতুন কোনো জায়গায় ঘুরতে যেতে পারেন৷
নিজের প্রয়োজনীয় কাজগুলো ঠিকভাবে শেষ করতে পারেন৷ পরিবারকে সময় দিতে পারেন৷ পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা করতে পারেন কিংবা কিছু না করে স্রেফ ঘুমিয়েও কাটাতে পারেন৷ যাই করুন না কেন নিজের ছুটিগুলোকে অর্থবহ করে তোলার চেষ্টা করুন৷ দেখবেন ছুটি শেষে আপনি তরতাজা, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছেন আগের চেয়েও বেশি৷
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।