দুর্বা ডেস্ক :: ফ্যাটি লিভার নীরক ঘাতক। এটি শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্গান লিভারকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। দেশের প্রায় ৩০% মানুষ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত। এ রোগের কোনও উপসর্গ হয় না। কেউ অন্য কোনো রোগের কারণে পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম করলে, ফ্যাটি লিভার থেকে থাকলে সেটি ধরা পড়ে।
এর বাইরে লিভারে চর্বি বেশি পরিমাণে জমা হলে ধীরে ধীরে লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। প্রথমদিকে পেটের ডান দিকে উপরে যে ফ্যাটি লিভার থাকে, সে অংশে একটু একটু ব্যথা হয় ও পেটটা একটু ভারী ভারী লাগে। ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রথমে শুধু লিভারে চর্বি জমা থাকে। অন্য কোনো ইনজুরি হয় না। পরে বেশি চর্বি জমার ফলে লিভারে প্রদাহ দেখা দেয়।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়েছেন শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালের পরিচালক এবং পরিপাকতন্ত্র ও লিভার রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ।
-
লিভার ক্ষতিগ্রস্ত কিনা?
এ প্রদাহ হওয়ার মানে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করেছে। যেহেতু লিভার আমাদের শরীরের পাওয়ার হাউস। সুতরাং লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হলে শরীরের এনার্জি কমে যাবে, রোগী দুর্বল হয়ে অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠবে। আগের মতো কাজ করতে পারবে না, ক্ষুধামন্দা শুরু হবে, ওজন কমে যাবে।
পরের ধাপে লিভার আরো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া শুরু করবে এবং শরীরে জন্ডিস দেখা দিবে। এক পর্যায়ে বেশি মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে শরীর হলুদ হয়ে যাবে এবং হাত-পায়ে পানি আসবে। অনেক সময় রক্ত বমি হয় এবং এটি আসলে লিভার সিরোসিসের লক্ষণ। এরপর লিভার যদি আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং আমরা সতর্ক না হই কিংবা চিকিৎসা না নেই, সেটি লিভার ক্যানসার হতে পারে।
-
লিভার ক্যান্সার হলে যেভাবে বুঝবেন
লিভার ক্যানসার হলে লিভারে চাকা হয়, লিভার বড় হয়ে যায় এবং মানুষের আয়ু দ্রুত কমতে থাকে। কিছু রোগী চিকিৎসকদের অনেক জটিলতা নিয়ে আসেন, লিভার সিরোসিস নিয়ে আসেন, আবার কিছু রোগী লিভার ক্যানসার পর্যায়ে আসেন। কারো যদি হেপাটাইটিস হয়ে যায়, তাকে অবশ্যই জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিতে হবে।
-
জেনে নিন গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ
ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধের উপায় হলো, ওজন নিয়ন্ত্রণ করা। ওজন নিয়ন্ত্রণ করলে ফ্যাটি লিভার সম্পর্কিত যেসব রোগ আছে, যেমন, ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার, কোলেস্টেরল, এগুলো নিয়ন্ত্রণ হয়ে যাবে। আমরা ওজন ২ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। প্রথমত, আমরা আমাদের শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পরিমিত পরিমাণে খাবার খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
আরো পড়ুন: ডিভি লটারি 2022 স্বপ্নের দেশ আমেরিকা (এ টু জেড)
আরো পড়ুন:হরমোনের প্রভাবে শরীরে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে
পাশাপাশি যে পরিমাণ এনার্জি আমি নিচ্ছি, সেই পরিমাণ এনার্জি যেন খরচ হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সুতরাং আমাদের পরিমিত পরিমাণে সুষম ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে।
দ্বিতীয়ত, আমাদের নিয়ম অনুযায়ী কায়িক পরিশ্রম করতে হবে, ব্যায়াম করতে হবে, প্রয়োজনে আমাদের খেলাধুলা করতে হবে। যে পরিমাণ খাবার আমরা খেয়েছি, সে পরিমাণ এনার্জি খরচ করলে আমাদের ডায়াবেটিস কমে যাবে, ব্লাড প্রেসার কমে যাবে, কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যাবে। এক্ষেত্রে কারো এসব সমস্যা বেশি থাকলে একটি স্ট্যান্ডার্ড লেভেলে চলে আসবে।
সুতরাং ফ্যাটি লিভার এবং এ সম্পর্কিত রোগ নিয়ন্ত্রণের প্রথম উপায় হলো, পরিমিত পরিমাণে খাবার গ্রহণ। এরপর কায়িক পরিশ্রম বাড়ানা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ ২টি কাজের মাধ্যমে ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধ করা সম্ভব।
আরো পড়ুন: উজিরপুরে সেই বিতকির্ত ওসিদের প্রত্যাহার