নবম-দশম শ্রেণি:দ্বিতীয় অধ্যায় ব্যবসায় উদ্যোগ ও উদ্যোক্তা

নবম-দশম শ্রেণি:দ্বিতীয় অধ্যায় ব্যবসায় উদ্যোগ ও উদ্যোক্তা

দ্বিতীয় অধ্যায়
ব্যবসায় উদ্যোগ ও উদ্যোক্তা
BUSINESS ENTREPRENEURSHIP AND ENTREPRENEUR

Richard Cantillon (1680-1734)
রিচার্ড ক্যানটিলন শিল্পোদ্যোগ বিষয়ে প্রথম ধারণা প্রদান করেন।
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি
উদ্যোগ ও ব্যবসায় উদ্যোগ : মানুষ তার মৌলিক চাহিদাগুলো ও ইচ্ছাপূরণে সদা সচেষ্ট থাকে। এজন্য তার কাজ করার যে কর্মপ্রচেষ্টা তাই উদ্যোগ।

আর ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ঝুঁকি নিয়ে যদি কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করে তা হলো ব্যবসায় উদ্যোগ। মনের সুপ্ত বাসনার বাস্তব রূপদানে উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই। আর ব্যবসায়ের সম্প্রসারণে ব্যবসায় উদ্যোগ আবশ্যকীয়।

উদ্যোগ ও ব্যবসায় উদ্যোগের মধ্যে পার্থক্য : উদ্যোগ যেকোনো বিষয়েই হতে পারে কিন্তু লাভের আশায় ঝুঁকি নিয়ে অর্থ ও শ্রম বিনিয়োগ করাই হলো ব্যবসায় উদ্যোগ। ব্যবসায় উদ্যোগের প্রধান উদ্দেশ্য মুনাফা অর্জন, কিন্তু অন্যান্য উদ্যোগের উদ্দেশ্য জনকল্যাণ।

ব্যবসায় উদ্যোগের বৈশিষ্ট্য : ব্যবসায় উদ্যোগ এই ব্যবসায় স্থাপনের কর্ম উদ্যোগ। ঝুঁকি আছে জেনেও মুনাফা অর্জন করার উদ্দেশ্যে ব্যবসায় শুরু হয়। আর তাই এ দুইটি ব্যবসায় উদ্যোগের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এছাড়া অন্যের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সম্পদ সৃষ্টি, দেশের আর্থিক উন্নয়ন ও সামাজিক দায়বদ্ধতা গ্রহণ করাও ব্যবসায় উদ্যোগের বৈশিষ্ট্য।

ব্যবসায় উদ্যোক্তার গুণাবলি : একজন ব্যবসায় উদ্যোক্তার কিছু গুণাবলি থাকে যা তাকে ব্যবসায়ে সফলতা অর্জনে সহায়তা করে। একজন উদ্যোক্তার প্রধান গুণসমূহ হলো আত্মবিশ্বাস, স্বাধীনচেতা মনোভাব, উদ্যম,

সাংগঠনিক ক্ষমতা, সাহস, অধ্যবসায়, সংবেদনশীলতা, একাগ্রতা, নমনীয়তা, সৃজনশীলতা, ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষমতা, উদ্ভাবনী শক্তি, কঠোর পরিশ্রম করার ক্ষমতা, পুঁজি সংগ্রহের ক্ষমতা, নেতৃত্বদানের যোগ্যতা, কৃতিত্ব অর্জনের আকাক্সক্ষা, চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার মানসিকতা, ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা গ্রহণের মানসিকতা ইত্যাদি।

আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যবসায় উদ্যোগের গুরুত্ব : বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। আমাদের দেশের জাতীয় উৎপাদনের প্রায় ৫০ ভাগ আসে সেবা খাত থেকে, প্রায় ২০ ভাগ কৃষি খাত থেকে আর ৩০ ভাগ আসে শিল্প খাত থেকে।

দেশের প্রাকৃতিক ও মানবসম্পদকে কাজে লাগিয়ে জাতীয় উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, পরনির্ভরশীলতা দূরীকরণ ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যবসায় উদ্যোগ একটি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখে।

ব্যবসায় উদ্যোগ গড়ে ওঠার অনুকূল পরিবেশ : বাংলাদেশে মেধা, মনন ও দক্ষতার খুব বেশি ঘাটতি নেই। শুধুমাত্র ব্যবসায় উদ্যোগ গড়ে ওঠার অনুকূল পরিবেশের অভাব।

আর এটি গড়ে ওঠার জন্য উন্নত অবকাঠামোগত উপাদান, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, আর্থসামাজিক স্থিতিশীলতা, অনুকূল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পর্যাপ্ত পুঁজির প্রাপ্যতা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ অনুকূল পরিবেশে থাকা উচিত।

ব্যবসায় উদ্যোগ ও ঝুঁকির সম্পর্ক : ব্যবসায় বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। কোনো ব্যবসায় ঝুঁকি বেশি, কোনো ব্যবসায় কম। ব্যবসায় ঝুঁকি বেশি হলে মুনাফা বেশি এবং ঝুঁকি কম হলে মুনাফা কম হয়। যেকোনো ব্যবসায় শুরুর পূর্বে ঝুঁকি পরিমাপ করা খুবই জরুরি। ঝুঁকি সঠিকভাবে নিরূপণ করতে না পারলে ব্যবসায় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে।

বাংলাদেশে ব্যবসায় উদ্যোগ উন্নয়নে বাধা : ব্যবসায় উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা নানা ধরনের বাধার সম্মুখীন হন। এসব বাধার মধ্যে সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাব, চাকরির প্রতি অধিক আগ্রহ, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার অপর্যাপ্ততা, প্রচার-প্রচারণার অভাব, প্রয়োজনীয় অর্থসংস্থানের অভাব, প্রশিক্ষণের অভাব, রাজনৈতিক অস্থিরতা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

বাংলাদেশে ব্যবসায় উদ্যোগ উন্নয়নে বাধা দূরীকরণের উপায় : বাংলাদেশের ব্যবসায় উদ্যোগ উন্নয়নে বিরাজমান বাধাসমূহ দূরীকরণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

বাধাসমূহ দূরীকরণে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে তা হলো- কার্যকর ও বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, প্রচার-প্রচারণা, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার, বিনিয়োগ পরামর্শ প্রদান, স্থায়ী ও চলতি পুঁজির যোগান, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ইত্যাদি।

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।

এগুলো দেখুন

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ: MCQ উত্তরসহ

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ: MCQ উত্তরসহ

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ: MCQ উত্তরসহ বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর ১. রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় যে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *