SSC ১ম অধ্যায়:পৌরনীতি অনুশীলনী সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (PDF)

SSC ১ম অধ্যায়:পৌরনীতি অনুশীলনী সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (PDF)

বোর্ড বইয়ের অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্ন-১

বল প্রয়োগ ও ঐতিহাসিক মতবাদ

ক ও খ রাষ্ট্রের অবস্থান পাশাপাশি। ‘ক’ রাষ্ট্র তার পার্শ্ববর্তী দুর্বল রাষ্ট্র ‘গ’ কে যুদ্ধে পরাজিত করে দখল করে নেয়। ‘খ’ রাষ্ট্র তার পার্শ্ববর্তী অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল রাষ্ট্রগুলোকে পারস্পরিক সহযোগিতা দানের মাধ্যমে কালক্রমে সকলে মিলে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হয়।

ক. দার্শনিক জ্যাঁ জ্যাক রুশো রাষ্ট্র সৃষ্টির কোন মতবাদের প্রবর্তক ছিলেন?
খ. রাষ্ট্রের চরম ক্ষমতা কোনটি? ব্যাখ্যা কর।

গ. ‘ক’ রাষ্ট্র কর্তৃক ‘গ’ রাষ্ট্রকে দখল করে নেওয়া রাষ্ট্র সৃষ্টির যে মতবাদকে সমর্থন করে তার ব্যাখ্যা দাও।
ঘ. ‘খ’ রাষ্ট্রের শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পেছনে যে মতবাদের ধারণা রয়েছে সেটিই অধিক গ্রহণযোগ্য মতবাদÑ বিশ্লেষণ কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর-০১

ক দার্শনিক জ্যাঁ জ্যাক রুশো রাষ্ট্র সৃষ্টির সামাজিক চুক্তি মতবাদের প্রবর্তক ছিলেন।
খ রাষ্ট্রের চরম ক্ষমতা হলো সার্বভৌমত্ব। সার্বভৌম ক্ষমতার দুটি দিক রয়েছে। একটি অভ্যন্তরীণ ও অপরটি বাহ্যিক। অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্বের মাধ্যমে রাষ্ট্র দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন আদেশ-নির্দেশ জারির মাধ্যমে ব্যক্তি ও সংস্থার ওপর কর্তৃত্ব করে। অন্যদিকে, বাহ্যিক সার্বভৌমত্বের মাধ্যমে রাষ্ট্র বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ থেকে দেশকে মুক্ত রাখে।

গ ‘ক’ রাষ্ট্র কর্তৃক ‘গ’ রাষ্ট্রকে দখল করে নেওয়ার ঘটনাটি রাষ্ট্র সৃষ্টির বল বা শক্তি প্রয়োগ মতবাদকে সমর্থন করে। বল বা শক্তি প্রয়োগ মতবাদ রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কিত একটি উল্লেখযোগ্য মতবাদ।

বল বা শক্তি প্রয়োগ মতবাদের মূল বক্তব্য হলো, রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে এবং শক্তির জোরে রাষ্ট্র টিকে আছে। এ মতবাদে বলা হয়েছেÑ সমাজের বলশালী ব্যক্তিরা যুদ্ধবিগ্রহ বা বল প্রয়োগ করে দুর্বলের ওপর নিজেদের আধিপত্য স্থাপনের মাধ্যমে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে এবং শাসনকার্য পরিচালনা করে।

অর্থাৎ দুর্বলদের পরাজিত করে নতুন রাষ্ট্র গড়ে তোলে। উদ্দীপকেও দেখা যায়, ‘ক’ রাষ্ট্র তার পার্শ্ববর্তী দুর্বল রাষ্ট্র ‘গ’ কে যুদ্ধে পরাজিত করে রাষ্ট্রটি দখল করে নেয় যা রাষ্ট্র সৃষ্টির বল বা শক্তি প্রয়োগ মতবাদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। তাই ‘ক’ রাষ্ট্র কর্তৃক ‘গ’ রাষ্ট্রকে দখল করে নেওয়ার ঘটনা রাষ্ট্র সৃষ্টির বল বা শক্তি প্রয়োগ মতবাদের অন্তর্গত।

ঘ ‘খ’ রাষ্ট্রের শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পেছনে ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদের ধারণা রয়েছে, যা রাষ্ট্র সৃষ্টির মতবাদগুলোর মধ্যে অধিক গ্রহণযোগ্য মতবাদ। এ মতবাদ অনুসারে রাষ্ট্র বিধাতার সৃষ্টি কিংবা বল প্রয়োগের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়নি বরং ঐতিহাসিক ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়েছে।

উদ্দীপকে দেখা যায়, ‘খ’ রাষ্ট্র তার পার্শ্ববর্তী অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল রাষ্ট্রগুলোকে পারস্পরিক সহযোগিতা দানের মাধ্যমে কালক্রমে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হয়। ঐতিহাসিক মতবাদে মানবসমাজের বিবর্তনের কথা প্রতিফলিত হয়েছে, ‘খ’ রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও ‘কালক্রমে’ শব্দটির দ্বারা বিবর্তনের প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে।

ঐতিহাসিক মতবাদে রাষ্ট্রের উৎপত্তির ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক উপাদানের কার্যকলাপের কথা বলা হয়েছে। ‘খ’ রাষ্ট্রেও অর্থনৈতিক উপাদানের কার্যকারিতার বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে। রাষ্ট্র সৃষ্টির অন্যান্য মতবাদের মধ্যে ঐশী মতবাদকে বিপজ্জনক, অগণতান্ত্রিক ও অযৌক্তিক বলে আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা সমালোচনা করেছেন।

বল বা শক্তি প্রয়োগ মতবাদকে অযৌক্তিক, ভ্রান্ত ও মারাত্মক বলে সমালোচনা করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা। অপরদিকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা সামাজিক চুক্তি মতবাদটিকে অনৈতিহাসিক, অযৌক্তিক, ভিত্তিহীন, অবিশ্বাস্য বলে আখ্যায়িত করেছেন।

কিন্তু রাষ্ট্রের উৎপত্তি সংক্রান্ত ঐতিহাসিক মতবাদটিকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য মতবাদ বলে আখ্যায়িত করেছেন। উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদের মধ্যেই রাষ্ট্রের উৎপত্তির সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। তাই এ মতবাদটিকেই যৌক্তিক ও অধিক গ্রহণযোগ্য মতবাদ হিসেবে গ্রহণ করা সঠিক সিদ্ধান্ত।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০২

পারভেজ দম্পতি দুজনেই কর্মজীবী হওয়ায় তাদের একমাত্র পুত্র রিপনকে ছোটবেলা থেকেই হোস্টেলে রেখে পড়াশুনা করান। ছুটিতে বাড়ি আসলেও তাদের ব্যস্ততার কারণে মা-বাবা রিপনকে বেশি সময় দিতে পারেন নাই।

বেশির ভাগ সময় একা থাকাতে সে তার নিজের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা কারও সাথে ভাগাভাগি করতে পারে না এবং অন্যের সুখ-দুঃখেও আনন্দ কিংবা কষ্ট পায় না। একদিন তিনি রমিজ সাহেবের বাসায় বেড়াতে গেলে তার ছেলে রবিন দরজা খুলেই সালাম দেয়।

তাকে সম্মানের সাথে বসিয়ে বাবাকে ডেকে দেয় এবং নিজেই চা, নাস্তা নিয়ে আসে। পারভেজ তাকে দেখে মুগ্ধ হন এবং নিজের ছেলেকে এভাবে গড়ে তুলতে পারেন নাই ভেবে মনে মনে কষ্ট পান।

ক. পারিবারিক কাঠামো অনুযায়ী পরিবার কত প্রকার?
খ. আত্মসংযমের শিক্ষা পরিবারের কোন ধরনের কাজ? ব্যাখ্যা কর।

গ. রিপনের মানসিক বিকাশ সমৃদ্ধ না হওয়ায় পরিবারের যে কাজটি ব্যাহত হয়েছে তার ব্যাখ্যা দাও।
ঘ. ছেলেমেয়েদের সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য জনাব রমিজের পরিবারের যে কাজটির ভূমিকা রয়েছে তার গুরুত্ব মূল্যায়ন কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর-০২

ক পারিবারিক কাঠামো অনুযায়ী পরিবার দুই প্রকার।
খ আত্মসংযমের শিক্ষা পরিবারের রাজনৈতিক কাজ। পরিবারের যে সকল শিক্ষা পরবর্তীকালে রাষ্ট্রীয় কাজে লাগে সেগুলো পরিবারের রাজনৈতিক কাজের অন্তর্ভুক্ত।

বুদ্ধি, বিবেক ও আত্মসংযমের শিক্ষা দ্বারা শিশু সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে। তাই আত্মসংযমের শিক্ষা পরিবারের রাজনৈতিক কাজ।

গ রিপনের মানসিক বিকাশ সমৃদ্ধ না হওয়ায় পরিবারের মনস্তাত্ত্বিক কাজ ব্যাহত হয়েছে। পরিবার মায়ামমতা, স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে পরিবারের সদস্যদের মানসিক চাহিদা পূরণ করে।

নিজের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সাথে ভাগাভাগি করে প্রশান্তি লাভ করা যায়। তাছাড়া পরিবার থেকে শিশু উদারতা, সহনশীলতা, সহমর্মিতা প্রভৃতি গুণগুলো শিক্ষা লাভ করে, যা তাদের মানসিক দিককে সমৃদ্ধ করে। আর এগুলো হচ্ছে পরিবারের মনস্তাত্ত্বিক কাজ।

কিন্তু রিপনের ক্ষেত্রে পরিবারের এ কাজটির ব্যত্যয় ঘটেছে। উদ্দীপকে বর্ণিত পারভেজ দম্পতির ব্যস্ততার কারণে রিপনকে বেশিরভাগ সময় একা থাকতে হয়। ফলে সে নিজের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা কারও সাথে ভাগাভাগি করতে পারে না এবং অন্যের সুখ-দুঃখেও আনন্দ কিংবা কষ্ট পায় না। রিপনের এ মানসিক অসংগতি পরিবারের মনস্তাত্ত্বিক কাজ ব্যাহত হওয়াকেই নির্দেশ করে।

ঘ ছেলেমেয়েদের সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য জনাব রমিজের পরিবারের শিক্ষামূলক কাজটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিদ্যালয়ে যাওয়ার পূর্বে একজন শিশু পরিবারের মাধ্যমে শিক্ষায় হাতেখড়ি লাভ করে। মা-বাবা ও ভাই-বোনদের পারস্পরিক সহায়তায় সততা, শিষ্টাচার, উদারতা, নিয়মানুবর্তিতা ইত্যাদি মানবিক গুণাবলির শিক্ষা লাভের প্রথম সুযোগ পরিবারেই সৃষ্টি হয়।

তাছাড়া পরিবারে শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় বলে পরিবারকে শিশুর শাশ্বত বিদ্যালয় হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। জনাব পারভেজ জনাব রমিজের বাসায় বেড়াতে গেলে তার ছেলে রবিন তাকে সালাম দেয়। তাকে সম্মানের সাথে বসতে দেয়।

চা, নাস্তা এনে দেয়। এ কাজগুলোর মাধ্যমে রবিনের শিষ্টাচারিতার পরিচয় পাওয়া যায়, যা সে পরিবারের শিক্ষামূলক কাজের মাধ্যমে অর্জন করেছে। একজন সন্তানের জীবনে পরিবারের শিক্ষামূলক কাজের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ পরিবারেই একটি শিশু বর্ণমালার সাথে পরিচিত হয়।

তাছাড়া মা-বাবা ও ভাই-বোনদের পারস্পরিক সহায়তায় সততা, শিষ্টাচার, উদারতা, নিয়মানুবর্তিতা ইত্যাদি মানবিক গুণগুলো লাভের প্রথম সুযোগ ঘটে পরিবারে।

পরিবারের শিক্ষামূলক কাজের মাধ্যমে একটি শিশু ক্রমশ ব্যক্তিত্ববান ও সামাজিক মানুষে পরিণত হয়। উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, ছেলেমেয়েদের সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য পরিবারের শিক্ষামূলক কাজের কোনো বিকল্প নেই।

ANSWER SHEET

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।

এগুলো দেখুন

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ: MCQ উত্তরসহ

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ: MCQ উত্তরসহ

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ: MCQ উত্তরসহ বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর ১. রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় যে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *