মালয়েশিয়া আছি ৮ বছর পূর্ণ হল। ২০ লক্ষ টাকার বেশী আয় করে দেশের মাটিতে পাটিয়েছি। ১৪ লাক্ষ টাকা খরচ করে বিল্ডিং করছি। এখন দেশে জেতে চাইলে বাবা মা বলে দেশে এসে কি করবি আরো ৪/৫ বছর থেকে আয়। দেড় বছরের ছেলেটাকে রেখে আসছি এখন ছেলের বয়স সাড়ে ৯ বছর। ছেলেটাকে আঁদর দিয়ে বড় করতে পারিনি। প্রবাস জীবন: এক ভাইয়ের বাস্তাব ব্যর্থ জীবন থেকে নেওয়া এবিষয় বিস্তারিত নিচে দেয়া হলো।
বউ এর কথা না হয় বাদই দিলাম। টাকা বউ এর কাছে দিলে মা বেজার হয় আবার মাকে দিলে বউ বেজার হয়। শুধু দিয়েই গেলাম,কি পেলাম তা কেউ খোঁজ নিল না। মাগো তুমি তো জান না এমনও দিন গেছে পুলিশের ভয়ে ভাত ফেলে জঙ্গলে পালাতে হয়েছে। কখনও বলিনি কস্ট পাবে বলে। হায়রে প্রবাস! প্রবাসে এসে জীবন যৌবন সবই দিলাম,কি পেলাম তা নিজেও জানি না।
আমার মনে হয় আমার লাইফের সাথে অনেকেরই মিলে যাবে! (প্রবাসী একজন ভাই এর ফেইসবুক পেজ থেকে)
- আরো পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ার প্যারেন্ট ভিসার নীতিমালা
- আরো পড়ুন: কীভাবে দক্ষিণ কোরিয়ায় অভিবাসী হবেন
- আরো পড়ুন: সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাত্রায় শীর্ষে বাংলাদেশিরা
প্রতিদিন দেশ থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশগুলোতে পাড়ি দিয়ে থাকেন আমাদের কারো ছেলে,ভাই,স্বামী কত কি। একবারের জন্য চিন্তা করেছেন তারা কিভাবে জীবন-যাপন করে থাকেন! সেই চিন্তা না করে শুধু চিন্তা করি কবে টাকা পাঠাবে। সেই টাকা দিয়ে কি কি আয়োজন করবেন। কিভাবে খরচ করবেন? চলুন জেনে নেই প্রবাসী একভাইয়ের মাধ্যমে তার জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা।
জীবনের তাগিদে আমার দেশ থেকে বিদেশে পারি জমাই। সুখের আশায় একটু ভালো থাকার আশায়। কিন্তু জীবনে সুখ কিনতে কিনতে প্রবাসীরা জীবনের সুখটা ই যে বিক্রি করে দেয় প্রবাস নামের বাজারে” অনেক সুখের আশায় পরিবার পরিজন ছেড়ে যেতে হয় প্রবাসে। শুধু আপন জনের মুখে একটু হাসি এনে দিতে। কিন্তু প্রবাসি ভাইরা কি সুখি?
হাজার কষ্টের মাঝে জীবনের সুখ দুঃখ বিসর্জন দিয়ে বছরের পর বছর কাটিয়ে দিতে হয় প্রবাসে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজের তাগিদে ছুটে চলা। দেশ থেকে আমরা মনে করি কতই না টাকা যেন বিদেশ। কিন্তু সে টাকা টা কতটা কষ্টের বিনিময় যে আসে তা আমরা জানিনা। কতটা রক্ত মাখা ঘামের পর আসে এই টাকা তা এক প্রবাসী ছাড়া বুঝবেনা।
প্রবাসের টাকায় আমরা কত আরাম আয়েশ এ জীবন যাপন করছি । কত দামী গাড়ি বাড়ীতে আমরা থাকছি । কত ভাল খাবার খাইতেছি । সুখের কোন শেষ নাই । কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখছি যার পাঠানো টাকা দিয়ে এত সুখ এত আরাম আয়েশ ঐই মানুষ টা কেমন ভাবে জীবন যাপন করছে । আমরা এত দামী বক্স খাটে কম্বল গায়ে পরে এসি রুমে ঘুমাচ্ছি কিন্তু ওই মানুষটা কি অবস্তায় আছে? সে কি খাইছে কি খায়নি? তার শরীরটা কেমন আছে ?
কেমন আছেন প্রবাসী ভাই-বন্ধুরা
সকাল ৪টায় ঘুম থেকে উঠে যা একটু হক খেয়ে ৪:৩০ এ গাড়ীর জন্য লাইন। কাজের সাইড গিয়ে কাজ শুরু। ননস্টপ কাজ ১২ টা পর্যন্ত। লাইন করে গিয়ে খাবার নাও। খাবার খাওয়া শেষ ১২:৩০। আবার ১টা বাজে কাজ শুরু কর। ৬ টা প্রযন্ত আবার কাজ । কাজ শেষ আবার গাড়ীর জন্য লাইন । রুমে আসছে ৮ টা বাজে। ফ্রেশ হয়ে আবার রাতের খাবারের জন্য লাইন।
কোম্পানি ভাইদের এই লাইন যেন কখনো শেষই হয়না। সারাটা জীবন প্রবাসে লাইন করতে করতে তাদের জীনের লাইনটা যেন আজও সোজা করে গন্তব্য স্থানে নিতে পারেনি ।
ওপেন ভিসা(ফ্রি ভিসা)
কোম্পানি ভাইদের ভালো হোক খারাপ হোক কাজের চিন্তাটা নাই খাবার তেমন ভালনা হলেও টাইম মত পায়। কিন্ত ফ্রি ভিসা ভাইদের পদে পদে বাধা কষ্ট । তাদের মাথা সব সময় চিন্তা । আজ কাজ আছে তো কাল কাজ নেই । সকালে কিছু খেয়ে দুপুরের জন্য খাবার নিয়ে যাওয়া । কাজ শেষে রাতে ৯/১০ বাজে খাবার বানিয়ে খাওয়া।
সকালে উঠে আবার রান্না কাজ । আবার কাজের খোজে নানান জায়গাতে ঘোরাঘুরি। কাজ নেইতো খাওয়া নেই । খাওয়া রুম ভাড়া এইযে কতটা চিন্তা থাকে ফ্রি ভিসা ভাইদের। আবার বছর ঘোরতেই আকামা (ID) কফিল ফয়দা । কতটা যে কষ্ট যন্ত্রনা ভাইদের একজন প্রবাসী ছাড়া এই কষ্টটা বোঝার ক্ষমতা কারো নেই।
দিন রাত পরিশ্রম করে আমাদের ভাইয়েরা তাদের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেনা। নানান রকম দালালের মাধ্যমে প্রতারিত হচ্ছে। কাজ করতেছে টাকা পাচ্ছেনা।
উপরের কথা গুলো সাধারণ কিছু কথা।
আমাদের প্রবাসী ভাইদের জীবনে ঈদ কিভাবে যায় তারা নিজেরা এ জানেনা। তাদের ঈদ সকালের ঈদের নামাজ টা ই।
প্রবাসী ভাইদের বিশেষ কোন দিন নাই। তাদের সারা বছরের প্রতিদিন সমান। তাদের বিশেষ দিন একদিন ই তা হলো সেলারি হাতে পাওয়ার দিন। ওইদিন অনেক খুশি থাকে তারা। কারন তাদের পাঠানো টাকা দিয়ে তাদের ফ্যামিলি টা খুব সুন্দর ভাবে থাকবে। ছেলে মেয়ে বাবা মা সুখে শান্তিতে থাকবে তাহলে ই তাদের শান্তি।
- আরো পড়ুন: কুয়েত আগুনে ৩ বাংলাদেশির মৃত্যু
- আরো পড়ুন: পর্তুগালে নার্সারি থেকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন?
- আরো পড়ুন: নরওয়েতে উচ্চশিক্ষাঃ জেনে নিন বিস্তারিত
ঈদের দিনে কত প্রবাসী কেঁদে ভাসায় বুক,,কিন্তু তাদের মুখে আছে সুখের কথা সুখের হাসি। তাদের এই সুখের হাসির কারন তারা চায়না তাদের কষ্টের কথা গুলো বলে তারা তাদের পরিবারের সুখটা কেড়ে নিতে। তাদের কষ্টটা তাদের বুকে চেপে স্বজন দের মুখে হাসিতে তারা খুশি। ঘাম, রক্ত, এমনকি জীবন দিয়েও পরিবার ও দেশের ভাগ্য পরিবর্তনে ভূমিকা রাখেন তাঁরা৷
প্রবাসে টাকা আছে তবে সুখ যে নেই তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। … ভালোবাসাহীন জীবন নিয়ে বুক ভরাকষ্টের পাহাড় নিয়ে সুখের আশে শত কষ্ট সহ্য করে পরে থাকে। শুধু মাত্র পরিবারের সুখের জন্য। প্রবাসে একা থাকা পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা করে কাটে তাদের প্রবাস জীবন।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।