জেনে নিন শিমুল বাগান ভ্রমণের সেরা সময় কখন? বিশাল এলাকাজুড়ে টকটকে লাল রঙের শিমুল ফুলের বাগান। বড় বড় শিমুল গাছ যেন বসন্তে পূর্ণযৌবণা হয়ে ওঠে। বসন্ত আসতেই গাছে শিমুল ফুল ফুটতে শুরু করে। উপর থেকে দেখলে মনে হবে লাল চাদর ছড়িয়ে রাখা হয়েছে মাটিতে।
- আরো পড়ুন: ‘বাঁশ গ্রাম’র যা যা দেখবেন
- আরো পড়ুন: শ্রীমঙ্গল ভ্রমণে যা যা দেখবেন
- আরো পড়ুন: এশিয়ার সবচেয়ে স্বচ্ছ নদী দেশেই দেখুন!
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক শিমুল বাগান ভ্রমণের সেরা সময় কখন?
লাল টকটকে শিমুল ফুলের সৌন্দর্য দেখতে তাই তো দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা ভিড় জমায় দেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগানে। বলছি সুনামগঞ্জের শিমুল বাগানের কথা। এটি ১০০ বিঘারও বেশি জায়গাজুড়ে অবস্থিত। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের মানিগাঁও এলাকায় এই শিমুল বাগানের অবস্থান। যাদুকাটা নদীর তীরে ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই বাগানই দেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগান বলে পরিচিত।
ওপারে ভারতের মেঘালয় পাহাড়, মাঝে যাদুকাটা নদী আর এপারে শিমুল বাগান। শিমুল বাগান ভ্রমণে গিয়ে চারপাশের এসব সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পুরো এলাকাজুড়ে টকটকে লাল শিমুল ফুল দেখা যায়। রক্তিম আভায় পর্যটকরাও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারেন এই খোলামেলা বাগানে। ফাল্গুন আসতেই দেশ-বিদেশ থেকে আসতে শুরু করেন পর্যটকরা।
জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ধর্ণাঢ্য ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন ২০০২ সালে গড়ে তোলে এই শিমুল বাগান। শখের বসে তিনি প্রায় ৩ হাজার শিমুল ফুলের চারা রোপণ করেন। এই সেই চারা বিশাল বিশাল গাছ হয়ে উঠেছে। শিমুল বাগানের পাশে একটি লেবুর বাগানও আছে।
শিমুল বাগানে কখন যাবেন?
শিমুল বাগানে যাওয়ার সময় দুটি। লাল টকটকে শিমুল ফুল দেখতে হলে ফাল্গুনে যেতে হবে। শিমুল ফুল গাছে থাকে মাত্র ১৫ থেকে ২০ দিন। তাই ফেব্রুয়ারির ১০ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে গেলেই সেখানকার বিস্ময়কর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। আর বর্ষায় গেলে ঘন সবুজ শিমুল বাগান পাবেন। তবে ফুলের দেখা পাবেন না। তখন টাঙ্গুয়ার হাওর পানিতে পরিপূর্ণ থাকে। তাই শিমুল বাগানে গেলে টাঙ্গুয়ার হাওয়ারও ঘুরে আসতে পারে নৌকায় চড়ে।
কীভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে প্রথমে যে কোনো বাসে চড়ে পৌঁছাতে হবে সুনামগঞ্জ। ভাড়া পড়বে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা। যেতে সময় লাগবে কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা। সুনামগঞ্জ নেমে আব্দুর জহুর ব্রিজে মোটরসাইকেল, সিএনজি, লেগুনা দাঁড়িয়ে থাকে। মোটসাইকেলে গেলে বারেক টিলা নদীর এপার পর্যন্ত ভাড়া নেবে ২০০ টাকা। দামাদামি করে ১৫০ টাকায়ও যাওয়া সম্ভব! এক বইকে চালকসহ ৩ জন ওঠা যায়। যাদুকাটা নদীর সামনে নামিয়ে দেবে। ৫ টাকা দিয়ে নৌকা পার হয়ে ওপারে গেলেই বারেক টিলা। বারেক টিলা থেকে নেমেই চোখে পড়বে কয়েকটি চায়ের দোকান। তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেই দেখিয়ে দেবে শিমুল বাগান যাওয়ার পথ।
বিকেল পর্যন্ত বাগানে সময় কাটিয়ে যাদুকাটা নদী পার হয়ে ফিরে আসুন বারেক টিলায়। সেখান থেকে সিএনজি বা মোটর সাইকেলে সুনামগঞ্জে ফিরে আসতে হবে। অন্যান্য স্পট ঘুরতে চাইলে বাগানে সকালে গিয়ে দুপুরের মধ্যে ঘুরে আসুন। তাহলে ফেরার পথে ট্যাকেরঘাট, নীলাদ্রি লেক ও টাঙ্গুয়ার হাওরও ঘুরে আসতে পারবেন। তবে হাতে দুদিন থাকলে মোটামুটি সবগুলো স্থানেই ঘুরতে পারবেন।
- আরো পড়ুন: কাদিগড় জাতীয় উদ্যানে যেভাবে যাবেন
- আরো পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে যা আছে দেখার
- আরো পড়ুন: বিশ্বের যে ৭ স্থানে তাজমহল দেখতে পাবেন
কোথায় থাকবেন ও খাবেন?
শিমুল বাগানের আশপাশে তেমন কোনো থাকার ব্যস্থা নেই। বড়ছড়া বাজারে কয়েকটি গেস্ট হাউজ ও তাহিরপুর বোজারে দুটি হোটেল আছে। তবে সুনামগঞ্জ শহরে থাকাই ভালো। সেখানে ২০০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে পছন্দের মতো হোটেল পেয়ে যাবেন। বারেক টিলায় খাবারের দোকান পেয়ে যাবেন। এ ছাড়াও ট্যাকেরঘাট, বড়ছড়া, তাহিরপুর বাজারেও পাবেন খাবারের হোটেল। তবে ভালো রেস্টুরেন্টে খেতে চাইলে সুনামগঞ্জে যেতে হবে।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন। এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।