বিশেষ প্রতিনিধি :: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম ধাপের মতো আবার সবকিছু নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা হতে পারে বলে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে নিজ নিজ স্বার্থের জন্য। প্রধানমন্ত্রী এ ক্ষেত্রে দেশের জনগণকে সহায়তার আহবানও জানিয়েছেন। আজ একাদশ জাতীয় সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা করোনা প্রায় নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছিলাম, কিন্ত গোটা বিশ্বেই এর প্রভাব বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশেও করোনার প্রাদুর্ভাব হঠাৎ বেড়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, মানুষের উদাসীনতা বেড়ে গেছে টিকা গ্রহণের পর। যারা বিয়ে-পর্যটনসহ নানা কারণে যারা বেশি বেশি ঘুরে বেড়িয়েছেন তারাই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বেশি। মাস্ক পরাসহ, যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার কোনো বিকল্প নেই জানান তিনি।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের ১৮ দফার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবার ধীরে ধীরে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার চেষ্টা করছে। সে জন্য জনগণের সহায়তা দরকার। সেই সঙ্গে সব সময় মাস্ক পরা, গরম পানির ভাপ নেওয়া ও নাকে শর্ষের তেল দেওয়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা মাহমুদ উস সামাদের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বলেন, আমি এই সংসদের অনেক সদস্যকে হারিয়েছি, এটা সত্যি দুর্ভাগ্যজনক। একজন ভালো সংগঠক ছিলেন মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। মানুষের জন্য কাজ করার আগ্রহ ছিল তার মধ্যে। কিছুদিন আগেও তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি সব সময় সক্রিয় ছিলেন। চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা নিতে না নিতেই চলে গেলেন।
বিএনপির প্রয়াত নেতা মওদুদ আহমদ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মওদুদ আহমদ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আইনজীবী ছিলেন বলে লিখেছেন। আসলে তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার কোনো অ্যাপয়েন্টেড আইনজীবী ছিলেন না। তিনি ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে ঘুরতেন। বঙ্গবন্ধুর পিএসের সঙ্গে ঘুরতেন। বিশেষ করে ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলামের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মওদুদ আহমদ অনেক লেখা মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখেছেন। রাজনীতিতে তার বারবার দলবদল করার অভ্যাস ছিলো। তিনি ট্যালেন্টেড মানুষ ছিলেন। কিন্তু দেশপ্রেম কাজে লাগালে অনেক কিছু দিতে পারতেন।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয় বেলা ১১টায়। শুরুতেই দ্বাদশ অধিবেশন পরিচালনার জন্য ৫ জন সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন দেন স্পিকার। এরপর একাদশ সংসদ অধিবেশনের পর থেকে দ্বাদশ অধিবেশনের আগ পর্যন্ত প্রয়াত সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের নামে সংসদ শোক প্রস্তাব গ্রহণ করে।
রেওয়াজ অনুযায়ী বর্তমান সংসদের কোন এমপি বা মন্ত্রী মারা গেলে সেই এমপি, মন্ত্রীর নামে শোক প্রস্তাব গ্রহণ ও তার জীবনকর্ম নিয়ে সংসদে আলোচনা করা হয়। প্রয়াত সংসদ সদস্যের প্রতি সন্মান প্রদর্শন করে আলোচনা শেষে স্পিকার অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন।