নবজাতককে কখন গোসল করাবেন?

নবজাতককে কখন গোসল করাবেন? দুর্বা ডেস্ক :: আপনারা অনেকে প্রশ্ন করেন যে, সিজারে বাচ্চা হয়েছে, কতক্ষণ পর গোসল করাতে হবে? এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য ও পরামর্শ দিয়েছেন রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নাঈমা সুলতানা।

নবজাতককে প্রথম ৩ দিনে গোসল করানো যাবে না। নরমাল কিংবা সিজারের জন্য আলাদা কোনও নিয়ম নেই। একটি বাচ্চার জন্ম যেভাবেই হোক, সুস্থ বাচ্চার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক নিয়মই চলবে।

অনেকে জানতে চান বাচ্চাকে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে নাকি কুসুম গরম পানি দিয়ে? এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হলো, আপনাদের কাছে যে তাপমাত্রা সহনীয় মনে হয়, তা দিয়ে গোসল করাবেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, বাচ্চাকে অনেকক্ষণ ধরে গোসল করানো যাবে না। কারণ গোসল করানোটা একটা স্বাভাবিক যত্নের অংশ।

শীতকালে কোনও বাচ্চার জন্ম হলে আমরা মায়েদের পরামর্শ দিয়ে থাকি, বাচ্চাকে একটা টাওয়েলে কিছুটা পেচিয়ে রাখতে। এতে তার শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা গরম থাকবে। তবে অনেকে গরমকালে বাচ্চা হলে, একই কাজ করেন। বাচ্চার ঠান্ডা লেগে যাবে এই ভয়ে ফ্যান ছাড়ে না। শীতকালের মতো যত্ন করে। এটা করা যাবে না।

ছোট বাচ্চাদের এমন তাপমাত্রায় রাখতে হবে যাতে তারা অতিরিক্ত ঘেমে কিংবা ঠান্ডা না হয়ে যায়। কারণ ঘেমে গেলে লে ঠান্ডা লেগে যাবে। আমরা বলে থাকি, একজন নবজাতকের জন্য কক্ষের তাপমাত্রা ২৫-৩০ ডিগ্রিতে রাখতে হবে। এসি ব্যবহার করলেও তাপমাত্রা এটিই রাখতে হবে। নবজাতকের জন্য এটিই সহনীয় তাপমাত্রা।

আমরা মায়েদের আরেকটি কমন প্রশ্নের সম্মুখীন হই। সেটা হলো, বাচ্চা দুধ টানতে পারছে না, নাকে শব্দ করছে। মা কল করে বাচ্চার এ ধরনের সমস্যা বললে চিকিৎসক হয়তো ঠান্ডার কোনো ওষুধ দেন। এসব ক্ষেত্রে আগে আসলেই বাচ্চার ঠান্ডা লেগেছে কিনা যাচাই করে নিতে হবে।

কারণ ৯০ দিনের কম বয়সী বাচ্চাদের ন্যাজাল ব্লকেট বা নাকে শব্দ করা খুব কমন ব্যাপার। এক্ষেত্রে আমরা ন্যাজাল স্প্রে দিয়ে নাকটা একটু পরিষ্কার করে দিতে পরামর্শ দেই। বাচ্চার শ্বাসকষ্ট, কাশি না থাকে এবং ঠিকমতো মায়ের বুকের দুধ টেনে খেতে পারে তাহলে কোনও সমস্যা নেই।

অনেক সময় বাচ্চার নাক বন্ধ থাকলে তাদের দুধ খেতে সমস্যা হয়। এক্ষেত্রে ন্যাজাল ড্রপ দিয়ে নাকটা পরিষ্কার করে দিলে আর সমস্যা থাকবে না।

আমাদের সমাজে এখন কম ওজনের বা অপরিণত শিশু জন্মের হার বেড়ে গেছে। একটা শিশু মাতৃগর্ভে ৩৭ থেকে ৪০ সপ্তাহ পর্যন্ত থাকলে তার কোনো সমস্যা হবে না। ৩৭ সপ্তাহের আগেই বাচ্চার ডেলিভারি হয়ে যায় এবং ওজন কম থাকে, তাদের আমরা অপরিণত বাচ্চা বলে থাকি। ৩৫ সপ্তাহের মধ্যে বাসায় ডেলিভারি হয়ে গেলে অবশ্যই বাচ্চাকে চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে। এসব বাচ্চার বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। এ যত্নগুলো চিকিৎসকরা মায়েদের শিখিয়ে দেন। এসব বাচ্চারকে খাওয়ানোর জন্য আলাদা কিছু কৌশল রয়েছে।


আরো পড়ুন: শিশু খাদ্যর তালিকা সেরা ১০ টি-জানুন এ টু জেড


অপরিপক্ক বাচ্চার যত্নে চিকিৎসকরা কেএমসি (ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার) শিখিয়ে দিবেন। কেএমসি নিয়ে আমি অনেক দিন কাজ করছি। এটি এতটাই উপকারী যে, যেসব বাচ্চা ১২-১৫শ’ গ্রাম নিয়ে জন্ম নিচ্ছে, এই বিশেষ যত্নে তারা বেড়ে উঠছে। আগে এক সময় দেখা যেত, খুব কম বাচ্চাই ১১শ’ গ্রাম নিয়ে জন্ম নিয়েছে। কিন্তু এখন এ ধরনের ঘটনা খুবই কমন ব্যাপার এবং এ বাচ্চাগুলো বর্তমানে কেএমসির মাধ্যমে বেঁচে থাকছে।

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন।

এগুলো দেখুন

কষা পায়খানা দূর করার ঘরোয়া চিকিৎসা ! কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়

কষা পায়খানা দূর করার ঘরোয়া চিকিৎসা ! কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়

ইদানিং দেখা যাচ্ছে ছোট থেকে বড় সকলের কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষা পায়খানা নিয়ে চিন্তায় আছেন বা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *