SSC:স্বাধীন বাংলাদেশের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর (ফ্রি PDF)
-
- সৃজনশীল প্রশ্ন
- ৭ মার্চের ভাষণ ও মুক্তিযুদ্ধের বিজয়
ক. মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে ছিলেন?
খ. মুক্তিযুদ্ধে সৈয়দ নজরুল ইসলামের ভূমিকা লেখ।
গ. রেখাচিত্র-১-এ নির্দেশিত ১ম ধাপের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “রেখাচিত্র-১ এর ৩য় ধাপ হলো ১ম ধাপ ও ২য় ধাপের চূড়ান্ত ফলাফল।” তোমার মতামত দাও।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তাজউদ্দিন আহমদ।
খ সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন আওয়ামী লীগের অন্যতম শীর্ষ নেতা। তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুজিবনগর সরকারের উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকে বেগবান ও সফল করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান। সৈয়দ নজরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের একজন অন্যতম সংগঠক ও পরিচালক ছিলেন।
- উত্তর ডাউনলোড করুন> (ফ্রি পিডিএফ) SSC:স্বাধীন বাংলাদেশের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
- উত্তর ডাউনলোড করুন> SSC:স্বাধীন বাংলাদেশের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর(ফ্রি পিডিএফ)
- উত্তর ডাউনলোড করুন> SSC:স্বাধীন বাংলাদেশের জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক (ফ্রি পিডিএফ)
- উত্তর ডাউনলোড করুন> SSC:স্বাধীন বাংলাদেশ MCQ উত্তরসহ (ফ্রি পিডিএফ)
- উত্তর ডাউনলোড করুন> SSC:MCQ স্বাধীন বাংলাদেশ উত্তরসহ (ফ্রি পিডিএফ)
গ রেখাচিত্র-১ এ নির্দেশিত ১ম ধাপটি হচ্ছে ৭ মার্চের ভাষণ। রেখাচিত্রে ৩টি ধাপে ৩টি তারিখ উল্লিখিত হয়েছে যার প্রথমটি হচ্ছে ৭-৩-১৯৭১। অর্থাৎ তা বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে নির্দেশ করে। এ ভাষণের গুরুত্ব জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করার মধ্যে ধরা পড়ে। এটি ছিল বাঙালির মুক্তির সনদ।
প্রয়োজনে যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
এ ভাষণে তিনি প্রতিরোধ সংগ্রাম, যুদ্ধের কলাকৌশল ও শত্রু মোকাবিলার উপায় সম্পর্কেও দিকনির্দেশনা দেন। ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ চালায় এবং নৃশংস গণহত্যা শুরু করে।
বাঙালিরা আক্রমণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের স্বাধীনতার ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। চূড়ান্ত স্বাধীনতার লক্ষ্যে মূলত বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ছিল ১ম ধাপ। এ প্রেক্ষিতেই রেখা চিত্র-১ এ নির্দেশিত ১ম ধাপের গুরুত্ব বাংলাদেশের স্বাধীনতার মধ্যে নিহিত।
ঘ রেখাচিত্র-১ এর ৩য় ধাপ হচ্ছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের দিন। রেখাচিত্রে ১৬-১২-১৯৭১ তারিখটি তাই নির্দেশ করে। আর ১ম ধাপ বঙ্গন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ এবং দ্বিতীয় ধাপে উল্লিখিত তারিখ ১০-৪-১৯৭১ মুজিবনগর সরকার বা বাংলাদেশ সরকার গঠনের দিন।
আমি মনে করি, ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ এবং ১০ই এপ্রিল এ দুটি দিনের তাৎপর্যময় ঘটনার ফলাফল হচ্ছে রেখাচিত্রের ৩য় ধাপ বা মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পরিস্থিতিতে যে অসহযোগ আন্দোলনের সূচনা করেন, সে প্রেক্ষিতে ৭ই মার্চের ভাষণে জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেন।
পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার প্রথম লগ্নে তার এই ঘোষণা স্বাধীনতা যুদ্ধকে বাস্তব রূপ দেয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধকে চূড়ান্ত সাফল্যজনক পরিণতিতে নিয়ে যেতে প্রয়োজন ছিল সুষ্ঠু পরিকল্পনার এবং রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার।
তাই স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ বাস্তবে রূপ লাভ করলেও তাকে চূড়ান্ত বিজয়ের দিকে ধাবিত ও পরিচালিত করার জন্য রেখাচিত্র-১ এর ২য় ধাপ তথা মুজিবনগর সরকার গঠন জরুরি হয়ে পড়ে।
বাংলাদেশ এই ধাপটি অতিক্রম করার পর মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত রূপ পায়, আন্তর্জাতিক সমর্থন লাভ করে এবং দ্রুত দেশ চূড়ান্ত বিজয়ের দিকে এগিয়ে যায়। রেখাচিত্রের ৩য় ধাপ তথা ১৬-১২-১৯৭১ ইং তারিখে অবশেষে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। সুতরাং আমিও উল্লিখিত যুক্তির বিচারে একমত যে, “রেখাচিত্র-১ এর ৩য় ধাপ হলো ১ম ধাপ ও ২য় ধাপের চূড়ান্ত ফলাফল।”
-
- সৃজনশীল প্রশ্ন
- মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন দেশের অবদান
নয়ন, চয়ন, অয়ন তিন বন্ধু। তিনজনই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক। উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশ গমনের সময় তারা তাই এমন তিনটি দেশ নির্বাচন করল যারা মুক্তিযুদ্ধে এদেশকে সাহায্য করেছিল। নয়ন ভারতে, চয়ন ব্রিটেনে এবং অয়ন রাশিয়া পড়তে গেল।
ক. মুক্তিযুদ্ধে কতটি সেক্টর ছিল?
খ. মুক্তিযুদ্ধে গণমাধ্যমের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
গ. চয়ন ও অয়নের নির্বাচিত দেশ দুটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধে কীভাবে ভূমিকা পালন করেছিল তা পাঠ্যবইয়ের আলোকে বর্ণনা কর। ঘ. “বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নয়নের নির্বাচিত দেশের অবদান সবচেয়ে বেশি”Ñ ব্যাখ্যা কর।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক মুক্তিযুদ্ধে ১১টি সেক্টর ছিল।
খ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম। সংবাদপত্র ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র সংবাদ, দেশাত্মবোধক গান, মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা, রণাঙ্গনের নানা ঘটনা ইত্যাদি দেশ ও জাতির সামনে তুলে ধরে সাধারণ মানুষকে যুদ্ধের প্রতি অনুপ্রাণিত করে।
গ চয়ন ও অয়ন পড়তে যাওয়ার জন্য যথাক্রমে ব্রিটেন ও রাশিয়াকে নির্বাচিত করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের পর সর্বাধিক অবদান রাখে অধুনা বিলুপ্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া)। পাকবাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশে গণহত্যা,
অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতন বন্ধ করার জন্য সোভিয়েত রাষ্ট্রপ্রধান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে আহ্বান জানান। তিনি ইয়াহিয়াকে জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্যও বলেন।
সোভিয়েত পত্রপত্রিকা, প্রচার মাধ্যমগুলো বাংলাদেশে পাক বাহিনীর নির্যাতনের কাহিনী ও মুক্তিযুদ্ধের অগ্রগতি প্রচার করে বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে সহায়তা করে। জাতিসংঘে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধবন্ধের প্রস্তাবে সোভিয়েত ইউনিয়ন ‘ভেটো’ (বিরোধিতা করে) প্রদান করে বাতিল করে দেয়।
১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে ব্রিটেনের প্রচার মাধ্যম বিশেষ করে বিবিসি এবং লন্ডন থেকে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা বাঙালিদের ওপর পাক বাহিনীর নির্মম নির্যাতনের খবর তুলে ধরে।
বাঙালিদের সংগ্রাম, ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের করুণ অবস্থা, পাকবাহিনীর গণহত্যা এবং মুক্তিযুদ্ধের অগ্রগতি সম্পর্কে বিশ্ব জনমতকে জাগ্রত করে তোলে।
ব্রিটিশ সরকারও আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে খুবই সহানুভূতিশীল ছিল। উলে¬খ্য, লন্ডন ছিল বহির্বিশ্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রচারের প্রধান কেন্দ্র। সুতরাং বলা যায় যে, উক্ত দেশ দুটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
ঘ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নয়নের নির্বাচিত দেশ ভারতের অবদান সবচেয়ে বেশি বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সরাসরি সমর্থন জানায় প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাত্রির বীভৎস হত্যাকাণ্ড ও পরবর্তী ৯ মাস ধরে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী যে নারকীয় গণহত্যা, লুণ্ঠন ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়, ভারত তা বিশ্ববাসীর নিকট সার্থকভাবে তুলে ধরে।
এর ফলে বিশ্ব বিবেক জাগ্রত হয়। ভারত লক্ষ লক্ষ শরণার্থীকে আশ্রয়, মুক্তিযোদ্ধাদের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, অস্ত্র সরঞ্জাম এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে বাংলাদেশকে সাহায্য করে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে পাকিস্তান ভারতে বিমান হামলা চালায়। ভারত ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। মুক্তি বাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী ‘যৌথ কমান্ড’ গড়ে তোলে।
যৌথ বাহিনীর তীব্র আক্রমণের ফলে ৯৩ হাজার পাক সেনা নিঃশর্তে যৌথ কমান্ডের নিকট আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। ভারতের বহু সৈন্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ হারায়। সুতরাং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের ভূমিকা অপূরণীয়।
- সৃজনশীল প্রশ্ন
- বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব কর্মসূচি ও তার রাষ্ট্রনীতি
মহান যারা, তারা দেশের কল্যাণে শুধু ত্যাগই করেছেন। তার একটি প্রমাণ বাংলাদেশের এক মহান নেতা। তিনি বিদেশি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরেই আত্মনিয়োগ করেন দেশের পুনর্গঠনের জন্য। তিনি ছিলেন সফল এক রাষ্ট্রনায়ক।
ক. বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে কখন?
খ. বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে জাতিসংঘের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের মহান নেতা শোষণহীন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে কী কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন? পাঠ্যপুস্তকের আলোকে বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকের মহান নেতার পররাষ্ট্র নীতি কেমন ছিল? পাঠ্য বইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর।
খ বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করা জাতিসংঘের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। বাংলাদেশের নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা না দিয়ে সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান যখন বাঙালি নিধনে তৎপর, তখন জাতিসংঘ বলতে গেলে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।
নারকীয় হত্যাযজ্ঞ, মৌলিক মানব অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। প্রকৃতপক্ষে ‘ভেটো’ ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচটি বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্রের বাইরে জাতিসংঘের নিজস্ব উদ্যোগে কিছু করার ক্ষমতা ছিল সীমিত।
গ উদ্দীপকের মহান নেতা শোষণহীন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে ‘দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি’ গ্রহণ করেন। উদ্দীপকের মহান নেতা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ যখন ব্যস্ত তখন আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্য সংকট, ১৯৭৩-৭৪ সালে বন্যায় দেশে খাদ্যোৎপাদন দারুণভাবে ব্যাহত হয়। ফলে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়।
দেশের অভ্যন্তরে মজুদদার, দুর্নীতিবাজ এবং ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী তৎপর হতে থাকে। বঙ্গবন্ধুর সরকার জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং শোষণহীন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ, ন্যাপ,
কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন দল নিয়ে বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) গঠন করে। দেশের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তিনি নতুন একটি ব্যবস্থা প্রবর্তনের উদ্যোগ নেন। এটিকে তিনি ‘দ্বিতীয় বিপ্লব’ বলে অভিহিত করেন। সুতরাং যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন।
ঘ উদ্দীপকের মহান নেতার পররাষ্ট্র নীতি ছিল সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত সময়োপযোগী। পাকিস্তানের কারাগার থেকে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ঢাকায় পদার্পণ কার বঙ্গবন্ধু বলেন, বাংলাদেশ শান্তিতে বিশ্বাস করে, কারও প্রতি বৈরী আচরণ সমর্থন করবে না।
তিনি ঘোষণা করেন যে, ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্র“তা নয়’-এ নীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারিত হবে। তিনি বাংলাদেশকে স্বীকৃতিপ্রদান এবং পুনর্গঠনে সহযোগিতা প্রদানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুরোধ করেন। ফলে স্বল্প সময়ের মধ্যে ১৪০টি দেশ বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন চট্টগ্রাম বন্দরকে মাইনমুক্ত করাসহ নানাভাবে সহযোগিতা প্রদান করে। অন্যান্য বন্ধুভাবাপন্ন দেশগুলোও খাদ্যদ্রব্য, ত্রাণসামগ্রী নিয়ে এগিয়ে আসতে থাকে। সুতরাং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলো যুদ্ধবিধ্বস্ত এদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- সৃজনশীল প্রশ্ন
- বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা
ক. ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ৩২ নম্বর সড়কে কার বাসভবন অবস্থিত ছিল?
খ. বাংলাদেশ গণপরিষদ আদেশ কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. “উদ্দীপকে বর্ণিত সংবিধানই ছিল সর্বোত্তম” ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত সংবিধান প্রণয়নে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবন অবস্থিত ছিল।
খ ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু ‘বাংলাদেশ গণপরিষদ’ নামে একটি আদেশ জারি করেন। এই আদেশ বলে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচিত সদস্যগণ গণপরিষদের সদস্য বলে পরিগণিত হন।
১৯৭২ সালের ১০ এপ্রিল গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে দেশের জন্য প্রয়োজনীয় আইনকানুন পাস ও কার্যকর করা সম্ভব হয়। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় এটি অতীব তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।
গ উদ্দীপকে বর্ণিত সংবিধানই সর্বোত্তম। এটি ছিল ৭২ এর সংবিধান। ১৯৭২ সালের সংবিধান ছিল লিখিত। পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এ সংবিধানটি ছিল দুষ্পরিবর্তনীয়। সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার চারটি মূলনীতি লিপিবদ্ধ হয়।
জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র এবং ধর্ম নিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রের মূল স্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। মানুষের মৌলিক প্রয়োজন যেমন : অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান ইত্যাদি মেটানোর দায়িত্ব রাষ্ট্রের ওপর অর্পিত হয়।
জীবনধারণের অধিকার, চলাফেরার অধিকার, বাকস্বাধীনতার অধিকার, চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা, ধর্মচর্চার অধিকার, ব্যক্তিগত সম্পত্তি ভোগের অধিকার ইত্যাদি সংবিধানে সন্নিবেশিত হয়। সংবিধানে বাংলাদেশকে প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়, যা ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ নামে পরিচিত।
জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস-সংবিধানের এ ঘোষণা দ্বারা জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ সংবিধানে সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। বাংলাদেশ সংবিধানে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে ১৮ বছর বয়স্ক যেকোনো নাগরিক ‘এক ব্যক্তি এক ভোট’-এ নীতির ভিত্তিতে সর্বজনীন ভোটাধিকার প্রদান করা হয়েছে।
এ সংবিধানে রাষ্ট্রীয়, সমবায় এবং ব্যক্তিগত মালিকানা নীতি লিপিবদ্ধ আছে। বাংলাদেশের আইনসভা এক কক্ষবিশিষ্ট হবে। সুতরাং উক্ত সংবিধানের মাধ্যমে এদেশবাসীর আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটে।
- উত্তর ডাউনলোড করুন> SSC:স্বাধীন বাংলাদেশ উত্তরসহ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর ফ্রি পিডিএফ
- উত্তর ডাউনলোড করুন> SSC: স্বাধীন বাংলাদেশ উত্তরসহ MCQ ফ্রি পিডিএফ
- উত্তর ডাউনলোড করুন> SSC: স্বাধীন বাংলাদেশ সংক্ষিপ্ত ও বর্ণনামূলক উত্তরসহ ফ্রি পিডিএফ
- উত্তর ডাউনলোড করুন> স্বাধীন বাংলাদেশ অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো জেনে রাখি
- উত্তর ডাউনলোড করুন> SSC জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন এবং উত্তর (ফ্রি PDF)
ঘ উক্ত সংবিধান তথা ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণয়নে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাই মুখ্য। সংবিধান হচ্ছে একটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ দলিল। সংবিধানের মাধ্যমেই রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য, আদর্শ ও লক্ষ্য প্রতিফলিত হয়। ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারি রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারি করেন।
এতে রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসনব্যবস্থার পরিবর্তে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। অস্থায়ী সংবিধান আদেশের বিভিন্ন দিক হলো : এই আদেশ বাংলাদেশের অস্থায়ী সংবিধান আদেশ। এটি অবিলম্বে বলবৎ হবে। এটি সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য হবে। বাংলাদেশের জন্য একটি সংবিধান রচনার উদ্দেশ্যে একটি গণপরিষদ গঠিত হবে।
দেশে মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার থাকবে। প্রধানমন্ত্রী হবেন এর প্রধান। রাষ্ট্রপতি হবেন নামমাত্র রাষ্ট্রপ্রধান। অতঃপর একটি সংবিধান প্রণয়ন করে জাতির আশা-আকাক্সক্ষা পূরণের জন্য রাষ্ট্রপতি ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ ‘বাংলাদেশ গণপরিষদ আদেশ’
নামে একটি আদেশ জারি করেন। এ আদেশ অনুসারে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নির্বাচিত প্রাদেশিক ও জাতীয় পরিষদ সদস্যগণ গণপরিষদের সদস্য হবেন। সংবিধান প্রণয়ন করাই হবে গণপরিষদের মূল লক্ষ্য।
১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে খসড়া সংবিধান বিল আকারে পেশ করা হয়। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর (বিজয় দিবস) থেকে কার্যকর হয়।
গণপরিষদে সংবিধানের ওপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘এই সংবিধান শহিদের রক্তে লিখিত, এ সংবিধান সমগ্র জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার মূর্তপ্রতীক হয়ে বেঁচে থাকবে।’ এভাবে বঙ্গবন্ধুর সরকার মাত্র দশ মাসে বাংলাদেশকে একটি সংবিধান উপহার দিতে সক্ষম হন।
যুক্ত হোন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন ফেইজবুক পেইজে এখানে ক্লিক করে।