বিশেষ প্রতিনিধি :: সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনে ঘরের বাইরে বের হতে এ পর্যন্ত প্রায় ১৬ কোটি মানুষ মুভমেন্ট পাস সংগ্রহের জন্য চেষ্টা করেছে। এর মধ্যে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৮০১ মানুষের পাস ইস্যু করা হয়েছে। প্রতি মিনিটে ওয়েবসাইটটি ভিজিট করছেন ১৪ হাজার মানুষ।
গত মঙ্গলবার মুভমেন্ট পাসের জন্য খুলে দেওয়া হয় ওয়েবসাইটটি। সে সময় থেকে আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৫ কোটি ৯৯ লাখ ২২ হাজার ৬৫ জন মানুষ মুভমেন্ট পাস সংগ্রহের চেষ্টা করেছে। এই সময়ে রেজিস্ট্রেশন করতে সক্ষম হয়েছে ৪ লাখ ৯৭৭ জন।
৩ লাখ ১৬ হাজার ৮০১ জনের পাস ইস্যু করা হয়েছে। আর প্রতি মিনিটে ১৪ হাজার ২৬ জন ভিজিট করছে। এত মানুষ ঘর থেকে বের হলে কঠোর লকডাউনের সুফল আসবে কি?
এই লকডাউনে এতো মানুষ কোথায় এবং কেন যেতে চান? একটি পাস একবারি ব্যবহার করা যাবে জানার পরেও আরো পাস নিয়ে রাখছেন কেন? এমন প্রশ্ন এখন মাঠে দায়িত্বরত পুলিশকর্মীদের।
এ বিষয়ে বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক ফারহানা মোবিন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘মুভমেন্ট পাশ নিয়ে এতো মানুষ বের হলে লকডাউনের কোনও সুফল আমরা পাব না। এ পাশ নিয়ে অনেকেই কোনো কাজ ছাড়াই বাসা থেকে বের হচ্ছেন।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, মানুষ মুদির দোকানে যাওয়ার নাম করে পাস নিয়ে ঘুরি কিনতে যায়। এছাড়াও হাসপাতালের নাম করে আত্মীয়র বাসায় যাওয়ার চেষ্টা করে।
এ প্রসঙ্গে বাংলামোটরে দায়িত্বরত সার্জেন্ট মাহমুদ হাসান বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘অনেকেই বের হয়ে বলছেন তারা লকডাউন সম্পর্কে জানেন না। আবার কেউ অপ্রয়োজনে ঘুরছেন।’
‘তবে কেউ বের হওয়ার সদুত্তর দিতে না পারলে এবং কারণ ও প্রয়োজন জরুরি মনে না হলে আমরা তাদের নামে মামলা দিচ্ছি’ বলে জানান সার্জেন্ট মাহমুদ।
কঠোর নির্দেশনা কিংবা লকডাউন যেটাই হোক না কেন, এই সাতদিন নিয়ম না মানলে কোনো ছাড় না দেয়ার কথাই জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্তব্যরত এক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘একেক জন একেক ধরণের অজুহাত দিচ্ছেন। তবে আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।’
এ বিষয়ে পুলিশ সদর সদর দপ্তর (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) শাখার এআইজি মো. সোহেল রানা বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনের ভিত্তিতে যারা মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদন করছেন, তাদের প্রয়োজনীয়তার যুক্তিযুক্ত বিবেচনায় আমরা পাস দিচ্ছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘সবাইতো একই সময়ে একই জায়গা যাচ্ছে না। জরুরি প্রয়োজনে বের হতে চাইলে কাউকে বাধা দেয়া যাবে না। তবে অযথা বাইরে ঘোরাফেরা করছে কি না সে বিষয়ে পুলিশ পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
তবে জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং মাস্ক পরে বের হওয়ার পরামর্শ দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এর আগে পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, সরকারি বিধিনিষেধ চলাকালে বিনা প্রয়োজনে কেউ ঘরের বাইরে যাবেন না। জরুরি প্রয়োজনে বের হতে চাইলে পুলিশের মুভমেন্ট পাস নিয়ে চলাচল করবেন। জরুরি কাজে ঘরের বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।