দুর্বা ডেস্ক :: মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের ফিরিয়ে দেয়ার আদেশ দিয়ে তা পরে স্থগিত করে নিয়েছে ভারতের মনিপুর রাজ্য। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
এসব শরণার্থীদের ভদ্রভাবে ফেরত পাঠাতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয় রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে ওই আদেশ ভুল ধারণা ছড়াচ্ছে জানিয়ে মঙ্গলবার তা স্থগিত করা হয়েছে।
গেল ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে। অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে তারপর থেকেই সেখানে টানা বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভ দমনে জান্তাবাহিনী বলপ্রয়োগ করছে। বিক্ষোভ করতে গিয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫১০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
বিবিসি জানায়, মনিপুর ছাড়াও মিয়ানমারের কারেন রাজ্য থেকে তিন হাজারের বেশি কারেন শরণার্থী প্রতিবেশী থাইল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছে। থাই সেনারা তাদের সীমান্তের কাছেই আটকে রেখেছে।
মনিপুর রাজ্যের গৃহমন্ত্রী দ্বিতীয় আদেশে জানায়, রাজ্য সরকার শরণার্থীদের জন্য ‘সব ধরনের মানবিক পদক্ষেপ’ গ্রহণ করবে এবং ‘তাদের সব ধরনের মানবিক সহায়তা’প্রদান করা হবে। যেসব শরণার্থী আহত অবস্থায় এসছেন সকলকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
প্রথম আদেশে বলা হয়েছিল, ‘গুরুতর আহত’ অবস্থায় এলে তাকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। কিন্তু শরণার্থী ক্যাম্প নির্মাণ করে খাবার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে দেওয়া হবে না।
তখন রাজ্য সরকার থেকে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের আরো বলা হয়েছিল, কোনো শরণার্থী যদি ভারতের জাতীয় পরিচয়পত্র (আধারকার্ড) বানানোর কোনো রকম চেষ্টা করে তবে সেই চেষ্টা অবশ্যই যেকোনো মূল্যে ভণ্ডুল করতে হবে। সীমান্ত পেরিয়ে প্রবেশ কারীদের বা শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় প্রার্থনা করা লোকজনকে অবশ্যই বিনীতভাবে ফেরত পাঠানো হবে।
ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের নাগরিকরা সীমান্ত পেরিয়ে অন্যদেশে প্রবেশ করতে পারবেন এবং সর্বোচ্চ ১৪ দিন বৈধভাবে বসবাস করতে পারবেন। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত বছর মার্চ থেকে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়।
মিয়ানমার থেকে ঠিক কতজন শরণার্থী হিসেবে ভারতে প্রবেশ করেছেন তার সঠিক সংখ্যা বলা মুশকিল। তবে কেউ কেউ ওই সংখ্যা প্রায় ৭০০ বলে জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের বিক্ষোভকারীদের উপর জান্তাবাহিনীর দমনপীড়ন এবং বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী দলের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকায় সেনাবাহিনীর হামলার কারণে ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরো বড়াবে।
এ মাসের শুরুতে মিয়ানমারের একদল পুলিশ ভারতের আরেক রাজ্য মিজোরামে প্রবেশ করে আশ্রয় প্রার্থনা করে। তখন তারা বলেছিলেন, সেনাবাহিনী তাদের বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালাতে বলেছিল। তারা সেটা করতে অস্বীকৃতি জানান এবং প্রাণভয়ে ভারতে পালিয়ে যান।