SSC হিসাব বিজ্ঞান:পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি

SSC হিসাব বিজ্ঞান:পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি 

SSC হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের  প্রিয় শিক্ষার্থীরা: আজ হিসাব বিজ্ঞান হিসাব বিজ্ঞান এর পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি সর্ম্পকে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো। এছাড়া  ফ্রি পিডিএফ ফাইলসহ দেওয়া হলো। সুবিধা মতো পড়ার জন্য নিচে লিংক দেওয়া আছে। প্রয়োজনে ফ্রি পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করে নিতে পারবে।

পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি

Luca  Pacioli (14451517)

লুকা প্যাসিওলি একজন ইতালীয় গণিতবিদ ও ধর্মযাজক ছিলেন। ১৪৯৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সুম্মা ডি এরিথমেটিকা জিওমেট্রিয়া প্রপোরশনিয়েট প্রপোরশনালিটা নামে একটি গ্রন্থ লিখেন। এই গ্রন্থে সর্বপ্রথম হিসাবরক্ষণের মূলনীতি “দু’তরফা দাখিলা” ব্যাখ্যা করা হয়।

প্রথম অধ্যায়
হিসাব বিজ্ঞান পরিচিতি

হিসাব বিজ্ঞানের ধারণা

হিসাববিজ্ঞান এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় আর্থিক কার্যাবলি হিসাবের বইতে সুষ্ঠুভাবে লিপিবদ্ধ করা যায় এবং নির্দিষ্ট সময় শেষে আর্থিক কার্যাবলির ফলাফল জানা যায়।

অর্থাৎ হিসাববিজ্ঞানের জ্ঞান ব্যবহার করে হিসাবের বিভিন্ন বিবরণী ও প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়, যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা জানা যায়। এ কারণেই হিসাববিজ্ঞানকে ‘ব্যবসায়ের ভাষা’ বলা হয়।

হিসাব বিজ্ঞানের উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয়তা

যথাযথ হিসাব না রাখলে প্রতিষ্ঠানের ভালো ও খারাপ দিকগুলো জানা যাবে না। সঠিকভাবে হিসাব সংরক্ষণের মাধ্যমে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করে অপচয়রোধ এবং আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন করা সম্ভব।

অর্থাৎ সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও মিতব্যয়ী জীবন গঠনের জন্য হিসাববিজ্ঞানের উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব অপরিসীম। হিসাববিজ্ঞানের সর্বপ্রথম উদ্দেশ্য লেনদেনসমূহকে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে হিসাবের বইতে লিপিবদ্ধ করা। আর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো আর্থিক ফলাফল ও আর্থিক অবস্থা নিরূপণ করা।

লাভ-ক্ষতি নির্ণয়ের মাধ্যমে ব্যবসায়ের গতি প্রকৃতিসহ প্রতিষ্ঠানের সম্পদ, দায় ও মালিকানা স্বত্বের পরিমাণ সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়া যায়। হিসাববিজ্ঞান ব্যবসায়ের যাবতীয় ব্যয় সঠিকভাবে লিপিবদ্ধকরণের মাধ্যমে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। হিসাববিজ্ঞানের মাধ্যমে সঠিক হিসাবরক্ষণের সাহায্যে প্রতিষ্ঠানের প্রতারণা ও জালিয়াতি রোধ করা যায়।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানের একাধিক বছরের আর্থিক বিবরণীর তুলনামূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে উন্নতি ও অবনতির বিভিন্ন দিক চি‎িহ্নতপূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হিসাববিজ্ঞান সহায়তা করে থাকে। দেশের সরকারকেও তার রাজস্ব আদায়ের এবং বিভিন্ন উন্নয়নমূলক খাতে ব্যয়ের সুষ্ঠু হিসাব সংরক্ষণে হিসাববিজ্ঞান সহায়তা করে থাকে।

হিসাব বিজ্ঞানের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ

সভ্যতার শুরু হতে মানুষ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা হিসাব গাছের গায়ে, পাহাড়ের গুহায় বা পাথরে চি‎হ্ন দিয়ে রাখত। এক সময় মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস শুরু করে কৃষিকাজ আরম্ভ করল। তারা তাদের ঘরের দরজায় দাগ কেটে ও রশিতে গিট দিয়ে কৃষি পণ্য বা ফসল ও মজুদের হিসাব রাখা শিখল।

আস্তে আস্তে যখন তাদের সমাজ বিস্তার লাভ করে তখন তাদের মধ্যে বিনিময় প্রথা, মুদ্রার প্রচলন এবং ব্যবসায় বাণিজ্যের প্রচলন শুরু হয়। ক্রয়-বিক্রয়, জমা-খরচ, দেনা-পাওনা এবং অন্যান্য লেনদেন হিসাবের বইতে অঙ্কের মাধ্যমে হাতে লেখা শুরু হয়।

১৪৯৪ সালে লুকা প্যাসিওলি নামক একজন ইতালীয় গণিতবিদ ‘সুম্মা ডি এরিথমেটিকা জিওমেট্রিয়া প্রপোরশনিয়েট প্রপোরশনালিটা’ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। এই বইতে তিনি হিসাবরক্ষণের মূলনীতি ‘দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতি’ ব্যাখ্যা করেন। বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে বড় বড় প্রতিষ্ঠানে হিসাব বইসমূহ হাতে লেখার পরিবর্তে কম্পিউটারের মাধ্যমে করা হচ্ছে।

হিসাব তথ্যের ব্যবহারকারী

হিসাববিজ্ঞানকে একটি ‘ওহভড়ৎসধঃরড়হ ঝুংঃবস’ বা ‘তথ্য ব্যবস্থা’ নামে অভিহিত করা হয়। প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ব্যবহারকারীদের চাহিদা বিবেচনা করেই লেনদেনসমূহ হিসাবের বইতে লিপিবদ্ধ ও আর্থিক বিবরণী আকারে প্রস্তুত করা হয়।

অভ্যন্তরীণ ব্যবহারকারী : প্রতিষ্ঠানের মালিক, ব্যবস্থাপক।
বাহ্যিক ব্যবহারকারী : ঋণ প্রদানকারী, সরকার, পাওনাদার এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারি।

 সমাজ ও পরিবেশের সাথে হিসাব ব্যবস্থার সম্পর্ক

হিসাববিজ্ঞান শুধু মুনাফা নির্ণয়ের জন্যই ব্যবহার করা হয় না। মুনাফা নির্ণয়ের পাশাপাশি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সমাজ এবং পরিবেশেরও যাতে কোনো রকম ক্ষতি না হয় হিসাববিজ্ঞান সেদিকটিতেও অবদান রাখে।

  • জলবায়ু দূষণ রোধে প্রতিষ্ঠান কিছু অর্থ খরচ করে থাকে।
  • শিল্পকারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া প্রতিরোধে ব্যবসায়ের মালিক ও হিসাবরক্ষক অর্থ ব্যয় করে থাকে।
  • পণ্য তৈরিতে স্বাস্থ্যসম্মত কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়।
  • বিদ্যুৎ অপচয়রোধ করা হয়।
  • পরিবেশ রক্ষার জন্য শিল্পকারখানার বর্জ্য ও আবর্জনা সঠিক স্থানে ফেলা হয়।
  • মূল্যবোধ সৃষ্টিতে হিসাববিজ্ঞানের ভূমিকা

মূল্যবোধ হলো ব্যক্তি ও সমাজের চিন্তা-চেতনা, বিশ্বাস, ধ্যান-ধারণা প্রভৃতির সমন্বয়ে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা একটি মানদণ্ড যার দ্বারা মানুষ কোনো বিষয়ের ভালো-মন্দ বিচার করে ভালোকে গ্রহণ ও মন্দকে বর্জন করে। মূল্যবোধ সৃষ্টিতে হিসাববিজ্ঞান যেভাবে সহায়তা করে তা হলো :

  •  সততা ও দায়িত্ববোধের বিকাশ ঘটায়;
  •  ঋণ পরিশোধ সচেতনতা সৃষ্টি করে;
  • ধর্মীয় মূল্যবোধ সৃষ্টি করে;
  •  সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ববোধ সৃষ্টি করে;
  • জালিয়াতি ও প্রতারণা প্রতিরোধ করে।
  • জবাবদিহি প্রক্রিয়ায় হিসাববিজ্ঞানের ভূমিকা

নির্দিষ্ট কার্য সম্পাদনের দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট হলে কাজের ফলাফলের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তার কাজের জন্য দায়ী করা যায়। নিজের কাজের জন্য তৃতীয় পক্ষের নিকট দায়বদ্ধতাই জবাবদিহিতা। জবাবদিহিতা কার্যক্রমকে গতিশীল রাখার ক্ষেত্রে হিসাববিজ্ঞানের ভূমিকা হলো

  • ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ জবাবদিহিতা সৃষ্টিতে সহায়তা করে।
  • মালিক, ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীদের নিকট জবাবদিহিতা করতে সহায়তা করে।
  • সরকারের নিকট জবাবদিহিতা করতে সহায়তা করে।

Download Free PDF

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।

এগুলো দেখুন

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ: MCQ উত্তরসহ

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ: MCQ উত্তরসহ

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ: MCQ উত্তরসহ বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর ১. রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় যে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *