এসএসসি‘ প্রথম অধ্যায় ।। বর্ণনামূলক প্রশ্নোত্তর (PDF)
বর্ণনামূলক প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ অর্থনীতির উৎপত্তি ও বিকাশ সম্বন্ধে আলোচনা কর।
উত্তর : আজকের যে অর্থনীতি আমরা পড়ি তা পূর্বে এতটা গোছালো ছিল না। সনাতন বা আদিম সমাজে মানুষের জীবনযাপন ছিল অত্যন্ত সহজ-সরল। খাবার-দাবার, কাপড়-চোপড় এবং বাড়িঘর এসবই ছিল মানুষের মৌলিক চাহিদা।
দ্রব্য-সামগ্রী বিনিময়ের রীতি ছিল খুব সীমিত। মূলত মানুষের কায়িক পরিশ্রম ছিল উৎপাদনের একমাত্র উপকরণ। ২৫০০ খ্রিষ্টপূর্ব হিব্রু (Hebrew) সভ্যতার যুগে ধর্মগ্রন্থে বা দর্শনের বইয়ে অর্থনীতি বিষয়ে আগোছালোভাবে কিছু আলোচনা হয়।
- উত্তর ডাউনলোড করুন> এসএসসি‘ প্রথম অধ্যায় ।। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (PDF)
- উত্তর ডাউনলোড করুন> SSC ৩য় অধ্যায় পৌরনীতি আইন,স্বাধীনতা ও সাম্য পরিচিতি(PDF)
- উত্তর ডাউনলোড করুন> SSC ২য় অধ্যায় পৌরনীতি:জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর(PDF)
- উত্তর ডাউনলোড করুন> SSC ২য় অধ্যায় পৌরনীতি:সেরা স্কুলের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
- উত্তর ডাউনলোড করুন> (PDF) SSC ২য় অধ্যায় পৌরনীতি:সেরা স্কুলেরMCQ
অর্থনীতি বিষয়ের আলাদা কোনো অস্তিত্ব ছিল না। গ্রিসে প্রথম এরিস্টটলসহ অন্যান্য গ্রিক দার্শনিক ব্যক্তিমালিকানার ধারণাটি গ্রহণ করেন এবং ভূমির ওপর ব্যক্তিমালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়। গ্রিক সভ্যতার ইতিহাসে এরিস্টটলকে প্রথম অর্থনীতিবিদ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। অর্থনীতির ইংরেজি শব্দ (Economics) গ্রিক শব্দ (Oikonomia) থেকে থেকে এসেছে। (Oikonomia) অর্থ গৃহস্থালির ব্যবস্থাপনা (Management of the Household)|
প্লেটো (৪২৭-৩৪৭ খ্রিষ্টপূর্ব) এবং এরিস্টটল (৩৮৪-৩২২ খ্রিষ্টপূর্ব) ছিল গ্রিক সভ্যতার বিখ্যাত দুই চিন্তাবিদ। এ দুজন চিন্তাবিদ ব্যক্তিগত সম্পত্তি, শ্রমিকের মজুরি, দাসপ্রথা ও সুদসহ অর্থনীতির অনেক মৌলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। রোমানরা সামরিক এবং সফল রাষ্ট্র পরিচালক হিসেবে অধিক পরিচিত। রোমানরা মূলত গ্রিকদের দেওয়া অর্থনৈতিক চিন্তাধারাকে নিজের করে নেয়। রোমান দার্শনিকরা অর্থ লগ্নি করাকে বা অর্থ সুদে খাটানোকে খুনের সমান অপরাধ বলে মনে করতেন।
প্রাচীন ভারতে চতুর্থ খ্রিষ্টপূর্বে কৌটিল্যের ‘অর্থশাস্ত্রে’ রাজনীতি, সমাজ, অর্থনীতি ও সামরিক বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হয়। ষোড়শ শতাব্দীর শেষভাগ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত (১৫৯০-১৭৮০) ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও ইতালিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের যে প্রসার ঘটে তাকে ‘বাণিজ্যবাদ’(Mercantilism) বলা হয়। অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ফরাসিরা সে দেশের ধনী মানুষের বিলাসী জীবনযাপন, অতিরিক্ত করারোপ এবং ইংল্যান্ডের বাণিজ্যবাদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ভূমিবাদ (Physiocracy) মতবাদ প্রচার করেন।
এভাবেই প্রাচীন এবং মধ্যযুগে আগোছালোভাবে অর্থনীতি বিষয়ক আলোচনা হয়। অর্থনীতি একটি স্বতন্ত্র বিষয় হিসেবে স্বীকৃতি পায় যখন ইংরেজ অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ ১৭৭৬ সালে তার বিখ্যাত বই “ÒAn Inquiry into the Nature and Casues of the Wealth of Nations.” রচনা করেন। আজকের অর্থনীতির মূলভিত্তি হলো স্মিথের এ বই। এ অর্থনীতি পরবর্তীতে বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে কৃষি, শিল্প ও বর্তমান বাণিজ্যে বিকাশ লাভ করেছে।
প্রশ্ন ॥ ২ ॥ অর্থনীতির সংজ্ঞা দাও। কোন সংজ্ঞাটি অধিক গ্রহণযোগ্য এবং কেন?
উত্তর : যে শাস্ত্র মানুষের দৈনন্দিন অর্থনৈতিক কার্যাবলি নিয়ে আলোচনা করে তাকে অর্থনীতি বলে।
অর্থনীতি হলো এমন একটি বিজ্ঞান যা মানুষের অসীম অভাব এবং বিকল্প ব্যবহারযোগ্য দু®প্রাপ্য উপকরণসমূহের মধ্যে সমন্বয় সাধনকারী কার্যাবলি আলোচনা করে। অধিক গ্রহণযোগ্য এল. রবিন্স কর্তৃক প্রদত্ত সংজ্ঞার বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ :
১. মানুষের অভাব অসীম এবং অভাবের প্রকৃতি ও পরিমাণ বিভিন্ন রকমের।
২. অভাব পূরণকারী সম্পদ ও সময় খুবই সীমিত।
৩. অসীম অভাবকে কীভাবে সীমিত সম্পদ দ্বারা সমন্বয় সাধন করা যায় তা অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়।
৪. সম্পদের যোগান সীমিত বলে একই সম্পদ দ্বারা আমাদের বিভিন্ন অভাব পূরণের চেষ্টা করতে হয়।
৫. অভাবের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তা পূরণ করতে হয়। এসব কারণে এ সংজ্ঞাটিকে অধিকতর গ্রহণযোগ্য বলে মনে করা হয়।
প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ অর্থনীতির দশটি নীতি আলোচনা কর।
উত্তর : অর্থনীতির দশটি নীতি নিচে আলোচনা করা হলো :
১. মানুষ দেওয়া-নেওয়া করে : পছন্দমতো কোনো কিছু পেতে গেলে আমাদের অবশ্যই পছন্দের অপর একটি জিনিস ত্যাগ করতে হয়।
উদাহরণ : সরকার যদি বাজেটে সামরিক খাতে বেশি ব্যয় করে তবে শিক্ষাখাতসহ অন্যান্য বেসামরিক খাতে ব্যয় কমায়। অর্থাৎ সমাজে মানুষ একটি দেওয়া-নেওয়ার (Trade-offs) বিকল্প অবস্থা বেছে নেয়।
২. সুযোগ ব্যয় : একটি দ্রব্যের অতিরিক্ত এক একক উৎপাদন করতে গিয়ে অপর দ্রব্যের উৎপাদন যে পরিমাণে ছাড়তে হয় সে ছাড়ার পরিমাণই হচ্ছে সুযোগ ব্যয়।
৩. মানুষ প্রান্তিক পর্যায়ে চিন্তা করে : মানুষ প্রান্তিক পর্যায়ে চিন্তা করে। ধরি, এক ব্যক্তি পরপর তিনটি কলা খেলে ৩ নম্বর কলাটি হলো প্রান্তিক কলা। প্রান্তিক কলা খেয়ে ব্যক্তি যে তৃপ্তি পেল তার নাম প্রান্তিক উপযোগ। প্রান্তিক বা ৩ নম্বর কলাটি পেতে সে যত টাকা ব্যয় করল তার নাম প্রান্তিক ব্যয়।
৪. মানুষ প্রণোদনায় সাড়া দেয় : প্রতিটি কাজের জন্য উৎসাহ বা প্রণোদনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মানুষ প্রণোদনা পায় বলে কাজটি অধিকতর যতেœর সাথে করে। তেমনি অর্থনীতিতে শ্রমিক প্রণোদনা পেলে বেশি উৎপাদন করে।
৫. বাণিজ্যে সবাই উপকৃত হয় : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্ড এবং জাপানের টয়োটা বিশ্বে গাড়ি ব্যবসায়ের জন্য অধিক পরিচিত দুটি কোম্পানি।
কোম্পানি দুটির মধ্যে যথেষ্ট ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা বিদ্যমান। কোম্পানি দুটি সাধারণ ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য বিভিন্ন রকম সুযোগ-সুবিধা দিয়ে দাম যথাসাধ্য কমিয়ে বাজার দখল করতে চায়।
৬. অর্থনৈতিক কার্যক্রম সংগঠিত করার জন্য বাজার একটি উত্তমপন্থা : অর্থনৈতিক কাজকর্ম সংগঠিত হয়ে থাকে বাজার ব্যবস্থার মাধ্যমে।
ফার্ম ও পরিবারসমূহের পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ফলেই কোনো দ্রব্যের দাম নির্ধারিত হয়। ফার্মের মালিকরা বাজারের চাহিদা দেখে দ্রব্য সরবরাহ করে এবং অসংখ্য পরিবার তাদের আয় ও প্রয়োজন অনুসারে এসব দ্রব্য ও সেবাসামগ্রী ক্রয় করে।
৭. সরকার কখনো কখনো বাজার নির্ধারিত ফলাফলের উৎকর্ষ সাধন করতে পারে : বাজার ব্যবস্থা ‘অদৃশ্য হাতের’ ইশারায় চলে। কিন্তু সবসময় ব্যাপারটি সঠিকভাবে হয় না।
নানা কারণে অদৃশ্য হাত সঠিকভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয়। এমন অবস্থায় সরকারি হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়ে। সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারে অপারগতা, পরিবেশ দূষণ এবং দুর্নীতির মতো বিষয়গুলো থেকে রক্ষা করার জন্য সরকারি হস্তক্ষেপের দরকার হয়।
৮. একটি দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান নির্ভর করে সেদেশের দ্রব্য ও সেবা উৎপাদনের ক্ষমতার ওপর : যেসব দেশের মানুষের দ্রব্য ও সেবা উৎপাদন করার ক্ষমতা বেশি। তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। উন্নত দেশসমূহের মানুষের উৎপাদন ক্ষমতা বেশি বলে তাদের মাথাপিছু আয় অনেক বেশি।
- উত্তর ডাউনলোড করুন> এসএসসি‘ প্রথম অধ্যায় ।। অর্থনীতি পরিচিতি (PDF)
- উত্তর ডাউনলোড করুন> পৌরনীতি-নাগরিকতা অনুধাবন-জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
- উত্তর ডাউনলোড করুন> এসএসসির (PDF): পৌরনীতি-নাগরিকতা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
- উত্তর ডাউনলোড করুন>পৌরনীতি-নাগরিকতা বোর্ড ও সেরা স্কুলের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
- উত্তর ডাউনলোড করুন> এসএসসি ৩য় অধ্যায় পৌরনীতি-নাগরিকতা mcq (PDF)
৯. যখন সরকার অতি মাত্রায় মুদ্রা ছাপায় তখন দ্রব্যমূল্য বেড়ে যায় : কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি অধিক মাত্রায় মুদ্রা ছাপায় তাহলে মুদ্রাস্ফীতি ঘটে অর্থাৎ দ্রব্যের মূল্যস্তর বাড়ে। মুদ্রাস্ফীতি ঘটলে অর্থের মান বা মূল্য কমে যায়।
১০. সমাজ মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্বের মধ্যে স্বল্পকালীন দেওয়া-নেওয়ার মুখোমুখি হয় : দ্রব্যসামগ্রীর মূল্যস্তর বেড়ে যাওয়ার অবস্থাকে মুদ্রাস্ফীতি বলে।
আর কোনো শ্রমিক বাজার মজুরিতে কাজ করতে ইচ্ছুক কিন্তু কাজ পায় না এরা হলো বেকার। মূল্যস্ফীতি কমলে বেকারত্ব বাড়ে। আবার বেকারত্ব কমলে মূল্যস্ফীতি বাড়ে।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।