অষ্টম শ্রেণি:অনুধাবন শক্তি ও অনুচ্ছেদ উত্তরসহ (PDF)
অনুধাবন শক্তি ও অনুচ্ছেদ
অনুধাবন শক্তি
লিখিত যে কোনো বিষয়ে কোনো না কোনো মানুষ পাঠ করে থাকে কিন্তু যে অংশটুকু পড়ে তার মূলভাব সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারে তাকে বলা হয় তার অনুধাবন দক্ষতা। একটি পাঠে কিছু শব্দ থাকে, কিছু নতুন বিষয় থাকতে পারে যার অর্থ বা ধারণা জানা না থাকলে পাঠটির পূর্ণ ধারণা লাভ সহজ হয় না।
তাই একটি পাঠ সম্পূর্ণরূপে বুঝতে হলে পাঠ সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয়ও জানতে এবং বুঝতে হয়। আবার তা কেবল মুখস্ত করলে সেটি বেশিদিন মনে নাও থাকতে পারে। সেই জানা জ্ঞান অন্য কোনো পাঠের সাথে বা জ্ঞানের সাথে মেলাতে পারার ক্ষমতাও থাকতে হয়। এ ভাবেই অনুধাবন দক্ষতা পরিপূর্ণভাবে অর্জিত হয়।
- উত্তর ডাউনলোড করুন>অষ্টম শ্রেণি:অনুধাবন শক্তি ও অনুচ্ছেদ উত্তরসহ (PDF)
- উত্তর ডাউনলোড করুন> অষ্টম শ্রেণি:“ভাব-সম্প্রসারণ“(PDF DOWNLOAD)
- উত্তর ডাউনলোড করুন> (PDF)অষ্টম শ্রেণি:সারাংশ ও সারমর্ম`লেখার নিয়ম বা কৌশল
- উত্তর ডাউনলোড করুন> (PDF)অষ্টম শ্রেণি:বাঙালির বাংলা কাজী নজরুল ইসলাম‘ প্রশ্নোত্তর
- উত্তর ডাউনলোড করুন>(PDF) অষ্টম শ্রেণি:পড়ে পাওয়া বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর
- উত্তর ডাউনলোড করুন> ভাব ও কাজ প্রশ্নের উত্তর
- উত্তর ডাউনলোড করুন> (PDF) অষ্টম শ্রেণি:‘মানবধর্ম’বাচাইকৃত সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ২টি
- উত্তর ডাউনলোড করুন> (PDF) অষ্টম শ্রেণি:‘মানবধর্ম’বাচাইকৃত সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৩টি
- উত্তর ডাউনলোড করুন>(PDF) অষ্টম শ্রেণি:‘মানবধর্ম’বাচাইকৃত সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
[ পাঠ্য বই থেকে ]
অনুধাবন শক্তি পরীক্ষা
স্পন্দন, প্রতীতি, প্রান্ত, হিমেল, বর্ণ, প্রাপ্তি শীতের ছুটিতে জগৎপট্টিতে বেড়াতে গিয়েছে। ওরা সবাই এলাকাটি ঘুরে ঘুরে দেখল। ওখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি উচ্চ বিদ্যালয় ও একটি বাজার আছে। এলাকার অধিকাংশ মানুষই শিক্ষিত। কৃষিজীবী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ নানা পেশার মানুষ সেখানে বসবাস করে।
বেশকিছু লোক জীবিকার তাগিদে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপসহ নানা দেশে চাকরি নিয়ে গেছে। এলাকার জনগণ মোটামুটি সচ্ছল। বৈদেশিক অর্থ লেন-দেনের জন্য ওখানে বেশকিছু ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কোনো কোনো বাড়িতে ফুলের বাগান রয়েছে। জগৎপট্টি বাংলাদেশের একটি আদর্শ গ্রামীণ এলাকা।
কর্ম-অনুশীলন:
ক. ‘প্রতীতি’ শব্দের অর্থ কী?
খ. কৃষিজীবী কারা?
গ. নানান পেশার মানুষ বলতে কী বুঝায়?
ঘ. জীবিকা বলতে কী বুঝ?
ঙ. আদর্শ গ্রামের একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
উত্তর
ক. ‘প্রতীতি’ শব্দের অর্থ জ্ঞান।
খ. কৃষি কাজ করার মাধ্যমে যারা জীবিকা অর্জন করে তারাই কৃষিজীবী।
গ. সব মানুষের জীবিকা অর্জনের পদ্ধতি এক নয়। একেক জন একেক ধরনের কাজে নিয়োজিত থাকেন। কেউ চাকরি করেন, কেউ কৃষিকাজ করেন, কেউ মাছ ধরেন কেউ শিক্ষকতা করেন, কেউ বা ব্যবসা করেন। নানা পেশার মানুষ বলতে এই বৈচিত্রপূর্ণ কাজে নিয়োজিত মানুষদেরই বোঝানো যায়।
ঘ. জীবন ধারণের জন্য আমরা যে কাজের সাথে জড়িত থাকি তা-ই আমাদের জীবিকা।
মানুষের জীবন ধারনের জন্য অর্থ উপার্জন করতে হয়। এজন্য মানুষ নানা ধরনের কাজ করে। অর্থাৎ বিভিন্ন পেশায় কর্মরত থাকে। এভাবে যে কাজ বা পেশায় নিয়োজিত থেকে আমরা পারিশ্রমিক অর্জন করি সেই কাজ বা পেশাই জীবিকা হিসেবে পরিচিত।
ঙ. একটি আদর্শ গ্রাম বলতে আমরা বুঝি সেই গ্রামকে যেখানে জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থার সুন্দর সমন্বয় থাকে। একটি আদর্শ গ্রামে প্রয়োজনীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দরকারি ব্যবসা, ধর্মীয় ও অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহ সঠিক পরিমাণে থাকে। জনগণের কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত হয়। মানুষের মাঝে শান্তি-শৃঙ্খলা বিদ্যমান থাকে।
[ অতিরিক্ত অংশ ]
১. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও
নকশিকাঁথা আমাদের একটি গ্রামীণ লোকশিল্প। এ শিল্প আজ লুপ্তপ্রায় হলেও এর কিছু নমুনা পাওয়া যায়। আপন পরিবেশ থেকেই মেয়েরা তাঁদের মনের মতো করে কাঁথা সেলাইয়ের অনুপ্রেরণা পেতেন।
কাঁথার প্রতিটি সুচের ফোঁড়ের লুকিয়ে আছে এক একটি পরিবারের কাহিনি, তাদের পরিবেশ, তাদের জীবনগাথা। আমাদের দেশের কুমোরপাড়ার শিল্পীরা বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্র ছাড়াও পোড়ামাটি দিয়ে নানা প্রকার শৌখিন দ্রব্য তৈরি করে থাকে। নানা প্রকার পুতুল, মূর্তি ও আধুনিক রুচির ফুলদানি, ছাইদানি, চায়ের সেট ইত্যাদি তারা গড়ে থাকে। খুলনার মাদুর ও সিলেটের শীতলপাটি সকলের কাছে পরিচিত।
- ‘গ্রামীণ’ শব্দের বিপরীত শব্দ কী?
- ‘আধুনিক’ শব্দের স্ত্রীবাচক শব্দ কী?
- ‘অনুপ্রেরণা’ শব্দের দুটি সমার্থক শব্দ লেখ।
- লোকশিল্প কী?
- নকশিকাঁথার নকশাগুলো সংগ্রহ করা হতো কোথা থেকে?
উত্তর:
- ‘গ্রামীণ’ শব্দের বিপরীত শব্দ ‘শহুরে’।
- ‘আধুনিক’ শব্দের স্ত্রীবাচক শব্দ ‘আধুনিকা’।
- ‘অনুপ্রেরণা’ শব্দের দুটি সমার্থক শব্দ হচ্ছে উৎসাহ ও উদ্দীপনা।
- . দেশি জিনিস দিয়ে দেশের মানুষের হাতে তৈরি শিল্পসম্মত দ্রব্যকে লোকশিল্প বলে। যেমন- মাটির পুতুল আমাদের গ্রামীণ লোকশিল্প।
- . নকশিকাঁথার নকশাগুলো সংগ্রহ করা হতো গ্রামীণ আপন পরিবেশ থেকে। নকশিকাঁথার শিল্পীদের জীবনবাস্তবতার প্রতিফলন ঘটে নকশাগুলোতে।
২. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
দুঃখ চোখে জল হয়ে দেখা দেয়। চোখের পাতায় দুঃখ টলমল করে এক ফোঁটা জল হয়ে। শহিদ মিনারের দিকে তাকালে মনে হয় মুক্তোর মতো; কিন্তু তা দুঃখের মুক্তো।
শহিদ মিনারও সুন্দর, কিন্তু অনেক বেদনার,। অনেক দীর্ঘশ্বাসের। কার চোখে টলমল করছে ওই জলের ফোঁটা, ওই দুঃখে নীরবে কাঁদছে সবুজ বাংলাদেশ, তার চোখে টলমল করছে কান্না। শহিদ মিনার বাংলাদেশের চোখের জল।
ক. ‘নীরব’ শব্দের বিপরীত শব্দ কী?
খ. শহিদ মিনার বেদনার কেন?
গ. ‘দুঃখ’-এর দু’টি প্রতিশব্দ লেখ।
ঘ. শহিদ মিনার ও জাতীয় স্মৃতিসৌধের মধ্যে চেতনাগত সাদৃশ্য উল্লেখ করো।
উত্তর
ক. ‘নীরব’ শব্দের বিপরীত শব্দ ‘সরব’।
খ. শহিদ মিনারের সাথে আমাদের ভাই হারানোর বেদনার স্মৃতি জড়িত। তাই শহিদ মিনার বেদনার। ১৯৫২ সালে ভাষা-আন্দোলনে পাকিস্তান সরকারের পুলিশের গুলিতে নৃশংস হত্যার শিকার হন- সালাম, রফিক, জব্বার, বরকতসহ নাম না জানা আরও অনেকে। তাঁদের সেই মহান আত্মত্যাগের স্মৃতির উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয় শহিদ মিনার। ভাই হারানোর স্মৃতি মনে করিয়ে দেয় বলে শহিদ মিনার বেদনার।
গ. ‘দুঃখ’-এর দুটি প্রতিশব্দ হলো- কষ্ট ও বেদনা।
ঘ. শহিদ মিনার ও জাতীয় স্মৃতিসৌধ উভয়ই আমাদের জাতীয় প্রতীক। শহিদ মিনার আমাদের মনে করিয়ে দেয় ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন ও সেই আন্দোলনের শহিদদের কথা। আর স্মৃতিসৌধ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মারক।
ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি মাতৃভাষার অধিকার। আর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন স্বদেশভূমি। তাই উভয় স্থাপত্যই আমাদের মনে দেশপ্রেমের চেতনা জাগিয়ে তোলে।
৩. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সৌভাগ্য আকাশ থেকে পড়ে না। জীবনে সৌভাগ্য অর্জনের জন্য প্রচুর পরিশ্রম ও নিরন্তর সাধনার দরকার হয়। সব মানুষের মধ্যে সুপ্ত প্রতিভা আছে। পরিশ্রমের দ্বারা সেই সুপ্ত প্রতিভাকে জাগিয়ে তুলতে হয়।
যে মানুষ কর্মকে জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছে, জীবন সংগ্রামে তারই জয় হয়েছে। কর্মের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি জীবনে সফল সৈনিক হতে পারে। কর্মহীন ব্যক্তি সমাজের বোঝাস্বরূপ।
অন্যদিকে, শ্রমশীলতাই মানব জীবনের সৌভাগ্যের চাবিকাঠি। আমাদের জীবনে উন্নতি করতে হলে, জীবনে সুখী হতে হলে পরিশ্রমের বিকল্প নেই।
ক. ‘সৌভাগ্য’ শব্দের বিপরীত শব্দ কী? ১
খ. সৌভাগ্য অর্জনের জন্য কী করতে হয়? ১
গ. কে সমাজের বোঝা? ১
ঘ. জীবন সংগ্রামে জয়ী হতে হলে কিসের প্রয়োজন? ২
উত্তর:
ক. ‘সৌভাগ্য’ শব্দের বিপরীত শব্দ হচ্ছে ‘দুর্ভাগ্য’।
খ. সৌভাগ্য অর্জনের জন্য প্রচুর পরিশ্রম ও নিরন্তর সাধনা করতে হয়।
গ. কর্মহীন ব্যক্তি সমাজের বোঝা।
ঘ. জীবন সংগ্রামে জয়ী হতে হলে কর্মকাকে জীবনের মূল লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। পরিশ্রমই উন্নতির মূল চাবিকাঠি। কর্মের প্রতি একনিষ্ঠ ব্যক্তিগণই জীবন সংগ্রামে সফল হয়েছেন।
৪. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সুন্দরকে জানার যে জ্ঞান তার নাম ‘নন্দনতত্ত্ব’। নন্দনতত্ত্ব মানে সুন্দরকে বিশ্লেষণ করা, সুন্দরকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করা। সব সুন্দরের সৃষ্টির মধ্যেই একটা রূপ আছে, তার নাম স্বাধীনতা- অপর নাম যা খুশি তাই করা।
যে কাজ সকলকে আনন্দ দেয়, খুশি করে তাই সুন্দর। স্বার্থপর বা অসংগত আমির খুশি নয়, অনেক মনে খুশির বিস্তার করা আমি। অন্ধকার ঘর আলোকিত করার জন্যে নিয়ম মেনে প্রদীপ জ্বালতে হয়, ঘরে অসংগত আগুন লাগিয়ে ঘর আলোকিত করা নয়।
ক. ‘আগুন’ শব্দের দুটি সমার্থক শব্দ লেখ। ১
খ. সুন্দর-এর বিপরীত শব্দ লেখ। ১
গ. সুন্দরকে গভীরভাবে উপলব্ধি করার নাম কী? ১
ঘ. অন্ধকার ঘরে কীভাবে আগুন জ্বালাতে হবে? ১
ঙ. অনুচ্ছেদে ‘স্বাধীনতা’ কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে? ১
উত্তর
ক. ‘আগুন’ শব্দের দুটি সমার্থক শব্দ হলো অগ্নি ও হুতাশন।
খ. সুন্দর-এর বিপরীত শব্দ হলো কুৎসিত।
গ. সুন্দরকে গভীরভাবে উপলব্ধি করার নাম নন্দনতত্ত্ব।
ঘ. অন্ধকার ঘরে নিয়ম মেনে আগুন জ্বালাতে হবে। সারা ঘরে যথেচ্ছভাবে আগুন না জ্বালিয়ে প্রদীপ জ্বালাতে হবে।
ঙ. অনুচ্ছেদে স্বাধীনতা শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে মনের আনন্দ প্রকাশ করা অর্থে।
সুন্দর সৃষ্টির জন্য মানুষ নানা শিল্পমাধ্যম বেছে নেয়। সে মাধ্যমগুলোতে মনের স্বাধীনতা বা আনন্দের প্রকাশ ঘটে।
৫. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
দিনদিন চাষের জমি-জমা কমছে। বন-টন উজাড় হয়ে যাচ্ছে। মাঠে-মাঠে ফসল নেই। বনে-বনে জীবজন্তু নেই। বছর-বছর লোকজন বাড়ছে, বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট, কল-কারখানা হচ্ছে। খাল-বিল, পুকুর-টুকুর দখল ও ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আমাদের পরিবেশ ও ভবিষ্যতের জন্যে এটি মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
ক. ‘দিনদিন’-দ্বিরুক্ত শব্দটির প্রতিশব্দ কী?
খ. ‘পুকুর-টুকুর’ দ্বিরুক্ত শব্দটি কীভাবে গঠিত হয়েছে?
গ. এ অনুচ্ছেদে কতটি বিভিন্ন রকমের দ্বিরুক্ত শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে?
ঘ. অনুচ্ছেদে যে পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে তা আমাদের পরিবেশ ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য মারাত্মক হুমকি কেন?
উত্তর
ক. ‘দিনদিন’ দ্বিরুক্ত শব্দটির প্রতিশব্দ হচ্ছে প্রতিদিন।
খ. ‘পুকুর-টুকুর’ দ্বিরুক্ত শব্দ-জোড়ায় দ্বিতীয় শব্দটির আংশিক পরিবর্তনের মাধ্যমে দ্বিুরুক্ত শব্দ গঠিত হয়েছে।
গ. এ অনুচ্ছেদে ১১টি বিভিন্ন রকমের দ্বিরুক্ত শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে।
ঘ. অনুচ্ছেদে যে পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে তা আমাদের পরিবেশ ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য অশনিসংকেত।
আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ প্রতিনিয়তই মানুষের হাতে ধ্বংস হচ্ছে।
গাছপালা, নদীনালা, সবুজ ফসলের মাঠের স্থানে হচ্ছে বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট, কল-কারখানা। ফলে পরিবেশের দূষণ বাড়ছে। সেই সাথে পরিবেশের ভারসাম্যও নষ্ট হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্ব এক সময় ধ্বংস হয়ে যাবে।
৬. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
এক দল লোক মনে করতেন ওই সংস্কৃত ভাষাই বাংলার জননী। বাংলা সংস্কৃতের মেয়ে। তবে দুষ্টু মেয়ে, যে মায়ের কথা মতো চলেনি। না চলে চলে অন্যরকম হয়ে গেছে।
তবে উনিশ শতকেই আরেক দল লোক ছিলেন, যাঁরা মনে করতেন বাংলার সাথে সংস্কৃতের সম্পর্ক বেশ দূরের। তাঁদের মতে, বাংলা ঠিক সংস্কৃতের কন্যা নয়। অর্থাৎ সরাসরি সংস্কৃত ভাষা থেকে উৎপত্তি ঘটেনি বাংলার। ঘটেছে অন্য কোনো ভাষা থেকে। সংস্কৃত ছিল সমাজের উঁচুশ্রেণির মানুষের লেখার ভাষা।
ক. ‘জননী’ শব্দের বিপরীত শব্দ কী?
খ. বাংলা ভাষাকে দুষ্টু মেয়ে বলা হয়েছে কেন?
গ. ‘মেয়ে’- শব্দের দুটি প্রতিশব্দ লেখ।
ঘ. ‘বাংলা সংস্কৃতের মেয়ে’- এর পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি দেখাও।
উত্তর
ক. ‘জননী’ শব্দের বিপরীত হলো- ‘জনক’।
খ. সংস্কৃত ভাষা থেকে বিচ্যুতি লাভ করেছে বলে বাংলাকে দুষ্টু মেয়ে বলা হয়েছে।
এক দল লোকের ধারণা ছিল বাংলাভাষার জন্ম হয়েছে সংস্কৃত থেকে। সে হিসেবে সংস্কৃত হলো বাংলা ভাষার জননী। তাদের মতে সংস্কৃত থেকে খানিকটা বিচ্যুত হয়ে পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে বাংলার আজকের রূপ তৈরি হয়েছে। সংস্কৃত ভাষা অর্থাৎ মায়ের কথামতো চলে নি বলেই বাংলাকে দুষ্টু মেয়ে বলা হয়েছে।
গ. ‘মেয়ে’ শব্দের দুটি প্রতিশব্দ হলো- কন্যা ও জায়া।
ঘ. আমরা জানি, মানুষের মুখের কথায় বদল ঘটে ভাষার ধ্বনির। শব্দ ও শব্দের অর্থেরও বদল ঘটে। এভাবে এক ভাষা থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে রূপ লাভ করে অন্য একটি ভাষা। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, সংস্কৃতি থেকে বাংলা ভাষার জন্ম হওয়াটা সম্ভব নয়। কেননা সংস্কৃত ছিল তৎকালীন সমাজের কেবলমাত্র লেখার ভাষা। কথা বলায় এ ভাষার ব্যবহার ছিল না।
৭. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বাংলা সনের প্রথম মাসের নাম বৈশাখ। পয়লা বৈশাখ বাঙালির নববর্ষ। নববর্ষ সকল দেশের, সকল জাতিরই আনন্দ উৎসবের দিন। শুধু আনন্দ উচ্ছ্বাসই না, সকল মানুষের জন্য কল্যাণ কামনারও দিন।
আমরাও সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি ও কল্যাণের প্রত্যাশা নিয়েই মহাধুমধামের সঙ্গে আমাদের নববর্ষ উদ্যাপন করি। একে অন্যকে বলি শুভ নববর্ষ।
ক. ‘আনন্দ’ শব্দের বিপরীত শব্দ কী?
খ. ‘উচ্ছ্বাস’ শব্দটির সন্ধি বিচ্ছেদ করো।
গ. বাংলা সনের প্রবর্তক কে?
ঘ. বাংলা নববর্ষের মতো সার্বজনীন আরো একটি উৎসবের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উত্তর
ক. ‘আনন্দ’ শব্দের বিপরীত শব্দ হলো ‘কষ্ট’।
খ. ‘উচ্ছ্বাস’ শব্দটির সন্ধি বিচ্ছেদ হলো- উৎ + শ্বাস।
গ. বাংলা নববর্ষের ইতিহাস এখনো সুস্পষ্টভাবে জানা সম্ভব হয় নি। তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিক ও পণ্ডিতের মতে মুঘল সম্রাট বাদশাহ আকবর বাংলা সন চালু করেন।
ঘ. বাংলা নববর্ষের মতো আরও একটি সার্বজনীন উৎসব হলো বিজয় উৎসব।
আমাদের মহান বিজয় দিবস অর্থাৎ ১৬ই ডিসেম্বর আমরা এই উৎসব করে থাকি। এদিন সারা দেশ লাল সবুজে সেজে ওঠে। সর্বস্তরের বাঙালি এই উৎসবে আনন্দের সাথে অংশ নেয়।
৮. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আমাদের দেশের উন্নতির প্রধান অন্তরায় আমাদের জনসংখ্যা সমস্যা। এই জনসংখ্যা সমস্যাকে জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে দেশের উন্নতি সম্ভব। তাদেরকে প্রয়োজনীয় কর্মক্ষেত্রে কাজে লাগিয়ে দিতে হবে।
কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। জনগণ কায়িক পরিশ্রমের মর্যাদা পেলে তারা কায়িক পরিশ্রমের দিকে আগ্রহী হবে। পরিশ্রমী জনগণ দ্বারা দেশের ও জাতির উন্নয়ন সম্ভব।
ক. ‘উন্নতি’ শব্দের বিপরীত শব্দ কী?
খ. কারিগরি শিক্ষা বলতে কী বোঝ?
গ. ‘জাতি’-এর দুটি প্রতিশব্দ লেখো।
ঘ. ‘জনসংখ্যা সমস্যা’ আমাদের দেশের উন্নতির প্রধান অন্তরায়-বিশ্লেষণ করো।
উত্তর
ক. ‘উন্নতি’ শব্দের বিপরীত শব্দ হলো অবনতি।
খ. কারিগরি শিক্ষা বলতে বোঝায় হাতে-কলমে লাভ করা বিশেষ শিক্ষা। একজন ব্যক্তি তার আত্মপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যখন বিশেষ কোনো কর্মে প্রশিক্ষিত হন তখন সেই শিক্ষাকে কারিগরি শিক্ষা বলে। এই শিক্ষা হাতে-কলমে গ্রহণ করা হয় এবং শিক্ষা শেষেই জীবিকা অর্জনের যোগ্যতা অর্জিত হয়।
গ. ‘জাতি’ শব্দের দুটি প্রতিশব্দ হলো- বর্ণ এবং শ্রেণী।
ঘ. জনসংখ্যা সমস্যা থেকে তৈরি হচ্ছে আরও নানা ধরনের সমস্যা যা জাতির উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক থেকে বাংলাদেশ পৃথিবীতে অন্যতম।
এই বিপুল জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণের জন্য দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো ও প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণ মোটেই যথেষ্ট নয়। ফলে দেশে বাড়ছে বেকার সমস্যা, অপরাধ প্রবণতা ইত্যাদি। আর এগুলো আমাদের উন্নতির ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করেছে।
৯. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আজ থেকে প্রায় দুইশ বৎসর আগে পৃথিবীতে শিল্পবিপ্লব হয়েছিল। যারা সেই শিল্পবিপ্লবে অংশ নিয়েছিল তারা পৃথিবীটাকে শাসন করেছে। আমরা শিল্পবিপ্লবে অংশ নিতে পারিনি বলে বাইরের দেশ আমাদের শাসন-শোষণ করেছে।
আমরা আবার সেটা হতে দিতে পারি না। এই মুহূর্তে শিল্পবিপ্লবের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটা বিপ্লব হচ্ছেÑতথ্য প্রযুক্তির বিপ্লব। এ বিপ্লবে আমাদের অংশ নিতেই হবে। তাই দায়িত্বটা পালন করতে হবে নতুন প্রজন্মকে, যারা নতুন বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে জ্ঞানে-বিজ্ঞানে এবং প্রযুক্তিতে।
তারা ঠিকভাবে লেখাপড়া করবে, অন্য সব বিষয়ের সাথে সাথে গণিত ও ইংরেজিতে সমান দক্ষ হয়ে উঠবে, কম্পিউটারের সাথে পরিচিত হবে। যখন কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ পাবে তখন সেটাকে বিনোদনের একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার না করে শেখার একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করবে। নিজেদের সৃজনশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে।
তারা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদ হিসেবে গড়ে উঠে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে তুলতে সাহায্য করবে।
ক. ‘প্রজন্ম’ শব্দটি কী সাধিত শব্দ?
খ. পৃথিবী’ শব্দটির দুটি সমার্থক শব্দ লেখো।
গ. সৃজনশীল মানুষ কারা?
ঘ. তথ্য-প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটাতে হবে কেন?
ঙ. কম্পিউটারকে শেখার একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে হবে কেন? ১
উত্তর
ক. ‘প্রজন্ম’ শব্দটি উপসর্গ সাধিত শব্দ।
খ. ‘পৃথিবী’ শব্দটির দু’টি সমার্থক শব্দ হলোÑ ধরণী ও বসুন্ধরা।
গ. যারা নিজেদের জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে পারে তারাই সৃজনশীল মানুষ।
ঘ. বর্তমান পৃথিবীর সবকিছুই তথ্য-প্রযুক্তির অধীন। এর যথাযথ ব্যবহার ছাড়া জাতীয় অগ্রগতি সম্ভব নয়। তাই তথ্য-প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটাতে হবে।
ঙ. তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মূল হাতিয়ার হলো কম্পিউটার। তাই কম্পিউটার ব্যবহারে সবাইকে দক্ষ হতে হবে। কেবল বিনোদনের মাধ্যমে হিসেবে নয়, শেখার মাধ্যম হিসেবে এটিকে গ্রহণ করতে হবে।
১০. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ছাত্রদের অলসতা ত্যাগ করে পরিশ্রমী হতে হবে। দেখা যায় অনেক মেধাবী ছাত্রও অলসতার কারণে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে ব্যর্থ হয়। আবার অনেক কম মেধার ছাত্র শুধু অধ্যবসায় ও পরিশ্রম দ্বারা আশাতীত সাফল্য অর্জন করে চমক সৃষ্টি করে। তাই ছাত্রজীবনে অধ্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম।
ক. ‘অলস’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘ব্যর্থ’ শব্দের বিপরীত শব্দ লেখো।
গ. ‘পরীক্ষা’ শব্দটির সন্ধি-বিচ্ছেদ করো।
ঘ. “অধ্যবসায় সাফল্যের পূর্বশর্ত”Ñ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর
ক. ‘অলস’ শব্দের অর্থ ‘অকর্মণ্য’।
খ. ‘ব্যর্থ’ শব্দের বিপরীত শব্দ হলো ‘সফল’।
গ. ‘পরীক্ষা’ শব্দটির সন্ধি-বিচ্ছেদ হলো : পরি+ঈক্ষা।
ঘ. অধ্যবসায় ব্যতীত কোনো কিছুতেই কাক্সিক্ষত সাফল্য লাভ করা যায় না।
মানুষের সংগ্রামী জীবনের জন্য অধ্যবসায় একটি অত্যাবশ্যকীয় গুণ। এর মাধ্যমেই মানুষ সকল কিছুকে সম্ভব করে তুলতে পারে। ছাত্রজীবনেও এই গুণটির গুরুত্ব অপরিসীম। অনেক কম মেধার ছাত্ররাও অধ্যবসায় ও পরিশ্রমের মাধ্যমে চমৎকার সাফল্য অর্জন করতে পারে। সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করার মৌলিক প্রেরণা হলো অধ্যাবসায়।
১১ নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
লোকশিল্প সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের দায়িত্ব আমাদের সকলের। বাংলাদেশের বিভিন্ন শহর, শহরতলি এবং গ্রামের হাজার হাজার নারী-পুরুষ আছে, যারা কাজ করতে চায় অথচ কাজের অভাবে দিন দিন দারিদ্র্যের শিকার হচ্ছে। সুপরিকল্পিত উপায়ে এবং সুরুচিপূর্ণ লোকশিল্প প্রস্তুতির দিকে মনোযোগ দিলে তাদের সমস্যার কিছুটা সমাধান হবে।
ক. ‘সম্প্রসারণ’ শব্দের অর্থ কী?
খ. লোকশিল্প কাকে বলে।
ঘ. ‘দিন দিন’ কোন ধরনের দ্বিরুক্ত শব্দ?
ঙ. কীভাবে লোকশিল্প সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণ করা যেতে পারে।
উত্তর
ক. ‘সম্প্রসারণ’ শব্দের অর্থ বৃদ্ধি বা বিস্তার।
খ. দেশি জিনিস দিয়ে দেশের মানুষের হাতে তৈরি শিল্পসম্মত দ্রব্যকেই লোকশিল্প বলে।
গ. ‘দিন দিন’ হলো বিশেষ্য শব্দযুগলের বিশেষরূপে ব্যবহারে গঠিত দ্বিরুক্ত।
ঘ. লোকশিল্পের প্রতি আন্তরিক হলে ও সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করলে লোকশিল্প সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণ করা সম্ভব।
লোকশিল্পের প্রতি আমাদের হৃদয় দিয়ে তাকাতে হবে। এর উন্নয়ন ও সংরক্ষণের জন্য সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। লোকশিল্পের কর্মসংস্থান ও এর চাহিদা সৃষ্টির জন্য সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই আমরা আমাদের লোকশিল্প সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণ করতে পারব।
১২. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
প্রস্ফুটিত পদ্মফুল সরোবরে অত্যন্ত সুন্দর দেখায়। এই ফুল তার সৌন্দর্যের জন্য লোভনীয়ও বটে। ইচ্ছে হয় দিঘিতে ঝাঁপ দিয়ে মুঠিভরে গুচ্ছ গুচ্ছ পদ্মফুল তুলে আনি। কিন্তু পদ্মবনে কাঁটাঘেরা মৃণালের ঘন বেষ্টনী ভেঙে এই সুন্দর ফুল চয়ন করা বেশ কঠিন। এটা সত্য যে, যে-ব্যক্তি কাঁটার ভয়ে জলে নামতে চায় না তার পক্ষে দিঘির সুন্দর পদ্মফুল আহরণ কখনও সম্ভব নয়।
এটাও সত্য যে, পৃথিবীতে যে কোনো কষ্ট সহ্য করতে চায় না তার পক্ষে মহৎ বা সুন্দর কিছু অর্জন করা কঠিন। জীবনে সাফল্য লাভ করতে হলে বাধাবিঘœ অতিক্রম করতে হবে। যা দুর্লঙ্ঘ্য, তা জয় করতে হবেÑতবেই সুখ ও সাফল্য আসবে।
ক. ‘প্রস্ফুটিত’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘ফুল’ শব্দের একটি সমার্থক শব্দ লেখ।
গ. ‘গুচ্ছ গুচ্ছ’ শব্দটি কোন ধরনের দ্বিরুক্তি?
ঘ. ‘সুন্দর’ শব্দটি কোন লিঙ্গ?
ঙ. জীবনে সাফল্য কীভাবে অর্জিত হবে? ১
উত্তর
ক. ‘প্রস্ফুটিত’ শব্দের অর্থ সম্পূর্ণ বিকশিত।
খ. ফুল শব্দের একটি সমার্থক শব্দÑ কুসুম।
গ. ‘গুচ্ছ গুচ্ছ’ হলো বিশেষ্য শব্দযুগলের বিশেষণরূপে ব্যবহারে গঠিত দ্বিরুক্তি।
ঘ. ‘সুন্দর’ শব্দটি উভয়লিঙ্গ।
ঙ. প্রতিকূলতার সাথে যুদ্ধ করে তা জয় করলেই জীবনে সাফল্য আসবে। পদ্মবনের কাঁটার ভেতর মোহনীয় ফুল পদ্ম যেভাবে থাকে তেমনি সাফল্যও ঢাকা থাকে নানা বাধা-বিপত্তির আড়ালে। পদ্মফুলকে জয় করার ক্ষেত্রে কাঁটার ব্যথাকে অগ্রাহ্য করতে হয়। একইভাবে সকল বাধা-বিঘœকে তুচ্ছ করে সামনে এগিয়ে গেলেই সাফল্য অর্জিত হবে।
১৩. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
তারপর ফিরে এসে যখন শুনল লাল গরুকে নিয়ে গেছে, তখন বিশুর কী কান্না। ছেলেমেয়েদের সবার মুখই ভার। মায়ের অবস্থাও তাই। সেদিন বাড়ির কারোরই ভালো করে খাওয়া হলো না।
কিন্তু নিধিরামকে কেউ কিছু বললে না। কেউ কিছু বললে সে নিশ্চয়ই খুব রেগেমেগে উঠত। রাগবার জন্য মনে মনে তৈরি হয়েও ছিল। কিন্তু কেউ তাকে সেই সুযোগ দিল না। নিধিরাম এমন বিপদে আর কখনো পড়েনি। কী আশ্চর্য, এমন যে তেজস্বী নিধিরাম, সে যেন ঠাণ্ডা জল হয়ে গেল।
ক. ‘কী’ কোন পদ?
খ. সেদিন কারোরই ভালো করে খাওয়া হলো না কেন?
গ. নিধিরামকে কেউ কোনোকিছু না বলার কারণ কী?
ঘ. বিপদে মানুষকে কেমন হতে হয়? ২
উত্তর
ক. ‘কী’ হলো সর্বনাম পদ?
খ. লাল গরুটাকে অন্য কেউ নিয়ে যাওয়ায় সবার মন খারাপ হয়েছিল। তাই সেদিন কারোরই ভালো করে খাওয়া হলো না।
গ. নিধিরামকে ঐ অবস্থায় কেউ কিছু বললে সে খুব রেগে যেত। তাছাড়া লাল গরুটার জন্য সবারই মন ভার ছিল। তাই নিধিরামকে কেউ কিছু বলল না।
ঘ. বিপদে পড়লে মানুষকে ধৈর্য ধারণ করতে হয়। বিপদের সময় মানুষের উচিত মাথা ঠাণ্ডা রাখা। হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া। সবদিক ভেবে-চিন্তে স্থির সিদ্ধান্তে আসা। আর ভয় না পেয়ে মনে সাহস রাখা উচিত। তাহলেই বিপদ মোকাবেলা করা সহজ হয়।
১৪. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও
‘ফুল পাখি নই, নইকো পাহাড়
ঝরণা সাগর নই
মায়ের মুখের মধুর ভাষায়
মনের কথা কই।
বাংলা আমার মায়ের ভাষা
শহিদ ছেলের দান
আমার ভাইয়ের রক্তে লেখা
ফেব্রুয়ারির গান।’
ক. ‘সাগর’ শব্দের একটি প্রতিশব্দ লেখো।
খ. আমরা মনের কথা কোন ভাষায় বলি?
গ. কাদের আত্মত্যাগে আমরা বাংলা ভাষা পেয়েছি?
ঘ. ফেব্রুয়ারির গান রক্তে লেখা কেন?
উত্তর
ক. ‘সাগর’ শব্দের একটি প্রতিশব্দ হলো ‘দরিয়া’।
খ. আমরা মনের কথা বাংলা ভাষায় বলি।
গ. ভাষাশহিদদের আত্মত্যাগে আমরা বাংলা ভাষা পেয়েছি।
ঘ. ফেব্রুয়ারি মাসে ভাষার জন্য রক্ত ঝরেছিল বলে ফেব্রুয়ারির গানকে রক্তে লেখা বলা হয়েছে।
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষার দাবিতে আন্দোলন করে বাংলার ছাত্র-জনতা। তাদের মিছিলে পুলিশ গুলি করলে অনেকে শহিদ হন। ভাষাশহিদদের এই মহান আত্মত্যাগের কারণেই বাংলা আমাদের রাষ্ট্রভাষা হয়েছে। তাই ফেব্রুয়ারির গান রক্তে লেখা।
১৫. নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং অনুধাবন করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মানব সভ্যতার শত শত বছরের ইতিহাসের হৃদয়স্পন্দন সঞ্চিত থাকে বইঘরের ভাণ্ডারে। সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্ম, দর্শন, বিজ্ঞান, এসবের এক বিশাল সংগ্রহশালা এই বইঘর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় : “এখানে ভাষা চুপ করিয়া আছে, প্রবাহ স্থির হইয়া আছে, মানবাত্মার অমর আলোক কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে কাগজের কারাগারে বাঁধা পড়িয়া আছে।
” শঙ্খের মধ্যে যেমন সমুদ্রের শব্দ শোনা যায়, বইঘর বা পাঠাগারের মধ্যে তেমনি মানুষের হৃদয়ের উত্থান-পতনের ধ্বনি শোনা যায়। পাঠক এখানে স্পর্শ পায় সভ্যতার এক শাশ্বত ধারার, অনুভব করে মহাসমুদ্রের শত শত বছরের কল্লোল-ধ্বনি, শুনতে পায় জগতের এক মহা-ঐকতানের সুর; সেখানে অবিরাম চলতে থাকে কতশত হৃদয়ের কথোপকথন। বইঘর বা লাইব্রেরি মানুষের অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যতের সেতুবন্ধন।
ক. ‘শ্বাশত’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘বিশাল’ শব্দটির দু’টি সমার্থক শব্দ লেখো।
গ. ‘কথোপকথন’ শব্দটির সন্ধি-বিচ্ছেদ করো।
ঘ. ‘… মানবাত্মার অমর আলোক কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে কাগজের কারাগারে বাঁধা পড়িয়া আছে।’ Ñবাক্যটিকে চলিত ভাষায় রূপান্তর করে দেখাও।
ঙ. দুটি বাক্যের মাধ্যমে বইঘরের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরো।
উত্তর
ক. ‘শ্বাশত’ শব্দের অর্থ চিরস্থায়ী বা অনন্ত।
খ. ‘বিশাল’ শব্দটির দু’টি সমার্থক শব্দ হলো, বিরাট ও প্রকাণ্ড।
গ ‘কথোপকথন’ শব্দটির সন্ধি-বিচ্ছেদ হলো : কথা + উপকথন।
ঘ. বাক্যটিকে চলিত ভাষায় রূপান্তর করে দেখানো হলো,
‘মানবাত্মার অমর আলো কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে কাগজের কারাগারে বাঁধা পড়ে আছে।’
ঙ. বইঘরের বইয়ের ভাণ্ডারে শত শত বছরের জ্ঞান সঞ্চিত থাকে। এই বই পড়ে আমরা আলোকিত মানুষ হয়ে উঠি।
অনুচ্ছেদ রচনা
বাক্য মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম। কিন্তু সব সময় একটি বাক্যের মাধ্যমে মনের সম্পূর্ণ ভাব প্রকাশ করা সম্ভব হয় না। এজন্য প্রয়োজন একাধিক বাক্যের। মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করার জন্য পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত বাক্যের সমষ্টিই অনুচ্ছেদ।
অনুচ্ছেদে কোনো বিষয়ের একটি দিকের আলোচনা করা হয় এবং একটি মাত্র ভাব প্রকাশ পায়। অনুচ্ছেদ রচনার ক্ষেত্রে কয়েকটি দিকে লক্ষ রাখা প্রয়োজন। যেমন-
ক) একটি অনুচ্ছেদের মধ্যে একটি মাত্র ভাব প্রকাশ করতে হবে। অতিরিক্ত কোনো কথা লেখা যাবে না।
খ) সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো বাক্যের মাধ্যমে বিষয় ও ভাব প্রকাশ করতে হবে।
গ) অনুচ্ছেদটি খুব বেশি বড় করা যাবে না।
ঘ) একই কথার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ঙ) যে বিষয়ে অনুচ্ছেদটি রচনা করা হবে তার গুরুত্বপূর্ণ দিকটি সহজ-সরল ভাষায় সুন্দরভাবে তুলে ধরতে হবে।
বাংলা নববর্ষ
নববর্ষ সকল দেশের সকল জাতিরই আনন্দ উচ্ছ্বাস ও মঙ্গল কামনার দিন। বাংলাদেশেও পয়লা বৈশাখে সকলের কল্যাণ প্রত্যাশা করে মহা ধুমধামের সাথে নববর্ষ উদ্যাপিত হয়। প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সকল বাঙালি এই উৎসব পালন করে থাকে।
বাঙালির জাতিসত্ত্বা বিনির্মাণে এবং স্বাধীনতা অর্জনে নববর্ষের তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সম্রাট আকবরের সময় বাংলা সনের গণনা শুরু হয় বলে ধরণা করা হয়। জমিদার ও নবাবেরা নববর্ষে পূণ্যাহ আয়োজন করতেন। পরবর্তিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নববর্ষ পালন করায় সে আয়োজন দেশময় ছড়িয়ে পড়ে।
নববর্ষে হালখাতা, বৈশাখী মেলা, ঘোড়দৌড় এবং বিভিন্ন লোকমেলার আয়োজন করে সাধারণ মানুষ। সংস্কৃতি সংগঠন ছায়ানট নববর্ষে রমনার বটমূলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ আয়োজন করে মঙ্গল শোভাযাত্রা। এছাড়াও নানা বর্ণিল আয়োজনে দিনটিকে বরণ করা হয়।
ছেলেরা পাজামা-পাঞ্জাবি এবং মেয়েরা নানা রঙের শাড়ি পড়ে উৎসবে মাতোয়ারা হয়। এই দিনে প্রত্যেক বাঙালি নিজের, বন্ধুর, পরিবার ও দেশের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে।
ছাত্রজীবন
ছাত্রজীবন মানবজীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময়। বিদ্যাশিক্ষার সূচনা থেকে মানুষ জীবনের যে সময়টুকু স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোনো শিক্ষালয়ে অতিবাহিত করে, তা-ই ছাত্রজীবন। ‘ছাত্রনং অধ্যানং তপ’ অর্থাৎ অধ্যয়নই হচ্ছে ছাত্রজীবনের একমাত্র তপস্যা। এই বিষয়টি প্রত্যেক ছাত্রকে স্পষ্টভাবে মনে রাখতে হবে।
ছাত্ররাই দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার ও জাতির আশা-ভরসার প্রতীক। দেশ ও জাতিকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার গুরুদায়িত্ব ভবিষ্যতে ছাত্রদের ওপরই বর্তায়। সে গুরুদায়িত্ব সার্থকতার সাথে বহন করার জন্যে তাদেরকে উপযুক্ত হতে হবে। আধুনিক বিশ্বের নানান খবরাখবর সংগ্রহ এবং তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করা একজন ছাত্রের জন্যে অত্যন্ত জরুরি।
পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে ছাত্রদের অংশগ্রহণ থাকা প্রয়োজন। কর্মজীবনে প্রবেশের সোপান হচ্ছে ছাত্রজীবন। ছাত্রজীবনের সফলতা ও ব্যর্থতার ওপর কর্মজীবন অনেকাংশে নির্ভরশীল। এ সময় থেকেই জীবন সংগ্রামের জন্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়। একজন ছাত্রকে অবশ্যই কুসংসর্গ ত্যাগ করে সততা, সংযম ও পরিশ্রমের সমন্বয়ে আদর্শ মানুষ হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
সততা
সততা মানবচরিত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি গুণ। সর্বদা সত্য কথা বলা, সৎপথে চলা এবং কোনো অন্যায় কাজে লিপ্ত না হওয়ার নামই সততা। একথায় সত্যের অনুসারী মানুষের সৎ থাকার গুণকে সততা বলা হয়। এই গুণ অর্জনের চেষ্টা ও চর্চা একজন মানুষকে পৌঁছে দিতে পারে মর্যাদা ও গৌরবের আসনে।
নিষ্ঠার সঙ্গে নিরলস অনুশীলনের মাধ্যমে এই গুণ অর্জন করা যায়। আর এই গুণ যিনি অর্জন করতে পারেন তিনিই সমাজে আদর্শ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে থাকেন। সততাকে তাই মানবচরিত্রের অলঙ্কার বলা হয়। সততার সুফল শত ধারায় বিকশিত। জীবনকে সুন্দর সফল ও সার্থক করার জন্য সৎ থাকার অভ্যাস করতে হয়।
সৎগুণসম্পন্ন মানুষ কখনোই অন্যায় ও অবৈধ কাজে লিপ্ত থাকতে পারে না। সৎ লোক মাত্রই চরিত্রবান ও মহৎ হয়ে থাকে। তাই সে সবার বিশ্বাসভাজন ও শ্রদ্ধেয় হয়। সততা মানুষের নৈতিকতাকে সমুন্নত করে। সৎ ব্যক্তি কখনোই অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না।
একটি সমৃদ্ধ ও আদর্শ জীবন গড়ার জন্য সততার বিকল্প নেই। শিক্ষার্থীদের উচিত ছাত্রজীবন থেকেই সৎ গুণগুলো অনুশীলন করা। তাহলেই তারা পরিবার ও জাতির মুখ উজ্জ্বল করতে পারবে।
ছবি আঁকা
মানুষ ভাবতে ভালোবাসে। মানুষের মনে যেসব ভাবনা খেলা করে ছবিতে সেসবের শিল্পময় প্রকাশ ঘটে। কে কখন ছবি আঁকা শুরু করেছিল তা বলা মুশকিল। তবে মানুষের আঁকা সবচেয়ে পুরোনো ছবির কথা জানা যায়। ১১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে স্পেনে আলতামিরা নামক এক গুহায় প্রথম মানুষের আঁকা ছবির সন্ধান মেলে। যেকোনো মানুষই ছবি আঁকে।
এমন কোনো মানুষ নেই যে জীবনে কোনো দিন ছবি আঁকেনি। যেকোনো ছবি, হতে পারে তা কোনো পশু, পাখি, মাছ, আম, জাম, কাঁঠাল, পেঁপে, এ কোনো না কোনোটি মানুষ জীবনে একবার হলেও এঁকেছে। আঁকতে আঁকতে অনেকের ছবি আঁকাটাই নেশা হয়ে যায় এবং জীবনে ছবি আঁকা ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারে না।
ছবি-আঁকা নিয়েই তাদের স্বপ্ন, ছবি-আঁকাই তাদের পেশা হয়ে যায়। তারা নিজেদের প্রতিভার প্রকাশ ঘটায় ছবি-আঁকার মধ্য দিয়ে। পৃথিবীতে অনেকে বিখ্যাত হয়েছেন শুধু ছবি এঁকে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় জীবনের এক উজ্জ্বলতম দিন। ১৯৫২ সালের এ দিনে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় রাজপথে প্রাণ দিয়েছিল বাংলার দামাল ছেলেরা। তাদের সেই আত্মত্যাগের বিনিময়েই নিশ্চিত হয়েছে মায়ের ভাষা বাংলায় কথা বলার অবারিত অধিকার।
সেই ঐতিহাসিক ভাষা শহিদদিবস ২১শে ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেব স্বীকৃতি লাভ করেছে। কানাডা প্রবাসী বাঙালিদের সংগঠন ‘মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ অব দ্যা ওয়ার্ল্ড’ প্রথম ২১শে ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির উদ্যোগ গ্রহণ করে। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা আলোর মুখ দেখেনি।
পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে বিষয়টি জাতিসংঘে উত্থাপিত হয়। বিশ্বের ২৭টি দেশ এ প্রস্তাবকে সমর্থন জানায়। ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কোর ২১ তম অধিবেশনে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালনের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
বর্তমানে বিশ্বের সকল দেশ এই দিনটিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করছে। বাংলাদেশের শহিদদের মহান ত্যাগ এভাবে বিশ্ববাসীর স্বীকৃতিলাভ করেছে। বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির জন্য এটি একটি বিরল গৌরব। বাংলা ভাষা শহিদ ভাইদের জীবনের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি। তাই এই ভাষাকে আমরা শ্রদ্ধা করব, শুদ্ধভাবে এ ভাষার চর্চা করব। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এটিই হোক সকলের শপথ।
দুর্নীতি
জাতীয় জীবনে উন্নতির অন্যতম অন্তরায় দুর্নীতি। আমাদের জীবন, সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রকোষ্ঠে দুর্নীতি এমনভাবে প্রবেশ করেছে যে, আজকাল একে এড়িয়ে আমাদের চলাই দায়। অফিস-আদলতে, পেশায়-নেশায়, ঘরে-বাইরে, রাজনীতি কিংবা ধর্মনীতি সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতির সর্বগ্রাসী প্রভাব বিদ্যমান।
দুর্নীতি যেন সভ্য সমাজে স্বাভাবিক বিষয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পরপর বেশ কয়েকবার বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। দুর্নীতির কারণে বিদেশি বিনিয়োগ ব্যাহত হচ্ছে, সাহায্যের হাতও গুটিয়ে নিচ্ছে ধনী দেশগুলো।
দুর্নীতির অবাধ বিস্তার সামাজিক ক্ষেত্রে নব্য ধনিকশ্রেণীর সৃষ্টি করছে, জন্ম দিচ্ছে নানামুখী বৈষম্য। সন্ত্রাস নামক যে ভয়ংকর দানব সমাজকে নিরাপত্তাহীন করে তুলেছে তার পেছনেও রয়েছে দুর্নীতির প্রভাব। দুর্নীতি জন্ম দিয়েছে মূল্যবোধহীনতা যা সমাজকে অবক্ষয়ের অতলে ডুবিয়ে দিচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে দুর্নীতি এক দুরারোগ্য ব্যাধি, দুর্বিষহ অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে। এর করাল গ্রাসে জাতীয় উন্নতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। মেধা ও পরিশ্রমের যথাযথ মূল্যায়ণ হচ্ছে না। বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হচ্ছে। দেশের সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। স্বনির্ভর জাতি গড়ে তোলার জন্য দুর্নীতি নামক এই অভিশাপকে রুখতে হবে এখনই। সকলের সম্মিলিত অঙ্গীকারই পারে এর প্রভাব কমিয়ে আনতে।
সকাল বেলা
সকাল বেলা আমার সবচেয়ে প্রিয় সময়। এ সময়ের শান্ত ও স্নিগ্ধ পরিবেশ আমাকে খুব আকর্ষণ করে। আমি খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে হাতমুখ ধুয়ে আমার বাড়ির পাশের নদীর তীরে হাঁটতে যাই। সেখান থেকে সকালের সূর্যোদয় দেখতে খুবই সুন্দর লাগে। সকালের শীতল বাতাস আমার দেহমন জুড়িয়ে দেয়।
নানা রকম পাখির কলকাকলিতে পরিবেশটা মুখরিত হয়ে ওঠে। এ সময় কৃষকেরা গরু নিয়ে হাল চাষ করতে বের হয়। গ্রামের মসজিদে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে সমস্বরে কোরআন তেলাওয়াত করে। কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে আমি বাড়ি ফিরে নাস্তা করে পড়তে বসি। তারপর বন্ধুদের সাথে মিলে স্কুলে যাই।
ছুটির দিনে সকাল বেলা আমি বাবাকে নানা কাজে সাহায্য করি। সকাল বেলা তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠলে আমার সারাটা দিন খুব ভালো কাটে।
আমার মা
পৃথিবীতে মা আমাদের সবচেয়ে আপনজন। অনেক কষ্ট স্বীকার করে তিনি আমাদের জন্ম দেন। অনেক স্নেহ-মমতায় বড় করে তোলেন। আমার কাছে আমার মা সবচেয়ে প্রিয়। মাকে ছাড়া আমি একটি মুহূর্তের কথাও ভাবতে পারি না। মা আমাকে অনেক ভালোবাসেন। সব সময় আমাকে নিয়ে ভাবেন।
আমি দুপুরে স্কুল থেকে বা সন্ধ্যায় মাঠ থেকে ফিরতে দেরি করলে মা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। আমাকে না খাইয়ে কখনো খান না। আমার অসুখ হলে মা আমার যতœ করেন। রাত জেগে আমার পাশে বসে থাকেন। মা-ই আমার শ্রেষ্ঠ বন্ধু। আমি মায়ের কাছে কোনো কিছুই গোপন করি না। মা আমাকের কখনোই বকেন না।
ভালো পথে চলার জন্য সব সময় পরামর্শ দেন। মা আমার সেরা শিক্ষক। আমার পড়া তৈরিতে তিনি সাহায্য করেন। কঠিন বিষয়গুলো মা সহজেই বুঝিয়ে দেন। আমি মাকে কখনোই কষ্ট দিই না। সবসময় মায়ের কথামতো চলতে চেষ্টা করি। বাড়ির ছোটোখাটো কাজে মাজে সাহায্য করি। আমার মাকে আমি অনেক শ্রদ্ধা করি ও ভালোবাসি।
আমাদের লোকশিল্প
দেশি জিনিস দিয়ে দেশের মানুষের হাতে তৈরি শিল্প সম্মত দ্রব্যকেই লোকশিল্প বলা হয়। বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাপন ও গ্রামীন ঐতিহ্যের সাথে লোকশিল্পের নিবিড় যোগাযোগ বিদ্যমান। নানা ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্পে আমাদের দেশ সমৃদ্ধ। ঢাকাই মসলিন নিয়ে আজ অবধি আমরা গর্ববোধ করি।
লুপ্তপ্রায় নকশি কাঁথা আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্যের স্মারক। আমাদের দেশের লোকশিল্প বিভিন্ন রূপে ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে প্রাধান্য পেয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা, টাঙ্গাইল, সাহজাদপুর, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এলাকার তাঁতশিল্প উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়াও নারায়ণগঞ্জের জামদানি, খুলনার মাদুর, সিলেটের শীতল পাটি আমাদের সবার পরিচিত।
বাংলাদেশের মৃৎশিল্পীদের তৈরি পোড়ামাটির কলস, হাঁড়ি, পাতিল, সানকি, ফুলদানি, পুতুল ও আমাদের লোকশিল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গ্রামের ঘরে ঘরে শিকা, হাতপাখা, বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র, কাপড়ের পুতুলও আমাদের দেশের মানুষের রুচির পরিচায়ক।
লোকশিল্প যেমন আমাদের দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরে তেমনি বিদেশী মুদ্রা উপার্জনেও অবদান রাখে। এর ভেতর দিয়ে দেশের অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করা সম্ভব। তাই লোকশিল্পের সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
পরিবেশ দূষণ
মানুষসহ অন্যান্য জীবজন্তু পরিবেশ ও প্রকৃতির অংশ। প্রকৃতির দানেই মানুষ নানা অঙ্গিকে নিজের জীবনকে সাজিয়ে তুলেছে। অথচ অবিবেচক মানুষদের কারণেই পরিবেশ আজ ক্রমান্বয়ে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সময়ে পরিবেশ দূষণের পেছনে মানুষের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি।
জনসংখ্যার বিষ্ফোরণের কারণে প্রাকৃতিক সম্পদ- বায়ু, পানি, মাটির ওপর প্রচণ্ড চাপ পড়ছে। বনজ সম্পদ ধ্বংসের রীতিমতো উৎসব চলছে বিশ্বজুড়ে। ফলে পরিবেশ দূষণের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বাতাসে ধুলোবালি, কলকারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া, কীটনাশক ইত্যাদির উপস্থিতি বাড়ছে আশংকাজনকভাবে।
কলকারখানার বর্জ্য, কীটনাশক ইত্যাদি পানিকে করে তুলেছে বিষাক্ত। হাজারো রকমের উৎকট শব্দের কারণে শব্দ দূষণ ঘটছে। নষ্ট হচ্ছে মনের শান্তি। ক্ষতিকর রাসায়নিক ও যত্রতত্র আবর্জনা ফেলায় দূষিত হচ্ছে মাটি। এভাবে দূষিত হতে থাকলে এক সময় পরিবেশের ভারসাম্য সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে যাবে।
ফলে এই বিশ্ব জীবের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠবে। অর্থাৎ পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব আজ মারাত্মক হুমকির মুখে। তাই পরিবেশ দূষণ যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে সবারই ভূমিকা রাখা উচিত। সকলের সচেতনতাই আমাদের পরিবেশকে সুস্থ ও সুন্দর করে তুলতে পারে।
বইমেলা
বই মানবসভ্যতার অন্যতম প্রাণসত্তা। বই মানুষকে পূর্ণতা দেয়, জীবনকে করে সমৃদ্ধ। বইমেলা প্রত্যেক জাতির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ। বইমেলা উপলক্ষে বই বিক্রেতা ও প্রকাশকরা নানা সাজে বইয়ের স্টল বা দোকান সাজিয়ে বাসেন। এখানে বিভিন্ন ধরনের বইয়ের সমাহার ঘটে।
বইমেলা উপলক্ষে প্রচুর নতুন বই মেলায় আসে। প্রতিষ্ঠিত লেখকদের পাশাপাশি নতুন লেখকদের বইও পাওয়া যায় এখানে। প্রতিদিন বইয়ের আকর্ষণে বই প্রেমিক মানুষেরা মেলা প্রাঙ্গণে ছুটে আসে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি লেখক, ভাষাবিদ ও বরেণ্য ব্যক্তিত্বরা বইমেলায় আসেন। লেখক ও পাঠকদের মিলনমেলায় রূপ নেয় এই মেলা।
বইমেলার ফলে পাঠকরা এক জায়গা থেকে তাদের পছন্দের বই কিনতে পারে। এছাড়া বই কেনার প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহও তৈরি হয়। বইমেলা আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতিবোধ জাগ্রত করে। সবাইকে বই পড়ার প্রতি অনুপ্রাণিত করার মাধ্যমে একটি মননশীল জাতি গঠনের ক্ষেত্রে বইমেলার গুরুত্ব অপরিসীম।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। একসাগর রক্তের বিনিময়ে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বাঙালি জাতির কাছে স্বর্ণময় এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তা জানানোর জন্য সম্পূর্ণ বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। ১৯৯৬ সালের ২২শে মার্চ ঢাকাস্থ সেগুনবাগিচার একটি দোতলা ভবনে প্রতিষ্ঠা করা হয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
বাংলাদেশের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ-সংক্রান্ত তথ্য, প্রমাণ, বস্তুগত নিদর্শন, রেকর্ডপত্র ও স্মারকচিহ্নসমূহ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের সুব্যবস্থা করা হয়েছে এখানে। দোতলা বিশিষ্ট মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মধ্যে রয়েছে ছয়টি গ্যালারি : নিচ তলায় তিনটি ও দোতলায় তিনটি। প্রথম গ্যালারির নিদর্শনগুলো দুটি পর্বে বিন্যস্ত।
প্রথম পর্বে প্রদর্শিত হয়েছে বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। দ্বিতীয় পর্বে প্রদর্শিত হয়েছে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংগ্রামের চিত্র। দ্বিতীয় গ্যালারিতে তুলে ধরা হয়েছে পাকিস্তান আমলের ইতিহাস। দোতলার তিনটি গ্যালারি সাজানো হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন তথ্য, প্রমাণ ও চিত্র দিয়ে।
প্রতিটি গ্যালারিতে আছেন একজন চৌকশ গাইড। তিনি দর্শনার্থীদের নানা প্রশ্নের উত্তর প্রদান করে তাদের কৌতূহল নিবৃত করেন। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর চত্বরে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক নানারকম বই, পোস্টার, ক্যাসেট, সিডি, স্মারকসামগ্রী বিক্রির জন্য একটি পুস্তকবিপণি, একটি খাবারের দোকান ও একটি উন্মুক্ত মঞ্চ এবং সামনের অংশে আছে ১০০ আসন বিশিষ্ট একটি চমৎকার অডিটোরিয়াম।
মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে দেশের মানুষকে সচেতন করতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অডিটোরিয়ামে ভিডিও প্রদর্শনীর মাধ্যমে আমন্ত্রিত দর্শকদের মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। উন্মুক্ত মঞ্চে আয়োজন করা হয়ে থাকে নানা অনুষ্ঠানের।
জাদুঘর আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় জাতীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতি-স্মারক-দলিলপত্রের একমাত্র সংগ্রহশালা। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সঠিকভাবে জানতে পারে, ভুলে না যায়, সে লক্ষ্যই মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্টিত ও পরিচালিত হয়ে আসছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বর্তমান সময়ে অত্যন্ত আলোচিত একটি বিষয়। উন্নত দেশগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য এটি একটি সময়োচিত পদক্ষেপ। ডিজিটাল বাংলাদেশ কী, এ বিষয়কে বুঝতে হলে প্রথমেই আমাদের জানতে হবে একটি দেশ কীভাবে ডিজিটাল দেশে পরিণত হতে পারে।
একটি দেশকে তখনই ডিজিটাল দেশ বলা যাবে যখন তা ই-স্টেটে পরিণত হবে। অর্থাৎ ওই দেশের যাবতীয় কাজ যেমনÑ সরকারব্যবস্থা, শাসনব্যবস্থা, ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি প্রভৃতি কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। তাই একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ডিজিটাল বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যয়।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার। ২০২১ সালে পালিত হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। সেই লক্ষ্যে এ সময়ের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে।
সাধারণভাবে বলতে গেলে একটি ডিজিটাল সমাজ নিশ্চিত করবে জ্ঞানভিত্তিক সমাজব্যবস্থা, যেখানে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের সমস্ত কর্মকাণ্ডে অনলাইন প্রযুক্তির প্রয়োগ নিশ্চিত হবে। কার্যকর তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি সুশাসিত সমাজব্যবস্থা নিশ্চিত করাই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।
এক্ষেত্রে সবার আগে প্রয়োজন একটি শক্তিশালী তথ্যপ্রযুক্তি কাঠামো গড়ে তোলা। সেই লক্ষ্যে বিদ্যুৎ ঘাটতির সমাধান, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কাঠামোর উন্নয়ন ও ইন্টারনেট ব্যবহারে প্রশিক্ষণ, ইংরেজি শিক্ষার ব্যবহারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশ্বায়ন সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তি দ্রুত প্রসারের ফলে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করেছে ডিজিটাল উন্নয়নের চলমান প্রক্রিয়ায়। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নামক প্রকল্পের সাথে সাধারণ মানুষের যোগসূত্র তৈরি করতে হবে। তবেই উন্নত, আধুনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনের এই স্বপ্ন পূরণ হবে।
শীতের সকাল
শীতের সকাল অন্যসব ঋতু থেকে আলাদা। কুয়াশার চাদরে মোড়া শীতের সকাল হাড় শীতল করা ঠাণ্ডা নিয়ে দেখা দেয়। এ সময় এক ফালি রোদ সকলের কাছে বহুল প্রতীক্ষিত হয়ে ওঠে। শীতের সকালে মানুষের মাঝে এক অজানা অলসতা ভর করে। লেপ মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে থাকাতেই যেন তখন স্বর্গীয় সুখ অনুভূত হয়।
কুয়াশার অন্ধকারে সূর্যদেবতার দেখা পাওয়া ভার। তাই সকালের উপস্থিতি টের পাওয়াও কষ্টকর। কিন্তু জীবনের বাস্তবতা শীতকেও দূরে সরিয়ে দেয়। তাই আড়মোড়া ভেঙে উঠতেই হয় সকলকে। নিজেকে তৈরি করে নিতে হয় কাজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। শীতের সকালে প্রকৃতি ও প্রাণীর মধ্যে এক ভিন্ন আমেজ লক্ষ করা যায়।
মানুষ, জীবজন্তু, পাখ-পাখালি শীতের বেলায় সূর্যের প্রত্যাশায় প্রহর গুনতে থাকে। শীতের সকালের প্রকৃত আনন্দ গ্রামীণ জীবনেই খুঁজে পাওয়া যায়। বাংলার গ্রামগুলোতে শীতের সকাল বেশ মনোরম হয়। গ্রামের মাঠে মাঠে শীতের প্রভাব বেশ চোখে পড়ে। শীতের কুয়াশা ভেদ করে নিজ নিজ গৃহপালিত প্রাণীদের নিয়ে বের হয় গ্রামের কর্মঠ মানুষেরা।
সূর্যের দেখা পাওয়া মাত্রই ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা রোদ পোহাতে শুরু করে। গ্রামের মানুষেরা খড়কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে শীতকালে উষ্ণতা খুঁজে ফিরে। শীতের সকালে গ্রামের সবচেয়ে আনন্দঘন মুহূর্ত হলো পিঠা-পুলি খাওয়ার মুহূর্ত।
গাছে গাছে খেজুরের রসের হাঁড়ি ঝুলিয়ে রাখতে দেখা যায়। এ রস দিয়ে নানা রকম পিঠা বানানো হয়। গ্রামীণ জীবনের আবেদন ইট-কাঠ-পাথরের শহুরে জীবনে পাওয়া যায় না। শহরে দেখা যায় বারান্দায় বসে রোদ পোহানোর।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।
- উত্তর ডাউনলোড করুন> (PDF) অষ্টম শ্রেণি:পড়ে পাওয়া বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর (51-84)
- উত্তর ডাউনলোড করুন>ভাব ও কাজ:বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর (PDF)
- উত্তর ডাউনলোড করুন>ভাব ও কাজ:প্রবন্ধের কীসের মতো (PDF)
- উত্তর ডাউনলোড করুন>(PDF) অষ্টম শ্রেণি:পড়ে পাওয়া বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর (85-112)
- উত্তর ডাউনলোড করুন>(PDF) অষ্টম শ্রেণি:‘মানবধর্ম’সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
- উত্তর ডাউনলোড করুন>অষ্টম শ্রেণি:‘মানবধর্ম’অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
- উত্তর ডাউনলোড করুন>অষ্টম শ্রেণি:মানবধর্ম‘‘ বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
- উত্তর ডাউনলোড করুন>(PDF) অষ্টম শ্রেণি:মানবধর্ম‘‘ সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর 50-66
- উত্তর ডাউনলোড করুন> (PDF) অষ্টম শ্রেণি:মানবধর্ম‘‘ সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর 21-49
- উত্তর ডাউনলোড করুন>(PDF) অষ্টম শ্রেণি:“মানবধর্ম“বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর