জেনে নিন নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে। আসুন এ সম্পর্কে আজকে আলোচনা করে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। একজন উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যবসা করার জন্য, নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খোলার নিয়ম কথা ভাবছেন? বর্তমান সময়ে করোনা মহামারীর ফলে, আমাদের জীবনযাত্রা থমকে গিয়েছে। আমাদের জীবনে কর্মচঞ্চলতা কমে গেছে। কতশত মানুষ যে, তার নিজের চাকরি হারিয়ে পথে বসেছে, তার হিসেবে নেই।
- আরো পড়ুন: ইসলামী ব্যাংক হাউজ লোনের নিয়ম কানুন
- আরো পড়ুন: সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহনির্মাণ ঋণ আরো সহজ হলো
- আরো পড়ুন: পূবালী ব্যাংক থেকে লোন পাওয়া উপায়
ঠিক সেই সময়ে মানুষের মাঝে, অনুধাবন হয়েছে নিজের একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান থাকার। নিজের উদ্যোগে কিছু করার। নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ার খাতিরে, নিজেকে গড়ে তুলেছে উদ্যোক্তা হিসেবে। পূর্বে অনেকে এই পেশায় এগিয়ে এসেছে। কিন্তু, এই মহামারী করোনায় মানুষ প্রায় দ্বিগুণ হারে উদ্যোক্তা হবার চেষ্ঠা করছে।
একজন উদ্যোক্তাই পারে, নিজের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে, দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে। দেশের উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়াতে এবং নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে পাশে এসেছে নগদ। নগদের নিরবচ্ছিন্ন সেবার আরেক ধাপ যুক্ত করলো নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট।
বর্তমানে মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। সে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নতুন নতুন কর্ম পরিকল্পনা গড়ে উঠেছে। নতুন নতুন কর্মক্ষেত্রে মানুষের আশা ভরসার একমাত্র কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে মোবাইল ব্যাংকিং। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিং পরিসেবা হয়েছে বৃহৎ। মোবাইল ব্যাংকিং পরিসেবায় অন্যতম আস্থা এবং ভরসা নাম হল নগদ।
নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খোলার নিয়ম
দেশ থেকে দেশান্তরে নগদ গ্রাহকদের সংখ্যা বাড়ছে সমান-তালে। তাই, যদি নগদ উদ্যোক্তা কিংবা নগদ এজেন্টের ব্যবসা করা হয়, তাহলে আপনি এই ক্ষেত্রে অনেক লাভবান হতে পারেন। আজকে আমরা আলোচনা করবো নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খোলার নিয়ম নিয়ে।
বর্তমানে জনপ্রিয় ও আলোচিত একটি ব্যবসা হল নগদ উদ্যোক্তা ও একাউন্ট। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা, কিভাবে করতে হয় এই নগদ এজেন্ট একাউন্ট। আপনাদের সুবিধার কথা করে, চিন্তা করে চলুন জেনে আসি কিভাবে করতে হয় নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট।
নগদ উদ্যোক্তা একাউন্টের জন্য যা যা লাগবে:
- ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- ন্যাশনাল আইডি কার্ড/জন্ম নিবন্ধন /ড্রাইভিং লাইসেন্স।
- নগদ একাউন্ট বাদে একটি মোবাইল নম্বর।
- ট্রেড লাইসেন্স।
- দোকানের সিল।
যেভাবে খুলতে হবে নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট
আপনি ঘরে বসে নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট খুলতে পারবেন না। উদ্যোক্তা একাউন্ট খুলতে নিচের ধাপসমূহ অনুসরণ করতে হবে।
নগদ অফিসের ঠিকানা: ডেল্টা ডালিয়া টাওয়ার (লেভেল ১৩ এবং ১৪), ৩৬ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বনানী, ঢাকা -১২১৩
ফোন নাম্বার: 16167 or 096 096 16167
- উদ্যোক্তা একাউন্ট খুলতে চান, তাহলে আপনাকে নগদ একাউন্ট কিংবা নগদ ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে।
- অফিসে গিয়ে দরকারী কাগজপত্র যেমন: ২ কপি ছবি, ন্যাশনাল আইডি কার্ডের কপি সঙ্গে করে নিয়ে যেতে হবে।
- ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে নিযুক্ত ব্যক্তি আপনার কাগজ-পত্র যাচাই করে নিবেন।
- কাগজ-পত্র যাচাই করে নিলে আপনার কাছ থেকে সর্বোচ্চ আধা ঘন্টা সময় তারা নিতে পারে।
- দরকারী জিনিস যাচাই করলে, তারা আপনাকে উদ্যোক্তা একাউন্ট সিম কার্ড দিয়ে দিবে।
- উক্ত সিম কার্ড প্রদানের মাধ্যমে আপনার উদ্যোক্তা একাউন্ট তৈরির কাজ সম্পন্ন হবে।
কেন করবেন নগদ উদ্যোক্তা একাউন্ট?
বর্তমানে আলোচিত একটি ব্যবসা হল নগদ উদ্যোক্তা বা নগদ এজেন্ট ব্যবসা। সময়ের সঙ্গে এ ব্যবসায় ভালো মানের মুনাফা অর্জন করা যায়। বর্তমানে আজকাল ব্যবসার নতুন ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে এই এজেন্ট ব্যবসা।
বর্তমানে যতগুলো মোবাইল ব্যাংকিং সেবা রয়েছে, সবার মধ্যে নগদের তুলনামূলক সুযোগ-সুবিধা বেশি বিধায়, আজকাল নগদের গ্রাহক সংখ্যা বেশি। শুধুমাত্র এই কারণের জন্য হলেও আপনি যদি নগদ উদ্যোক্তা ব্যবসা করতে পারেন আপনি ভালো মানের টাকা আয় করতে পারবেন।
নগদ উদ্যোক্তা ব্যবসায় টাকা বিনিয়োগের পরিমাণ?
বর্তমানে আলোচিত একটি ব্যবসা হল নগদ এজেন্ট ব্যবসা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যবসার পরিধি বেড়েছে ব্যাপক। এই ব্যবসার লাভ ক্ষতি মূলত আপনার বিনিয়োগের উপর নির্ভর করে। আপনি যত বেশি টাকা মজুদ করবেন, আপনার মুনাফার পরিমাণ ঠিক তত বেশি হবে।
তবে এই ক্ষেত্রে বলা যায়, আপনি যদি এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে নতুন হয়ে থাকেন আপনি মাত্র ১০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করতে পারেন নগদ এজেন্ট ব্যাংকিং।
নগদ উদ্যোক্তা একাউন্টে মুনাফার পরিমাণ
অনেকে আছে যারা নগদ উদ্যোক্তা হতে চান, কিন্তু কিভাবে এই ব্যবসা থেকে থেকে মুনাফা অর্জন করে থাকেন সেই সম্পর্কে অনেকের জানা নেই। মূলত এই ব্যবসার মুনাফার গ্রাহকদের টাকা পাঠানো এবং উত্তোলনের উপর নির্ভর করে থাকে।
- কাষ্টমার যদি ১০০০ টাকা উত্তোলন করে
- প্রায় ৪.১০ পয়সা মুনাফা পাবেন
এভাবে প্রতি লাখে ৪১০ টাকা পেতে পারেন। তাছাড়া আপনি কাস্টমারকে যদি নগদ একাউন্ট খুলে দিতে পারেন তাহলে টাকা পাবেন। সেই সঙ্গে কমিশন আপনার এজেন্ট একাউন্টে যুক্ত হয়ে যাবেন। তাহলে, প্রতিদিন যদি ৩’শ টাকাও মুনাফা হয়, ৩০ দিনে ৯ হাজার টাকা আয় হয়।
নগদ উদ্যোক্তা একাউন্টের সুবিধা
বর্তমানে নগদ উদ্যোক্তা ব্যবসা সকলের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। কিন্তু, আমরা কি জানি কি ধরণের সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে এই নগদ উদ্যোক্তা একাউন্টে?
নগদ উদ্যোক্তা একাউন্টের সুবিধা সমূহ এর কথা:
- মূল ব্যবসার পাশাপাশি আপনি উদ্যোক্তা একাউন্ট বা এজেন্ট একাউন্টের ব্যবসা করতে পারবেন। এই জন্য মানুষ বেশি এগিয়ে আসছে এই ব্যবসায়।
- এই একাউন্টে লেনদেন করা অনেক নিরাপদ। তাই এই একাউন্টে গ্রাহকগণ আগ্রহী হচ্ছে।
- অল্প পরিশ্রমে অধিক আয় করা যায় বিধায় গ্রাহকগণ এই পেশায় আগ্রহী হচ্ছে।
নগদ এজেন্ট একাউন্টের অসুবিধা
বিকাশ নগদ একাউন্ট সুবিধা থাকলেও এদের বেশ কিছু অসুবিধা আছে।
উদ্যোক্তা একাউন্টের অসুবিধা সমূহের কথা:
- শুধুমাত্র যাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে তারাই বিকাশ উদ্যোক্তা একাউন্ট খুলতে পারবে।
- নগদ একাউন্টের ক্ষেত্রে পুরো টাকা ব্যাংক থেকে তুলতে হবে।
- সাধারণ কোন ব্যক্তি এই উদ্যোক্তা একাউন্ট খুলতে পারবেন না।
নগদ উদ্যোক্তা ব্যবসায় স্থান নির্বাচন
আপনি যখন ব্যবসা করবেন, তার লাভ ক্ষতি শুধুমাত্র যে বিনিয়োগের উপর নির্ভর করবে, তা কিন্তু নয়। বরং কোন ব্যবস্থা কতটা সাফল্য অর্জন করবে তা নির্ভর করে স্থানের উপর।
ঠিক তেমনি, আপনি যদি নগদ উদ্যোক্তা কিংবা নগদ এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবসা শুরু করেন, সেই ক্ষেত্রে সঠিক স্থান নির্বাচন একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সঠিক স্থানে দোকান দিলে আপনার মুনাফা যেমন বেশি হবার সম্ভাবনা আছে। অন্যদিকে, সঠিক স্থানের অভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।
- আরো পড়ুন: চাকরী ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করে তিনটি রেস্তারার মালিক!
- আরো পড়ুন: আচার বিক্রি করে মাসে লাখ টাকা আয়
- আরো পড়ুন: প্রশিক্ষণ দেশে, চাকরি বিদেশে!
দোকানের জন্য সঠিক স্থান
- জনসমাগম পূর্ণ স্থান। যেমন: বাজার,হাসপাতাল।
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ,লোকাল এড়িয়ার মধ্যেই।
- শপিং-মল, সুপার-শপ,অফিস আদালয়ের আশেপাশে।
দোকানের জন্য সঠিক স্থান নয়
- নীরব এলাকা।
- দূরবর্তী স্থান।
- মানুষের যাতায়াত করে কম এমন স্থান।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন। এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।