এসএসসি‘ দ্বিতীয় অধ্যায়।। অর্থনীতির সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(PDF)

এসএসসি‘ দ্বিতীয় অধ্যায়।। অর্থনীতির সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(PDF)

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ সম্পদের বৈশিষ্ট্যগুলো কী?
উত্তর : অর্থনীতিতে সম্পদ হলো সেসব জিনিস বা দ্রব্য যেগুলো পেতে অর্থ ব্যয় করতে হয়। তবে অর্থনীতিতে কোনো জিনিসকে সম্পদ হতে হলে এর চারটি বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। বৈশিষ্ট্যগুলো হলো :

১. উপযোগ : উপযোগ বলতে বোঝায় কোনো দ্রব্যের মানুষের অভাব মেটানোর ক্ষমতা। কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে সেই দ্রব্যের উপযোগ সৃষ্টির ক্ষমতা থাকতে হবে।

২. অপ্রাচুর্যতা : কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে তার পরিমাণ ও যোগান সীমিত থাকবে। যেমন জমি, গ্যাস, যন্ত্রপাতি এগুলো চাইলেই প্রচুর পাওয়া সম্ভব নয়।

৩. হস্তান্তরযোগ্য : হস্তান্তরযোগ্য বলতে বোঝায় হাত বদল হওয়া। অর্থাৎ যে দ্রব্যের মালিকানা বদল বা পরিবর্তন করা যায় তাই হলো সম্পদ। যেমন, টিভির মালিকানা বদল করা যায় বলে টিভি সম্পদ।

৪. বাহ্যিকতা : যেসব দ্রব্য মানুষের অভ্যন্তরীণ গুণ বোঝায় তা অর্থনীতির ভাষায় সম্পদ নয়। যেমন কোনো ব্যক্তির কম্পিউটারের ওপর বিশেষ অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান কিংবা কারো চারিত্রিক গুণাবলিকে সম্পদ বলা যাবে না।

প্রশ্ন ॥ ২ ॥ সম্পদের শ্রেণিবিভাগ উল্লেখ কর।
উত্তর : উৎপত্তির দিক থেকে সম্পদ তিন প্রকার। যথা :
১. প্রাকৃতিক সম্পদ : প্রকৃতির কাছ থেকে পাওয়া যেসব দ্রব্য মানুষের প্রয়োজন মেটায় তাকে প্রাকৃতিক সম্পদ বলে।

২. মানবিক সম্পদ : মানুষের বিভিন্ন প্রকার যোগ্যতা ও দক্ষতাকে মানবিক সম্পদ বলা হয়।
৩. উৎপাদিত সম্পদ : প্রাকৃতিক ও মানবিক সম্পদ কাজে লাগিয়ে যে সম্পদ সৃষ্টি হয় তাকে উৎপাদিত সম্পদ বলা হয়।

প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ দ্রব্য কী?
উত্তর : দ্রব্য বলতে আমরা সাধারণত শুধু বস্তুগত সম্পদকে বুঝে থাকি। কিন্তু বাস্তবে এমন অনেক দ্রব্য আছে যেগুলো অবস্তুগত (যেমন : আলো, বাতাস ইত্যাদি) হলেও অর্থনীতিতে এগুলো দ্রব্য। অতএব, মানুষের অভাব মিটানোর ক্ষমতাসম্পন্ন বস্তুগত ও অবস্তুগত সব জিনিসকে আমরা অর্থনৈতিক দ্রব্য বলে থাকি। অর্থাৎ যে জিনিসের উপযোগ আছে অর্থনীতিতে তাই দ্রব্য।

প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ দ্রব্যের শ্রেণিবিভাগ উল্লেখ কর।
উত্তর : দ্রব্যের শ্রেণিবিভাগ নিম্নরূপ :
অবাধলভ্য দ্রব্য : যেসব দ্রব্য বিনামূল্যে পাওয়া যায় তাকে অবাধলভ্য দ্রব্য বলে। এর যোগান থাকে সীমাহীন। যেমন : আলো, বাতাস, নদীর পানি ইত্যাদি।

অর্থনৈতিক দ্রব্য : যেসব দ্রব্য পাওয়ার জন্য মানুষকে মূল্য প্রদান করতে হয় তাকে অর্থনৈতিক দ্রব্য বলা হয়। যেমন, খাদ্য, বস্ত্র, বই ইত্যাদি।
ভোগ্যদ্রব্য : ভোগ বা ব্যবহারের মাধ্যমে যেসব দ্রব্যের উপযোগ নিঃশেষ করা হয় তাদেরকে ভোগ্য দ্রব্য বলে। যেমন, গাড়ি, বস্ত্র ইত্যাদি।

স্থায়ী ভোগ্যদ্রব্য : যেসব ভোগ্যদ্রব্য দীর্ঘকাল ধরে ভোগ করা যায় তাকে স্থায়ী ভোগ্যদ্রব্য বলে। যেমন, ফ্রিজ, গাড়ি, ঘরবাড়ি, জমি, খেলার মাঠ ইত্যাদি।

অস্থায়ী ভোগ্যদ্রব্য : যেসমস্ত ভোগ্যদ্রব্য স্বল্পকালে ভোগ করা যায় এবং কোনো ক্ষেত্রে একবার মাত্র ভোগ করা যায় তাকে অস্থায়ী ভোগ্যদ্রব্য বলে। যেমন, খাদ্য, বস্ত্র, অলংকার, তরিতরকারি ইত্যাদি।

মধ্যবর্তী দ্রব্য : যেসব উৎপাদিত দ্রব্য সরাসরি ভোগের জন্য ব্যবহার না করে উৎপাদনের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয় তাকে মধ্যবর্তী দ্রব্য বলে। যেমন, কাঁচামাল, রসগোল্লা তৈরির জন্য ব্যবহৃত দুধ ও চিনি মধ্যবর্তী দ্রব্য।
চূড়ান্ত দ্রব্য : যেসব দ্রব্য উৎপাদনের পর সরাসরি ভোগে ব্যবহৃত হয়, তাদেরকে চূড়ান্ত দ্রব্য বলা হয়। যেমন, পাউরুটি, চেয়ার ইত্যাদি।

মূলধনী দ্রব্য : যেসব উৎপাদিত দ্রব্য অন্য দ্রব্য উৎপাদনে সাহায্য করে তাকে মূলধনী দ্রব্য বলে। যেমন, যন্ত্রপাতি, কারখানা, গুদামঘর ইত্যাদি।

প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ সুযোগ ব্যয় কী?
উত্তর : অর্থনীতিতে বহুল ব্যবহৃত একটি ধারণা হলো ‘সুযোগ ব্যয়’। কোনো একটি জিনিস পাওয়ার জন্য অন্যটিকে ত্যাগ করতে হয়, এই ত্যাগকৃত পরিমাণই হলো অন্য দ্রব্যটির ‘সুযোগ ব্যয়’ (Opportunity Cost)।

যেমন : একজন কৃষক এক বিঘা জমিতে বিশ কুইন্টাল ধান উৎপাদন করতে পারেন। আবার ঐ জমিতে ধান চাষ না করে যদি পাট চাষ করা যায় তাহলে দশ কুইন্টাল পাট উৎপাদন হয়। এক্ষেত্রে বিশ কুইন্টাল ধানের সুযোগ ব্যয় হলো দশ কুইন্টাল পাট।

প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ আয়ের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর : উৎপাদনের কোনো উপকরণ ব্যবহারের জন্য উপকরণটি বা এটির মালিক একটি নির্দিষ্ট সময়ে যে অর্থ পায় তাকে আয় বলে। শ্রমের জন্য প্রাপ্ত আয়কে মজুরি বলে।

প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ সঞ্চয় কী?
উত্তর : মানুষ আয় করে ভোগ করার জন্য। ভবিষ্যতের কথা ভেবে বর্তমানে অর্জিত আয়ের পুরোটাই মানুষ ভোগ করে না। আয়ের একটি অংশ রেখে দেয় কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে।

এই রেখে দেওয়া অংশের নাম সঞ্চয়। মনে কর, তোমার বাবা এক মাসে দশ হাজার টাকা বেতন পান। নয় হাজার টাকা পরিবারের জন্য ব্যয় করেন। আর এক হাজার টাকা কোথাও জমা করেন। এই জমাকৃত এক হাজার টাকা হলো সঞ্চয়। তাই বলা যায়, আয় হলো দ্রব্য বা সম্পদ হতে সৃষ্ট তৃপ্তি প্রবাহ।

প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ বিনিয়োগ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : মানুষ আয় থেকে সঞ্চয় করে থাকে। সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে বিনিয়োগ বলে।

মনে কর, একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি কারখানায় এক লক্ষ টাকার মূলধন সামগ্রী আছে। উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আরো পঞ্চাশ হাজার টাকা ঐ কারখানায় ব্যবহৃত হলো। অতিরিক্ত এ পঞ্চাশ হাজার টাকা হলো বিনিয়োগ। বিনিয়োগের মাধ্যমে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হয়।

প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ অর্থনৈতিক কার্যাবলি কী?
উত্তর : মানুষ জীবিকা সংগ্রহের জন্য যে কার্য করে থাকে তাকে অর্থনৈতিক কার্যাবলি বলা হয়। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষ অর্থ উপার্জন করে এবং জীবনধারণের জন্য তা ব্যয় করে।

যেমন : শ্রমিকরা কলকারখানায় কাজ করে, কৃষক জমিতে কাজ করে, ডাক্তার রোগীদের চিকিৎসা দান করে, শিল্পপতিরা শিল্পপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে, এগুলো হলো অর্থনৈতিক কাজ। মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা হলো দ্রব্যসামগ্রীর অভাব পূরণ করা।

প্রশ্ন ॥ ১০ ॥ অ-অর্থনৈতিক কার্যাবলি বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : যেসব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্থ উপার্জিত হয় না এবং তা জীবনধারণের জন্য ব্যয় করা যায় না তাকে অ-অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বলা হয়।

এ ধরনের কর্মকাণ্ড মানুষের অভাব পূরণ করলেও অর্থ উপার্জনে ভূমিকা রাখতে পারে না। যেমন- পিতামাতার সন্তান লালন-পালন, শখের বশে খেলাধুলা করা, ধার্মিক লোকের ধর্মচর্চা ইত্যাদি অ-অর্থনৈতিক কাজের উদাহরণ। এছাড়া যেসব কাজে সমাজে বিরূপ ফল বা সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেসব কাজ অ-অর্থনৈতিক কাজ। যেমন- চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, দুর্নীতি ইত্যাদি।

ANSWER SHEET

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।

এগুলো দেখুন

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ: MCQ উত্তরসহ

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ: MCQ উত্তরসহ

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ: MCQ উত্তরসহ বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর ১. রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় যে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *