মো: রাকিব হাওলাদার ॥ বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া নয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মোটা অংকের বিনিময়ে বিক্রি হচ্ছে জাল সনদ। সূত্রে জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আবদুর মালেক জাল সনদ বিক্রির সাথে সরাসরি যুক্ত রয়েছে। সম্প্রতি সময়ে সময়ের বার্তা কাছে একটি ভিডিও বার্তা আসে।
সেখানে দেখা যায়, বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া নয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়’র প্রধান শিক্ষক মো: আবদুর মালেক তার কর্মরত থাকা বিদ্যালয় থেকে আফরোজা বেগম নামে এক নারীকে ২০০১ সালে ৮ম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে এইমর্মে একটি সনদ বিক্রি করছেন। ভিডিও বার্তায় আরো দেখা যায়, প্রধান শিক্ষক আবদুর মালেক ওই ব্যক্তির কাছ থেকে সনদ বিক্রির জন্য তার নিজ বাসায় বসে ২ হাজার টাকা নেন।
সময়ের বার্তা’র কাছে আসা তথ্যসূত্রে জানা যায়, ওই নারী কখনোই ওই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেননি। আরো জানা যায়, অভিযুক্ত মালেক দীর্ঘদিন যাবত এই জাল সনদ বাণিজ্যের সাথে সরাসরি যুক্ত রয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক মো: আবদুর মালেক
অভিযুক্ত মো: আবদুর মালেক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘এটা স্কুলের সবাই জানেন, সার্টিফিকেট বিক্রি করে যা পান তা দিয়ে স্কুলের সবাইকে মিলে ভাগ করে চা-পানি বাবদ খরচ করা হয়।’ জাল সনদ বিক্রির এমন অভিযোগে বরিশাল জেলা শিক্ষা অফিসার মো: আনোয়ার হোসেনের বক্তব্য জানতে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে মুঠোফোে পাওয়া যায়নি।
- আরো পড়ুন:বাংলা ব্যাকরণ সকল শ্রেণীর জন্য
- আরো পড়ুন:বাংলা ভাষা ও উপভাষা
- আরো পড়ুন: বাংলা ব্যাকরণ
শিক্ষা অফিসার বিথীকা সরকার
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিথীকা সরকার জানান, ‘অভিযুক্ত মো: আবদুর মালেক বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিক্ষককের হতাশা
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সনদ বিক্রি নিয়ে এক শিক্ষক হতাশার সাথে সময়ের বার্তাকে বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থীর জীবনে সারা বছর পড়াশোনা শেষে চুড়ান্ত পরীক্ষায় মূল্যায়নের পরে সনদ পেয়ে থাকে।
যা দিয়ে সে তার পরবর্তী জীবনে চাকুরী থেকে শুরু করে দেশ সেবায় অংশগ্রহণ করে। দেশ ও জাতির কল্যাণে বিশাল অবদান রাখে সে। আর সেই সনদ যদি বিনা পরিশ্রমে অবৈধ উপায়ে পাওয়া যায়, তাহলে দেশের ভবিষ্যৎ কি হবে?’ তিনি আরো বলেন, ‘চরকাউয়া নয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়’র প্রধান শিক্ষক মো: আবদুর মালেক যা করেছেন তা অবশ্যই অপরাধ ও নিন্দনীয়।
কর্তৃপক্ষের উচিত এমন অপরাধের সাথে যারা জড়িত তাদের সকলকে আইনের আওয়াতায় এনে কঠোরতর শাস্তি প্রদান করা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, ‘শিক্ষক হচ্ছেন আমাদের সম্মানীয় মানুষ।
তাদের কাছ থেকে আমরা শিক্ষা অর্জন করি, তাদের কাছ আদর্শ আমরা অনুসরণ করি। আমাদের অনেক পড়াশোনার পর একটি সনদ অর্জন করতে হয়, সেটি যে শ্রেণিরই হোক। একজন শিক্ষক কীভাবে সনদ বিক্রি করে? এটি আমাদের কাছে দুঃখজনক ঘটনা।’ এমন কর্মকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রত্যাশা করে তিনি আরো বলেন, ‘এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে, আসল যারা শিক্ষিত তারা অবহেলিত হবে এবং যারা অশিক্ষিত তারা টাকা দিয়ে সনদ ক্রয় করে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করবে।
- আরো পড়ুন: ক্যাডেট কলেজে ভর্তিচ্ছুদের প্রস্তুতি 2022
- আরো পড়ুন: বয়স কত আপনার?
- আরো পড়ুন: পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান
অভিভাবক
সালমা নামে এক অভিভাবক সময়ের বার্তাকে বলেন, ‘আমাদের ছেলেরা অনেক পড়াশোনা করে একটি সনদ অর্জন করেন। কিন্তু এদেশের কিছু দুর্নীতিবাজ শিক্ষকরা সামান্য কিছু টাকার বিনিময় সনদ বিক্রি করছেন। এতে দেশের শিক্ষার মান ক্রমশই নষ্ট হচ্ছে এবং প্রকৃত শিক্ষিতরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন । আমি একজন সচেতন অভিভাবক হিসেবে এই শিক্ষককের কঠোরতর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’ বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মো: রফিকুল ইসলাম খান সময়ের বার্তাকে বলেন, চরকাউয়া নয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আবদুর মালেকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তদন্ত সার্পেক্ষে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।