জেনে নিন শীতে যন্ত্রণাদায়ক সোরিয়াসিস থেকে মুক্তির ৭ উপায় সম্পর্কে। আসুন এ সম্পর্কে আজকে আলোচনা করে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। ন্যাশনাল সোরিয়াসিস ফাউন্ডেশনের (এনপিএফ) এক সমীক্ষা অনুসারে, সোরিয়াসিস আক্রান্ত প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৪ জনের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, শীতকালে রোগটি আরও বেড়ে গেছে। শীতে ঠান্ডা আবহাওয়ায় সোরিয়াসিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা মুশকিল।
- আরো পড়ুন: দ্রুত ওজন কমাবে আয়ুর্বেদের যে ৮ উপায়
- আরো পড়ুন: বিপাকীয় সমস্যা জন্মগত হলে যা করণীয়
- আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে যে সকল ডকুমেন্টস লাগবে
ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউয়ের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ও সান ফ্রান্সিসকোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী ক্লিনিকেল অধ্যাপক জেনি মুরাস বলেছেন, শীতে আবহাওয়া পরিবর্তনে সোরিয়াসিসের সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।
জেনে নিন শীতে যন্ত্রণাদায়ক সোরিয়াসিস থেকে মুক্তির ৭ উপায় সম্পর্কে:
১. গরম পানি ব্যবহার করবেন না। এতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। কারণ ত্বক থেকে নির্গত প্রাকৃতিক ও প্রতিরক্ষামূলক তেল গরম পানির সঙ্গে ধুয়ে যায়। ফলে ত্বক আরো শুষ্ক হয়ে সোরিয়াসিসের সমস্যা বাড়ায় বলে মত ডা. মুরাসের।
আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজির পরামর্শ অনুযায়ী, সোরিয়াসিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে গরম পানি ব্যবহার করা উচিত নয়। পাশাপাশি ৫ থেকে ১৫ মিনিটের বেশি গোসল করা যাবে না। আর অবশ্যই গোসলের পর ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
২. ঘরের পরিবেশ যদি শুষ্ক ও গরম হয় সে ক্ষেত্রে সোরিয়াসিসের প্রভাবে চুলকানির সমস্যা আরো বাড়তে পারে। মায়ো ক্লিনিকের তথ্য অনুসারে, ঘরের আর্দ্রতা ৩০ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে রাখা উচিত। এজন্য সোরিয়াসিসে আক্রান্ত রোগীরা ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন।
৩. ডা. মুরাস জানান, করোনাকালীন সময়ে বেড়েছে হাত ধোয়া ও স্যানিটাইজার ব্যবহারের প্রবণতা। যা সোরিয়াসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে।
তাই ত্বকের শুষ্কতা এড়াতে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ময়েশ্চারাইজার ক্রিম যেন রাসায়নিক, সুগন্ধি ও রঞ্জকমুক্ত হয়। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পর যতক্ষণ না ক্রিম ত্বকের সাথে মিশে যাচ্ছে, ততক্ষণ ম্যাসেজ করুন।
৪. সোরিয়াসিসে আক্রান্ত রোগীরা উলের পোশাক পরবেন না। এতে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া বাড়তে পারে। আবার বেশি ভারী পোশাকও পরবেন না। এতে শরীর অতিরিক্ত গরম হয়ে ঘামের সৃষ্টি হতে পারে। ফলে আক্রান্ত স্থানে জ্বালাপোড়া করতে পারে।
৫. সূর্যালোক সোরিয়াসিসের চিকিৎসায় দারুন কার্যকরী। যাকে বলা হয় ফটোথেরাপি। শীতকালে সোরিয়াসিসের খারাপ প্রভাব কাটিয়ে উঠতে ফটোথেরাপি দারুন কাজ করে বলে মত ডা. মুরাস।
আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজির জার্নালে অক্টোবর ২০১৯ সালে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সোরিয়াসিস রোগীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে জৈবিক ওষুধের চেয়ে ফটোথেরাপি বেশি কার্যকর। যা সূর্যের আলোর মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়। তবে শীতে যেহেতু রোদের দেখা কম মেলে এজন্য সোরিয়াসিস আরও বেড়ে যায়।
- আরো পড়ুন: হার্নিয়ার চিকিৎসা নিতে দেরি করবেন না
- আরো পড়ুন: পেটে ব্যথার কারণ কি অ্যাপেনডিসাইটিস?
- আরো পড়ুন: বন্ধ্যাকরণ কেন জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি
৬. একে তো শীতে ফ্লু সংক্রমণ বেড়ে যায়, অন্যদিকে করোনার প্রাদুর্ভাব- সব মিলিয়ে সোরিয়াসিস রোগীকে এ সময় সাবধানে থাকতে হয়। তাই ঠান্ডা লাগানো যাবে না। পাশাপাশি সিডিসি’র পরামর্শ মেনে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখুন ও মাস্ক ব্যবহার করুন।
৭. আক্রান্ত স্থানে কখনও নখ লাগাবেন না। সোরিয়াসিসে আক্রান্ত স্থানে চুলকানির সৃষ্টি হলে অনেকেই নখ দিয়ে স্ক্র্যাচ করেন। এতে আক্রান্ত স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে।
এমনকি ত্বকের অন্য স্থানেও নতুন ঘা দেখা দিতে পারে। যাকে বলা হয় কোয়েবনার। গবেষণায় দেখা গেছে, সোরিয়াসিসে আক্রান্ত প্রায় ২৫ শতাংশ রোগীই কোয়েবনারে ভোগেন।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।