SSC:পূর্ব বাংলার আন্দোলন ও জাতীয়তাবাদের উত্থান
প্রথম অধ্যায়
পূর্ব বাংলার আন্দোলন ও জাতীয়তাবাদের উত্থান (১৯৪৭- ১৯৭০)
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষেপে জেনে রাখি
ভাষা আন্দোলন : ভাষা আন্দোলন ছিল বাঙালির সাংস্কৃতিক স্বাধিকার আন্দোলন। পরবর্তীকালে এই আন্দোলন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের জন্ম দেয়। বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা বিকাশের প্রথম পদক্ষেপ ছিল এই আন্দোলন।
শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব : ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ভাষা আন্দোলনের পরের বছর থেকে প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি বাঙালির শহিদ দিবস হিসেবে উদ্যাপিত হয়ে আসছে। ২১-এর প্রভাতফেরি ও প্রভাতফেরির গান বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত হয়েছে।
- উত্তর ডাউনলোড করুন> SSC ব্যবসায় উদ্যোগ:অনুধাবন ও জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (PDF)
- উত্তর ডাউনলোড করুন> নবম-দশম শ্রেণি ব্যবসায় উদ্যোগ:সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (ফ্রি PDF)
- উত্তর ডাউনলোড করুন> নবম-দশম শ্রেণি:দ্বিতীয় অধ্যায় MCQ (উত্তরসহ ফ্রি PDF)
- উত্তর ডাউনলোড করুন> নবম-দশম শ্রেণি:দ্বিতীয় অধ্যায় বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর(PDF)
- উত্তর ডাউনলোড করুন> নবম-দশম শ্রেণি:দ্বিতীয় অধ্যায় ব্যবসায় উদ্যোগ ও উদ্যোক্তা
১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতি রক্তের বিনিময়ে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছিল। বিশ্বের ইতিহাসে অনন্যসাধারণ ঘটনা হিসেবে আমাদের ভাষা ও শহিদ দিবস আজ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি লাভ করেছে।
১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের সংবিধান : সংবিধান একটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। সংবিধানের মাধ্যমে একটি রাষ্ট্রের শাসনকার্য পরিচালিত হয়। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম নেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন পর্যায়ে দ্রুত সংবিধান রচনার দাবি ওঠে।
কিন্তু শাসকগোষ্ঠীর অনিচ্ছায় নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তান ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ভারত স্বাধীনতা আইন দ্বারা পরিচালিত হতে থাকে। বহু ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে সংবিধান প্রণীত হলেও তা মাত্র দুই বছর স্থায়ী ছিল। ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করলে পাকিস্তানে সাংবিধানিক শাসনের অবসান ঘটে।
১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দের সামরিক শাসন ও আইয়ুব খানের মৌলিক গণতন্ত্র : ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ৭ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মির্জা মালিক ফিরোজ খানের সংসদীয় সরকার উৎখাত করে দেশে সামরিক শাসন জারি করেন।
এর কিছু দিনের মধ্যে ২৭ অক্টোবর প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল আইয়ুব খান ইস্কান্দার মির্জাকে অপসারণ করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে এবং শাসন ও রাজনৈতিক কাঠামোর আমূল পরিবর্তন করার উদ্যোগ নেন।
তিনি এক অদ্ভুত ও নতুন নির্বাচন কাঠামো প্রবর্তন করেন। তার এই নির্বাচনের মূলভিত্তি ছিল ‘মৌলিক গণতন্ত্র’। মৌলিক গণতন্ত্র হচ্ছে এক ধরনের সীমিত গণতন্ত্র। ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে মৌলিক গণতন্ত্র আদেশ জারি করা হয়।
পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য : ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের লাহোর প্রস্তাব অনুসারে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। কিন্তু লাহোর প্রস্তাবের মূলনীতি অনুযায়ী পূর্ব বাংলা পৃথক রাষ্ট্রের মর্যাদা পায়নি।
দীর্ঘ ২৪ বছর পূর্ব বাংলাকে স্বায়ত্তশাসনের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হয়েছে। এ সময় পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকেরা রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, সামরিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য ও নিপীড়নমূলক নীতি অনুসরণ করে। এরই প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলায় স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে।
৬ দফা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ : পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণ থেকে মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ৬ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশ্য ছিল, ৬ দফা দাবি আদায়ের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানকে বৈষম্যের হাত থেকে রক্ষা করা।
মূলত ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ অবসানের পর পূর্ব পাকিস্তানের নিরাপত্তার প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানি সরকারের চরম অবহেলা, পাশাপাশি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক, সামরিক, শিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি সীমাহীন বৈষম্যের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু সোচ্চার হন। ৬ দফা কর্মসূচি ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের চূড়ান্ত প্রকাশ। এটি ছিল বাঙালির আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীক বা মুক্তির সনদ।
ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা : আগরতলা মামলাটি দায়ের করা হয় ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ ছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলাতে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের গোপন বৈঠক হয়।
সেখানে ভারতের সহায়তায় সশস্ত্র আন্দোলনের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন করার পরিকল্পনা করা হয়। এজন্য মামলাটির নাম হয় ‘আগরতলা মামলা’। সরকারি নথিতে মামলার নাম হলো ‘রাষ্ট্র’ বনাম শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য।
১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের গণ-অভ্যুত্থানের তাৎপর্য : ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির পর ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলন নতুন রূপ লাভ করে। ২৩ ফেব্রুয়ারির সংবর্ধনা সভায় বঙ্গবন্ধু ১১ দফা দাবির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং ৬ দফা ও ১১ দফা বাস্তবায়নে বলিষ্ঠ প্রতিশ্রুতি দেন।
- উত্তর ডাউনলোড করুন> (PDF)নবম-দশম শ্রেণি:ব্যবসায় উদ্যোগ MCQ (উত্তরসহ)
- উত্তর ডাউনলোড করুন> নবম-দশম শ্রেণি :ব্যবসায় উদ্যোগ প্রথম অধ্যায় ব্যবসায় পরিচিতি
- উত্তর ডাউনলোড করুন>SSC:ফিন্যান্স ও ব্যাংকিংজ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর(PDF)
- উত্তর ডাউনলোড করুন> SSC:ফিন্যান্স ও ব্যাংকিংসমন্বিত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর(PDF)
ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে গ্রাম ও শহরের কৃষক ও শ্রমিকদের মাঝে শ্রেণি চেতনার উন্মেষ ঘটে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের আকাক্সক্ষা বৃদ্ধি পায়। বাঙালি জাতীয়তাবাদ পরিপূর্ণতা লাভ করে, যাতে বলীয়ান হয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়ে।
’৭০ এর নির্বাচনের গুরুত্ব : বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পেছনে ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনের গুরুত্ব অনেক। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনের পর এটিই ছিল সবচেয়ে বেশি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন।
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে বাঙালি জাতি ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি সর্বক্ষেত্রে যে স্বাতন্ত্র্য দাবি করে আসছিল, ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে বাঙালির সে স্বাতন্ত্র্যবাদের বিজয় ঘটে।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।