এসএসসি’র ব্যবসায় উদ্যোগের সৃজনশীল প্রশ্নসহ উত্তর (ফ্রি PDF)

এসএসসি’র ব্যবসায় উদ্যোগের সৃজনশীল প্রশ্নসহ উত্তর (ফ্রি PDF)

  • সৃজনশীল প্রশ্ন
  • পুরান ঢাকার পাঁচ বন্ধু সমঝোতার ভিত্তিতে প্রত্যেকেই সমান মূলধন বিনিয়োগ করে ঢাকার বাংলা বাজারে একটা আধুনিক ছাপাখানা চালু করে।

পাঁচজন মিলেমিশে ও ভাগ করে মনোযোগ দিয়ে কাজ করায় তারা সফল হয়। এখন তাদের আরেকটা মেশিন ওঠানো প্রয়োজন। কিন্তু হাতে নগদ টাকা না থাকায় তারা এমন অংশীদার নেয়ার কথা ভাবছে যাতে তার দায় যেমনই হোক না কেন পরিচালনায় অংশ নিতে পারবে না।

ক. অংশীদারি ব্যবসায়ের আবেদনপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন কে?
খ. একমালিকানা ব্যবসায় সবচেয়ে জনপ্রিয় কেন?

গ. পাঁচ বন্ধুর অংশীদারি ব্যবসায়টি কোন ধরনের? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে নতুন অংশীদার গ্রহণ করা কতটুকু যুক্তিসংগত হবে বলে তুমি মনে কর? তোমার উত্তর বিশ্লেষণ কর।

ব্যবসায় উদ্যোগের সৃজনশীল প্রশ্নর উত্তর
ক. অংশীদারি ব্যবসায়ের আবেদনপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন নিবন্ধক।
খ. একমালিকানা ব্যবসায় পৃথিবীর প্রাচীনতম ব্যবসায় সংগঠন। একক মালিকানায় সামান্য পুঁজি বিনিয়োগ করে আইনগত বাধ্যবাধকতা ছাড়াই যে কেউ একমালিকানা ব্যবসায় গঠন করতে পারেন।

একমালিকানা ব্যবসায়ের মালিক এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং ব্যবসায়ের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন। এজন্য একমালিকানা ব্যবসায় সবচেয়ে জনপ্রিয়।

গ. পুরান ঢাকার পাঁচ বন্ধু মিলে সমঝোতার ভিত্তিতে সাধারণ অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করেছে। অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তি অনুযায়ী সাধারণ অংশীদারি ব্যবসায়ে সকল অংশীদারের দায় সীমাহীন থাকে এবং ব্যবসায় পরিচালনায় প্রত্যেকেই অংশগ্রহণ করে। অংশীদারগণ ব্যবসায়ে অর্জিত মুনাফা চুক্তি অনুযায়ী ভোগ করে।

উদ্দীপকে পাঁচ বন্ধু মিলে ঢাকার বাংলা বাজারে সমান মূলধন বিনিয়োগ করে একটি আধুনিক ছাপাখানা প্রতিষ্ঠান গঠন করে। তারা পাঁচজন মিলেমিশে কাজ করে এবং একে অপরকে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করার জন্য দায়িত্ব ভাগ করে নেয়। তারা প্রত্যেকে সমান মর্যাদার অধিকারী।

সকলে ব্যবসায় পরিচালনায় অংশগ্রহণ করে এবং সকলে সমানভাবে দায় বহন করে। তাদের মধ্যে ব্যবসায়ের অন্যতম অপরিহার্য উপাদান চুক্তি বিদ্যমান। তাদের মূলধন সরবরাহের ধরন এবং ব্যবসায়িক কার্যাবলি তাদেরকে সাধারণ অংশীদার হিসেবে ঘোষণা করছে। সুতরাং বলা যায়, পুরান ঢাকার পাঁচ বন্ধু মিলে সাধারণ অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করেছে।

ঘ. উদ্দীপকে পাঁচ বন্ধুর ব্যবসায়ে মূলধন সংকটের জন্য নতুন একজন অংশীদায় নিয়োগ দেয়া সঠিক হবে বলে আমি মনে করি।
অনেক সময় ব্যবসায়ের সুবিধার্থে পুরাতন অংশীদারগণ নতুন অংশীদার গ্রহণ করে থাকে। সে চুক্তি পালনে রাজি হলে সদস্য হিসেবে গণ্য হবে।

যেদিন হতে সে ব্যবসায়ে যোগ দেবে তার আগের কোনো দায়ের জন্য তাকে দায়ী করা যাবে না। তবে স্বেচ্ছায় পূর্বের দায় গ্রহণে রাজি হলে পুরাতন অংশীদারদের সাথে তাকে পৃথকভাবে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে। উদ্দীপকে পাঁচ বন্ধু তাদের ব্যবসায়ে নতুন অংশীদার নিয়োগ করতে চান, যিনি মূলধন বিনিয়োগ করবেন কিন্তু ব্যবসায় পরিচালনায় অংশ নিতে পারবেন না।

বন্ধুদের এ সিদ্ধান্ত অত্যন্ত যুক্তিসংগত। কারণ তাদের ব্যবসায়ে নগদ অর্থের প্রয়োজন দায়িত্ব নিয়ে কাজ করবে এমন লোকের প্রয়োজন নেই। নতুন অংশীদার ব্যবসায়ে মূলধন বিনিয়োগ করলে তা নগদ অর্থের চাহিদা পূরণ করবে। ফলে সহজেই ব্যবসায় সম্প্রসারণ করা যাবে।

তারা এমন অংশীদার চান যারা ব্যবসায় পরিচালনার বিষয়ে ইচ্ছুক না অথচ বিনিয়োগে অধিক আগ্রহী। কারণ বেশি অংশীদার ব্যবসায় পরিচালনায় অংশ নিলে তা সিদ্ধান্ত গ্রহণে জটিলতা, গোপনীয়তা, পারস্পরিক অবিশ্বাস, যৌথ দায়িত্বে ঝুঁকি প্রভৃতি সমস্যার সৃষ্টি করে।

পাঁচ বন্ধুর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অংশীদার নিয়োগের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান এবং ব্যবসায়ের গতিশীলতা বৃদ্ধি করা সম্ভব। সুতরাং বলা যায়, পাঁচ বন্ধুদের নতুন অংশীদার নেওয়ার সিদ্ধান্ত যুক্তিসংগত।

সৃজনশীল প্রশ্ন
এমবিএ পাস করা আট বন্ধু কোম্পানি গঠনের জন্য কোম্পানি আইন উপদেষ্টার নিকট কোম্পানি গঠনের আগ্রহ জানালেন। উপদেষ্টা বললেন, তারা যে কোম্পানি গঠন করতে চায় তার জন্য কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হবে না। তবে দু’টি দলিল তৈরি করতে হবে এবং কিছুটা সময় লাগবে। বন্ধুরা সব শুনে সমঝোতার ভিত্তিতে আইনের আনুষ্ঠানিকতার বাইরেই একটা প্রতিষ্ঠান গড়লেন।

ক. প্রবর্তক কাকে বলে?
খ. ট্রেড লাইসেন্সের ধারণা দাও।

গ. আট বন্ধু মিলে কোন ধরনের কোম্পানি গঠন করতে আগ্রহী ছিলেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. বন্ধুদের নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ার সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা মূল্যায়ন কর।

ব্যবসায় উদ্যোগের সৃজনশীল প্রশ্নর উত্তর
ক. যে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে তাকে প্রবর্তক বলে।
খ. ট্রেড লাইসেন্স বলতে ব্যবসায়ের আইনগত অনুমতিপত্রকে বোঝায়। একমালিকানা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তি ইচ্ছে করলেই যেকোনো স্থানে ব্যবসায় স্থাপন করতে পারেন।

কিন্তু পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় একমালিাকনা ব্যবসায় শুরু করতে হলে পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হয়। ব্যবসায়ের এই অনুমতিপত্রকে ট্রেডলাইসেন্স বলা হয়। নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করা যায়।

গ. আট বন্ধু মিলে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি গঠন করতে আগ্রহী ছিলেন। ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুসারে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করা আবশ্যক নয়। নিবন্ধনপত্র পাওয়ার পরই কোম্পানিটি ব্যবসায় শুরু করতে পারে।

উদ্দীপকে এমবিএ পাস করা আট বন্ধু কোম্পানি গঠনের জন্য কোম্পানি আইন উপদেষ্টার নিকট গিয়েছিলেন। তারা এমন একটি কোম্পানি গঠন করতে চেয়েছিলেন যেখানে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হবে না।

দুটি দলিল অর্থাৎ স্মারকলিপি এবং পরিমেল নিয়মাবলি প্রস্তুতের মাধ্যমে কোম্পানিটি নিবন্ধনপত্র সংগ্রহ করতে পারবে। সুতরাং, আট বন্ধুর পরিকল্পিত কোম্পানিটি একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি।

ঘ. আট বন্ধুর অংশীদারি ব্যবসায় গঠনের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত যৌক্তিক। অংশীদারি ব্যবসায় সহজ গঠন ও ঝামেলামুক্ত হওয়ায় যেকোনো সময় এ ব্যবসায় গঠন করা যায়। চুক্তি সম্পাদনের জন্য যোগ্য কমপক্ষে দুজন ব্যক্তি চুক্তিবদ্ধ হয়ে এরূপ ব্যবসায় শুরু করতে পারে। উদ্দীপকে আট বন্ধু প্রাইভেট লি. কোম্পানি গঠন করতে চেয়েছিলেন।

কিন্তু প্রাইভেট লি. কোম্পানি গঠন করতে আইনি ঝামেলা পোহাতে হয় এবং সময় সাপেক্ষ। তাই আট বন্ধু মিলে প্রাইভেট লি. কোম্পানির পরিবর্তে অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করেছে। কারণ অংশীদারি ব্যবসায়ে কোনো আইনগত ঝামেলা নেই। যেকোনো সময় সদস্যগণ চুক্তিবদ্ধ হয়ে এ ব্যবসায় গঠন করতে পারে।

তাছাড়া প্রাইভেট লি. কোম্পানিতে যেকোনো শর্ত সহজেই পরিবর্তন করা যায় না কিন্তু অংশীদারি ব্যবসায়ের সদস্যগণ সম্মিলিতভাবে যেকোনো বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।
সুতরাং, আইনগত ঝামেলা ও জটিল গঠন উপেক্ষা করে আট বন্ধুর অংশীদারি ব্যবসায় গঠনের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত যৌক্তিক হয়েছে বলে আমি মনে করি।

সৃজনশীল প্রশ্ন
সবুজ ও তার ১০ বন্ধু মিলে ঢাকার পোশাক তৈরির কারখানা দিগন্ত গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠা করলেন। চুক্তিভিত্তিক গঠিত এ কারখানায় অর্থের সংকট মোকাবিলা করার জন্য সকল সদস্যের সিদ্ধান্তে প্রতিষ্ঠানটি মালিকানা সদস্য বৃদ্ধি করল এবং মুদ্রা বাজারের সদস্য হয়ে জনগণের নিকট শেয়ার বিক্রয়ের ঘোষণা দিল।

ক. কোম্পানি ব্যবসায়ের সদস্যদের দায় কেমন?
খ. বৈধ ব্যবসায় বলতে কী বোঝায়?

গ. দিগন্ত গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠার প্রথম পর্যায়ে কোন ধরনের সংগঠন ছিল? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. দিগন্ত গার্মেন্টসের আর্থিক সংকট মোকাবিলায় গৃহীত পদক্ষেপটি কতটুকু যুক্তিসংগত বলে তুমি মনে কর?

ব্যবসায় উদ্যোগের সৃজনশীল প্রশ্নর উত্তর
ক. কোম্পানি ব্যবসায়ের সদস্যদের দায় শেয়ার মূল্য দ্বারা সীমাবদ্ধ।
খ. যে ব্যবসায় দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী স্বীকৃত তাকে বৈধ ব্যবসায় বলে।

যেকোনো ব্যবসায় শুরু করতে হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমতি নিতে হয়। আইনগতভাবে যে সকল ব্যবসায় নিষিদ্ধ নয় এবং সকল ব্যবসায় যথাযথ নিয়মে গঠিত হয় সে সকল ব্যবসায়কে বৈধ ব্যবসায় বলা হয়। জনকল্যাণের পরিপন্থী নয় এমন ব্যবসায়ই হলো বৈধ ব্যবসায়।

গ. উদ্দীপকে দিগন্ত গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠার প্রথম পর্যায়ে অংশীদারি ব্যবসায় সংগঠন ছিল। অংশীদারি ব্যবসায় হলো মুনাফা অর্জনের জন্য দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে চুক্তিবদ্ধ সম্পর্কের মাধ্যমে গঠিত এক ধরনের ব্যবসায় যেখানে তারা সবার অথবা তাদের মধ্য থেকে একজন সবার পক্ষে উক্ত ব্যবসায়টি পরিচালনা করে থাকে।

উদ্দীপকে দিগন্ত গার্মেন্টস চুক্তির ভিত্তিতে গঠিত হয়েছিল। সবুজ ও তার ১০ বন্ধু মিলে ঢাকায় পোশাক তৈরির উদ্দেশ্যে দিগন্ত গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠা করলেন। চুক্তিবদ্ধ হয়েই তারা এটা গঠন করলেন।

এছাড়া দিগন্ত গার্মেন্টসের সদস্য সংখ্যা ১১ জন এবং সবুজ কর্তৃক তা পরিচালিত হয়। সবুজ ও তার দশ বন্ধু চুক্তির ভিত্তিতে এটি প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাই বলা যায়, দিগন্ত গার্মেন্টস একটি অংশীদারি ব্যবসায় হিসেবে চালু হয়েছিল।

ঘ. দিগন্ত গার্মেন্টসের আর্থিক সংকট মোকাবিলায় সবুজ ও তার বন্ধুদের গৃহীত পদক্ষেপটি যথার্থ হয়েছে।
অংশীদারি বা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির চেয়ে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির আয়তন বড় হয়ে থাকে এবং মূলধনের পরিমাণও বেশি হয়। কারণ জনগণের মধ্যে শেয়ার বিক্রয় করে অর্থ সংগ্রহ করা হয়।

উদ্দীপকে দিগন্ত গার্মেন্টস কারখানা যথাযথভাবে পরিচালনা একটি ব্যয়বহুল কাজ। এ কাজ করতে গিয়ে সবুজ ও তার ১০ বন্ধু যখন আর্থিক সংকটে পড়ল তখন অর্থ সংকট মোকাবিলার জন্য সবার পরামর্শে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত করে জনগণের মধ্যে শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের জন্য সিদ্ধান্ত নিল।

দিগন্ত গার্মেন্টসের অংশীদারগণ যেহেতু প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সংকট মেটানোর জন্য জনগণের মধ্যে শেয়ার বিক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছে সেহেতু ঐ প্রতিষ্ঠানের সদস্য সংখ্যা বাড়ায় মূলধনের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে।

সেক্ষেত্রে দিগন্ত গার্মেন্টস অধিক পুঁজির সাহায্যে যেমন ব্যবসায় সম্প্রসারণ করতে পারবে তেমনি পুঁজির যথার্থ ব্যবহারের দ্বারা প্রচুর কাঁচামাল ও আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয়, সুদক্ষ কর্মচারী নিয়োগ, অধিক ক্রয় ও বণ্টন ইত্যাদি বৃহদায়তন ব্যবসায়ের সুবিধাগুলোও ভোগ করতে পারবে। সুতরাং বলা যায়, মূলধনের সংকট মেটানোর জন্য সবুজ ও তার বন্ধুদের গৃহীত পদক্ষেপটি যথার্থ হয়েছে।

সৃজনশীল প্রশ্ন
সাকিব, তামিম ও মাশরাফি তিন বন্ধু। তারা একটি ব্যবসায় গঠন করে কাজ করছিল। হঠাৎ তামিমের জার্মানির ভিসা পেয়ে বিদেশে চলে যাওয়ার সুযোগ এলে সে তার শেয়ার চাচাতো ভাই আফতাবের নিকট বিক্রয় করতে চাইলে আইনের কারণে ব্যর্থ হলো।

পরে কারবারের সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে ব্যবসায়ের আকার পরিবর্তন করে জনগণের জন্য শেয়ার ক্রয়ের পথ উন্মুক্ত করে দিলে তামিমের জন্য আর কোনো বাধা থাকল না।

ক. কোম্পানির সংবিধানের নাম কী?
খ. কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সম্পর্কে লেখ।

গ. তিন বন্ধু কর্তৃক গঠিত প্রথম ব্যবসায়টি কোন ধরনের সংগঠন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তামিমের বাধা দূরীকরণের জন্য গৃহীত পদক্ষেপটি বিশ্লেষণ কর।

ব্যবসায় উদ্যোগের সৃজনশীল প্রশ্নর উত্তর
ক. কোম্পানির সংবিধানের নাম স্মারকলিপি।
খ. পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিকে নিবন্ধনপত্র পাওয়ার পর কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হয়। কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র ছাড়া কাজ শুরু করা যায় না।

কোম্পানিকে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র পাওয়ার জন্য ন্যূনতম চাঁদা সংগ্রহের ঘোষণাপত্র এবং জনসাধারণের নিকট শেয়ার বিক্রয়ের ঘোষণাপত্রসহ আবেদন করতে হয়। সব কাগজপত্র ঠিক থাকলে নিবন্ধক পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিকে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র প্রদান করে। এ পত্র পাওয়ার পরই পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি ব্যবসায় শুরু করতে পারে।

গ. তিন বন্ধু কর্তৃক গঠিত প্রথম ব্যবসায়টি ছিল প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। যে কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ২ জন এবং সর্বোচ্চ ৫০ জনে সীমাবদ্ধ এবং যার শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য নয় তাকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি বলে।

উদ্দীপকে সাকিব, তামিম ও মাশরাফি তিন বন্ধু মিলে একটি কোম্পানি গঠন করে। তাদের কোম্পানির মোট সদস্য সংখ্যা তিন জন। তামিম জার্মানিতে যাওয়ার ভিসা পেলে সে তার শেয়ার তার চাচাতো ভাই আফতাবের নিকট হস্তান্তর করতে চাইলেও হস্তান্তর করতে পারেনি।

কারণ প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য নয়। তবে কোম্পানির অন্য সদস্যগণ কিনতে পারে। অর্থাৎ, প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির বৈশিষ্ট্যের আলোকে তিন বন্ধু কর্তৃক গঠিত প্রথম ব্যবসায় সংগঠনটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি।

ঘ. তামিমের বাধা দূর করার জন্য গৃহীত পদক্ষেপটি হচ্ছে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করা। যে কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ৭ জন ও সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা কোম্পানির স্মারকলিপিতে উল্লিখিত শেয়ার সংখ্যা দ্বারা সীমাবদ্ধ এবং যার শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য তাকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি বলে।

উদ্দীপকের প্রাথমিক পর্যায়ের সংগঠনটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হওয়ায় তামিম তার শেয়ার বিক্রি করতে পারেননি। কিন্তু পরবর্তীতে যখন ব্যবসায়ের আকার বড় করে জনগণের নিকট শেয়ার বিক্রির সুযোগ করে দেয়া হয় তখন তামিম সহজে নিজের শেয়ার তার চাচাতো ভাই আফতাবের নিকট বিক্রয় করার সুযোগ পায়।

এতে তাদের কোম্পানির আয়তন ও মূলধনের পরিমাণ বেড়ে গেল। কোম্পানি তখন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়। পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির তুলনায় প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির সীমাবদ্ধতা বেশি।

তাই প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে গড়ে ওঠা কোম্পানিগুলো তার সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে বৃহদায়তন ব্যবসায়ের সুবিধা ভোগ করতে নিজেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত করে নেয়। সুতরাং বলা যায়, তামিমের বাধা দূর করার জন্য প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করার পদক্ষেপ যথার্থ হয়েছে।

সৃজনশীল প্রশ্ন
হাবিব ও তার ৫ বন্ধু মিলে সাভারে একটি রপ্তানিমুখী সোয়েটার কারখানা স্থাপন করলেন। প্রতিষ্ঠানটিতে তারা সর্বোচ্চ ৫০ জন সদস্য নিতে পারবেন।

বায়িং হাউজের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে ২ বছর পর দেখা যায় তাদের অর্ডারের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে গেল। তারা প্রয়োজনীয় মূলধনের জন্য শেয়ার বিক্রি করতে আগ্রহী। এজন্য প্রতিষ্ঠানটির গঠনতন্ত্র পরিবর্তনে তারা উদ্যোগ নিলেন।

ক. চুক্তিপত্রে কাদের স্বাক্ষর থাকে?
খ. একমালিকানা ব্যবসায়ে আইনের বাধ্যবাধকতা নেই কেন?

গ. জনাব হাবিব ও তার ৫ বন্ধু মিলে গঠিত ব্যবসায়টি কোন ধরনের কোম্পানি সংগঠন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর প্রতিষ্ঠানটির গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনলে বর্তমান ব্যবসায়টি হতে বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে? মতামত দাও।

ব্যবসায় উদ্যোগের সৃজনশীল প্রশ্নর উত্তর
ক. চুক্তিপত্রে সকল অংশীদারের স্বাক্ষর থাকে।
খ. একমালিকানা ব্যবসায় প্রাচীনতম ব্যবসায় সংগঠন। এ ব্যবসায় গঠন করতে কোনো আইনগত বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হয় না।

মালিক ইচ্ছা করলেই এ ব্যবসায় শুরু করতে পারেন। আবার নিজ ইচ্ছায় এটি বন্ধ করে দিতে পারেন। কারণ এ ব্যবসায়ে কোনো আইনগত আনুষ্ঠানিকতা মেনে চলতে হয় না।

গ. জনাব হাবিব ও তার ৫ বন্ধু মিলে গঠিত ব্যবসায়টি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি সংগঠন। প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি বলতে এমন কোম্পানিকে বোঝায় যার সর্বনিম্ন সদস্য সংখ্যা ২ জন এবং সর্বোচ্চ ৫০ জনে সীমাবদ্ধ এবং শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য নয় তাকে বোঝায়।

উদ্দীপকে জনাব হাবিব ও তার ৫ বন্ধু মিলে রপ্তানিমুখী শোয়েটার কারখানা স্থাপন করেন। তাদের প্রতিষ্ঠানটিতে তারা সর্বোচ্চ ৫০ জন সদস্য নিতে পারবেন। মূলধন সংগ্রহের জন্য প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার ও ঋণপত্র ক্রয়ের জন্য তারা জনগণের নিকট আমন্ত্রণ জানাতে পারেন না।

অর্থাৎ কোম্পানির সদস্যগণ শুধু নিজেরাই শেয়ার ক্রয় করতে পারেন। ফলে তাদের ব্যবসায়ের মূলধনের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে সীমিত। সুতরাং বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী জনাব হাবিব ও তার বন্ধুদের গঠিত সংগঠনটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি।

ঘ. প্রতিষ্ঠানটির গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনলে বর্তমান ব্যবসায়টি হতে বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে বলে আমি মনে করি।
পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির তুলনায় প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির অসুবিধা বেশি। তাই উক্ত অসুবিধাগুলো দূর করতে প্রাইভেট লি. কোম্পানিকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করার প্রয়োজন পড়ে।

উদ্দীপকে জনাব হাবিব ও তার বন্ধুদের প্রতিষ্ঠানটি গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনলে নতুন গঠিত ব্যবসায়টি হবে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। এরূপ কোম্পানির সর্বনিম্ন সদস্য সংখ্যা ৭ জন এবং সর্বোচ্চ সদস্য শেয়ার দ্বারা সীমাবদ্ধ। তাছাড়া এ ধরনের কোম্পানি প্রয়োজনীয় মূলধন সংগ্রহের জন্য জনগণের নিকট শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রি করতে পারে।

এ ধরনের কোম্পানি গঠনের ফলে জনাব হাবিব তার বন্ধুরা জনগণের কাছ থেকে শেয়ার বিক্রয় বাবদ প্রচুর মূলধন সংগ্রহ করতে পারবেন। তারা প্রয়োজনে শেয়ার অবাধে হস্তান্তর করার সুযোগও পাবেন। সদস্য সংখ্যা অধিক হওয়ায় পরিচালনার দক্ষতাও অর্জিত হবে।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি সহজেই জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে। অধিক মূলধন থাকায় সহজেই তারা সোয়েটার কারখানা সম্প্রসারণ করতে পারবেন। মূলত এসব সুবিধা বর্তমানে গঠিত প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি থেকে পাওয়া যায় না।
সুতরাং, গঠনতন্ত্র পরিবর্তন হলে নতুন গঠিত পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হতেই জনাব হাবিব ও তার বন্ধুরা অধিক সুবিধা পাবেন।

সৃজনশীল প্রশ্ন
তানজিল টেক্সটাইল মিলের গেটে প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা নিজেদের অর্থে একটা বিপণি বিতান গড়ে তুলেছে। এখানে তারাই মালিক তারাই ক্রেতা। নিজেদের মধ্য থেকে নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে।

প্রতি তিন বছর পরপর এ কমিটির নির্বাচন হয়। শেয়ার মূলধন যার যাই থাকুক না কেন সবাই সমানভাবে অংশগ্রহণ করে। তারা সবাই এ প্রতিষ্ঠানের কারণে নানাভাবে উপকৃত হচ্ছে।

ক. সরকার কর্তৃক গঠিত, পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবসায়ের নাম কী?
খ. একমালিকানা ব্যবসায় কীভাবে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করে?

গ. সমবায় সমিতির কোন নীতির কারণে শ্রমিকরা নির্বাচনে সমানভাবে অংশগ্রহণ করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সমবায় সমিতি গঠন করে শ্রমিকরা কীভাবে উপকৃত হয় বলে তুমি মনে কর?

ব্যবসায় উদ্যোগের সৃজনশীল প্রশ্নর উত্তর
ক. সরকার কর্তৃক গঠিত, পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবসায়ের নাম রাষ্ট্রীয় ব্যবসায়।
খ. ক্ষুদ্রায়তনের একমালিকানা ব্যবসায় দেশের সর্বত্র আনাচে-কানাচে, অলি-গলি, গ্রাম-গঞ্জে ব্যাপকভাবে গড়ে ওঠে। অর্থাৎ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারাও সামান্য মূলধন নিয়ে সহজেই এরূপ ব্যবসায় গড়ে তুলতে পারে।

এতে করে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর আয় ও সম্পদ বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি হয়। ফলে বৃহদায়তন ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে সম্পদ যেভাবে কতিপয় ব্যক্তির হাতে পুঞ্জীভূত হয়, এক্ষেত্রে তার কোনোই সম্ভাবনা থাকে না। এভাবে একমালিকানা ব্যবসায় সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করে।

গ. সমবায় সমিতির সাম্যের নীতির কারণে শ্রমিকরা নির্বাচনে সমানভাবে অংশগ্রহণ করে। সমবায় সমিতির প্রত্যেক সদস্যের সমমর্যাদা ও সমঅধিকার রয়েছে। এক্ষেত্রে সমবায়ের অন্যতম আদর্শ হলো সকল সদস্যের সমভোটাধিকার। এখানে ছোট বড়, গরিব-ধনী সবার মর্যাদা ও অধিকার সমান।

উদ্দীপকে সমবায়ের সদস্যরা যে যেমন মূলধনই সরবরাহ করুক না কেন সবাই এখানে সমান মর্যাদা ভোগ করে। তানজিল টেক্সটাইল মিলের শ্রমিকরা তাদের সমবায় সমিতিতে প্রত্যেকে একটি করে ভোট দিতে পারে।

একাধিক ভোটাধিকার সমিতির কারোই নেই। এভাবেই শ্রমিকরা নিজেদের মধ্যে সমতা বজায় রাখার চেষ্টা করে। অর্থাৎ সাম্য নীতির কারণে শ্রমিকরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সবাই সমানভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।

ঘ. সমবায় সমিতি গঠন করায় তানজিল টেক্সটাইল মিলের শ্রমিকরা আর্থ-সামাজিকভাবে নিজেদের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন।
সমবায় হলো বিত্তহীন ও নিম্নবিত্ত মানুষের সংগঠন। শোষণ ও বঞ্চনার হাত থেকে রক্ষা করে তাদের আর্থিক কল্যাণ সাধনই হলো সমবায়ের লক্ষ্য। উদ্দীপকের তানজিল টেক্সটাইলের শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার রক্ষা করার জন্য দুর্বল শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ করে পারস্পরিক সহযোগিতায় সমবায় সমিতি গঠন করেছে।

সমবায়ের মাধ্যমে তারা তাদের চিন্তা, কাজ ও আচরণের উৎকর্ষতা বৃদ্ধি করে আর্থিক ও সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে পেরেছে। সমবায়ের মুনাফার একটি নির্দিষ্ট অংশ সঞ্চিতি তহবিলে জমা রাখে। ফলে শ্রমিকদের সঞ্চয় বৃদ্ধি পায়।

সমবায় গঠনের মাধ্যমে শ্রমিকরা বড়-ছোট ভেদাভেদ ভুলে সবার সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। এর মাধ্যমে শ্রমিকরা বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের অবসথান সম্পর্কে সচেতন হতে পেরেছে।

সমবায়ের মাধ্যমে সমাজের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে সম্পদের সুষম বণ্টন সম্ভব হয়। ফলে সমাজের ধনী বৈষম্য হ্রাস পায়। সুতরাং বলা যায়, তানজিল টেক্সটাইলের শ্রমিকরা তাদের নিজের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য সমবায় সমিতি গঠন করেছে।

ANSWER SHEET

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।

এগুলো দেখুন

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ সমবায় সমিতির প্রকারভেদ MCQ

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ সমবায় সমিতির প্রকারভেদ MCQ

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ সমবায় সমিতির প্রকারভেদ MCQ সমবায় সমিতির প্রকারভেদ সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *