SSC:স্বাধীন বাংলাদেশের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর(ফ্রি পিডিএফ)

SSC:স্বাধীন বাংলাদেশের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর(ফ্রি পিডিএফ)

  • সৃজনশীল প্রশ্ন
  • ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বর হত্যাকাণ্ড

একই বছরে সংঘটিত দুইটি নিষ্ঠুর নির্মম হত্যাকাণ্ড এদেশের রাজনৈতিক গতিধারাকে বদলে দিয়েছিল। দেশ হারিয়েছিল দেশের পথপ্রদর্শক নেতাদের। হারিয়েছিল দেশকে স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দকে। হৃদয়বিদারক সে কথা মনে পড়লে আফজাল সাহেবের হৃদয়ে আজও রক্তক্ষরণ হয়।

ক. অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?
খ. বাংলাদেশের মানব উন্নয়ন সূচকে উন্নয়ন ঘটেছে কীভাবে?

গ. উদ্দীপকে নির্দেশিত হত্যাকাণ্ড দুটির মধ্যে প্রথম কোনটি? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের হত্যাকাণ্ড দুইটি দেশকে নেতৃত্বশূন্য করে দেয়Ñ বিশে¬ষণ কর।

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক তাজউদ্দিন আহমদ।
খ বাংলাদেশ দারিদ্র্যপীড়িত দেশ হিসেবে পরিচিত। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৭০ শতাংশ। সরকারি বিভিন্ন নীতি ও কৃষক-শ্রমিকসহ জনগণের সম্মিলিত চেষ্টায় বাংলাদেশে গত ৪০ বছরে দারিদ্র্যের হার ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে।

ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত পাঁচটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, একটি দ্বিবার্ষিক পরিকল্পনার প্রধান লক্ষ্য ছিল দারিদ্র্য বিমোচন। সরকারের গৃহীত বিভিন্ন নীতি দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষকে দারিদ্র্য জয়ে সহযোগিতা করেছে। দারিদ্র্য হ্রাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানব উন্নয়ন সূচকে উন্নয়ন ঘটেছে।

গ একই বছরে সংঘটিত দুইটি নিষ্ঠুর নির্মম হত্যাকাণ্ড এদেশের রাজনৈতিক গতিধারাকে বদলে দিয়েছিল। দেশ হারিয়েছিল দেশের পথপ্রদর্শক নেতাদের। হারিয়েছিল দেশকে স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দকে। উদ্দীপকের এ তথ্য থেকে বোঝা যায়, প্রথম হত্যাকাণ্ডটি ছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ড।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালির জাতীয় জীবনে ঘটে এক নির্মম, নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড। সেনাবাহিনীর কতিপয় উচ্চাভিলাসী ও উচ্ছৃঙ্খল সেনাসদস্য স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির মদদে বাংলাদেশের স্থপতি, স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের নিজ বাসায় নৃশংসভাবে হত্যা করে।

বঙ্গবন্ধু পরিবারের উপস্থিত কোনো সদস্যই ঘাতকদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। এমনকি ঘাতকের নিষ্ঠুর বুলেটের হাত থেকে রক্ষা পায়নি ১০ বছরের নিষ্পাপ শিশু রাসেলও। একটি আধুনিক ও শোষণ-দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে ‘দ্বিতীয় বিপ¬বে’র কর্মসূচি নিয়ে বঙ্গবন্ধু যখন সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছিলেন।

তখন দেশি-বিদেশি প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তি মহলের সহযোগিতায় দেশের অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপথকে উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্যই ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ গভীর রাজনৈতিক সংকটে পড়ে।

ঘ উদ্দীপকে উল্লিখিত হত্যাকাণ্ড দুইটি দেশকে নেতৃত্বশূন্য করে দেয়। প্রথম হত্যাকাণ্ডে দেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারায়। আর দ্বিতীয় হত্যাকাণ্ডটি ৩ নভেম্বর, ১৯৭৫ জেলখানায় পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড। এতে দেশ জাতীয় চার নেতাকে হারায়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমেদ রাষ্ট্রপতির পদে আসীন হয়। ক্ষমতা গ্রহণের পাঁচদিন পর সামরিক শাসন জারি করে। ১৯৭৫ সালের ২২ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতাকে গ্রেফতার করে।

২৪ আগস্ট জেনারেল কে. এম. সফিউল¬াহকে সরিয়ে জেনারেল জিয়াউর রহমানকে সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত করে। ৩১ আগস্ট এক অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ১৫ আগস্টের হত্যাকারীদের বিচারের হাত থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য খন্দকার মোশতাক ‘ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স’ নামে সংবিধান ও আইনের শাসন বিরোধী একটি অধ্যাদেশ জারি করে।

১৫ আগস্টের হত্যার সঙ্গে জড়িত জুনিয়র সেনা অফিসাররা ব্যারাকে ফিরে না গিয়ে প্রেসিডেন্ট ভবনে বসে দেশ পরিচালনায় হস্তক্ষেপ করতে থাকে। এতে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ সেনাবাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর তাঁর নেতৃত্বে এক সেনা অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়।

৫ নভেম্বর খন্দকার মোশতাক পদত্যাগের ঘোষণা দেয়। ৬ নভেম্বর সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি এএসএম সায়েম নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এভাবে জেলহত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নেতৃত্বশূন্য হয়ে যে গভীর সংকটে পতিত হয়, তার দুঃখজনক পরিণতিতে গণতন্ত্রের মৃত্যু ঘটে এবং দীর্ঘকাল বাংলাদেশ দিকহারা অবস্থায় সামনে চলতে থাকে।

    • সৃজনশীল প্রশ্ন
    • সেনা শাসনামল: জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এরশাদ

ক. ‘বিএনপি’ কত সালে গঠিত হয়?
খ. মুক্তিযুদ্ধে শিল্পী-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।

গ. ছকের দ্বিতীয় সেনা শাসনামল কীভাবে শুরু হয় তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ছকের প্রথম সেনা শাসকের ক্ষমতা সুসংহতকরণের প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা কর।

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক বিএনপি গঠিত হয় ১৯৭৮ সালে।
খ যুদ্ধে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে শিল্পী-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মীর অবদান ছিল খুবই প্রশংসনীয়।

পত্র-পত্রিকায় লেখা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে খবর পাঠ, দেশাত্মবোধক গান, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গান, ইত্যাদি মুক্তিযুদ্ধকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। এসব রণক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের মানসিক ও নৈতিক বল ধরে রাখতে সহায়তা করেছে, সাহস জুগিয়েছে, জনগণকে শত্রুর বিরুদ্ধে দুর্দমনীয় করেছে।

গ ছকে দ্বিতীয় সেনা শাসন আমলের সূচনা ঘটান জেনারেল এরশাদ। তিনিই পরবর্তীতে গণঅভ্যুত্থানে ১৯৯০ সালে ক্ষমতাচ্যুত হন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে জেনারেল জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর সংবিধান অনুযায়ী উপরাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

এ সময় সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ ছিলেন জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। একই বছর ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিচারপতি আবদুস সাত্তার জয়লাভ করেন। কিন্তু বিচারপতি সাত্তারের দুর্বল নেতৃত্ব, রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণ দেখিয়ে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সামরিক আইন জারি করে।

রক্তপাতহীন এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সাত্তার সরকারকে অপসারণ করে ক্ষমতা দখল করেন। ক্ষমতায় এসেই সংবিধান স্থগিত করে, জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন। সুপ্রিমকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আহসান উদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত করা হয়।

সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সামরিক আইন প্রশাসক হন। ১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট আহসান উদ্দিনকে সরিয়ে জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নিজেই রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হন।

ঘ ছকের প্রথম সেনা শাসক হচ্ছেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। তিনিই পরবর্তীতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সেনা অভ্যুত্থান ঘটে এবং জেনারেল জিয়াউর রহমান মুক্ত হয়ে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন।

১৯৭৬ সালের ৩০ নভেম্বর জেনারেল জিয়াউর রহমান প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক এবং ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল নিজেকে রাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত করেন।

অতঃপর ক্ষমতা সুসংহতকরণে তাকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হয়। জেনারেল জিয়াউর রহমানের শাসন আমলে সামরিক বাহিনীর মধ্যে বেশ কিছু ব্যর্থ অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। এতে বিচারের নামে অনেক নিরপরাধ সামরিক কর্মকর্তা ও সেনা সদস্যের মৃত্যুদণ্ড, সাজা কিংবা চাকরিচ্যুত করা হয়।

জেনারেল জিয়ার শাসন আমলে বাংলাদেশের রাজনীতি ও পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৭২-এর সংবিধানে প্রণীত যেসব মৌলিক নীতি ও চেতনার ভিত্তিতে বাংলাদেশ পরিচালিত হয়ে আসছিল, তার বেশিরভাগই এ সময় বাতিল করে দেওয়া হয়।

১৫ আগস্টসহ বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের বিচার করা যাবে না মর্মে যে কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ প্রণীত হয়েছিল তার মূল হোতাও ছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউর রহমান। সুতরাং ওপরের আলোচনা শেষে বলা যায় যে, ক্ষমতা সুসংহত করার জন্য যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তা গুরুত্বপূর্ণ।

  • সৃজনশীল প্রশ্ন
  • বাংলাদেশ সরকারের ‘ভিশন-২০২১

সাব্বিরের দেশে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে। সরকার দেশকে ২০২১ সাল নাগাদ একটি শক্তিশালী মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর নাম হচ্ছে ‘ভিশন-২০২১’।

ক. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কত সালে হত্যা করা হয়?
খ. মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বাঙালিদের ভূমিকা মূল্যায়ন কর।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সাব্বিরের দেশের লক্ষ্য পূরণে পাঠ্যপুস্তকে বর্ণিত খাদ্যনীতির সাফল্য বর্ণনা কর।
ঘ. উক্ত লক্ষ্য পূরণে গৃহীত শিক্ষানীতি মূল্যায়ন কর।

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট।
খ প্রবাসী বাঙালিরা মুক্তিযুদ্ধে নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেন। বিভিন্ন দেশে তারা মুক্তিযুদ্ধের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছেন। বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন আদায়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় প্রতিনিধি দল প্রেরণ করেছেন, পাকিস্তানকে অস্ত্র গোলাবারুদ সরবরাহ না করতে সরকারের নিকট আবেদন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে তারা কাজ করেছেন।

গ সাব্বিরের দেশ বাংলাদেশ যেখানে সরকার ভিশন-২০২১ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করে যাচ্ছে। উদ্দীপকে বর্ণিত ভিশন-২০২১ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারের খাদ্যনীতি গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে বিশেষত দরিদ্র মানুষের খাদ্যপ্রাপ্তি ও পুষ্টির জন্য প্রণীত হয় ‘খাদ্যনীতি-২০০৬’।

প্রান্তিক ও গ্রামীণ জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা দিতে সরকার বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি যেমন : কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা), ভিজিএফ, ভিজিডি, টিআর প্রভৃতি পরিচালনা করছে।

এসব কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার প্রায় ২০ লাখ টন চাল দুস্থ, নিরন্ন, প্রতিবন্ধী, শ্রমিকদের সরবরাহ করে। এছাড়া পরিবেশ ও দুর্যোগ মোকাবিলা বিষয়ক বিভিন্ন কার্যক্রম ও পদক্ষেপ গ্রহণ করার ফলে সরকার ইতোমধ্যে প্রশংসা অর্জন করেছে।

ঘ বাংলাদেশ সরকার ২০২১ সাল নাগাদ দেশকে শক্তিশালী মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে তথা ভিশন-২০২১ এর লক্ষ্য পূরণে শিক্ষানীতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণয়নের ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এসেছে।

বিশেষত বর্তমানে চালু হওয়া, সৃজনশীল পদ্ধতির মূল্যায়ন ব্যবস্থা, শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও নতুন পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায়

ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে এবং বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার পাসের হার বেড়েছে, শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার কমেছে, শ্রেণিতে নারী শিক্ষার্থীর উপস্থিতির হার বেড়েছে। এছাড়া একীভূত শিক্ষা গ্রহণ করার ফলে ‘সবার জন্য শিক্ষা’ কার্যক্রম সফলতা পেয়েছে। যার

ফলে ভিশন-২০২১ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং উক্ত নীতিগুলো বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন হবে।

অনুশীলনমূলক কাজের আলোকে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

  • সৃজনশীল প্রশ্ন
  • মুজিবনগর সরকার

ক. কত তারিখে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ Ñএর নীলনকশা করা হয়?
খ. মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের তৎপরতা ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকে কোন সরকারের কথা বলা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আমাদের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় উক্ত সরকারের ভূমিকা বিশে¬ষণ কর।

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক ১৭ মার্চ, ১৯৭১ তারিখে ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর নীলনকশা করা হয়।
খ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাকবাহিনীর সমর্থনে মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, পিডিপিসহ কতিপয় দল মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে। দলগুলো শান্তিকমিটি, রাজাকার, আলবদর, আল শামস নামক বিশেষ বাহিনী গঠন করে।

এসব বাহিনী হত্যা, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ, নারীর সম্ভ্রমহানির মতো মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল। স্বাধীনতাবিরোধী এ বাহিনীগুলো মুক্তিযোদ্ধা ছাড়াও ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাঙালিদের মেধাশূন্য করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে এদেশের শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।

গ উদ্দীপকে মুজিবনগর সরকারের কথা বলা হয়েছে। ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল গঠিত মুজিবনগর সরকার বা বাংলাদেশ সরকার শপথ গ্রহণ করে ১৭ এপ্রিল তারিখে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দিন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করা হয়। উদ্দীপকের ছকে এ তথ্যগুলো সন্নিবেশিত হয়েছে। এছাড়া এ সরকারে অন্য তিনজন মন্ত্রী ছিলেন, অর্থমন্ত্রী এম. মনসুর আলী, স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী এএইচএম কামারুজ্জামান, পররাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমদ।

মুজিবনগর সরকারকে উপদেশ ও পরামর্শ প্রদানের জন্য একটি ৬ সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদও গঠন করা হয়। মুজিবনগর সরকারের দেশের শাসনব্যবস্থা পরিচালনার জন্য ১২টি মন্ত্রণালয়ও এর অধীনে ছিল। অর্থাৎ উদ্দীপকের ছকে মুজিবনগর সরকারের কথাই বলা হয়েছে যা ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার।

ঘ মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় উক্ত সরকার তথা মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ছিল মুখ্য। যুদ্ধ পরিচালনা করার জন্য সরকারের যে ভূমিকা গ্রহণ করা দরকার তার বৈধতা ও ক্ষমতা কেবল মুজিবনগর সরকারের হাতেই ছিল। মুজিবনগর সরকার সুষ্ঠু ও পরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করে।

মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি ছিলেন কর্নেল এম.এ.জি ওসমানী। মুজিবনগর সরকার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরে (কলকাতা, দিল্লি, লন্ডন, ওয়াশিংটন, নিউইয়র্ক, স্টকহোম) বাংলাদেশ সরকারের মিশন স্থাপন করে। এসব মিশন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রচারণা ও সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করে। সরকার বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীকে বিশেষ দূত নিয়োগ দেয়।

তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্ব নেতৃত্ব ও জনমতের সমর্থন আদায়ের জন্য কাজ করে। ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য সামরিক, বেসামরিক জনগণকে নিয়ে একটি মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

১০ এপ্রিল সরকার ৪টি সামরিক জোনে বাংলাদেশকে ভাগ করে ৪ জন সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত করে। ১১ এপ্রিল তা পুনঃনির্ধারিত করে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। এছাড়া বেশ কিছু সাব-সেক্টর এবং তিনটি ব্রিগেড ফোর্স গঠিত হয়।

এসব বাহিনীতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত বাঙালি সেনা কর্মকর্তা, সেনা সদস্য, পুলিশ, ইপিআর, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যগণ যোগদান করেন। প্রতিটি সেক্টরেই নিয়মিত সেনা, গেরিলা ও সাধারণ যোদ্ধা ছিল। এরা মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিফৌজ নামে পরিচিত ছিল।

এসব বাহিনীতে দেশের ছাত্র, যুবক, নারী, কৃষক, রাজনৈতিক দলের কর্মীÑসমর্থক, শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নিয়েছিল। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ শেষে যোদ্ধাগণ দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে পাকিস্তানি সামরিক ছাউনি বা আস্তানায় হামলা চালায়।

এভাবে মুজিবনগর সরকার মুক্তিযুদ্ধকে সুষ্ঠু ও সুচারুভাবে পরিচালনায় সমর্থ হয়। ফলে মাত্র ৯ মাসে আমরা পাক হানাদারদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে সক্ষম হই এবং বিজয় ছিনিয়ে আনি।

অনুশীলনের জন্য সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক (উত্তরসংকেতসহ)

ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ও স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক যাত্রা
সাহারা ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। তার একটি ছবিতে

গণহত্যার অমানবিক দৃশ্য ফুটে ওঠে ও আরেকটি ছবিতে দেখা যায় একজন চশমাপরা, কোটপরা লোক একটি আঙুল উঁচু করে ভাষণ দিচ্ছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে এ ভাষণ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তার এ ভাষণে উপস্থিত জনতা উত্তেজনায় ফেটে পড়ছে।

ক. স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়া হয় কত তারিখে?
খ. অপারেশন সার্চলাইট বলতে কী বোঝ?

গ. সাহারার আঁকা প্রথম ছবিটির বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা কর।
ঘ. বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে সাহারার আঁকা দ্বিতীয় ছবিটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ? তোমার পাঠ্যবইয়ের আলোকে এর যথার্থতা মূল্যায়ন কর।

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হয়।
খ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনী কর্তৃক নিরীহ বাঙালিদের ওপর পরিচালিত ইতিহাসের নৃশংসতম অভিযানের নাম অপারেশন সার্চলাইট। এ অভিযানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানার ইপিআর ক্যাম্পসহ গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনায় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী নির্মম গণহত্যা চালায়।
ঢ-পষঁংরাব লিংক : প্রয়োগ (গ) ও উচ্চতর দক্ষতার (ঘ) প্রশ্নের উত্তরের জন্য অনুরূপ যে প্রশ্নের উত্তর জানা থাকতে হবে-
গ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের গণহত্যা সম্পর্কে ব্যাখ্যা কর।
ঘ ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।

  • সৃজনশীল প্রশ্ন
  • মুজিবনগর সরকারের কার্যক্রম

সানজারের দাদুবাড়ি মেহেরপুরে। এবার গরমের ছুটিতে সানজার দাদুবাড়ি বেড়াতে যায়। ছোট চাচার সঙ্গে মেহেরপুরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে একটি আমবাগানের মধ্যে এসে চাচা বললেন, এটি বৈদ্যনাথতলা গ্রাম।
ক. বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে কখন?

খ. মুক্তিযুদ্ধে পেশাজীবী মানুষের ভূমিকা উল্লেখ কর।
গ. এদেশের ইতিহাসে উদ্দীপকের স্থানটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর, সানজারের দাদুবাড়ির এলাকাটিকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়? উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে।
খ ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরীহ বাঙালিদের ওপর আক্রমণ চালালে বাংলাদেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করেন।

বাঙালি ছাত্রজনতা, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, পুলিশ, ইপিআর, সেনাবাহিনীর সদস্য, ব্যবসায়ী, কৃষক, শ্রমিক, তাঁতি, মাঝি সবাই দেশকে স্বাধীন করার সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করে। স্বাধীনতার এ যুদ্ধে সব শ্রেণি-পেশার মানুষই কমবেশি আহত-নিহত হন। তাই এ যুদ্ধকে বলা হয় গণযুদ্ধ।

ঢ-পষঁংরাব লিংক : প্রয়োগ (গ) ও উচ্চতর দক্ষতার (ঘ) প্রশ্নের উত্তরের জন্য অনুরূপ যে প্রশ্নের উত্তর জানা থাকতে হবে-
গ মুজিবনগর সরকার সম্পর্কে ব্যাখ্যা কর।
ঘ মুজিবনগর সরকারের কার্যক্রম বিশ্লেষণ কর।

    • সৃজনশীল প্রশ্ন
    • সেনা শাসন আমল (১৯৭৫-১৯৯০)

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে পুনরায় এক রক্তাক্ত ইতিহাসের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পাশাপাশি দেশের শাসন ব্যবস্থায় এক নতুন রূপ ধারণ করে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এ শাসনব্যবস্থায় জনগণ দু’বার নিপতিত হয়েছে। সুখ-দুঃখ মিলিয়েই জনগণ এ শাসনকাল অতিক্রম করেছে।

ক. জাতীয় শিশুনীতি-২০১১ অনুযায়ী শিশু কারা?
খ. মুক্তিযুদ্ধের ঋণ কোনোদিন শোধ হবে না কেন?

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থার নতুন রূপটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে তোমার মূল্যায়ন তুলে ধর। ৪

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক ‘জাতীয় শিশু নীতি-২০১১’ অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সী সকল ব্যক্তিই শিশু।
খ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ নিরস্ত্র জনগণের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আক্রমণ চালালে বাঙালি ছাত্র, জনতা, পুলিশ, ইপিআর সাহসিকতার সাথে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়।

দেশের জন্য যুদ্ধ করতে গিয়ে বহু মুক্তিযোদ্ধা বিভিন্ন রণাঙ্গনে শহিদ হন। আবার অনেকে গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের এ ঋণ কোনোদিন শোধ হবে না।

ঢ-পষঁংরাব লিংক : প্রয়োগ (গ) ও উচ্চতর দক্ষতার (ঘ) প্রশ্নের উত্তরের জন্য অনুরূপ যে প্রশ্নের উত্তর জানা থাকতে হবে-
গ ১৯৭৫-’৯০ সাল পর্যন্ত সামরিক শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে ব্যাখ্যা কর।
ঘ বাংলাদেশের সামরিক শাসনব্যবস্থা মূল্যায়ন কর।

    • সৃজনশীল প্রশ্ন
    • মুজিবনগর সরকারের কার্যক্রম

পদবি নাম
রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান
উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম

প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ
পররাষ্ট্র দফতর খন্দকার মোশতাক আহমেদ

অর্থদপ্তর ক্যাপ্টেন মনসুর আলী
স্বরাষ্ট্র ও পুনর্বাসন এ. এইচ. এম কামারুজ্জামান

ক. বঙ্গবন্ধু কবে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন?
খ. ‘বীরাঙ্গনা’ উপাধিটি ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকে কোন সরকারের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে? উক্ত সরকার গঠনের প্রেক্ষাপট কি ছিল?
ঘ. উক্ত সরকার গঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিস্তারিত আলোচনা কর।

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।
খ মুক্তিযুদ্ধে নারীদের ভূমিকা ছিল গৌরবোজ্জ্বল। মুক্তিযোদ্ধা শিবিরে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা অস্ত্রচালনা ও গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। কিন্তু পাকসেনা কর্তৃক ধর্ষিত হয় প্রায় তিন লক্ষ নারী।

তারাও মুক্তিযোদ্ধাদের সহযাত্রী এবং তাদের ত্যাগের স্বীকৃতি হিসেবে সরকারিভাবে ‘বীরাঙ্গনা’ উপাধি দেওয়া হয়।
ঢ-পষঁংরাব লিংক : প্রয়োগ (গ) ও উচ্চতর দক্ষতার (ঘ) প্রশ্নের উত্তরের জন্য অনুরূপ যে প্রশ্নের উত্তর জানা থাকতে হবে-

গ মুজিবনগর সরকারের গঠন বর্ণনা কর।
ঘ মুজিবনগর সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিশ্লেষণ কর।

অধ্যায় সমন্বিত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

  • সৃজনশীল প্রশ্ন
  • প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য ও মুক্তিযুদ্ধে সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ

জনাব ‘ক’ এর দল নির্বাচনে জয় লাভ করলেও কেন্দ্রীয় সরকার তাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। এতে জনগণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হলে তারা কঠোরভাবে দমনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে।

ফলে কেন্দ্র ও প্রদেশের মধ্যে যুদ্ধের রূপ ধারণ করে। জনাব ‘ক’ এর দল স্বাধীনতা ঘোষণা করলে আপামর জনগণ তাতে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দিয়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। অবশেষে তার দেশ স্বাধীন হয়।

ক. মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?
খ. বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গণমাধ্যমের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।

গ. জনাব ‘ক’ এর দেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের কোন বৈষম্যটি পরিলক্ষিত হয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “মুক্তিকামী জনগণের সহযোগিতা ছাড়া স্বাধীনতা অর্জন অসম্ভব”Ñ উদ্দীপকের আলোকে উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাজউদ্দিন আহমদ।
খ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম। সংবাদপত্র ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম বেতারের শিল্পী ও সংস্কৃতি কর্মীরা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র চালু করেন।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র সংবাদ, দেশাত্মবোধক গান, মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব গাঁথা, রণাঙ্গনের নানা ঘটনা ইত্যাদি দেশ ও জাতির সামনে তুলে ধরে সাধারণ মানুষকে যুদ্ধের প্রতি অনুপ্রাণিত করে।

গ জনাব ‘ক’ এর দেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য ধরা পড়ে। ‘ক’ এর দেশে কেন্দ্রীয় সরকার ‘ক’ এর দলকে নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী ক্ষমতা না দিয়ে কঠোরভাবে তাদের দমনের সিদ্ধান্ত নেয়। এমন কী যুদ্ধ বেধে যায়।

মূলত প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য থাকলেই এরূপ সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। বাংলাদেশেও ১৯৭১ সালে যুদ্ধ পূর্ববর্তী সময়ে মোট অফিসারের ৫%, সাধারণ সৈনিকদের মাত্র ৪%, নৌবাহিনীর উচ্চপদে ১৯%, নিম্নপদে ৯%, বিমান বাহিনীর পাইলটদের ১১%, টেকনিশিয়ানদের ১.৭% ছিলেন বাঙালি।

এমতাবস্থায় ১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করলেও শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তাস্তর না করে গড়িমসি করতে থাকে। ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।

২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ চালায় এবং নৃশংস গণহত্যা শুরু করে। বাঙালিরা আক্রমণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের স্বাধীনতার ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মূলত প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্যের সূত্রে পাকিস্তানি হায়েনারা নৃশংসতা চালায় আর বাঙালি জাতি দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে রুখে দাঁড়ায়।

ঘ উদ্দীপকে ‘ক’ এর দেশের ইঙ্গিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ নির্দেশিত হয়েছে। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ অস্ত্রের বিচারে ছিল এক অসম যুদ্ধ। একদিকে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তান সামরিক বাহিনী। অন্যদিকে বাঙালি সর্বস্তরের জনতা, সাথে তাদের অকুতোভয় কিছু বীর সেনানী। কিন্তু মাত্র ৯ মাসে আমরা বিজয় ছিনিয়ে আনি।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ নিরস্ত্র জনগণের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আক্রমণ চালালে বাঙালি ছাত্র, জনতা, পুলিশ, ইপিআর (ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেলস) সাহসিকতার সাথে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। বিনা প্রতিরোধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে বাঙালিরা ছাড় দেয়নি।

দেশের জন্য যুদ্ধ করতে গিয়ে বহু মুক্তিযোদ্ধা বিভিন্ন রণাঙ্গনে শহিদ হন, আবার অনেকে গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন। মুক্তিযোদ্ধারা দেশকে শত্রুমুক্ত করার লক্ষ্যে মৃত্যুকে তুচ্ছ মনে করে যুদ্ধে যোগদান করেছিল। তারা ছিল দেশপ্রেমিক, অসীম সাহসী এবং আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ যোদ্ধা।

মুক্তিযুদ্ধে বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক, ইপিআর, পুলিশ, আনসার, কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সর্বস্তরের বাঙালিরা অংশগ্রহণ করেছিল বলে এ যুদ্ধকে ‘গণযুদ্ধ’ বা ‘জনযুদ্ধ’ও বলা হয়। আর মুক্তিযুদ্ধের মূল নিয়ামক শক্তি ছিল জনগণ।

তাই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র, পেশাজীবী, নারী, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ নিজ নিজ অবস্থান থেকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। জীবনের মায়া ত্যাগ করে দেশকে শত্রুমুক্ত করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে। মুক্তিযুদ্ধ হয় সার্থক। আর প্রমাণ করে, মুক্তিকামী জনগণের সহযোগিতা ছাড়া স্বাধীনতা অর্জন অসম্ভব।

ANSWER SHEET

যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।

এগুলো দেখুন

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ: MCQ উত্তরসহ

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ: MCQ উত্তরসহ

SSC ফ্রি PDF ব্যবসায় উদ্যোগ: MCQ উত্তরসহ বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর ১. রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় যে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *